বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩ নং লাইন:
'''বাংলাদেশ-ভারত-ছিটমহল''' ({{Lang-en|Bangladesh–India enclaves}})<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://pure.uva.nl/ws/files/3501679/153272_201293.pdf|শিরোনাম=Stateless in South Asia: The Making of the India-Bangladesh Enclaves|শেষাংশ=Schendel|প্রথমাংশ=Willem van|তারিখ=2002|সাময়িকী=The Journal of Asian Studies|খণ্ড=61|সংখ্যা নং=1|পাতাসমূহ=115–147|ভাষা=en|doi=10.2307/2700191|issn=1752-0401}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=QH10DwAAQBAJ&q=chhit+mohol&pg=PT415|শিরোনাম=Routing Borders Between Territories, Discourses and Practices|শেষাংশ=Houtum|প্রথমাংশ=H. Van|শেষাংশ২=Berg|প্রথমাংশ২=Eiki|তারিখ=2018-10-24|প্রকাশক=Routledge|পাতাসমূহ=৪১৫|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-1-351-75911-3}}</ref><ref name=":0">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=tNiTNAAACAAJ&q=Waiting+for+the+Esquimo:+an+historical+and+documentary+study+of+the+Cooch+Behar+enclaves+of+India+and+Bangladesh|শিরোনাম=Waiting for the Esquimo: An Historical and Documentary Study of the Cooch Behar Enclaves of India and Bangladesh|শেষাংশ=Whyte|প্রথমাংশ=Brendan R.|তারিখ=2002|প্রকাশক=School of Anthropology, Geography and Environmental Studies, University of Melbourne|পাতাসমূহ=৫০২|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-0-7340-2208-0}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://m.economictimes.com/opinion/et-commentary/strong-will-from-pm-needed-to-resolve-india-bangladesh-issues/amp_articleshow/9488727.cms|শিরোনাম=Strong will from PM needed to resolve India-Bangladesh issues|ওয়েবসাইট=The Economic Times|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref> শুধু '''ছিটমহল''' নামেও পরিচিত এবং কখনও কখনও '''[[পাশা (পদবি)|পাশা]] ছিটমহল''' নামেও পরিচিত,<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.aljazeera.com/news/2011/9/6/india-and-bangladesh-discuss-pasha-enclaves|শিরোনাম=India and Bangladesh discuss ‘pasha’ enclaves|ওয়েবসাইট=[[আল জাজিরা]]|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref> ছিল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বরাবর [[ছিটমহল]], যা বাংলাদেশ এবং ভারতের [[পশ্চিমবঙ্গ]], [[ত্রিপুরা]], [[আসাম]] ও [[মেঘালয়]] রাজ্যসমূহে অবস্থিত ছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ছিল ভারতীয় ভূখণ্ডের ১০২টি ছিটমহল, যার মধ্যে ২১টি বাংলাদেশী কাউন্টার ছিটমহল ছিল, যার মধ্যে একটিতে ছিল ভারতীয় কাউন্টার ছিটমহল- বিশ্বের [[দাহালা খাগড়াবাড়ি|একমাত্র তৃতীয় শ্রেণীর ছিটমহল]]। ভারতের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে ৭১টি বাংলাদেশী ছিটমহল ছিল, যার মধ্যে ৩টি ভারতীয় কাউন্টার ছিটমহল ছিল। ২০১০ সালের একটি যৌথ আদমশুমারিতে দেখা গেছে, এই ছিটমহলগুলোতে ৫১,৫৪৯ জন লোক বাস করে: বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলেে ৩৭,৩৩৪ জন এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশী ছিটমহলেে ১৪,২১৫ জন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://indianexpress.com/article/india/india-others/explained-land-swap-in-offing/|শিরোনাম=Everything you need to know: Land swap in offing with Bangladesh to end disputes|তারিখ=2014-12-02|ওয়েবসাইট=The Indian Express|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref><ref name=":0" />
 
