অটো ফন বিসমার্ক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৩৩ নং লাইন:
 
ধর্ম সংস্কার:-
 
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)~
প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক সম্প্রদায় এই দুই সংমিশ্রণে বিসমার্ক একটা নতুন সম্প্রদায় গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিসমার্ক দু'বার চেষ্টা করেও কৃতকার্য হতে পারেননি। প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বী রাজনীতিকের দ্বারা এটা কখনও সংঘটিত হতে পারেনি। বিসমার্কের এই ধর্ম সমন্বয়ের চেষ্টার ফলে গভর্মেন্টের সাথে জার্মানির ধর্ম সম্প্রদায়ের অত্যন্ত মনোমালিন্য জন্মায়। গভর্নমেন্ট বেতন দিয়ে যে সকল ধর্মযাজক নিয়োগ করতেন বিপক্ষগণ তাদেরকে এক ঘরে করে রাখতেন। ছাত্ররা তাদের বক্তৃতা শ্রবণ করতে পেত না। জনসাধারণ সে সকল ধর্ম মন্দিরে পূজা অর্চনা করতে পারত না। এমনকি সামরিক বিভাগেও এই মনোমালিন্যের প্রভাব সঞ্চারিত হয়েছিল। ধর্ম সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধ ক্রমশই দেশ মধ্যে পরিব্যাপ্ত হয়ে পড়ল। রিচস্টাগে নূতন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব হল। এই বিধি বলে জার্মানি থেকে জেসুইটস ধর্মাবলম্বীদের বিতাড়িত করা হবে। নূতন বিধানমতে রাজা বা গভর্মেন্ট পুরোহিতের শিক্ষক নিয়োগ সম্বন্ধে বহু ক্ষমতা লাভ করলেন। যে জাতিতে জার্মান নন এমন কোন ব্যক্তির ধর্মযাজক রূপে নিযুক্ত হতে পারবেন না। আর যিনি ধর্মযাজক হবেন তাকে প্রাশিয়ার গভারমেন্ট এর দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করতে হবে। তারপর বিবাহ সম্বন্ধে আইন পাকাপাকি হয়ে গেল। প্রত্যেক ধর্মযাজককে বিবাহ করতে হবে। এইরূপে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রভাব জার্মানি থেকে তিরোহিত করার উদ্যোগ হল।
 
অর্থনীতি:-
 
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)[[বিশেষ:অবদান/2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601|2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601|আলাপ]])
জার্মান সাম্রাজ্যে বিনাশুল্কে বাণিজ্যের প্রসার বন্ধ করার জন্য বিসমার্ক প্রানপণ চেষ্টা করতে লাগলেন। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে লৌহ-ব্যয়-সমস্যা গুরুতর হয়ে উঠল। লোহা অপরিমিতরূপে সঞ্চিত হওয়ায় ইংল্যাণ্ডে তার দাম হ্রাস পায়। লৌহজাত দ্রব্যে জার্মানি ভরে গেল। দ্রব্য নির্মাণ করতে যে অর্থ ব্যয় হয়েছিল তারও কম মূল্যে বিক্রি হতে লাগল। এর ফলে বহু কল কারখানার কাজ বন্ধ করতে হল। কারখানার স্বত্বাধিকারীরা সর্বস্বান্ত হয়ে পথে দাঁড়ালেন। শ্রম-শিল্পীরাও বেকার অবস্থায় কালযাপন করতে লাগল। ব্যবসার এইরূপ অবস্থা দেখে বহু ব্যক্তি রিচষ্টাগে আবেদন করল যে প্রচলিত আইন সংশোধিত হোক। শুধু লোহা নয়, অন্যান্য শ্রমশিল্প সম্বন্ধেও অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠল। রাশিয়ায় রেলপথ বিস্তার হাওয়ায় তত্রত্য শস্য সম্ভার জার্মানিতে নিয়ে আসা হচ্ছিল। তাতে দেশজাত শস্যের বিক্রয়াধিক্য কমে গেল। কৃষককুল প্রমাদ গুনল। বিসমার্ক দেখলেন বাণিজ্য শুল্ক রহিত করায় দেশের লোক ক্রমশঃ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে, অথচ গভর্মেন্টের অর্থাগম হচ্ছে না। অধিকন্তু জার্মানির অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে, কিন্তু জার্মানজাত দ্রব্যাদি ইউরোপ, ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় কোন স্থান অধিকার করতে পারছে না। শিল্পীবাণিজ্যের এইরূপ অবস্থা দর্শনে বিসমার্ক বললেন, "বাণিজ্য শুল্ক রহিত করায় আমরা ক্রমশঃ মৃত্যুমুখে অগ্রসর হচ্ছি।" সুতরাং বাণিজ্য-শুল্ক প্রবর্তিত হল।
 
