|
|FR_total_population_estimate_rank=
|FR_metropole_population_estimate_rank=
| conventional_long_name = ভূটানভুটান সাম্রাজ্য
| native_name = {{resize|150%|འབྲུག་རྒྱལ་ཁབ་}}
| image_flag = Flag of Bhutan.svg
| image_coat = Emblem of Bhutan.svg
| common_name = ভূটানভুটান
| symbol_type = প্রতীক
| national_anthem = ''[[ড্রুক ৎসেন্ধেন]]''<br/>{{small|''বজ্র ড্রাগনের রাজ্য''}}<br/>
| sovereignty_type = [[ভুটানের ইতিহাস|গঠন]]
| sovereignty_note = ১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিকে
| established_event2 = [[Bhutan-India relations|ইন্দো-ভূটানভুটান চুক্তি]]
| established_date1 = ১৭ই ডিসেম্বর, ১৯০৭
| established_event3 = [[Constitutional monarchy|সাংবিধানিক রাজতন্ত্র]]
| HDI_ref = <ref name="HDI">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://hdr.undp.org/sites/default/files/2016_human_development_report.pdf |শিরোনাম=2016 Human Development Report |বছর=2016 |সংগ্রহের-তারিখ=21 March 2017 |প্রকাশক=United Nations Development Programme }}</ref>
| HDI_rank = ১৩২তম
| currency = [[ভূটানিভুটানি ঙুলট্রুম]],
[[ভারতীয় রূপি]] <sup>খ</sup>
| currency_code = BTN
| time_zone = [[ভূটানভুটান মান সময়|বিটিটি]]
| utc_offset = +৬
| utc_offset_DST = +৬
| calling_code = [[+৯৭৫]]
| cctld = [[.bt]]
| footnote_a = ভূটানেরভুটানের জাতিসংঘে যোগদানের সময়, অর্থাৎ ১৯৭০-এর দশকে, সঠিক তথ্যের অভাবে ভূটানেরভুটানের জনসংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ অনুমান করা হয়েছিল। <big><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল = http://www.unhchr.ch/tbs/doc.nsf/0/073f330f9a61c6b0c1256aca004f2ea8?OpenDocument |শিরোনাম = Treaty Bodies Database – Document – Summary Record – Bhutan |প্রকাশক = [[Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights]] (UNHCHR) |তারিখ = 5 June 2001 |সংগ্রহের-তারিখ = 23 April 2009 }}</ref></big> সুতরাং, বার্ষিক ২-৩% বৃদ্ধি ধরে হিসাব করলে ২০০০ সালে ভূটানেরভুটানের জনসংখ্যা হওয়া উচিত ছিল প্রায় ২০ লক্ষ। কিন্তু ২০০৫ সালের জাতীয় জনগণনা অনুযায়ী ভূটানেরভুটানের জনসংখ্যা ছিল ৬,৭২,৪২৫। ফলত, জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগ ১৯৫০ থেকে ২০৫০ পর্যন্ত সম্পূর্ণ সময়ের জন্য সংখ্যাটি ২০০৬ সালের সংশোধনের সময় ঠিক করে নেয়। <big><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল = http://esa.un.org/unpp |শিরোনাম = World Population Prospects |প্রকাশক = [[United Nations]] |বছর = 2008 |সংগ্রহের-তারিখ = 4 December 2009 |আর্কাইভের-ইউআরএল = https://web.archive.org/web/20100107202528/http://esa.un.org/unpp |আর্কাইভের-তারিখ = ৭ জানুয়ারি ২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল = হ্যাঁ }}</ref></big>
|footnote_b = [[ভারতীয় রূপি]]র আদানপ্রদানও বৈধ।
| religion = [[বৌদ্ধ ধর্ম]]
| area_magnitude = 1 E10
}}