২০১৫ সালের ০১ আগস্টের পূর্বে [[ভারত|ভারতের]] অভ্যন্তরে [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] আর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের সর্বমোট ১৬২ টি ছিটমহল ছিল। ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরা ১৯৭৪ সালে স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন ছিটমহল বিনিময় এবং তাদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সরলীকরণের জন্য। ৭ মে, ২০১৫ তারিখে ভারতের সংসদ [[ভারতের সংবিধান|ভারতের সংবিধানের]] ১০০তম সংশোধনী পাস করার সময় দুই দেশ এই চুক্তির একটি সংশোধিত সংস্করণ গ্রহণ করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.prsindia.org/billtrack/the-constitution-119th-amendment-bill-2013-3049|শিরোনাম=The Constitution (119th Amendment) Bill, 2013|তারিখ=2013-12-18|ওয়েবসাইট=PRSIndia|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20150822011528/http://onelawstreet.com/2015/05/prez-assents-constitution-one-hundredth-amendment-act-2015/|শিরোনাম=Prez assents: Constitution (One Hundredth Amendment) Act, 2015 - 1, Law Street|তারিখ=2015-08-22|ওয়েবসাইট=web.archive.org|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref> এই চুক্তির অধীনে ২০১৫ সালের ৬ জুন অনুমোদিত এই চুক্তির আওতায় ভারত ভারতের মূল ভূখণ্ডে ৫১টি বাংলাদেশী ছিটমহল (৭,১১০ একর (২,৮৮০ হেক্টর) লাভ করে, অন্যদিকে বাংলাদেশ বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল (১৭,১৬০ একর (৬,৯৪০ হেক্টর) লাভ করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://indianexpress.com/article/india/india-others/narendra-modis-bangladesh-visit-ive-got-a-nation-it-comes-at-the-end-of-my-life-still-it-comes/|শিরোনাম=I’ve got a nation. It comes at the end of my life, still it comes: resident of a Bangladeshi enclave|তারিখ=2015-06-07|ওয়েবসাইট=The Indian Express|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref> এনক্লেভেরছিটমহলের বাসিন্দাদের হয় তাদের বর্তমান অবস্থানে বসবাস চালিয়ে যেতে অথবা তাদের পছন্দের দেশে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120622024224/http://ibnlive.in.com/news/indiabangladesh-sign-pact-on-border-demarcation/181937-3.html|শিরোনাম=India-Bangladesh sign pact on border demarcation|তারিখ=2012-06-22|ওয়েবসাইট=IBNLive|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref> ছিটমহল বিনিময় ৩১ জুলাই ২০১৫ থেকে ৩০ জুন ২০১৬ মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.washingtonpost.com/news/worldviews/wp/2015/08/01/say-goodbye-to-the-weirdest-border-dispute-in-the-world/|শিরোনাম=Say goodbye to the weirdest border dispute in the world|শেষাংশ=Taylor|প্রথমাংশ=Adam|কর্ম=Washington Post|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18|ভাষা=en-US|issn=0190-8286}}</ref> ০১ আগস্ট রাত ১২:০১ মিনিটে দুই দেশ [[মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি|ঐতিহাসিক মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির]] আওতায় একে অন্যের অভ্যন্তরে থাকা নিজেদের ছিটমহলগুলো পরস্পরের সাথে বিনিময় করে এবং ছিটমহল বাসিন্দাদের স্থানান্তর ৩০ নভেম্বর ২০১৫ সম্পন্ন হয়। স্থল সীমান্ত চুক্তির পর ভারত বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৪০ বর্গ কিলোমিটার (১৫ বর্গ মাইল) হারায়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://scroll.in/article/725804/india-bangla-land-swap-was-the-worlds-strangest-border-created-by-a-game-of-chess|শিরোনাম=India-Bangla land swap: was the world's strangest border created by a game of chess?|শেষাংশ=Daniyal|প্রথমাংশ=Shoaib|ওয়েবসাইট=Scroll.in|ভাষা=en-US|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.rediff.com/news/interview/border-deal-will-control-infiltration-from-bangladesh/20150605.htm|শিরোনাম='Border deal will control infiltration from Bangladesh'|শেষাংশ=Roy|প্রথমাংশ=Indrani|ওয়েবসাইট=Rediff|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-18}}</ref>
 
