মুক্তিযোদ্ধা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Imo0on (আলোচনা | অবদান)
যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Md Mofizul Islam Mahfuz (আলোচনা | অবদান)
নতুন বিষয় বস্তু যোগ
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১ নং লাইন:
"শহীদ আমির হোসেন বীর প্রতীক"
{{globalize|date=ডিসেম্বর ২০১২}}
ভৈরবের সর্বোচ্চ খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা
{{redirect|প্রতিরোধ আন্দোলন}}
 
একজন '''মুক্তিযোদ্ধা''' ({{lang-en|Freedom fighter}}) হল এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার দেশের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও বর্বর অত্যাচার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে থাকেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা বলতে এমন একদল জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয় যারা নিজেদের বা অন্যকারো রাজনৈতিক মুক্তি বা স্বাধীনতা লাভের উদ্দেশ্যে প্রতিরোধ আন্দোলনে সংগ্রামরত রয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালো রাত্রে ট্যাংক, মেশিনগান সহ আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মানদাতা আমলের "থ্রি নট থ্রি" রাইফেল নিয়ে যেসকল বাঙালি পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে প্রতিরোধ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন তাদের অন্যতম সদস্য ছিলেন শহীদ আমির হোসেন।
<ref>[http://www.merriam-webster.com/dictionary/freedom%20fighter Mirriam-Webster definition]</ref> যদিও সাধারণভাবে "মুক্তিযোদ্ধা" বলতে "মুক্তির জন্য লড়াইরত" বোঝায়, তবুও সশস্ত্র প্রতিরোধকারীদের নির্দেশ করতে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু বিপরীতে শান্তিপূর্ন পন্থায় আন্দোলনকারীর ক্ষেত্র তা ব্যবহারগতভাবে একিভূত করা হয় না।
 
আমির হোসেন ভৈরব উপজেলার একমাত্র "বীর প্রতীক খেতাব প্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা"।
প্রথমদিকে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য। ১৯৭১ সালে তার পোস্টিং ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকবাহিনী যখন পুরো ঢাকা শহরে নির্মম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে, তখন প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছিলো রাজারবাগ পুলিশ লাইনের বাঙালি বীর পুলিশ সদস্যরা। তাদের সাথে আমির হোসেনও পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। কিন্তু সামরিক বাহিনীর ভারী অস্ত্রের কাছে বাঙালি পুলিশ এর প্রতিরক্ষা খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। অনেক পুলিশ সদস্য ওখানেই শহীদ ও আহত হন, অনেক পুলিশ সদস্য কৌশলগত কারণে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে আত্মগোপন করে চলে যান। আমির হোসেন মেনহোলে লুকিয়ে থেকে পরদিন সন্ধ্যায় আত্মগোপনে চলে আসেন তার গ্রামের বাড়ি ভৈরবের কালিকা প্রাসাদে।
### ইন্ডিয়া গমনঃ-
মনে তখনো জ্বলছিলো তার প্রতিশোধের আগুন। হানাদার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সেই কাল রাত্রের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের কথা ভুলতে পারেননি তিনি । তাই পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে নিজ বাড়ি কালিকাপ্রসাদ থেকে চলে যান আগরতলায়।
## সিপাহি হিসেবে যোগদানঃ-
আগরতলায় তখন ২য় এবং ১১তম বেঙ্গল রেজিমেন্ট অবস্থান করছিলো। আমির হোসেন ২য় বেঙ্গলরেজিমেন্টে সৈনিক হিসেবে রিক্রুট হন। তখন ২য় বেঙ্গলরেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন মেজর মইনুল হাসান চৌধুরী। আমির হোসেন যুদ্ধ করেন ২য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের "সি কোম্পানির হয়ে"
এর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল সৈয়দ ইব্রাহিম।
 
## এস ফোর্স কর্তৃক আখাউড়া দখলের সিদ্ধান্তঃ-
নভেম্বর ১৯৭১ চারিদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে পাকবাহিনী তখন বিচলিত। শেষ চেষ্টা হিসেবে মরণ কামড় দিয়েছে তারা, তারপরও তাদের রক্ষা হচ্ছে না। এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও সংঘটিত, মরিয়া হয়ে যুদ্ধ করছে মাতৃভূমির দ্রুত স্বাধীনতার জন্য।
এদিকে আগরতলা- আখাউড়া সীমান্তে মেজর সফিউল্লাহর নেতৃত্বাধীন এস ফোর্স এর অধীনে যুদ্ধরতো ২য় এবং ১১তম বেঙ্গল রেজিমেন্টের টার্গেট যেভাবেই হোক আখাউড়া দখল করতে হবে। আখাউড়া মুক্তিযুদ্ধের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান এবং পাক আর্মির শক্তিশালী দূর্গ। এই যুদ্ধ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আখাউড়ার বিভিন্ন দিকে ২য়, ১১তম বেঙ্গল রেজিমেন্টের যোদ্ধারা অবস্থান নেয়।
এস ফোর্সের অধিনায়ক লে. কর্নেল সফিউল্লাহর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই যুদ্ধ চলতে থাকে। টানা ৩ দিন চলে এই যুদ্ধ। এই যুদ্ধ অন্তত ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়। বন্দী করা হয় ৫ জনকে।
 