'''ভূটানভুটান''' ({{lang-dz|འབྲུག་ཡུལ}} '''ড্রুক ইয়ুল''' আনুষ্ঠানিক নাম '''কিংডম অব ভুটান''' {{bo-textonly|འབྲུག་རྒྱལ་ཁབ་}} ''{{lang|dz-Latn|ড্রুক ইয়ুল খাপ}}'',<ref name=Driem478>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ১=Driem |প্রথমাংশ১=George van |শিরোনাম=Dzongkha {{=}} Rdoṅ-kha |তারিখ=1998 |প্রকাশক=Research School, CNWS |অবস্থান=Leiden |আইএসবিএন=90-5789-002-X |পাতা=478 }}</ref>) [[দক্ষিণ এশিয়া]]র একটি [[রাজতন্ত্র]]। ভূটানেরভুটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা জংখা ভাষায় 'দ্রুক ইয়ুল' বা 'বজ্র ড্রাগনের দেশ' নামে ডাকে। দেশটি [[ভারতীয় উপমহাদেশ|ভারতীয় উপমহাদেশে]] [[হিমালয় পর্বতমালা]]র পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটান উত্তরে [[চীন|চীনের]] [[তিব্বত]] অঞ্চল, পশ্চিমে [[ভারত|ভারতের]] [[সিকিম]] ও [[তিব্বত|তিব্বতের]] [[চুম্বি উপত্যকা]], পূর্বে [[অরুণাচল প্রদেশ]] এবং দক্ষিণে [[আসাম]] ও [[উত্তরবঙ্গ]] দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভুটান [[শব্দ]]টি এসেছে [[সংস্কৃত]] শব্দ "ভূ-উত্থান" থেকে যার অর্থ "উঁচু ভূমি"।সংস্কৃত ভাষায় ভোট বা ভোটান্ত বলতেও ভুুুটান দেশটিকে বোঝানো হয়। ভুটান [[দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা|সার্কের]] একটি সদস্য রাষ্ট্র এবং [[মালদ্বীপ|মালদ্বীপের]] পর [[দক্ষিণ এশিয়া]]র সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ। ভুটানের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর [[থিম্পু]]। [[ফুন্টসলিং]] ভুটানের প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
অতীতে ভূটানভুটান পাহাড়ের উপত্যকায় অবস্থিত অনেকগুলি আলাদা আলাদা রাজ্য ছিল। ১৬শ শতকে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে এর আবির্ভাব ঘটে। ১৯০৭ সাল থেকে ওয়াংচুক বংশ দেশটি শাসন করে আসছেন। ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত ভূটানভুটান একটি বিচ্ছিন্ন দেশ ছিল। ১৯৬০-এর দশকে [[ভারত|ভারতের]] কাছ থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য নিয়ে দেশটি একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। তবে এখনও এটি বিশ্বের সবচেয়ে অনুন্নত দেশগুলির একটি।
== নামকরণ ==
ভূটানেরভুটানের নাম এসেছে সংস্কৃত শব্দ "ভূ-উত্থান" (উচ্চভূমি) হতে। অন্য মতে, ভূটানভুটান এসেছে ভোটস-আন্ত, অর্থাৎ "তিব্বতের শেষ সীমানা" হতে, যেহেতু ভূটানভুটান তিব্বতের ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত।
ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন সময়ে ভূটানভুটান বিভিন্ন নামে খ্যাত ছিলো। যেমন, লো মন (দক্ষিণের অন্ধকারাচ্ছন্ন রাজ্য), লো সেন্দেঞ্জং (সেন্দেন সাইপ্রেস বৃক্ষমন্ডিত দক্ষিণের রাজ্য), লোমেন খাঝি (দক্ষিণের রাজ্য যাতে চারটি প্রবেশ পথ রয়েছে), ও লো মেন জং (দক্ষিণের রাজ্য যেখানে ওষধি বৃক্ষ পাওয়া যায়। <ref name="loc">http://www.loc.gov</ref>
== ইতিহাস ==
ভূটানেরভুটানের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে সেখানে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনীর চেয়ে বেশি সুস্পষ্ট কিছু জানা যায় না। এখানে হয়ত খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দেও বসতি ছিল, তবে ৯ম শতকে এখানে তিব্বতি [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধধর্মের]] প্রচলনের পরেই এলাকাটির সম্পর্কে আরও জানা যায়। সেসময় বহু [[তিব্বত|তিব্বতি]] বৌদ্ধ ভিক্ষু পালিয়ে ভূটানেভুটানে চলে আসেন। ১২শ শতকে এখানে দ্রুকপা কাগিউপা নামের [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধধর্মের]] একটি ধারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটিই বর্তমানে ভূটানেরভুটানের [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধধর্মের]] প্রধান রূপ। ভূটানেরভুটানের বৌদ্ধ মন্দির ও ধর্মশিক্ষালয় দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসের উপর সবসময় প্রভাব ফেলেছে।