বিনিময়ের সময় উল্লেখযোগ্য ছিটমহল ছিল [[কুড়িগ্রাম|বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে]] ভারতের ছিটমহল দাশিয়ারছড়া। দাশিয়ারছড়ার ভেতরেই আছে চন্দ্রখানা নামের বাংলাদেশের একটি ছিটমহল যেটি বাংলাদেশেই থেকে যায়। এছাড়া, ভারতের একটি 'থার্ড-অর্ডার' ছিটমহল '[[দাহালা খাগড়াবাড়ি]]' বাংলাদেশ এর পঞ্চগড় জেলার [[দেবীগঞ্জ উপজেলা|দেবীগঞ্জ উপজেলায়]] অবস্থিত। এই ছিটমহলটি বাংলাদেশী গ্রাম 'উপানচৌকি ভজনী #১১০' দ্বারা পরিবেষ্টিত; যা আবার ভারতীয় ছিটমহল'বালাপাড়া খাগড়াবাড়ি' গ্রাম দ্বারা বেষ্টিত। এ বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে দীর্ঘ ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ এবং নাগরিকত্বহীনতা থেকে মুক্তি পান এ ১৬২ টি ছিটমহলের অধিবাসীরা। মূলত, এই সঙ্কট তৈরি হয় অখণ্ড ভারত খণ্ড করার সময়েই। গোড়ায় গলদটা রেখে যান ব্রিটিশ সিরিল [[র‌্যাডক্লিফ রেখা|র‌্যাডক্লিফ]]। তিনিই পাকিস্তান-ভারত সীমানা নির্ধারণ করেন। সেই সঙ্গে সৃষ্টি করেন এক অসহনীয় মানবিক সমস্যার।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.bd-pratidin.com/special/2018/08/28/355910|শিরোনাম=ছিটমহল বিনিময়ঃ এক ঐতিহাসিক অর্জন {{!}} বাংলাদেশ প্রতিদিন|ওয়েবসাইট=Bangladesh Pratidin|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2019-11-06}}</ref>
১২ নং লাইন:
অখণ্ড ভারত বিভক্ত করে [[ভারত]] এবং [[পাকিস্তান]] নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লগ্নে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে [[র‌্যাডক্লিফ রেখা|র‌্যাডক্লিফ]] মানচিত্র বিভাজন থেকেই উদ্ভব ছিটমহলের। এক দেশের ভূখণ্ডে থেকে যায় অন্য দেশের অংশ। এতে এক অসহনীয় মানবিক সমস্যার উদ্ভব হয় । ১৬২ টি ছিটমহল ছিল দুই প্রতিবেশী দেশে। এর মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। আর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ছিল ভারতের অভ্যন্তরে। এসব ছিটমহলে বসবাসকারী জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫১ হাজার। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহলে বসবাসরত লোকসংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহলের লোকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার।২৪ হাজার ২৬৮ একর ভূমি নিয়ে দুই দেশের ছিটমহল ছিল। তার মধ্যে ভারতের জমির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ১৫৮ একর। বাংলাদেশের ছিটমহলের জমির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১১০ একর।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-12-02/news/179045|শিরোনাম=একনজরে ছিটমহল|ওয়েবসাইট=www.prothom-alo.com|সংগ্রহের-তারিখ=2019-11-06}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=জানুয়ারি ২০২১ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> ভারতীয় ছিটমহলগুলোর অধিকাংশই ছিল বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। এসবের মধ্যে [[লালমনিরহাট জেলা|লালমনিরহাটে]] ৫৯ টি, [[পঞ্চগড় জেলা|পঞ্চগড়ে]] ৩৬ টি, [[কুড়িগ্রাম জেলা|কুড়িগ্রামে]] ১২ টি ও [[নীলফামারী জেলা|নীলফামারিতে]] ৪ টি ভারতীয় ছিটমহল ছিল। অপরদিকে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এর মধ্যে ৪৭টি কুচবিহার ও ৪ টি জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত ছিল।
 
== ইতিহাস ==
