ডাভিড হিলবের্ট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৭৫ নং লাইন:
               ''আমি নিজেকে এটা বিশ্বাস করিয়েছি যে ধর্মতত্ত্বের মধ্যেও প্রতিভা থাকে।<ref name="Reid 1996, p. 37">Reid 1996, p.&nbsp;37.</ref>''
 
তাঁর সমস্ত সাফল্যের পেছনে তাঁর প্রমাণের প্রকৃতি প্রভূত সমস্যা সৃষ্টি করেছিল যা হিলবের্টও কল্পনা করতে পারেননি। যদিও ক্রোনেকার প্রাথমিকভাবে হিলবের্টের তত্ত্ব মেনে নিয়েছিলেন, কিন্তু হিলবের্টকে পরবর্তীকালে অন্যান্যদের একই সমালোচনার প্রত্যুত্তর দিতে হয়েছিল এই বলে যে “ভিন্ন ভিন্ন অনেক গঠনগুলো (কনস্ট্রাকশন্স) একই মৌলিক ধারণার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে” – অন্য কথায় (রিডের কথা উদ্ধৃত করলে): “অস্তিত্বের প্রমাণের মধ্যে দিয়ে, হিলবের্ট একটা গঠনকে (কনস্ট্রাকশন্) পেয়েছেন”; “প্রমাণ” (অর্থাৎ পাতায় ব্যবহৃত চিহ্ন) হল “বস্তু (অবজেক্ট)”।<ref name="Reid 1996, p. 37237">Reid 1996, p.&nbsp;37.</ref> এতে সকলের বিশ্বাস উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। এর কয়েকদিন পরেই ক্রোনেকার মারা যান, কিন্তু তাঁর গঠনমূলক (কনস্ট্রাকটিভিস্ট) দর্শন যুবক ব্রোয়ার এবং তাঁর উন্নয়নশীল স্বজ্ঞা (ইন্ট্যুইশনিস্ট) ধারার ব্যক্তিবর্গ বহন করে যেতে লাগলেন যার ফলে হিলবের্টের পরবর্তী জীবনে প্রভূত পীড়নের শিকারে হতে হয়।<ref>cf. Reid 1996, pp. 148–149.</ref> প্রকৃতপক্ষে, হিলবের্ট তাঁর “প্রতিভাধর ছাত্র” ওয়েইলকে হারান যে স্বজ্ঞার (ইন্ট্যুইশনিজম) দিকে ঝুঁকে পড়ে – “প্রাক্তন ছাত্র ব্রোয়ারের ধারণার প্রতি আকৃষ্ট হওয়ায় হিলবের্ট বিরক্ত হন, এর ফলে ক্রোনেকারের স্মৃতিও তাঁর ফিরে আসে।”<ref>Reid 1996, p.&nbsp;148.</ref> স্বজ্ঞা ধারার ব্রোয়ার বিশেষ করে অসীম সেটের (ইনফাইনাইট সেট) ক্ষেত্রে ল্য অফ এক্সক্লুডেড মিডলের বিরোধীতা করেন (যা হিলবের্ট ব্যবহার করেছিলেন)। হিলবের্ট প্রত্যুত্তর দেনঃ
 
         ''গণিতবিদের থেকে প্রিন্সিপল অফ এক্সক্লুডেড মিডল কেড়ে নেওয়া….তার সাথে তুলনীয়….একজন বক্সারকে তার মুঠো ব্যবহার করতে নিষেধ করার মতো।<ref>Reid 1996, p.&nbsp;150.</ref>''
 
