লুডভিগ ফয়ারবাখ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৬ নং লাইন:
| notable_ideas = ধর্ম মানুষের অন্তর্প্রকৃতির বহির্মুখী প্রক্ষেপ
}}
'''লুডভিগ আনড্রেয়াস ফয়ারবাখ''' ({{lang-de|Ludwig Andreas Feuerbach}}) ([[জুলাই ২৮|২৮শে জুলাই]], ১৮০৪ - [[সেপ্টেম্বর ১৩|১৩ই সেপ্টেম্বর]], ১৮৭২) একজন জার্মান বস্তুবাদী দার্শনিক ও নীতিশাস্ত্রজ্ঞ।<ref name="ওদুদ">{{বই উদ্ধৃতি |লেখক=মো. আবদুল ওদুদ |শিরোনাম=রাষ্ট্রদর্শন |প্রকাশক=মনন পাবলিকেশন |তারিখ=দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০১৪ |সংগ্রহের-তারিখ=নভেম্বর, ২০১৬ |অবস্থান=ঢাকা |আইএসবিএন=978-98-43300-90-4 |পাতা=৪৮৯ |উক্তি=}}</ref> [[হেগেল|হেগেলের]] ভাববাদের সমালোচনা এবং ধর্মের মানববাদী ও বস্তবাদী ব্যাখ্যার জন্য ফয়ারবাখ [[ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস]], [[কার্ল মার্কস]] এবং সমসাময়িক অন্যান্য বস্তুবাদী চিন্তাবিদের ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেন।<ref name="কোষ">[[সরদার ফজলুল করিম]]; ''দর্শনকোষ'', [[বাংলা একাডেমী]], ঢাকা, ১৯৭৩ পৃ:১৭৩]</ref> ফয়ারবাকফয়ারবাখ একজন নৃতত্ত্ববিদও বটে। তিনি খ্রিস্টধর্মের বিরোধিতা ও স্বাধীন, সংবেদনক্ষম ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি গোঁড়া ধর্মের বিপরীতে ধর্মীয় মনোবিজ্ঞান প্রস্তাব করেন এবং প্রথম দিককার একটি জার্মান বস্তুবাদী দর্শনের শাখার বিকাশ ঘটান।
 
ফয়ারবাখ জার্মানির বায়ার্ন রাজ্যের লান্ড্‌সহুট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রসিদ্ধ জার্মান আইনবিদ পাউল ফন ফয়ারবাখের চতুর্থ পুত্রসন্তান ছিলেন। তিনি প্রথমে ধর্মশাস্ত্র বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও পরবর্তীতে দার্শনিক হেগেলের অধীনে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছর দর্শনশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি ১৮২৮ সালে এরলাঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন এবং হেগেলীয় আদর্শবাদ পরিত্যাগ করে প্রাকৃতিক বস্তুবাদ অনুসরণ করা শুরু করেন। এরলাঙেনে পড়াশোনা করার দুই বছরের মাথায় তিনি বেনামে তাঁর প্রথম বইটি প্রকাশ করেন যার শিরোনাম ছিল ''গেডাংকেন উ্যবার টোড উন্ড উনষ্টের্বলিখকাইট'' (''Gedanken über Tod und Unsterblichkeit'', "মৃত্যু ও অমরত্ব সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা")। এই গ্রন্থে তিনি ব্যক্তির অমরত্বের ধারণাটিকে আক্রমণ করেন এবং এমন এক ধরনের অমরত্ব প্রস্তাব করেন যাতে মনুষ্য ধর্মগুলি প্রকৃতিতে পুনরায় শোষিত হয়ে যায়। এরপর তিনি ''আবেলার্ড উন্ড হেলোইজে'' (''Abälard und Heloise'', ১৮৩৪) এবং ''পিয়েরে বাইলে'' (''Pierre Bayle'', ১৮৩৮) গ্রন্থ দুইটি প্রকাশ করেন। এরপরে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এগুলি হল ''উ্যবার ফিলোজোফিয়ে উন্ড ক্রিস্টেনটুম'' (''Über Philosophie und Christentum'', "দর্শন ও খ্রিস্টধর্ম প্রসঙ্গে", ১৮৩৯) এবং ''ডাস ভেজেন ডেস ক্রিস্টেনটুম্‌স'' (''Das Wesen des Christentums'', "খ্রিস্টধর্মের মর্মকথা", ১৮৪১)। প্রথমোক্তটিতে তিনি লেখেন যে "খ্রিস্টধর্ম কেবল যৌক্তিক বিশ্বভঙ্গি থেকে নয়, মানবজাতির ইতিহাস থেকেই বিলীন হয়ে গিয়েছে; এটি এখন কেবলই একটি স্থির ধারণামাত্র"। শেষোক্ত গ্রন্থটিতে তিনি যুক্তি দেন যে একজন ব্যক্তি মূলত তাঁর নিজসত্তাকে নিয়েই বেশি চিন্তিত। ঈশ্বরের উপাসনা বাস্তবিকপক্ষে ব্যক্তিসত্তার এক আদর্শ রূপের উপাসনা। ঈশ্বর হল মানবজাতির নিজস্ব অন্তর্মুখী প্রকৃতির আরোপিত বহির্মুখী প্রক্ষেপ মাত্র যাকে অসীমের মর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। তিনি বলেন যে ধর্ম কেবল একটিমাত্র কারণে গ্রহণযোগ্য, আর সেটি হল এটি এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণ করেন। এই গ্রন্থের প্রথম অংশে ফয়ারবাখ "ধর্মের প্রকৃত বা নৃতাত্ত্বিক মর্ম" বিশ্লেষণ করেন। ইশ্বরের "সংবেদনশীল সত্তা", "নৈতিক সত্তা", "প্রেমময় সত্তা" এবং অন্যান্য দিক বিশ্লেষণ করে তিনি যুক্তি দেন যে এগুলি আসলে মানব প্রকৃতির বিভিন্ন চাহিদার প্রত্যুত্তর। গ্রন্থটির দ্বিতীয় অংশে তিনি "ধর্মের মিথ্যা বা ধর্মতাত্ত্বিক মর্ম" বিশ্লেষণ করেন এবং দাবী করেন যে মানব অস্তিত্বের বাইরে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসের ফলে গূঢ় আধ্যাত্মিক কিছুর উন্মোচন ও এর প্রতীকী প্রকাশে বিশ্বাস আনতে হয়, যা কিনা এক ধরনের অবাঞ্ছিত ধর্মীয় বস্তুবাদের বহিঃপ্রকাশ।