রেলপথ সংস্কার:-
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)~~
 
বিসমার্ক দেখলেন বাণিজ্যের উন্নতি ও সংস্কার করতে গেলে রেলপথের উন্নতি অত্যাবশ্যক। জার্মানিতে অনেকেই রেলপথ খুলেছিলেন। বিসমার্ক সমগ্র রেলপথ গবর্নমেন্টের দ্বারা পরিচালিত করবার চেষ্টা করলেন। কিন্তু  বিভিন্ন রাজ্যের অন্তর্গত রেলপথ গবর্নমেন্টের দ্বারা পরিচালিত করতে আপত্তি করল। শুধু প্রাশিয়ায় বিসমার্কের নীতি-অনুসারে সমগ্র রেলপথ রাজকোষের অর্থে সরকারের অধীনে আসল। বেসরকারি রেলপথ প্রাশিয়ার মধ্যে আর রইল না। তখন রেলের মাশুল কমে গেল, তদ্দ্বারা দ্রব্যাদি আমদানি রপ্তানি করতে ব্যবসায়ীদের সুবিধা হল। এতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্রমশঃ উন্নতির পথে অগ্রসর হল, ঐশ্বর্যও বাড়তে লাগল।
 
উপনিবেশ বিস্তার:-
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)~~
 
অতঃপর বিসমার্ক অন্যত্র জার্মান উপনিবেশ স্থাপনের মনসংযোগ করলেন। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে জার্মান পরিব্রাজকগণ বিসমার্কের নিকট দক্ষিণ আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করার প্রস্তাব করেছিলেন। তত্রত্য অধিবাসীগণ জার্মানদের সাদরে স্থান দান করবে। হয় স্যান্টলুসিয়া, নয় তো ডেলাগোয়া বে, এই উভয়ের এক স্থলে জার্মানির বন্দর স্থাপিত করে করলেই ব্যবসা-বাণিজ্য সুন্দররূপে চলবে। বিসমার্ক তখন এ প্রস্তাব গ্রহণ করেও বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি। কারণ, তিনি ভেবেছিলেন, আফ্রিকার নির্দিষ্ট স্থানে জার্মান উপনিবেশ স্থাপন করতে গেলে ইংল্যান্ডের সাথে গোলমাল বাধতে পারে। ইংরেজের সাথে তিনি বিবাদ করতে প্রস্তুত ছিলেন না। কিন্তু কিছুকাল পর অবস্থার পরিবর্তন ঘটল। জার্মান ঔপনিবেশিকগণ যেখানেই উপনিবেশ স্থাপনের বাসনায় গমন করতেন, ইংরেজ উপনিবেশ তার পাশেই। কাজেই উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা উপস্থিত হতে লাগল। বিসমার্ক প্রথমত ভেবেছিলেন ইংরেজ কর্তৃপক্ষ জার্মান ঔপনিবেশিকগণকে যথেষ্ট সাহায্য করবেন ও উপযুক্ত আশ্রয় দেবেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের ফিজি দ্বীপ অধিকারকালে বিসমার্ক বুঝলেন তাঁর এ আশা পরিপূর্ণ হবে না। অতঃপর বিসমার্ক ঔপনিবেশিকগণকে গভর্মেন্ট থেকে সাহায্য করবার ব্যবস্থা করে দিলেন।
 