=== জ্যামিতির স্বতঃসিদ্ধতা ===
গ্রুন্ডলাগেন ডার জিওমেট্রি (অনু. জ্যামিতির ভিত্তি) নামে বইটি হিলবের্ট ১৮৯৯ সালে হিলবের্ট প্রকাশ করেন যেখানে তিনি চিরাচরিত ইউক্লিডের স্বতঃসিদ্ধতাকে পরিত্যাগ করে একটি ফর্ম্যাল সেটের অবতারণা করেন যাকে হিলবের্ট স্বতঃসিদ্ধতা (অ্যাক্সিওমস্‌) বলা হয়। এটি ইউক্লিডের স্বতঃসিদ্ধতার দুর্বলতাগুলোর থেকে মুক্তি দিয়েছিল; যদিও ইউক্লিডের স্বতঃসিদ্ধতা সেসময়কার পাঠ্যক্রমে তখনও পড়ানো হত। হিলবের্ট তাঁর স্বতঃসিদ্ধতাকে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন এবং সংশোধন করেছিলেন এবং সেই কারণে গ্রুন্ডলাগেনের ইতিহাসের পাঠ না করে হিলবের্টের স্বতঃসিদ্ধতা বোঝা খুবই দুরূহ। আসল মনোগ্রাফটির পরেই এর ফরাসী অনুবাদ বেরিয়ে যায় যেখানে হিলবের্ট V.2, দি কমপ্লিটনেস্‌ অ্যাক্সিওমস্‌ কথাটি যোগ করেন। হিলবের্টের অনুমোদনে ই.জে. টাউনসেন্ড এর একটি ইংরেজি অনুবাদ বের করেন যার স্বত্তাধিকার করা হয়েছিল ১৯০২ সালে।<ref>{{harvnb|Hilbert|1950}}</ref><ref>[[G. B. Mathews]](1909) [http://www.nature.com/nature/journal/v80/n2066/pdf/080394a0.pdf The Foundations of Geometry] from [[Nature (journal)|Nature]] 80:394,5 (#2066)</ref> ফরাসী অনুবাদের পরিবর্তনগুলোকে এই অনুবাদে ঢোকানো হয় এবং তাই একে দ্বিতীয় সংস্করণ বলে গণ্য করা হয়। হিলবের্ট এর পরেও বইটির অদলবদল করেন এবং জার্মান ভাষায় এর আরো কয়েকটি সংস্করণ বেরিয়েছিল। হিলবের্টের জীবদ্দশায় এর ৭ম সংস্করণই শেষবারের মত বেরোয়। ৭ম সংস্করণের পরেও নতুন সংস্করণ বেরিয়েছিল, কিন্তু তার মূলপাঠের বিশেষ পরিবর্তন করা হয়নি।{{efn|Independently and contemporaneously, a 19&nbsp;year-old American student named [[Robert Lee Moore]] published an equivalent set of axioms. Some of the axioms coincide, while some of the axioms in Moore's system are theorems in Hilbert's and vice-versa. {{cn|date=December 2020}}}}
 
হিলবের্টের অবলম্বিত পন্থা আধুনিক স্বতঃসিদ্ধমূলক পদ্ধতি (অ্যাক্সিওমেটিক মেথড) দিকে যেতে আমাদের সাহায্য করে। ১৮৮২ সালে মরিট্‌জ পাস্কের কাজ থেকে হিলবের্টের মধ্যে ধারণাটি আসে। স্বতঃসিদ্ধতাকে কখনোই স্ব-প্রমাণ সত্য বলে ধরা যায় না। জ্যামিতি এমন সকল বস্তুকে নিয়ে কাজ করতে পারে, যা সম্বন্ধে আমাদের শক্তিশালী স্বজ্ঞা রয়েছে, কিন্তু অসংজ্ঞায়িত ধারণার ওপর সুস্পষ্ট অর্থ চাপিয়ে দেওয়া যায় না। শোয়েনফ্লাইস এবং কোটারকে হিলবের্ট এইভাবে বলেছিলেন যে বিন্দু, রেখা, তল এবং অন্যান্য উপাদানগুলোকে টেবিল, চেয়ার, মদের গ্লাস এবং এইধরনের অন্যান্য বস্তু দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা যায়।<ref>{{cite book|url=http://gdz-lucene.tc.sub.uni-goettingen.de/gcs/gcs?action=pdf&metsFile=PPN237834022&divID=LOG_0001&pagesize=original&pdfTitlePage=http://gdz.sub.uni-goettingen.de/dms/load/pdftitle/?metsFile=PPN237834022%7C&targetFileName=PPN237834022_LOG_0001.pdf&|title=Lebensgeschichte|year=1935|series=Gesammelte Abhandlungen|publisher=Julius Springer|pages=388–429|archive-url=https://web.archive.org/web/20160304122623/http://gdz-lucene.tc.sub.uni-goettingen.de/gcs/gcs?action=pdf&metsFile=PPN237834022&divID=LOG_0001&pagesize=original&pdfTitlePage=http%3A%2F%2Fgdz.sub.uni-goettingen.de%2Fdms%2Fload%2Fpdftitle%2F%3FmetsFile%3DPPN237834022%7C&targetFileName=PPN237834022_LOG_0001.pdf&|archive-date=4 March 2016|url-status=dead|access-date=6 September 2018|author=Otto Blumenthal|volume=3|editor=David Hilbert|author-link=Otto Blumenthal}} Here: p.402-403</ref> কেবলমাত্র সংজ্ঞায়িত সম্পর্ক নিয়েই আমরা আলোচনা করতে পারি।
 