১৬১৬ সালে নগাওয়ানা নামগিয়াল নামের এক [[তিব্বত|তিব্বতি]] লামা তিনবার ভূটানেরভুটানের উপর তিব্বতের আক্রমণ প্রতিহত করলে ভূটানভুটান এলাকাটি একটি সংঘবদ্ধ দেশে পরিণত হতে শুরু করে। নামগিয়াল বিরোধী ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলিকে পদানত করেন, একটি ব্যাপক ও সুক্ষ্ম বিবরণসমৃদ্ধ আইন ব্যবস্থা প্রচলন করেন এবং একটি ধর্মীয় ও সিভিল প্রশাসনের উপর নিজেকে একনায়ক বা শাবদ্রুং হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তার মৃত্যুর পর অন্তর্কোন্দল ও গৃহযুদ্ধের কারণে পরবর্তী ২০০ বছর শাবদ্রুঙের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে। ১৮৮৫ সালে উগিয়েন ওয়াংচুক শক্ত হাতে ক্ষমতা প্রয়োগে সক্ষম হন এবং [[ভারত|ভারতের]] ব্রিটিশ প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন।
১৯০৭ সালে উগিয়েন ওয়াংচুক ভূটানেরভুটানের রাজা নির্বাচিত হন এবং ঐ বছর ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার উপাধি ছিল দ্রুক গিয়ালপো বা ড্রাগন রাজা। ১৯১০ সালে রাজা উগিয়েন ও [[ব্রিটিশ]] শক্তি পুনাখার চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ব্রিটিশ ভারত ভূটানেরভুটানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। উগিয়েন ওয়াংচুক ১৯২৬ সালে মারা গেলে তার পুত্র জিগমে ওয়াংচুক পরবর্তী শাসক হন। ১৯৪৭ সালে [[ভারত]] স্বাধীনতা লাভের পর ভূটানকেভুটানকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে গণ্য করে। ১৯৪৯ সালে ভূটানভুটান ও [[ভারত]] একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ভূটানভুটান ভারতের কাছ থেকে বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারে পথনির্দেশনা নেবার ব্যাপারে সম্মত হয় এবং পরিবর্তে [[ভারত]] ভূটানেরভুটানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ১৯৫২ সালে জিগমে ওয়াংচুকের ছেলে জিগমে দর্জি ওয়াংচুক ক্ষমতায় আসেন। তার আমলে ভূটানভুটান পরিকল্পিত উন্নয়নের পথে এগোতে থাকে এবং ১৯৭১ সালে [[জাতিসংঘ|জাতিসংঘের]] একটি সদস্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়। তার সময়েই ভূটানেভুটানে একটি [[জাতীয় সংসদ]], নতুন আইন ব্যবস্থা, রাজকীয় ভূটানিভুটানি সেনাবাহিনী এবং একটি উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৭২ সালে ১৬ বছর বয়সে জিগমে সিঙিয়ে ওয়াংচুক ক্ষমতায় আসেন। তিনি আধুনিক শিক্ষা, সরকারের বিকেন্দ্রীকরণ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, পর্যটন এবং পল্লী উন্নয়নের মত ব্যাপারগুলির উপর জোর দেন। তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি জনগণের সামগ্রিক সুখের একজন প্রবক্তা; উন্নয়ন সম্পর্কে তার দর্শন কিছুটা ভিন্ন এবং এই ভিন্নতার কারণে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিত পেয়েছেন। তার আমলে ধীরে ধীরে ভূটানভুটান গণতন্ত্রায়নের পথে এগোতে থাকে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি রাজার পদ ছেড়ে দেন এবং তার ছেলে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ভূটানেরভুটানের রাজা হন। ২০০৮ সালের ১৮ই জুলাই ভূটানেরভুটানের সংসদ একটি নতুন সংবিধান গ্রহণ করে। এই ঐতিহাসিক দিন থেকে ভূটানেভুটানে পরম রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে এবং ভূটানভুটান একটি সাংবিধানিক [[রাজতন্ত্র]] ও সংসদীয় গণতন্ত্রে পরিণত হয়।
== রাজনীতি ==