== ছিটমহলের উৎস ==
একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি অনুসারে, এনক্লেভগুলি শতাব্দী আগে দুই আঞ্চলিক রাজা, কোচ বিহারের রাজা এবং রংপুরের মহারাজার মধ্যে তাস বা দাবা খেলায় অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হত।<ref name=":0" /> ঐতিহাসিক রেকর্ডের ক্ষেত্রে, ছোট অঞ্চল দৃশ্যত কোচ বিহার রাজ্য এবং মুঘল সাম্রাজ্যের মধ্যে ১৭১৩ সালের চুক্তির একটি বিভ্রান্তিকর ফলাফল ছিল। সম্ভবত, রাজ্য এবং মুঘলরা কোন অঞ্চল লাভ বা হারিয়ে যাওয়া কোন সীমানা নির্ধারণ না করে যুদ্ধ শেষ করে।<ref>[[Evgeny Vinokurov]], [http://www.vinokurov.info/downloads/ch6enclavecasestudies.pdf "Theory of Enclaves" (2005)&nbsp;– ''Chapter 6: Enclave stories and case studies, page 117: Cooch Behar''] {{webarchive|url=https://web.archive.org/web/20070928140007/http://www.vinokurov.info/downloads/ch6enclavecasestudies.pdf|date=28 September 2007}}</ref> ফলে [[কুচবিহার রাজ্যে|কুচবিহার রাজ্যের]] কোচ রাজার জমিদারির কিছু অংশ রাজ্যের বাইরের বিভিন্ন থানা পঞ্চগড়, ডিমলা, দেবীগঞ্জ, পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, লালমনিরহাট, ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারিতে অবস্থিত ছিল। ভারত ভাগের পর ওই আট থানা [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্তানের]] অন্তর্ভুক্ত হয়। আর কুচবিহার একীভূত হয় [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] সঙ্গে। ফলে ভারতের কিছু ভূখণ্ড আসে বাংলাদেশের কাছে। আর বাংলাদেশের কিছু ভূখণ্ড যায় ভারতে। এই ভূমিগুলোই ছিল ছিটমহল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-12-02/news/179042|শিরোনাম=মানচিত্রের বাইরে বসবাস|ওয়েবসাইট=www.prothom-alo.com|সংগ্রহের-তারিখ=2019-11-06}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=জানুয়ারি ২০২১ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref>
 
১৯৪৭ সালে বাংলা ও পাঞ্জাবের সীমারেখা টানার পরিকল্পনা করেন [[লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন]]। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্রিটিশ আইনজীবী সিরিল রেডক্লিফকে প্রধান করে সে বছরই গঠন করা হয় সীমানা নির্ধারণের কমিশন। ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই লন্ডন থেকে ভারতে আসেন রেডক্লিফ। মাত্র ছয় সপ্তাহের মাথায় ১৩ আগস্ট তিনি সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। এর তিন দিন পর ১৬ আগস্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় সীমানার মানচিত্র। কোনো রকম সুবিবেচনা ছাড়াই হুট করে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি যথাযথভাবে হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, কমিশন সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তা আর জমিদার, নবাব, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও চা-বাগানের মালিকেরা নিজেদের স্বার্থে দেশভাগের সীমারেখা নির্ধারণে প্রভাব ফেলেছে। আর উত্তরাধিকার সূত্রেই উপমহাদেশের বিভক্তির পর এই সমস্যা বয়ে বেড়াচ্ছে দুই দেশ।
== সীমানা নির্ধারণের সমস্যা ==
১৯৪৭ সালে বাংলা ও পাঞ্জাবের সীমারেখা টানার পরিকল্পনা করেন [[লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন]]। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্রিটিশ আইনজীবী সিরিল রেডক্লিফকে প্রধান করে সে বছরই গঠন করা হয় সীমানা নির্ধারণের কমিশন। ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই লন্ডন থেকে ভারতে আসেন রেডক্লিফ। মাত্র ছয় সপ্তাহের মাথায় ১৩ আগস্ট তিনি সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। এর তিন দিন পর ১৬ আগস্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় সীমানার মানচিত্র।
 