হিলবের্ট প্রথমে অসংজ্ঞায়িত ধারণার গণনা শুরু করেনঃ বিন্দু, রেখা, তল, উপরিপাতন (বিন্দু এবং রেখা, বিন্দু ও তল, রেখা ও তলের মধ্যেকার সম্পর্ক), মধ্যবর্তীতা, বিন্দুর (রেখাংশ) জোড়ার সঙ্গতি (কংগ্রুয়েন্স), এবং কোণের সঙ্গতি। স্বতঃসিদ্ধগুলো প্লেন জিওমেট্রি এবং ইউক্লিডের সলিড জিওমেট্রিকে একটি একক ব্যবস্থার মধ্যে একত্রিত করেছিল।
 
=== ২৩টি সমস্যা ===
১৯০০ সালে প্যারিস শহরে ইন্টারন্যাশানাল কংগ্রেস অফ ম্যাথমেটিসিয়ান্সে হিলবের্ট সবচেয়ে প্রভাবশালী ২৩টি অমীমাংসিত প্রশ্নের অবতারণা করেন। এটিকে একজন একক গণিতবিদ কর্তৃক উপস্থাপিত সবথেকে সফল এবং গভীরভাবে বিবেচিত মুক্ত সমস্যার সংকলন বলা হয়।{{By whom|date=February 2021}}
 
চিরাচরিত জ্যামিতির ভিত্তির ওপরে পুনরায় কাজ করে, হিলবের্ট গণিতের অন্যান্য দিক সম্বন্ধেও অবহিত হতে পেরেছিলেন। তাঁর অবলম্বিত পন্থাটি যদিও পরবর্তীকালে ‘ভিত্তিবাদী’ রাসেল হোয়াইটহেড অথবা ‘বিশ্বকোষবিদ্‌’ নিকোলাস বোরবাকি এবং তাঁর সমসাময়িক জিওসেপ্পি পিয়ানোর থেকে আলাদা ছিল। গোটা গণিতের দুনিয়াকেই এইসকল সমস্যার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারত, যে সমস্যাগুলোকে তিনি গণিতের বিভিন্ন শাখার গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং যার চাবিকাঠিটি ছিলেন তিনি নিজেই।
 
প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক গণিতবিদের সম্মেলন চলাকালীন “গণিতের সমস্যা” শীর্ষক বক্তৃতায় এই সমস্যা রাশিটির অবতারণা করা হয়। হিলবের্ট এর ভূমিকাতে যা বলেছিলেন তা হলঃ<blockquote>      যে পর্দার পেছনে ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে, তাকে উন্মোচিত করলে কে না খুশী হয়; কে না খুশী হয় আমাদের বিজ্ঞানের আসন্ন উন্নতির দিকে এবং আগামী শতাব্দীর উন্নতির গোপন রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে? গণিতজ্ঞদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে দিকে এগিয়ে চলতে চায় তার শেষ কোথায়? গাণিতিক চিন্তার বিস্তীর্ণ ও সমৃদ্ধ ভূমিতে কোন পদ্ধতি, নতুন কোন ঘটনা নতুন শতাব্দী এনে দেবে?<ref>{{cite web|url=http://www.seas.harvard.edu/courses/cs121/handouts/Hilbert.pdf|title=Archived copy|archive-url=https://web.archive.org/web/20090530182730/http://www.seas.harvard.edu/courses/cs121/handouts/Hilbert.pdf|archive-date=30 May 2009|url-status=bot: unknown|access-date=11 September 2012}}, archived from [www.seas.harvard.edu/courses/cs121/handouts/Hilbert.pdf]</ref></blockquote>সম্মেলনে তিনি অর্ধেকেরও কম সমস্যা উত্থাপন করেছিলেন, এবং সেগুলি সম্মেলনের কাজের তালিকায় পরে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী প্রকাশনে, তিনি ক্ষেত্রটিকে আরো বিস্তৃত করেন এবং বিখ্যাত সূত্র তৈরি করেন যা বর্তমানে হিলবের্টের ২৩টি সমস্যা নামে পরিচিত। আরো দেখুন হিলবের্টের চব্বিশতম সমস্যা। এর সম্পূর্ণ বইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যখনই প্রশ্ন করা হয় কতগুলো প্রশ্নের সমাধান করা গেছে, তখনই প্রশ্নের ব্যাখ্যা করতে গেলে এটি অনিবার্য বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
 
