একাদশী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Billinghurst (আলোচনা | অবদান)
YOGAMAYEE-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে NahidSultanBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
YOGAMAYEE (আলোচনা | অবদান)
পরিবর্তন করা হয়ছে।
৯৯ নং লাইন:
স্মার্তগণ পুরষোত্তম মাস বা অধিমাসকে ‘মলমাস’ বলে।এই মাসে সমস্ত শুভকার্য পরিত্যাগ করে থাকেন। কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই মাসকে পারমার্থিক মঙ্গলের জন্য অন্য সকল মাস থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ
বলে নির্ণয় করেছেন। তিনি নিজের নমানুসারে এই মাসের নাম ‘পুরুষোত্তম’ মাস রেখেছেন। যুধিষ্ঠির বললেন- হে জনার্দন ! আমি বহুধর্ম ও ব্রতের কথা শুনেছি। এখন পুরুষোত্তম মাসের সর্বপাপবিনাশিনী ও পুন্যদায়িনী শুক্লপক্ষীয় ‘পদ্মিনী’ একাদশীর কথা আমার কাছে বর্ণনা করুন। যা শ্রবন করলে পরমপদ প্রাপ্ত হওয়া যায়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন- দশমীর দিন থেকেই ব্রতের শুরু হয়। কঁসার পাত্রে ভোজন, মসুর, ছোলা, শাক এবং অপরের অন্ন ও আমিষ দশমীর দিন বর্জন করতে হয়। পরের দিন প্রাতঃকৃত্যের পর সুগন্ধী ধূপ, দীপ, চন্দনাদি দিয়ে ভগবানের পূজা করতে হয়। রাত্রিতে জাগ্রত থেকে ভগবানের নাম ও গুণ কীর্ত্তন করতে হয়। এরপর এই ব্রতের একটি ইতিহাস বর্ণনা করলেন। একসময় রাজা কার্তবীর্য লঙ্কাপতি রাবনকে পরাজিত করে তার কারাগারে বন্দী করে রাখে। পুলস্ত মুনি রাজার কাছে রাবনের মুক্তি কামনা করেন। মুনির আজ্ঞায় রাজা রাবনকে মুক্ত করে দেন। এই আশ্চর্যজনক কথা শুনে নারদ পুলস্ত মুনিকে জিজ্ঞাসা করেন- হে মুনিবর! ইন্দ্র সহ সকল দেবতা যেখানে রাবনের কাছে পাজিত হয়েছিল সেখানে কিভাবে কার্তবীর্য রাবণকে পরাজিত করল? কৃপা করে তা বলুন। পুলস্ত মুনি তখন রাবনের কাছে কার্তবীর্যের জন্মরহস্য বর্ণনা করেন। ত্রেতাযুগে হৈহয় বংশে কৃতবীর্য নামে এক রাজা ছিলেন। মহিস্ষ্মতীপুরে তার রাজধানী ছিল। রাজার এক হাজার পত্মী ছিল। কিন্তু রাজ্যভার গ্রহণের মতো কোন পুত্র রাজার ভাগ্যে হয়নি। দেবতাদের আরাধনাতেও সুফল মেলেনি তার। অবশেষে সাধুদের আজ্ঞানুসারে বিভিন্ন ব্রত পালন করলেন। তথাপি রাজা ছিলেন অপুত্রক। মন্ত্রীর উপর রাজ্যভার অর্পণ করে তপস্যায় যাবেন বলে স্থির করলেন রাজা কৃতবীর্য। বরানী মহারাজ হরিশচন্দ্রের কন্যা পদ্মিনী ছিলেন অত্যন্ত পতিব্রতা। স্বামীর সঙ্গে তিনিও তপস্যার জন্য মন্দার পর্বর্তে গমন করলেন। সেখানে তারা দশ হাজার বৎসর কঠোর তপস্যা করলেন। কিন্তু তবুও কৃতবীর্য পুত্রসুখে বঞ্চিতই রইলেন। রাণী পদ্মিনী মহাসাধ্বী অনুসূয়াকে জিজ্ঞাসা করলেন- হে সাধ্বী! পুত্র লাভের জন্য আমার স্বামী দশ হাজার বছর তপস্যা করেও বিফল হয়েছে । এখন যে ব্রত পালনে ভগবান প্রসন্ন হন অতিশ্রেষ্ঠ পুত্র লাভ হয়, এমন কোন উপায় বিধান করুন। পদ্মিনীর প্রার্থনায় অনুসূয়া প্রসন্ন হয়ে বললেন- বত্রিশ মাস অন্তরে এক অধিমাস বা পুরুষোত্তম মাস আসে। এই মাসে পদ্মিণী ও পরমা দুই একাদশী। এই ব্রত পালন করলে পুত্র দাতা ভগবান শীঘ্রই প্রসন্ন হবেন। অনুসূয়ার নির্দেশে পদ্মিনী পরম শ্রদ্ধায় এই একাদশী ব্রত পালন করলেন। সেই ব্রতে সন্তুষ্ঠ হয়ে স্বয়ং ভগবান গরুড় বাহনে আরোহণ করে পদ্মিনীর সম্মূখে উপস্থিত হলেন। ভগবান বললেন- হে ভদ্রে! আমি প্রসন্ন হয়েছি। পুরুষোত্তম মাসের সমান কোন মাস আমার প্রিয় নয়। এই মাসের একাদশী আমার প্রিয়। তুমি সেই ব্রত যথাযথ পালন করেছ। তাই আমি তোমার ইচ্ছানুরূপ বর প্রদান করব। ভগবানের স্তব করে রাণী বললেন- হে ভগবান! আমার স্বামীকে আপনি বরপ্রদান করুন। ভগবান তখন রাজার কাছে এস বললেন- হে রাজেন্দ্র! আপনার অভিলষিত বর প্রার্থনা করুন। মহানন্দে রাজা বললেন- হে জগৎপতি, মধুসূধন! দেবতা, মানুষ, নাগ, দৈত্য, রাক্ষস আদি কেউ তাকে পরাজিত করতে পারবে না, এমন পুত্র আমি প্রার্থনা করি। রাজার প্রার্থনা অনুসারে বরদান করে ভগবান অন্তর্হিত হলেন। রাজা পত্নীসহ সগৃহে ফিরে গেলেন। যথা সময়ে রাণী পদ্মিনীর গর্ভে মহাবলশালী এক পুত্রের জন্ম হয়। মহারাজ কৃতবীর্য পুত্রের নাম রাখে কার্তবীর্য। ত্রিলোক তার সমান কোন বীর ছিলনা । তাই দশানন রাবণ তার কাছে পরাজিত হয়।
 