ভূটানভুটান হল একটি [[রাজতন্ত্র]] বিশিষ্ট দেশ। এখানে বর্তমানে [[রাজতন্ত্র]] বিদ্যমান। ভূটানেভুটানে অতীতে একটি পরম [[রাজতন্ত্র]] প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। ভূটানেরভুটানের রাজা, যার উপাধি ড্রাগন রাজা, হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। মন্ত্রীদের একটি কাউন্সিল রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনা করে। সরকার ও জাতীয় সংসদ উভয়ের হাতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ন্যস্ত। এছাড়াও যে খেনপো উপাধিবিশিষ্ট দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা রাজার সবচেয়ে কাছের পরামর্শদাতার একজন। ২০০৭ সালে একটি রাজকীয় আদেশবলে রাজনৈতিক দল নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়। বর্তমান সংবিধানে দেশটিতে একটি দুই-দলবিশিষ্ট গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক বর্তমানে ভূটানেরভুটানের রাজা।
<br />
== ভূগোল ==
[[চিত্র:Bhutan CIA WFB 2010 map.png|thumb|300px|ভূটানেরভুটানের মানচিত্র (২০১০ সাল অনুযায়ী)]]
ভূটানেরভুটানের আয়তন ৪৬,৫০০ বর্গকিলোমিটার। [[থিম্পু]] এর রাজধানী শহর এবং এটি দেশের মধ্য-পশ্চিম অংশে অবস্থিত। অন্যান্য শহরের মধ্যে পারো, [[ফুন্টসলিং]], পুনাখা ও বুমথং উল্লেখযোগ্য। ভূটানেরভুটানের ভূপ্রকৃতি পর্বতময়। উত্তরে সুউচ্চ [[হিমালয়]] পর্বতমালা, মধ্য ও দক্ষিণভাগে নিচু পাহাড় ও [[মালভূমি]] এবং দক্ষিণ প্রান্তসীমায় সামান্য কিছু সাভানা তৃণভূমি ও সমভূমি আছে। মধ্যভাগের মালভূমির মধ্যকার উপত্যকাগুলিতেই বেশির ভাগ লোকের বাস। ভূটানেরভুটানের জলবায়ু উত্তরে আল্পীয়, মধ্যে [[নাতিশীতোষ্ণ]] এবং দক্ষিণে উপক্রান্তীয়; জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। স্থলবেষ্টিত দেশ ভূটানেরভুটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি [[সুইজারল্যান্ড|সুইজারল্যান্ডের]] সদৃশ বলে দেশটিকে অনেক সময় '''এশিয়ার সুইজারল্যান্ড''' ডাকা হয়।
বহির্বিশ্ব থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ভূটানভুটান প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অভয়ারণ্য। এখানে বহু হাজার দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। ভূটানেরভুটানের প্রায় ৭০% এলাকা অরণ্যাবৃত। এই অরণ্যই ভুটানের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে চলেছে যুগ যুগ ধরে।
[[File:Bhutan topo en.jpg|300px|thumb|ভূটানেরভুটানের ভৌগোলিক মানচিত্র]]
{{Geographic location
| Centre={{পতাকা আইকন|ভূটানভুটান}} ভূটানভুটান
| North={{পতাকা আইকন|China}} [[চীন]]
| East={{পতাকা আইকন|ভারত}} [[ভারত]]
== অর্থনীতি ==
ভূটানেরভুটানের রাষ্ট্রীয় মুদ্রা গুলট্রাম এবং এর বিনিময় হার ভারতীয় রুপীর সাথে সম্পর্কিত । ভুটানে ভারতীয় রুপীরও প্রচলন রয়েছে। ভূটানেরভুটানের অর্থনীতি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র অর্থনীতিগুলির একটি।
২০১২ পর্যন্ত ভুটানের মাথাপিছু আয় ছিল ২,৪২০ মার্কিন ডলার।
== জনসংখ্যা ==
[[চিত্র:Bhutanese people.jpg|thumb|300px|ওয়াংদি ফোদ্রাং উৎসবে জাতীয় পোষাকে ভূটানিরাভুটানিরা]]