এগুলোর কোন কোনটি স্বল্প সময়ে সমাধান করা হয়েছে। অন্যান্যগুলো ২০শ শতক জুড়ে বহু আলোচিত হয়েছে, যার মধ্যে কিছু এতোটাই উন্মুক্ত যে এখন সেগুলোকে নিয়ে আর চর্চা হয় না। কিছু প্রশ্ন আজও গণিতবিদদের কাছে রীতিমত চ্যালেঞ্জ।
১০৯ নং লাইন:
এই প্রোগ্রামটি গণিতের দর্শনে সবথেকে জনপ্রিয় ফর্ম্যালিজম হিসেবে। উদাহরণস্বরূপ, বোরবাকি গোষ্ঠী তাদের প্রকল্পদ্বয়ের প্রয়োজনে এর একটি জলীয় ও নির্বাচিত সংস্করণ গ্রহণ করেছিলেন; তাদের প্রকল্পগুলো ছিল (অ) বিশ্বকোষীয় ভিত্তিমূলক কাজের লিখন, এবং (আ) গবেষণার বিষয় হিসেবে স্বতঃসিদ্ধ পদ্ধতিকে সহায়তা করা। এই পদ্ধতিটি সফল হয়েছিল এবং বীজগণিতে এবং অপেক্ষকের বিশ্লেষণে হিলবের্টের কাজকে আরো প্রভাবশালী করেছিল, কিন্তু পদার্থবিদ্যা এবং যুক্তিবিজ্ঞানের দুনিয়ায় একই পদ্ধতিতে তাঁর প্রভাব বৃদ্ধি করতে অসমর্থ হয়।
 
হিলবের্ট ১৯১৯ সালে লিখেছিলেনঃ<blockquote>আমরা কোন অর্থেই এখানে স্বেচ্ছাচারিতার কথা বলছি না। গণিত এমন কোন খেলা নয় যার কাজ কিছু নির্বিচারে নির্ধারিত নিয়ম দ্বারা স্থিরীকৃত হবে। বরং, এটি এমন একটি ধারণাগত ব্যবস্থা যার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং যেটি কেবলমাত্র এমনই হতে পারে এবং কোন অর্থেই এর অন্যথা হয় না।<ref>Hilbert, D. (1919–20), Natur und Mathematisches Erkennen: Vorlesungen, gehalten 1919–1920 in G\"ottingen. Nach der Ausarbeitung von Paul Bernays (Edited and with an English introduction by David E. Rowe), Basel, Birkh\"auser (1992).</ref></blockquote>গণিতের ভিত্তির ওপরে লেখা গ্রুন্ডলাগেন ডার ম্যাথমেটিক নামে দুই খণ্ডের বইয়ে হিলবের্ট তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করেন।
 