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর রংপুর পূর্ব পাকিস্তানে যোগ দেয়। কুচ বিহার স্টেট, তার ছিট্মহল নিয়ে, একটি [[দেশীয় রাজ্য]] ছিল, যার রাজার হয় ভারত বা পাকিস্তানে যোগদানের সুযোগ ছিল। কুচ বিহার জেলা ১৯৪৯ সালে ভারতের সাথে একত্রিত করা হয়। ১৯৫৮ সালে [[জওহরলাল নেহ্‌রু|জওহরলাল নেহেরু]] এবং [[ফিরোজ খান নুন|ফিরোজ খান নুনের]] মধ্যে একটি চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছিট্মহল বিনিময়ের ইচ্ছা প্রকাশ পায়। কিন্তু এরপর বিষয়টি ভারতে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলায় কাজ করে, এবং সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে জমি হস্তান্তরের জন্য একটি সাংবিধানিক সংশোধনী প্রয়োজন। তাই চুক্তি বাস্তবায়নে সুবিধার্থে নবম সংশোধনী প্রবর্তন করা হয়। [[বেরুবাড়ি|দক্ষিণ বেরুবাড়ি]] ছিট্মহল স্থানান্তরের আপত্তির কারণে এই সংশোধনী পাস করা যায়নি।<ref name=":0" /><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://onelawstreet.com/1960/03/in-re-the-berubari-union-and-exchange-of-enclaves/|শিরোনাম=Berubari Union and Exchange of Enclaves|ওয়েবসাইট=One Law Street|ভাষা=en-US|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20150610003755/http://onelawstreet.com/1960/03/in-re-the-berubari-union-and-exchange-of-enclaves/|আর্কাইভের-তারিখ=10 June 2015|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-25}}</ref> চুক্তি অনুযায়ী বেরুবাড়ীর সীমানা নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভারতের অসহযোগিতায় তা মুখ থুবড়ে পড়ে। ফলে বেরুবাড়ীর দক্ষিণ দিকের অর্ধেক অংশ ও এর ছিটমহলের সুরাহা হয়নি।
কোনো রকম সুবিবেচনা ছাড়াই হুট করে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি যথাযথভাবে হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, কমিশন সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তা আর জমিদার, নবাব, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও চা-বাগানের মালিকেরা নিজেদের স্বার্থে দেশভাগের সীমারেখা নির্ধারণে প্রভাব ফেলেছে। আর উত্তরাধিকার সূত্রেই উপমহাদেশের বিভক্তির পর এই সমস্যা বয়ে বেড়াচ্ছে দুই দেশ।
১৯৫৮ সালের নেহেরু-নুন চক্তি অনুযায়ী বেরুবাড়ীর উত্তর দিকের অর্ধেক অংশ ভারত এবং দক্ষিণ দিকের অর্ধেক অংশ ও এর সংলগ্ন এলাকা পাবে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী বেরুবাড়ীর সীমানা নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ভারতের অসহযোগিতায় তা মুখ থুবড়ে পড়ে। ফলে বেরুবাড়ীর দক্ষিণ দিকের অর্ধেক অংশ ও এর ছিটমহলের সুরাহা হয়নি।
এরপর ১৯৭৪ এর [[মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি|মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির]] পর দুই দেশ ছিটমহলের আলাদা আলাদাভাবে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে। কিন্তু দুই পক্ষের তালিকায় দেখা দেয় গরমিল। পরে ১৯৯৭ সালের ৯ এপ্রিল{{cn}} চূড়ান্ত হয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে।
 
=== চুক্তি ===
এখানে বলে রাখা ভালো, ১৯৫৮ সালে সই হওয়া [[নেহেরু-নুন চুক্তিতে]] ছিটমহল বিনিময়ের উল্লেখ থাকলেও এ ব্যাপারে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সে দেশের সংবিধানের ১৪৩ ধারা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চান। তখন আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধানের সংশোধনীর মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে হবে। পরে ভারতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে সংবিধান সংশোধনী আর জনগণনার অজুহাতে{{cn}} বিলম্বিত হয়েছে ছিটমহল বিনিময়।
