লোহা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

'''লোহা''' (Iron) একটি ধাতব মৌলিক পদার্থ। এর রাসায়নিক চিহ্ন Fe ,[[পারমাণবিক সংখ্যা]] ২৬,পারমাণবিক ভর ৫৫.৮৫, যোজ্যতা ২ এবং ৩। লোহার ঘনত্ব ৭.৮৫ গ্রাম/সিসি অর্থাৎ পানির থেকে ৭.৮৫ গুণ ভারি। এর গলনাঙ্ক ১৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্ফ‌ুটনাঙ্ক ২৮৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লোহাকে প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। [[আকরিক]] থেকে লোহা নিষ্কাশন করা হয়। লোহার প্রধান আকরিকগুলি হলো , হেমাটাইট (Hematite, Fe₂O₃), ম্যাগনেটাইট (Magnetite, Fe₃O₄),আয়রন পাইরাইটিস (Iron Pyrites, FeS2FeS₂), সিডারাইট (Siderite,FeCO₃)। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রচুর লোহার আকরিক পাওয়া যায়। ভূ-ত্বকে লোহার পরিমাণ শতকরা ৪.১২ ভাগ।

শুষ্ক বায়ুর সঙ্গে লোহা বিক্রিয়া করে না। আর্দ্র বায়ুর মধ্যে লোহা রাখলে কিছু দিনের মধ্যে লোহার ওপরে হলুদ রঙের আস্তরণ পড়ে। একে মরিচা বলে। মরিচা হল পানিযুক্ত ফেরিক অক্সাইড, 2Fe2O32Fe₂O₃, 3H2O।3H₂O। লোহার সঙ্গে বায়ুর অক্সিজেন এবং জলীয় বাষ্পের বিক্রিয়ায় মরিচা উৎপন্ন হয়। বিশুদ্ধ লোহায় মরিচা পড়ে না। বায়ু বা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে লোহাকে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করলে জ্বলে ওঠে এবং ফেরোসোফেরিক অক্সাইড [Fe3O4Fe₃O₄] উৎপন্ন হয়। 3Fe + 2O22O₂ = Fe3O4Fe₃O₄

সাধারণ উষ্ণতায় বিশুদ্ধ লোহার সঙ্গে জলের কোনো বিক্রিয়া হয় না। লোহিত তপ্ত লোহার উপর দিয়ে স্টিম চালনা করলে ফেরোসোফেরিক অক্সাইড এবং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। 3Fe + 4H2O4H₂O = Fe3O4Fe₃O₄ + 4H2↑4H₂↑

৩. ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়াঃ সাধারণ অবস্থায় ক্ষারের সঙ্গে লোহার বিক্রিয়া হয় না। কিন্তু গাঢ় সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডের সঙ্গে লোহা বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ফেরাইট এবং হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। 2Fe + 2NaOH + 2H2O2H₂O = 2NaFeO22NaFeO₂ + 3H2↑

আয়রন পাইরাইটিস (Iron Pyrites, FeS2FeS₂ ) লোহার খনিজ হলেও এর থেকে সুলভে ও সহজে আয়রন নিষ্কাশন করা যায় না। পক্ষান্তরে, সালফিউরিক অ্যাসিডের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আয়রন পাইরাইটিস থেকে SO2SO₂ প্রস্তুত করতে ব্যবহার করা হয়। FeS2FeS₂ -কে অতিরিক্ত বায়ুতে পোড়ালে SO2SO₂ উৎপন্ন হয়। যথা, 4FeS24FeS₂ + 11O211O₂ = 2Fe2O32Fe₂O₃ (ফেরিক অক্সাইড) + 8SO2↑।8SO₂↑। অতএব, আয়রন পাইরাইটিস [FeS2FeS₂] লোহার একটি খনিজ, কিন্তু লোহার আকরিক নয়।