## মুকুন্দপুর যুদ্ধঃ-
মুকুন্দপুর রেলওয়েস্টেশন পাকসেনাদের একটি শক্তিশালি ও গুরুত্বপূর্ণ ঘাটি। এই রেললাইনটিও পাক আর্মির জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো দখল করা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি দেয়া হলো ২য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের সি কোম্পানিকে। মুকন্দপুর রেলওয়েস্টেশন দখল করার জন্য নভেম্বরের শেষের দিকে ৩০ নভেম্বর রেলস্টেশন থেকে আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থান গ্রহণ করে "সি কোম্পানি" এবং ওইখান থেকেই পাকবাহিনীর উপর গুলিবর্ষণ করে- ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়। ২ডিসেম্বর বড় ধরনের যুদ্ধ হয় এইদিন মুক্তিযোদ্ধারা মুকুন্দপুর স্টেশনটি দখল করে নেয়।
 
## যেভাবে শহীদ হন আমাদের আমির হোসেনঃ-
হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মুকুন্দপুর স্টেশনটি পুনরায় দখল নিতে পাকসেনারা মরিয়া হয়ে ওঠে। ৩ ডিসেম্বর বিমান সাপোর্ট ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে। রাতে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। দুই পক্ষের প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। আকাশ এবং স্থলপথের আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা আর টিকতে পারছিলোনা। ভারী ভারী অস্ত্রের গোলাগুলো পরছিলো ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের খুবই কাছাকাছি। এমন সময় হঠাৎ একটি গুলি এসে লাগে প্লাটুন কমান্ডার আশরাফ হোসেনের উপর হেলমেট সহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার মাথা, শহীদ হন তিনি। কৌশলগত কারণে ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় ছিল না। ঠিক সেই সময় সহযোদ্ধাদের নিরাপদে যাওয়ার পথ সুগম করতে হাতে অস্ত্র নিয়ে সিপাহী আমির হোসেন পাকবাহিনীর উপর কাভার ফায়ার করে তাদের ব্যস্ত রাখেন। কিছুক্ষণ পরই একটি কামানের গোলা এসে বিস্ফোরিত হয়। আমির হোসেনের ব্যাংকারে আমির হোসেন এর সমস্ত দেহ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে চারদিকে ছিঠেপড়ে, হাটুর নিচ থেকে পা দুটি ছাড়া দেহের কোন অংশ সনাক্ত করা যায়নি। ৪ ডিসেম্বার শহীদ হন তিনি। মৃতদেহ হিসেবে সহযোদ্ধারা আমির হোসেনের পা দুটিকে আজমপুরের মাটিতে সমাহিত করেন।
এই যুদ্ধে ১১ জন পাকসেনা নিহত এবং ৩ জন মুক্তিসেনা শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধারা ৬ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে আখাউড়া জয় করে। প্রায় ২০০জন পাকসেনা আখাউড়া যুদ্ধে নিহত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ডিসেম্বর উনাকে বীর প্রতীক হিসেবে ভূষিত করা হয়।
 
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমির হোসেনের জন্ম ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ গ্রামে।
তার পিতা আনসার আলী সরকার কৃষি কাজের পাশা পাশি দলিল লেখকের কাজও করতেন
মাতাঃ- খুরশিদ বেগম
ভাই পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে আমির হোসেন ছিলেন তিন নাম্বার।
ডানপিটে আমির হোসেন বেড়ে ওঠেছেন কালিকাপ্রসাদ(উঃ পাড়া) গ্রামের সবুজ শ্যামল সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে। দাপিয়ে বেরিয়েছিলেন কালিকা প্রাসাদের মাঠঘাট। কালিকাপ্রসাদের পুরাতন ব্রহ্মপুত্রনদ ও খাল-বিলের সাথে ছিল তার খুব ভালো সখ্যতা।
 