ভূটানেরভুটানের অধিবাসীরা ভূটানিভুটানি নামে পরিচিত। ২০০৫ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভূটানেভুটানে ৬,৭২,৪২৫ জনের বাস। প্রতি বছর জনসংখ্যা ২% হারে বাড়ছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫ জন। ভূটানেভুটানে [[দ্রুপকা জাতি|দ্রুপকা জাতির]] লোক প্রায় ৫০%। এর পরেই আছে [[নেপালি]] (৩৫%) এবং অন্যান্য আদিবাসী বা অভিবাসী জাতি। দেশের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ লোক লামাবাদী বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী। বাকীরা [[ভারত]] ও [[নেপাল|নেপালি]] ধারার [[হিন্দু ধর্ম]] পালন করে। [[জংখা ভাষা|জংখা]] ভূটানেরভুটানের সরকারি ভাষা। এছাড়া বুমথাং-খা, শারচোপ-খা ও [[নেপালি ভাষা]] প্রচলিত। [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি ভাষাতে]] শিক্ষা দেওয়া হয়। ভূটানেরভুটানের সাক্ষরতার হার প্রায় ৬০%। জনগণের প্রায় ৯৪% শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত। বেকারত্বের হার ৩.১% (২০০৫ সালের প্রাক্কলন)।[[জংখা ভাষা]] বা [[ভূটানিভুটানি ভাষা]] ভূটানেরভুটানের সরকারি ভাষা। এছাড়াও এখানে আরও প্রায় ১০টি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে বহু লক্ষাধিক বক্তাবিশিষ্ট [[নেপালি ভাষা]] অন্যতম। আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পে [[ইংরেজি ভাষা]] ব্যবহার করা হয়।
== সংস্কৃতি ==
ভূটানেরভুটানের বাসিন্দারা মূলত [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধ ধর্মে]] বিশ্বাসী। ভুটানের একটি সমৃদ্ধ এবং অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে যা বিশ শতকের মধ্যভাগ অবধি বিশ্বব্যাপী বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে মূলত অক্ষত রয়েছে। পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য। ভুটানদের ঐতিহ্য তার বৌদ্ধ ঐতিহ্যে গভীরভাবে বিস্তৃত। দক্ষিণ অঞ্চলে সর্বাধিক প্রচলিত হিন্দু ধর্ম ভুটানের দ্বিতীয় সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্ম। সরকার দেশের বর্তমান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বজায় রাখার জন্য ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এর জন্য ভুটান কে সর্বশেষ শ্যাংগ্রি-লা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও ভুটানের নাগরিকরা বিদেশ ভ্রমণে ক্ষেত্রে স্বাধীন, অনেক বিদেশী ভুটানকে ভ্রমণযোগ্য হিসেবে দেখে। এটি অজনপ্রিয় গন্তব্য হওয়ার অন্য কারণ হল ব্যয়, যা কঠোর বাজেটের পর্যটকদের জন্য বেশি। প্রবেশাধিকার ভারত, বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য নিখরচায়, তবে অন্য সমস্ত বিদেশিদের একটি ভুটান ট্যুর অপারেটরের সাথে সাইন আপ করতে হবে এবং তারা দেশে থাকতে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ ডলার দিতে হবে, যদিও এই ফি বেশিরভাগ ভ্রমণ, থাকার ব্যবস্থা এবং খাবারের ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে।
== খাদ্য ==
ভূটানেরভুটানের প্রধান খাবার হলো লাল চাল (বাদামী চালের মতো, কিন্তু এতে বাদামী স্বাদ থাকে, ধানের একমাত্র প্রকার যেটি উঁচু এলাকায় জন্মায়।), বাজরা, [[ভুট্টা]] ইত্যাদি। পাহাড়াঞ্চলের খাবারের তালিকায় আছে মোরগ, চমরী গাইয়ের মাংস, শুকনো গরুর মাংস, শুকরের মাংস এবং চর্বি এবং মেষশাবক ইত্যাদি। স্যুপ এবং সিদ্ধ মাংস, চাল, [[ফার্ন]], [[মসুর ডাল]], এবং শুকনো সবজি, লাল মরিচ এবং পনিরের সাথে মশলা ইত্যাদি ভূটানেভুটানে শীতকালের প্রিয় খাবার।
দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে গরু এবং চমরী গাইয়ের দুধের তৈরি মাখন এবং পনির অত্যন্ত জনপ্রিয়, প্রকৃতপক্ষে বেশির ভাগ দুধ দিয়েই মাখন এবং পনির বানানো হয়। জনপ্রিয় পানীয়র মধ্যে আছে: মাখন চা, [[কালো চা]], স্থানীয় ভাবে প্রস্তুতকৃত ''আরা'' (ভাতের মদ) এবং [[বিয়ার]]। জনপ্রিয় মশলার মধ্যে আছে: এলাচ, আদা, থিংগে (সিচুয়ান মরিচ), রসুন, হলুদ, এবং কেওড়া।