==== গোডেলের কাজ ====
১২৪ নং লাইন:
১৯১২ সাল পর্যন্ত হিলবের্ট প্রায় একান্তভাবে একজন “বিশুদ্ধ” গণিতজ্ঞ ছিলেন। বন শহরে হিলবের্টের সহকারী গণিতজ্ঞ ও বন্ধু হেরমান মিংকফ্‌স্কি পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনায় মগ্ন ছিলেন; সেখান থেকে ফিরে আসবার পরিকল্পনা করার সময় তিনি মজা করে বলেছিলেন যে হিলবের্টের সঙ্গে দেখা করার আগে তাঁকে দশদিনের জন্য সঙ্গনিরোধ হয়ে থাকতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, ১৯১২ সালের আগে হিলবের্টের পদার্থবিদ্যা গবেষণার বেশিরভাগ অংশের জন্যই মিংকফ্‌স্কিকে দায়ী করা হয়; ১৯০৫ সালে তাঁরা দুজন এই বিষয়ের ওপর যৌথ সেমিনারেও অংশগ্রহণ করেন।
 
হিলবের্ট তাঁর বন্ধুর মৃত্যুর তিন বছর পরে ১৯১২ সালে পদার্থবিদ্যার প্রতি সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করেন। তিনি তাঁর জন্য “পদার্থবিদ্যার শিক্ষক” নিযুক্ত করেছিলেন।<ref>Reid 1996, p.&nbsp;129.</ref> তিনি গ্যাসের গতিতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন এবং সেখান থেকে প্রাথমিক বিকিরণ তত্ত্ব এবং পদার্থের আণবিক তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করে যান। এমনকি ১৯১৪ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে, তিনি তাঁর সেমিনার এবং ক্লাস চালিয়ে যান যেখানে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এবং অন্যান্যদের গবেষণামূলক কাজ খুব কাছ থেকে অনুসরণ করা হত।
 
১৯০৭ সালের মধ্যে আইনস্টাইন মৌলিক মহাকর্ষ তত্ত্বের অবতারণা করেন, কিন্তু একটি বিভ্রান্তিকর সমস্যার কারণে এরপর প্রায় ৮ বছর ধরে তাঁকে তত্ত্বটির সর্বশেষ রূপ প্রদান করার জন্য চেষ্টা করে যেতে হয়।<ref>Isaacson 2007:218</ref> ১৯১৫ সালের গ্রীষ্মের শুরুতে হিলবের্টের পদার্থবিদ্যার প্রতি আগ্রহ সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের প্রতি নিবিষ্ট হয়, এবং তিনি আইনস্টাইনকে গটিনজেনে এই বিষয়ের ওপর এক সপ্তাহের ভাষণ দেবার জন্য আমন্ত্রণ জানান।<ref>Sauer 1999, Folsing 1998, Isaacson 2007:212</ref> আইনস্টাইন এই আমন্ত্রণ খুবই উৎসাহের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন।<ref>Isaacson 2007:213</ref> গ্রীষ্মের সময়, আইনস্টাইন জানতে পারেন যে হিলবের্টও ক্ষেত্র সমীকরণের ওপরে কাজ করছেন যার ফলে তিনি নিজের কাজে দ্বিগুণ শ্রম বাড়িয়ে দেন। ১৯১৫ সালের নভেম্বর মাসে, আইনস্টাইন ''মহাকর্ষের ক্ষেত্র সমীকরণের'' সর্বশেষ রূপদান করে কিছু গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন (আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণ দেখুন)।<ref group="lower-alpha">In time, associating the gravitational field equations with Hilbert's name became less and less common. A noticeable exception is P. Jordan (Schwerkraft und Weltall, Braunschweig, Vieweg, 1952), who called the equations of gravitation in the vacuum the Einstein–Hilbert equations. (''Leo Corry, David Hilbert and the Axiomatization of Physics'', p.&nbsp;437)</ref> প্রায় একইসাথে, ডাভিড হিলবের্টও প্রকাশ করলেন “পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি”, যা ছিল ক্ষেত্র সমীকরণের একটি স্বতঃসিদ্ধ উদ্ভাবনা (দেখুন, আইনস্টাইন-হিলবের্ট কাজ)। হিলবের্ট তত্ত্বটির প্রবর্তক হিসেবে আইনস্টাইনকেই সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের জীবদ্দশায় ক্ষেত্র সমীকরণ নিয়ে এই দুটি মানুষের মধ্যে কখনোও কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি।<ref group="lower-alpha">Since 1971 there have been some spirited and scholarly discussions about which of the two men first presented the now accepted form of the field equations. "Hilbert freely admitted, and frequently stated in lectures, that the great idea was Einstein's: "Every boy in the streets of Gottingen understands more about four dimensional geometry than Einstein," he once remarked. "Yet, in spite of that, Einstein did the work and not the mathematicians." (Reid 1996, pp.&nbsp;141–142, also Isaacson 2007:222 quoting Thorne p.&nbsp;119).</ref> আরো দেখুন [[অগ্রাধিকার]]।
 