== মোক্ষদা একাদশী ==
মার্গশীর্ষ মাসের শুক্লাপক্ষের পূণ্যপ্রদায়ী একাদশীকে মোক্ষদা একাদশী বলে।  মোক্ষদা একাদশীর পূণ্যতিথিতে গীতা জয়ন্তী পালন করা হয়। এই দিনেই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতার জ্ঞান প্রদান করেন। ব্রহ্মান্ড পূরাণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও যুধিষ্ঠিরের কথোপকথনে  মোক্ষদা একাদশীর কথা বর্ণিত হয়েছে। শাস্ত্রে এই একাদশী সম্পর্কে নিম্নরূপ কাহিনী পাওয়া যায়।
 
কোন এক সময় চম্পক নগরে বৈখানস নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন বৈষ্ণব গুণে গুণান্বিত। তাঁর রাজ্যে অনেক বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ বাস করতেন। রাজ্যের প্রজাদের তিনি সন্তানের মত ভালবাসতেন। তার প্রজারা ছিল সবাই সমৃদ্ধশালী। তিনি একদিন স্বপ্নে দেখলেন যে, তাঁর প্রয়াত পিতা নরকে পতিত হয়ে নরক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা  রাজ্যের ব্রাহ্মনদের জানালেন এবং বললেন যে পিতাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে দেখে তিনি মানসিকভাবে ভীষণ কষ্টে আছেন।  তখন রাজা রাজ্যের ব্রাহ্মণদের কাছে তার পুর্বপুরুষদের মুক্তির উপায় জানতে চাইলেন। তখন ব্রাহ্মনগণ রাজাকে পর্বথ মুনির আশ্রমে যেতে পরামর্শ দিলেন।  ব্রাহ্মনগণ রাজাকে আরো বললেন যে, সেই ত্রিকালজ্ঞ মহর্ষিই শুধুমাত্র তাঁর পূর্বপুরুষদের মুক্তির উপায় বলতে পারবেন।
 
ব্রাহ্মণদের উপদেশ শ্রবণ করে রাজা বৈখানস তাদের সঙ্গে নিয়ে পর্বথ মুনির আশ্রমে গেলেন। তাঁরা মুনিবরকে দূর থেকে সস্টাঙ্গে প্রনাম করে তাঁর নিকটে  গেলেন। মুনি তখন রাজাকে তাঁর কুশল জিজ্ঞেস করলেন। তখন রাজা মুনিকে তাঁর স্বপ্নের কথা বিস্তারিত বললেন এবং নরক যন্ত্রণা থেকে পিতার মুক্তির উপায় জানতে চাইলেন। মুনি তখন ধ্যানস্থ হয়ে রাজাকে বললেন, তাঁর পিতা পূর্বজন্মের পাপের ফলে নরক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। মুনি রাজাকে আরও  বললেন যে, তিনি যদি মার্গশীর্ষ মাসের শুক্লাপক্ষের পূণ্যপ্রদায়ী মোক্ষদা একাদশী পালন করে সেই পূণ্য পিতাকে অর্পন করেন তাহলে তাঁর পিতা নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
 
মুনির কথা শোনার পর রাজা নিজ গৃহে ফিরে এলেন। এরপর মোক্ষদা একাদশীর পূণ্য তিথিতে তিনি স্ত্রী, পুত্রসহ একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রতের পূণ্যফল তিনি পিতার উদ্দেশ্যে প্রদান করলেন। তখন রাজার পিতা নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বর্গে গমন করলেন।
 
শাস্ত্রে আছে, যে ব্যক্তি এই মঙ্গলদায়িনী মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করেন  তার সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পরে তার মুক্তি লাভ হয়। তাছাড়া এই একাদশীর ব্রতকথা যিনি পাঠ করেন এবং যিনি শ্রবণ করেন, উভয়েই বাজপেয় যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হন।
<ref>http://www.hknet.org.nz/ekadasi-2.htm#Mokshada</ref>
 
<ref>http://hindutempletalk.com/2020/12/24/mokshada-ekadashi-story-and-significance/</ref>
 
== একাদশীর পারন মন্ত্র ==