সমাজতন্ত্র বিরোধী আইন:-
 
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)[[বিশেষ:অবদান/2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601|2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:2401:4900:314D:4E54:0:6F:7CC4:4601|আলাপ]])
১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে বসন্তকালে জার্মান সম্রাটের প্রাণনাশের একটা ষড়যন্ত্র হয়েছিল। হোবেন্ নামক জনৈক চর্মকার যুবক বার্লিনের রাজপথে সম্রাটের উদ্দেশে গুলিবর্ষণ করেছিল। সমগ্র দেশবাসী এই লোমহর্ষক ব্যাপারে মহা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। যখন অনুসন্ধানে প্রকাশিত হল এই আততায়ী যুবক সোশালিস্ট বা সমাজতন্ত্রবাদী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত তখন জনসাধারণ আরও উত্তেজিত হয়ে উঠল। সকলেই জানতে পারল যে সমাজতন্ত্রবাদীদের মধ্যে উত্তেজনা মূলক কোন বক্তৃতার শ্রবণে এই যুবক সম্রাটের প্রাণ গ্রহণের চেষ্টা করেছিল। বিসমার্ক বহুদিন থেকেই সমাজতন্ত্রবাদীদের সন্দেহের নেত্রে দেখছিলেন। এই অবকাশে তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য বিসমার্ক উঠে পড়ে লাগলেন। একটা নতুন বিধান প্রণয়ন পূর্বক তিনি সমাজতন্ত্রবাদীদের বক্তৃতার পথ একেবারে বন্ধ করে দেবার চেষ্টা করলেন। কিন্তু রিচষ্টাগে প্রস্তাব উপেক্ষিত হল। রক্ষণশীল দলের সভ্যগণ ব্যতীত এর পক্ষে কেউই ভোট দিল না। উক্ত ঘটনার দশ দিন পরে সম্রাটের জীবন গ্রহণের জন্য আবার একটা উপক্রম হল। নোবেল নামক জনৈক উচ্চশিক্ষিত যুবক রাজপথে সম্রাটকে লক্ষ্য করে গুলি নিক্ষেপ করেছিল। সম্রাট এ যাত্রা মস্তকে ও বাহুতে আহত হন। বিসমার্ক এই ঘটনা শ্রবণ মাত্রই বলে উঠলেন, "এবারে রিচষ্টাগ বিলুপ্ত হোক।" হলও তাই। নতুন পার্লামেন্টে নতুন সদস্য নির্বাচিত হল ও সোশালিস্ট সম্প্রদায়কে দমন করার জন্য নতুন উপায়, নতুন বিধান প্রচারিত হল। এবার আইন পাস হয়ে গেল। জার্মান সাম্রাজ্যের যে কোনো স্থানে সমাজতন্ত্রবাদীরা বক্তৃতা অথবা লিখিত প্রবন্ধ প্রচার করবেন পুলিশের সাহায্যে তাদেরকে সে নগর হতে বিতাড়িত করা হবে। এ সম্প্রদায়ের প্রচারিত সংবাদপত্র, পুস্তিকা অথবা গ্রন্থাদি সরকার দ্বারা বাজেয়াপ্ত হল। ভবিষ্যতে এই সম্প্রদায়ের কোন গ্রন্থাদি প্রচারিত হতে পারবে না এই মর্মে বিধান জারি হল। কঠোর বিধান প্রবর্তিত হওয়াতে সমাজতন্ত্রবাদীগণ সংগোপনে তাদের কার্য পরিচালনা করতে লাগলেন।
 
পার্লামেন্টে বিসমার্ক:-
০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)
 
পার্লামেন্টের সদস্যবর্গের সাথে যাতে সদ্ভাব থাকে বিসমার্ক তার ব্যবস্থা করেছিলেন। সপ্তাহে একদিন পার্লামেন্টের যাবতীয় সদস্য তাঁর গৃহে সমবেত হতেন। সকলকেই তিনি নিমন্ত্রণ করতেন। বহু পল্লীবাসী যুবক-সদস্য এই বিচক্ষণ প্রভাবশালী রাজনীতিকের সাথে একাসনে বসে পান, ভোজন, আলাপ, আপ্যায়নে নিজেকে পরম সৌভাগ্যশালী বলে মনে করতেন।
 
ফৌজদারি আইনের কঠোরতা:-
ফৌজদারি আইনের কঠোরতা:-০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)০৬:১৩, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (ইউটিসি)~~
 
বিসমার্কের মন্ত্রিত্বকালে একমাত্র দুর্বলতা ছিল ফৌজদারি কার্যবিধির কঠোরতা। রাজনীতির ক্ষেত্রে যারা তাঁর বিরুদ্ধ মতাবলম্বী ছিলেন তাদেরকে দমন করার জন্য তিনি অতি কঠোর বিধানসমূহের প্রচলন করেছিলেন। সংবাদপত্র সম্পাদকগণ অধিকাংশই প্রায় তাঁকে সম্পাদকীয় হস্তে আক্রমণ করতেন। অনেক সময় তারা অন্যায় পূর্বক বিসমার্কের অবলম্বিত নীতির নিন্দাবাদ করতেন। তিনিও তার প্রতিবাদে কখনও আলস্য করেননি। অনেক সময় তিনি অর্থ দানে কোন কোন সম্পাদককে বশীভূত করে নিজের কার্যের সমর্থন করাতেন। অনেক সময় মাঝে মাঝে প্রতিযোগী সম্পাদককে নানা অজুহাতে বিচারালয়ে আনয়ন করে তাকে দণ্ডিত করাতেন। গুপ্তহত্যার জন্য যারা চেষ্টা করত বা উক্ত প্রকার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত থাকত তিনি তাদের কখনও দয়া করতেন না। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে জনৈক যুবক কিসিঞ্জার নগরে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। ক্যাথলিক-সম্প্রদায়ের উত্তেজনা মূলক বক্তৃতা শ্রবণে সে তাঁর জীবননাশের চেষ্টা করেছিল বলে একরার করে। [বিষয়শ্রেণী:জার্মানির চ্যান্সেলর]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮১৫-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৯৮-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:জার্মান রাজনীতিবিদ]]