এছাড়াও, হিলবের্টের কাজ কোয়ান্টাম বলবিদ্যার গাণিতিক সূত্রায়নের ক্ষেত্রে কিছু পূর্বানুমান করেছিল এবং এর অগ্রগতিতে সহায়তা করেছিল। ওয়ার্নার হাইজেনবার্গের ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যা এবং আরউইন শ্রয়েডিংগারের তরঙ্গ সমীকরণের গাণিতিক তুলনীয়তার ওপরে হেরমান ওয়েইল এবং জন ভন নিউম্যানের কাজের প্রধান একটি দিক ছিল হিলবের্টের কাজ; এছাড়াও তাঁর নামে নামাঙ্কিত হিলবের্ট স্থান কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে। ১৯২৬ সালে, ভন নিউম্যান দেখিয়েছিলেন যে যদি কোয়ান্টাম অবস্থাকে হিলবের্ট স্থানের ভেক্টরের সঙ্গে একইসাথে অনুধাবন করা হয়, তবে তারা শ্রয়েডিংগারের তরঙ্গ ফাংশান তত্ত্ব এবং হাইজেনবার্গের ম্যাট্রিক্সের সাথে সঙ্গতি রেখে চলে।<ref group="lower-alpha">In 1926, the year after the matrix mechanics formulation of quantum theory by [[Max Born]] and [[Werner Heisenberg]], the mathematician [[John von Neumann]] became an assistant to Hilbert at Göttingen. When von&nbsp;Neumann left in 1932, von&nbsp;Neumann's book on the mathematical foundations of quantum mechanics, based on Hilbert's mathematics, was published under the title ''Mathematische Grundlagen der Quantenmechanik''. See: Norman Macrae (1999) ''John von&nbsp;Neumann: The Scientific Genius Who Pioneered the Modern Computer, Game Theory, Nuclear Deterrence, and Much More'' (reprinted by the American Mathematical Society) and Reid (1996).</ref>
 
পদার্থবিদ্যার চর্চায় এইভাবে ডুব দিয়ে, হিলবের্ট পদার্থবিদ্যার গণিতে কঠোরতা অবলম্বন করার ওপরে কাজ করেছিলেন। উচ্চতর গণিতের ওপরে নির্ভরশীল হওয়ার কারণে, পদার্থবিদরা এটির সম্বন্ধে “অযত্নশীল” ছিলেন। হিলবের্টের মত একজন “বিশুদ্ধ” গণিতবিদের কাছে এটি যেমন জঘন্য ছিল তেমনই এটি বোঝাও ছিল কঠিন। পদার্থবিদ্যা এবং কিভাবে পদার্থবিদরা গণিতকে ব্যবহার করে, তা তিনি একদিকে যেমন বুঝতে শুরু করেছিলেন, তেমনিভাবে অন্যদিকে তিনি একটি সুসঙ্গত গাণিতিক তত্ত্ব গড়ে তোলেন যার কারণে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে ইন্টিগ্রাল সমীকরণের ক্ষেত্রে উন্নতি করেন। যখন তাঁর সহকর্মী রিচার্ড কোরান্ট মেথোডেন ডার ম্যাথমেটিশ্চেন ফিজিক [গাণিতিক পদার্থবিদ্যার পদ্ধতি] নামক অধুনা ক্লাসিক বইটি লেখেন এবং হিলবের্টের ধারণাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেন, উক্ত বইটিতে তিনি লেখকের নাম হিসেবে হিলবের্টের নাম লেখেন যদিও বইটির রচনায় হিলবের্টের কোন প্রত্যক্ষ অবদান ছিল না। হিলবের্ট বলেছিলেন “পদার্থবিদ্যা পদার্থবিদদের কাছে অত্যন্ত কঠিন”, অর্থাৎ তিনি এটা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে প্রয়োজনীয় গণিতকে তাঁরা এখনও দূরে সরিয়ে রেখেছে; কোরান্ট-হিলবের্টের বই এই বিষয়টিকে তাঁদের কাছে সহজ করে দিয়েছে।
 