## আমির হোসেনের সহপাঠি মোঃতাজুল ইসলামের মুখে তার শৈশবের স্মৃতিঃ-
আমির হোসেন আমার বয়সে কয়েক বছরের বড় হলেও আমরা একসাথে খেলাধুলা এবং চলাফেরা করতাম। ভাই বোনদের মধ্যে আমির হোসেনকে তার মা অনেক বেশী আদর করতো। আমির হোসেন দেখতে ছিলো লম্বা,না মোটা না চিকন এমন এক স্বাস্থ্যের অধিকারী। সে ছিল অত্যন্ত মেধাবী এবং ডানপিটে ছেলে। পোশাক আশাকে সবসময় টিপ টপ থাকতো। খেলাধুলায় সে ছিল অনেক ভালো, বিশেষ করে ফুটবল ও হা ডু ডু খেলায় পারদর্শী ছিল । সাঁতার কাটায় তার সাথে কেউ পেরে উঠতোনা। আবার কৃষিকাজও বেশ ভালো পারতো। এক কথায় সব কাজের কাজী ছিলো। যখন জোরে দৌড়াতেন তখন মনে হতো মোটরসাইকেল দৌড়ে যাচ্ছে। আমির হোসেন ভাই আর আমি প্রাই একসাথে যাত্রাপালায় গান দেখতে যেতাম। সেই সময় যাত্রাপালায় রুপবানের গান সহ বিভিন্ন প্রদর্শনী হত এগুলো দেখতে যেতাম। আমার বাবা ছিল মসজিদের ইমাম, স্বাভাবিকভাবেই তিনি গুলো পছন্দ করতেন না। তাই যাত্রাপালা দেখে এসে মাইর খাওয়ার ভয়ে প্রাই আমির ভাই আর আমি তাদের পাটের টালের উপর শুয়ে রাত কাটাতাম। আমির ভাইয়ের আমার অনেক মধুর স্মৃতি ও সময় কেটেছে। প্রাইমারি স্কুল শেষ করে আমি চলে গেলাম ছয়সূতি উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলে পড়াশোনায় আমার একটু সিনিয়র হওয়ায় তিনি কোন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন এটা আমার ভালোভাবে মনে নেই তবে পড়াশোনা খুব বেশি করেননি। একসময় পুলিশের চাকরি নিয়ে নেন।
তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইন-এ অবস্থান করার সময় আমিও তখন ঢাকায় একটি বেসরকারি চাকরি করতাম। ছুটির দিনে আমরা আমির ভাইয়ের কাছে যেতাম তিনি ব্যরাকের তৃতীয় তলায় থাকতেন। আমাদের অনেক আদর স্নেহ করতেন এবং অফিস থেকে রেশন পাওয়া বগা বিড়ি দিতেন আমাদের উপহার হিসেবে।
তিনি ছিলেন যেমন রাগী তেমনি তার মনটাও ছিল অনেক নরম। তিনি কখনো অন্যায় কে প্রশ্রয় দিতেন না।
২৫ শে মার্চের পর তিনি বাড়ি চলে আসেন এবং ভৈরবে যখন অবরোধ আন্দোলন হয় তখন তিনি কুতুবউদ্দিন দারোগার আহবানে চলে যান ভৈরবে তার সাথে কালিকাপ্রসাদের ৩/৪ জন আনসার ও সুলেমান নামে আমাদের গ্রামের একজন পুলিশ সদস্যও ভৈরব যায়।
ভৈরব থেকে ফিরে এসে কয়েক দিনের মধ্যেই ইন্ডিয়ায় চলেযান উনার সাথে আর দেখা হয়নি আমার।
 
## কালিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্মৃতিতে আমির হোসেন ঃ-
আমির হোসেন সম্পর্কে আমার চাচা হয় উনার এক ফুফুর বিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের বাড়িতে। আমি তখন ছোট, উনি নিয়মিত তার ফুফুকে দেখতে আসতেন আমাদের বাড়িতে। আমাকে অনেকে স্নেহ করতেন। পরবর্তীতে উনার ফুফুর মুখে শুনেছি আমির হোসেন সকল আত্মীয় স্বজনের নিয়মিত খোঁজখবর রাখতেন এবং খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন তিনি।
 
