লোমহর্ষক চলচ্চিত্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
১ নং লাইন:
[[File:Charles Ogle In Frankenstein 1910.jpg|thumb|right|180px|১৯১০ সালে এডিসন স্টুডিওজ প্রযোজিত ও ম্যারি শেলীর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ''ফ্র্যাংকেনস্টাইন'' চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য]]
'''লোমহর্ষক চলচ্চিত্র''' বলতে চলচ্চিত্রের একটি বৃহৎ ও বিবিধ বিষয়-সম্বলিত শ্রেণী বা শাখাকে ("জন্‌রা" genre) বোঝায়, যেই শ্রেণীর চলচ্চিত্রগুলি দর্শকের মনে তীব্র অরুচি, বিরক্তি, ঘৃণা, দুঃস্বপ্ন, চেনা কিংবা অচেনা কোনও কিছুর ভয়, ত্রাস, বিক্ষুব্ধাবস্থা, মর্মাঘাত এবং গায়ে কাঁটা দেওয়া, লোম-খাড়া-হওয়া আতঙ্ক সৃষ্টি করে বিনোদন প্রদানের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়। লোমহর্ষক শ্রেণীর চলচ্চিত্রে প্রায়শই দৈনন্দিন জীবনে কোনও অশুভ শক্তি, ঘটনা বা চরিত্রের অনুপ্রবেশ ঘটে। ভূত, বহির্জাগতিক জীব, নিশীথে রক্তচোষা মৃতব্যক্তি বা ভ্যাম্পায়ার, নেকড়ে-মানব (ওয়্যারউলফ), পিশাচ, শয়তান, অশুভ ভাঁড় (ক্লাউন), শারীরিক সহিংসতা, রক্তাক্ত জখম ও খুনোখুনি, অমানবিক নিপীড়ন, হিংস্র প্রাণীর আক্রমণ, অশুভ ডাইনী, দানব, যন্ত্রবৎ মৃতব্যক্তি (জম্বি), মানুষখেকো ব্যক্তি, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি, প্রকৃতিজাত ভয়ঙ্কর ঘটনা, মনোস্তাত্ত্বিক ত্রাসসঞ্চারী ঘটনা, পরিবেশগত বা মানবসৃষ্ট বিপর্যয়, ধারাবাহিক খুনী, ইত্যাদি বিভিন্ন উপাদান বা চরিত্র লোমহর্ষক শ্রেণীর চলচ্চিত্রগুলিতে প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায়। লোমহর্ষক শ্রেণীর চলচ্চিত্রের সাথে প্রায়শই কল্পবিজ্ঞান, অলীক কল্পনা, অতিপ্রাকৃত কাহিনী, রোমাঞ্চকর ও নোয়ার শ্রেণীর চলচ্চিত্রের মেলবন্ধন ঘটানো হয়ে থাকে। রহস্য রোমাঞ্চভিত্তিক লোমহর্ষক চলচ্চিত্রে পরিবেশ ও পরিস্থিতি ব্যবহার করে অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করা হয়। চলচ্চিত্রের লোমহর্ষক শ্রেণীটি বিচিত্ররূপী ও নিয়তপরিবর্তনশীল। এর বহুসংখ্যক উপশ্রেণী (সাব-জন্‌রা) এবং এগুলির মিশ্ররূপ বিদ্যমান। যেমন গথিক,কল্পবৈজ্ঞানিক, অতিপ্রাকৃত, মনস্তাত্ত্বিক, রক্তাক্ত সহিংসতা (স্প্ল্যাটার), দানব, ধারালো অস্ত্রে খুন (স্ল্যাশার), বিভৎস দেহবিকৃতি, হাস্যরসাত্মক, ব্যঙ্গাত্মক এমনকি উত্তরাধুনিক উপশ্রেণীর লোমহর্ষক চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়।<ref>{{Citation |author1=Kuhn, A. |author2=Westwell, G. |year=2012 |title=A Dictionary of Film Studies |publisher=Oxford University Press}}</ref><ref>{{Citeওয়েব webউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=https://www.irishtimes.com/blogs/screenwriter/2011/09/02/what-is-a-horror-film/|titleশিরোনাম=What is a horror film? {{!}} Screenwriter|websiteওয়েবসাইট=www.irishtimes.com|languageভাষা=en|accessসংগ্রহের-dateতারিখ=2018-08-17}}</ref><ref>{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|authorলেখক=Steve Bennett |urlইউআরএল=http://www.findmeanauthor.com/definition_horror_fiction_genre.htm |titleশিরোনাম=Definition Horror Fiction Genre |publisherপ্রকাশক=Find me an author |accessdateসংগ্রহের-তারিখ=24 April 2012}}</ref> ইংরেজি পরিভাষাতে লোমহর্ষক চলচ্চিত্রকে ''হরর ফিল্ম'' (Horror film) বলা হয়।
 
চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রায় এক শতাব্দীরও বেশীবেশি সময় ধরে লোমহর্ষক চলচ্চিত্রগুলি বিদ্যমান। আদিতে লোমহর্ষক চলচ্চিত্রগুলি এডগার অ্যালান পো, ব্রাম স্টোকার এবং ম্যারি শেলি-র মতো লেখকদের সাহিত্য থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছিল।<ref>{{Citeওয়েব webউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=https://nofspodcast.com/12-horror-films-that-were-actually-adapted-from-novels/|titleশিরোনাম=12 Horror Films that were Actually Adapted from Novels {{!}} Nightmare on Film Street – Horror Movie Podcast, News and Reviews|websiteওয়েবসাইট=nofspodcast.com|languageভাষা=en-US|accessসংগ্রহের-dateতারিখ=2018-08-17|dateতারিখ=2018-08-11}}</ref> এছাড়া প্রাথমিক লোমহর্ষক চলচ্চিত্রগুলি জার্মান অভিব্যক্তিবাদী চলচ্চিত্রের দ্বারাো প্রভাবিত হয়েছল। সাধারণত মৃত্যুময় বা বিভীষিকাময় পরিবেশ ও বিষয়বস্তু ব্যবহার করে লোমহর্ষক আবহ সৃষ্টি করা হত। ১৯১৩ সালের জার্মান চলচ্চিত্র ''দ্য স্টুডেন্ট অ প্রাগ'', যাতে দ্বৈত ব্যক্তিত্ব নিয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়, এবং ১৯১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ''দ্য গলেম'', যাতে মধ্যযুগীয় ইহুদী কিংবদন্তীর এক মাটির প্রতিমা জীবন্ত হয়ে ওঠে --- এই দুইটি ছিল প্রথম দিককার দুইটি প্রভাবশালী লোমহর্ষক চলচ্চিত্র। ১৯২০-এর দশকে ''দ্য ক্যাবিনেট অভ ডক্টর ক্যালিগারি'' (১৯২০), ''নসফেরাতু'' (১৯২২), যা ছিল ড্রাকুলার গল্পের প্রথম চলচ্চিত্রায়ন, এবং ১৯২৪ সাল মুক্তিপ্রাপ্ত ''ওয়্যাক্সওয়ার্কস'' সারা বিশ্বে পরিচিত লাভ করে। ১৯২০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু কালজয়ী লোমহর্ষক চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। ১৯২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ''ডা. জেকিল অ্যান্ড মি. হাইড'' নির্বাক চলচ্চিত্রশিল্পের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে পরিগণিত হয়। ১৯২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ''দি হাঞ্চব্যাক অভ নটরডেম'', ১৯২৫-এর ''দ্য ফ্যান্টম অভ দি অপেরা'', ১৯২৭ সালের ''দ্য ক্যাট অ্যান্ড দ্য ক্যানারি'', ইত্যাদিও জনপ্রিয়তা পায়।<ref name="brit">{{Citation |publisher=Encyclopedia Britannica Inc. |title=Horror Film |Date=2019}}</ref>
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৩১ সালে নির্মিত ''ড্রাকুলা''-র পাশাপাশি ''ফ্রাঙ্কেনস্টাইন'' (১৯৩১) ও ''দ্য মামি'' (১৯৩২) প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা পায় এবং এগুলির পরে ধারাবাহিকভাবে আরও অনেকগুলি লোমহর্ষক চলচ্চিত্র ব্যবসায়িক সাফল্যের দেখা পায়, যাদের মধ্যে ১৯৩২-এর ''কিংকং'' এবং ১৯৩৪-এর ''দ্য ব্ল্যাক ক্যাট'' উল্লেখ্য। এই পর্বের আরও কিছু সুপরিচিত ও কালজয়ী লোমহর্ষক চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে ১৯৩৫ সালে নির্মিত ''দ্য ওয়্যারউলফ অভ লন্ডন'', ১৯৪১ সালের ''দ্য উলফম্যান'' এবং ১৯৪২ সালের ''ক্যাট পিপল''।<ref name="brit"/>
 
১৯৫০-এর দশক থেকে লোমহর্ষক চলচ্চিত্রগুলিতে কল্পবিজ্ঞানের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ১৯৫১ সালের ''দ্য থিং'' চলচ্চিত্রে ভিনগ্রহ থেকে আগত দানব, ১৯৫৪ সালের ''দেম!'' চলচ্চিত্রে সাধারণ প্রাণীর পরিব্যক্তি এর কিছু উদাহরণ। জাপানের চলচ্চিত্র নির্মাতারা দানবভিত্তিক চলচ্চিত্র যেমন ''গোজিরা'' (১৯৫৪) ও ''রাদোন'' (১৯৫৬) মুক্তি দেয়। এর বিপরীতে ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতারা ভয়াল বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বা আবহের পরিবর্তে রক্তাক্ত সহিংসতাপূর্ণ দৃশ্য সম্বলিত চলচ্চিত্রের উপরে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে, যেমন ১৯৫৭ সালের ''দ্য কার্স অভ ফ্রাংকেনস্টাইন'' এবং ১৯৫৮ সালের ''দ্য হরর অভ ড্রাকুলা''।<ref name="brit" />
 
১৯৬০-এর দশকে সুক্ষ্ম, পরিশীলিত রহস্য-রোমাঞ্চ ধরনের লোমহর্ষক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যেমন আলফ্রেড হিচককের ''সাইকো'' (১৯৬০) এবং রোমান পোলানস্কি-র ''রিপালসন'' (১৯৬৫)। <ref name="brit" />