=== সংখ্যাতত্ত্ব ===
হিলবের্ট তাঁর ১৮৯৭ সালে লেখা জালবেরিখট্‌ (আক্ষরিক অর্থে “সংখ্যার ওপরে প্রতিবেদন”) নামক বইয়ে বীজগাণিতিক সংখ্যা তত্ত্বের ক্ষেত্রটিকে একত্রিত করেছিলেন। ১৭৭০ সালে ওয়েরিং দ্বারা কৃত গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যাতত্ত্বের সমস্যার তিনি সমাধান করেছিলেন। ফাইনাইটনেস থিওরেম দ্বারা, তিনি অস্তিত্বের প্রমাণ ব্যবহার করেছিলেন যা দেখায় সমস্যার উত্তর পাওয়ার একটি পদ্ধতি না থাকলেও নির্দিষ্ট সমাধান থাকবেই।<ref>Reid 1996, p.&nbsp;114</ref> এই বিষয়ের ওপরে তাঁর সামান্যই বিষয় প্রকাশ করার ছিল; কিন্তু তাঁর একজন ছাত্র কর্তৃক প্রস্তুত গবেষণাপত্রে হিলবের্ট মডিউলার ফর্মের দাবী আসার সঙ্গে সঙ্গে হিলবের্টের নাম আরো বড়ো ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেল।
 
ক্লাস ফিল্ড তত্ত্বের ওপর তিনি বেশ কিছু অনুমান প্রস্তুত করেন। ধারণাগুলো অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং তাঁর এই অবদান হিলবের্ট ক্লাস ফিল্ড এবং হিলবের্ট সিম্বল অফ লোকাল ক্লাস ফিল্ড থিওরি নামে পরিচিত হয়ে রয়েছে। এর ফলাফলগুলোর বেশিরভাগই তেইজি তাকাগির কাজের পরে ১৯৩০ সালের মধ্যে প্রমাণিত হয়ে যায়।<ref group="lower-alpha">This work established Takagi as Japan's first mathematician of international stature.</ref>
 
হিলবের্ট বিশ্লেষণী সংখ্যাতত্ত্বের কেন্দ্রীয় ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করেননি, কিন্তু তাঁর নাম হিলবের্ট-পোলভা কনজেকচারের কারণে পরিচিত হয়ে আছে, যার কারণ অজানা।
 
== কাজ ==
তাঁর সম্মিলিত কাজ (গেসাম্মেল্টে আভান্দলুনজেন) কয়েকবার প্রকাশিত হয়। তাঁর গবেষণাপত্রের প্রকৃত সংস্করণটায় “বিভিন্ন মাত্রার অনেক প্রায়োগিক ত্রুটি ছিল”;<ref>Reid, chap.13</ref> যখন এই সংকলনটি প্রথম প্রকাশিত হয়, এর ত্রুটিগুলো দূর করা হয় তখন এটা বোঝা যায় যে এর উপপাদ্যগুলোর বর্ণনায় কোন গুরুতর পরিবর্তন না এনেই তা করা যাবে; এর মধ্যে শুধু একটি ব্যতিক্রম ছিল – কন্টিন্যুয়াম হাইপোথিসিসের একটি প্রমাণের দাবী।<ref name="Sieg13">Page 284f in: {{Cite book|title=Hilbert's Programs and Beyond|year=2013|publisher=Oxford University Press|isbn=9780195372229|author=Wilfried Sieg}}</ref><ref name="Rota97">[[Gian-Carlo Rota|Rota G.-C.]] (1997), "[http://www.ams.org/notices/199701/comm-rota.pdf Ten lessons I wish I had been taught]", ''[[Notices of the AMS]]'', 44: 22-25.</ref> তৎসত্ত্বেও, এর ত্রুটিগুলো সংখ্যায় এতোই বেশি ছিল এবং এতোই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে সেগুলোকে সংশোধন করতে ওলগা তৌস্কি-টডের তিন বছর সময় লেগেছিল।<ref name="Rota97" />
 
== আরো দেখুন ==