যখর কেউ খাবারের জন্য অনুরোধ করে, তখন বলে ''মেশু মেশু,'' এবং ভূটানেরভুটানের ভদ্রতা অনুযায়ী অপরজন বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করে, তখন দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার অনুরোধ করা হয়।
== ভ্রমন ==
ভূটানভুটান ভ্রমন করার জন্য একটি সুন্দর জায়গা ৷ ভূটানেরভুটানের ভূ-প্রকতি প্রাকৃতিক ভাবেই খুব সুন্দর ।
== আরও দেখুন ==
বজ্র ড্রাগনের দেশ নামে পরিচিত ভূটানভুটান এশিয়ার সবচেয়ে সুখি দেশ। ভূটানেরভুটানের রাজার উপাধি ‘ড্রাগন রাজা’। স্থলবেষ্টিত দেশ ভূটানেরভুটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি [[সুইজারল্যান্ড|সুইজারল্যান্ডের]] সদৃশ বলে দেশটিকে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড ডাকা হয়। ভূটানেরভুটানের প্রায় ৭০% এলাকা অরণ্যাবৃত। বহির্বিশ্ব থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ভূটানভুটান প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অভয়ারণ্য। এখানে বহু হাজার দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। ভূটানেরভুটানের রাষ্ট্রীয় মুদ্রা গুলট্রাম এবং এর বিনিময় হার ভারতীয় রুপীর সাথে সম্পর্কিত। ভূটানেরভুটানের সাক্ষরতার হার প্রায় ৬০%। জনগণের প্রায় ৯৪% শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত।
[[জংখা ভাষা]] বা ভূটানিভুটানি ভাষা ভূটানেরভুটানের সরকারি ভাষা। হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষাতেও তাদের দক্ষতা রয়েছে।
== তথ্যসূত্র ==
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.bhutan.gov.bt/ ভূটানভুটান সরকারের ওয়েবসাইট]
* [https://web.archive.org/web/20091026202024/https://www.cia.gov/library/publications/world-leaders-1/world-leaders-b/bhutan-nde.html রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ]
* [https://web.archive.org/web/20161015050559/http://www.bhutannica.org/ ভূটানিকাভুটানিকা]
* [http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/country_profiles/1166513.stm দেশ বৃত্তান্ত] এবং [http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/country_profiles/1171693.stm টাইমলাইন ] [[বিবিসি সংবাদ]] থেকে।
* {{CIA World Factbook link|bt|Bhutan}}
* [http://www.library.gov.bt/misc/bhutan-links.html ভূটানভুটান লিঙ্ক] [[ভূটানেরভুটানের জাতীয় লাইব্রেরী]]
* [https://web.archive.org/web/20120829213752/http://ucblibraries.colorado.edu/govpubs/for/bhutan.htm Bhutan] from ''UCB Libraries GovPubs''
* {{dmoz|Regional/Asia/ভূটানভুটান}}
* {{wikiatlas|ভূটানভুটান}}
* [http://www.tourism.gov.bt/ ভূটানেরভুটানের পর্যটন পরিষদ] সরকারী ওয়েবসাইট।
{{উইকিভ্রমণ}}
* [http://www.mid-day.com/specials/2009/feb/010209-Bhutan-Druk-Highlands-Ema-Datsi-Bhutanese-Cuisine-Travel-DECHEN-PHUG-LHAKHANG.htm 'Datsi in the Druk Highlands,' An introduction to Bhutanese cuisine in Sunday Mid-Day,01-02-2009, by Arjun Razdan]
{{দেশের নিবন্ধ|ভূটানেরভুটানের}}
{{এশিয়া}}
{{দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ}}
[[বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার রাষ্ট্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভূটানভুটান]]
[[বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ এশিয়ার দেশ]]
[[বিষয়শ্রেণী:সার্ক রাষ্ট্র]]
| 