'''বর্মী ভাষা''' বা '''মায়ানমারমিয়ানমার ভাষা''' [[চীনা-তিব্বতী ভাষাসমূহ|চীনা-তিব্বতী ভাষা পরিবারের]] [[তিব্বতী-বর্মী ভাষসমূহ|তিব্বতী-বর্মী শাখার]] [[লোলো-বর্মী ভাষাসমূহ|লোলো-বর্মী উপশাখার]] একটি ভাষা। বর্মীভাষী জনগণ ঠিক কবে মায়ানমারে[[মিয়ানমার|মিয়ানমারে]] এসেছিল, তা বলা যায় না। তবে বর্মী ভাষায় লেখা সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় লেখাগুলি খ্রিস্টীয় ১০ম শতক পর্যন্ত পুরনো। ধারণা করা হয় মধ্য মায়ানমারেরমিয়ানমারের নিম্ন উপত্যকাভূমিতে প্রচলিত একটি উপভাষা থেকে আদর্শ বর্মী ভাষার উৎপত্তি ঘটে। বর্তমানের মায়ানমারেরমিয়ানমারের অধিকাংশ জনগণ এই বর্মী ভাষার কোন না কোন আঞ্চলিক উপভাষায় কথা বলেন।
বর্মী ভাষার প্রথমে পালি ও পরে মোন ভাষার (১২শ -১৩শ শতক) প্রভাব পড়ে। এরপর ১৬শ থেকে ১৯শ শতক পর্যন্ত ভাষাটি বিভিন্ন ইউরোপীয় ভাষা যেমন [[পর্তুগিজ ভাষা]], [[ওলন্দাজ ভাষা]], [[ইংরেজি ভাষা]] ও [[ফরাসি ভাষারভাষা]]র সংস্পর্শে আসে। এই ভাষাগুলি কথ্য বর্মী ভাষাকে প্রচুর প্রভাবিত করে, তবে এগুলি লিখিত বর্মী ভাষায় তেমন কোন পরিবর্তন আনেনি। ফলশ্রুতিতে, মায়ানমারেরমিয়ানমারের জনগণ যে আধুনিক কথ্য বর্মী ভাষায় কথা বলেন এবং যে লিখিত ভাষাটি পাঠ্যপুস্তক, সংবাদপত্র, সাহিত্য ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়, তার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। লিখিত ভাষাটিতে প্রচুর পালি শব্দ ব্যবহার করা হয় এবং এমন সমস্ত বাক্য কাঠামো ব্যবহৃত হয় যেগুলির কথ্য ভাষায় দেখা মেলে না বললেই চলে। মায়ানমারেমিয়ানমারে কথ্য ভাষাটির নাম বামা, আর লিখিত ভাষাটির নাম মিয়ানমা। তবে উভয়কে একত্রে বর্মী ভাষাই বলা হয়।
বর্মী ভাষা মায়ানমারেরমিয়ানমারের রাষ্ট্রভাষা। এটি মায়ানমারেরমিয়ানমারের ২ কোটিরও বেশি লোকের মাতৃভাষা। এছাড়াও মায়ানমারেরমিয়ানমারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির প্রায় ৩০ লক্ষ লোক দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বর্মী ভাষায় কথা বলেন। মায়ানমারের বাইরে [[বাংলাদেশ]], [[মালয়েশিয়া]], [[থাইল্যান্ড]], এবং [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে]] ভাষাটি প্রচলিত। [[এথ্নোলগ]] অনুসারে সারা বিশ্বে বর্মীভাষী লোকের সংখ্যা ৩ কোটি ২০ লক্ষ থেকে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ।
মায়ানমারেমিয়ানমারে বর্মী ভাষা সরকারী প্রশাসন, গণমাধ্যম, এবং প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সমস্ত স্তরে ব্যবহৃত হয়।