## সহপাটি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর স্মৃতিতে আমির হোসেন ঃ- আমির হোসেন আর আমি একসাথেই মিয়াবাড়ি সংলগ্ন কালিকা প্রাসাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করেছি। মিয়া বাড়ির মাঠে একসাথে খেলাধুলাও করেছি। খেলাধুলায় সে অনেক ভালো ছিলো। তার বডিও ছিলো সুন্দর ফিট। কালিকা প্রাসাদ উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সে আর বেশী পড়াশোনা করেনি।
আমির হোসেন এক সময় পুলিশের চাকুরিতে চলে যায় ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চ তার পোস্টিং ছিলো রাজারবাগে। পুলিশ লাইনের প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পরদিন সে বাড়ি চলে আসে। আসার সময় সাথে করে একটি হাতিয়ারও নিয়ে আসে।
মুক্তিযুদ্ধে আমির হোসেন ২য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের হয়ে যুদ্ধ করেন এবং শহীদ হন।
১৯৭৩ সালে তিনি বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
তার সহযোদ্ধা সোলেমান পুলিশের সহায়তায় আমির হোসেন সম্পর্কে লেখা লেখি করি।
সেই সাথে আমীর সম্পর্কে আমরা ভৈরবের মুক্তিযোদ্ধা অফিস, উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দগনকে অবগত করি। আমির হোসেন আমাদের গর্ব।
 
## ভাইদের প্রতি তার ছিল অনেক ভালবাসা রাজারবাগ থেকে আসার সময় আমির হোসেন একটি হাতিয়ার নিয়ে এসেছিলেন। এই খবরটা অনেকেই জেনে গিয়েছিলো। বাঁশগাড়ি গ্রামের এক নামকরা দূদর্শ ডাকাত আমির হোসেনের ছোট ভাইকে প্রাই বলতো তোদের ঘরে অস্ত্র আছে এইটা আইন্না আমারেদে নাইলে তরারে মাইরালামু, আরেক দিন তো উনাকে কয়েকটি থাপ্পর মারলো ঐডাকাত। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি আসলেন আমির হোসেন তখন ভাত খাচ্ছিলেন ছোট ভাইয়ের কাছে বিস্তারিত শোনে ভাত আর খাইলামনা বলে অনেক রাগান্বিত হয়ে হাতিয়ার নিয়ে ঘরথেকে বেড়িয়ে গেলেন।
পরিবারের সবাই তখন অনেক চিন্তিত আমির হোসেন একা একা বের হয়েগিয়েছে আর ঐ ডাকাত অনেক খারাপ। এদিকে দেশের অবস্থাও ভালোনা।
দুই দিন পর আমির হোসেন বাড়ি ফিরলেন এবং ছোট ভাইকে জড়িয়ে ধরে বললেন ওই ডাকাতকে শেষ করে দিয়েছি বাঁশ গাড়ির বন্ধে (আমির হোসেন তার পরিবার, হাতিয়ার এবং এলাকার জনগনের জান মালের নিরাপত্তার জন্য ঐ ডাকাতকে হত্যা করে ছিলেন)। (আমির হোসেনকে নিয়ে উনার ছোট ভাইয়ের বলে যাওয়া একটি স্মৃতি)।
 
## আমীর হোসেনের মাঃ- আমির হোসেনের মা অন্য সন্তানদের চেয়ে আমির হোসেনকে একটু বেশী ভালো বাসতেন। এই ডানপিটে ছেলেটাকে নিয়ে তিনি সবসময় চিন্তিত থাকতেন।
আমির হোসেন শহীদ হবার পরে তার মা আশেপাশের পাড়া-প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘরে গিয়ে কান্নাকাটি করতেন এবং আমীরের বিভিন্ন বিষয়ে স্মৃতি চারণ করতেন। ১৯৯৬ প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত উপহার গুলোকে জরিয়ে জরিয়ে কান্না কাটি করতেন। যতোদিন বেচে ছিলেন ততোদিন তিনি আমিরের জন্য কেঁদে গিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের সাথে থাকা শাড়ি- কম্বল কে তিনি আমীরের দেয়া শাড়ি কম্বল হিসেবেই লোকজনকে বলতেন। এগুলো তার কান্না আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলো।
### শহীদ আমির হোসেন বীর প্রতীক স্মৃতি সংসদঃ-
২০১২ সালে তার নিজ গ্রামের লোকজন শহীদ অমির হোসেন বীর প্রতীক স্মৃতি সংসদ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। এটির কার্য্যালয় কালিকা প্রাসাদে আমির হোসেনের গ্রামের বাড়িতে। সভাপতি মোঃলিয়াকত আলী খান এবং সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মনির নেতৃত্বে ও গ্রামের সৃজনশীল ব্যাক্তিদের সহায়তায় সংগঠনের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
সম্পাদনায়
মোঃ মফিজুল ইসলাম মাহফুজ
মোবাইল ঃ 01712880364
 
== শব্দটির ব্যবহার ==