১৯৭৪ সালের ১৬ মে [[ইন্দিরা গান্ধী]] ও [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবুর]] রহমানের মধ্যে [[মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি|স্থল সীমান্ত চুক্তি]] স্বাক্ষরিত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.thedailystar.net/forum/2007/october/tin.htm|শিরোনাম=The Tin Bigha corridor 15 years on|ওয়েবসাইট=archive.thedailystar.net|সংগ্রহের-তারিখ=2021-02-25}}</ref> এই চুক্তির অধীনে ভারত বেরুবাড়ি ইউনিয়ন নং ১২ ছিটমহল টিকিয়ে রাখে এবং বাংলাদেশ [[দহগ্রাম ইউনিয়ন|দহগ্রাম- আঙ্গোরপোতা]] ভারতের সাথে ১৭৮ বাই-৮৫ মিটার (৫৮৪ ফুট × ২৭৯ ফুট) করিডোর প্রদান করে, যাকে বলা হয় [[তিনবিঘা করিডোর|তিন বিঘা করিডোর]]। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে দ্রুত এই চুক্তি অনুমোদন করে কিন্তু ভারত তা করতে ব্যর্থ হয়। পশ্চিমবঙ্গের দাইখাতা-৫৬, ত্রিপুরার মুহুরি নদী-বেলোনিয়া এবং আসামের লতিলা-দুমাবাড়ি তিনটি সেক্টরে প্রায় ৬.১ কিলোমিটার (৩.৮ মাইল) ভূমি সীমানার বিষয়টিও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। স্থানীয়দের বিরোধী সত্ত্বেও ১৯৯২ সালে তিন বিঘা করিডোর বাংলাদেশের কাছে লিজ দেওয়া হয়।<ref name=":0" />
 
ছিটমহলের তালিকা ১৯৯৭ সালে দুই দেশ দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। ২০০১ সালে ছিটমহলের তথ্য বিস্তারিত জানার জন্য দুটি যৌথ সীমানা ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। মে ২০০৭ সালে একটি যৌথ আদমশুমারি সম্পন্ন করা হয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত বাংলাদেশের সাথে ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তির জন্য অতিরিক্ত প্রোটোকল স্বাক্ষর করে।<ref>{{cite web|url=http://www.mea.gov.in/Uploads/PublicationDocs/24529_LBA_MEA_Booklet_final.pdf|title=India & Bangladesh Land Boundary Agreement|publisher=Ministry of External Affairs Government of India|access-date=1 March 2015}}</ref> উভয় দেশ ১৬২টি ছিটমহল অদলবদল করার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে, যাতে বাসিন্দাদের জাতীয়তা পছন্দ সুযোগ রয়েছে।<ref name="economist">{{cite magazine|url=http://www.economist.com/node/21015963|date=15 February 2011|title=The land that maps forgot|magazine=The Economist}}</ref><ref>{{cite news|url=https://www.google.com/hostednews/afp/article/ALeqM5jC3MBSdkuCv8RMTee88OerJ2sFAQ?docId=CNG.d83256110765c85aab9e890617af6914.1c1|title=Bangladesh, India to swap 162 land parcels|date=30 August 2011|work=Google News|access-date=30 August 2011|archive-url=https://web.archive.org/web/20140221124357/https://www.google.com/hostednews/afp/article/ALeqM5jC3MBSdkuCv8RMTee88OerJ2sFAQ?docId=CNG.d83256110765c85aab9e890617af6914.1c1|archive-date=21 February 2014|agency=Agence France-Presse}}</ref><ref>{{cite news|url=http://www.ndtv.com/india-news/hope-for-indo-bangladesh-enclaves-467347|title=Hope for Indo-Bangladesh enclaves|date=12 September 2011|work=NDTV|access-date=12 September 2011}}</ref>
 
এখানে বলে রাখা ভালো, ১৯৫৮ সালে সই হওয়া [[নেহেরু-নুন চুক্তিতে]] ছিটমহল বিনিময়ের উল্লেখ থাকলেও এ ব্যাপারে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সে দেশের সংবিধানের ১৪৩ ধারা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চান। তখন আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধানের সংশোধনীর মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে হবে। পরে ভারতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে সংবিধান সংশোধনী আর জনগণনার অজুহাতে{{cn}} বিলম্বিত হয়েছে ছিটমহল বিনিময়।
 
== বেরুবাড়ী ==