ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
৩৬ নং লাইন:
== ইতিহাস ==
=== প্রারম্ভিক ইতিহাস ===
[[কুমিল্লা সেনানিবাস|কুমিল্লা সেনানিবাসে]] কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্রিগেডিয়ার গোলাম মোহাম্মদ [[কুমিল্লা সেনানিবাস|কুমিল্লা সেনানিবাসের]] সেনা কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে [[কুমিল্লা সেনানিবাস|সেনানিবাসে]] একটি নতুন 'পাবলিক' বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে একমত হন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৬২ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বরে '''ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল''' নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়।<ref name="শৈলাচল-১৯">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=|শিরোনাম=কলেজ প্রতিবেদন|শেষাংশ=উপাধ্যক্ষ|প্রথমাংশ=শ্যামল কুমার শাহা|তারিখ=অক্টোবর ২০১৯|সাময়িকী=শৈলাচল, বার্ষিকি ২০১৯|প্রকাশক=ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস|পৃষ্ঠা=৫৫|সংগ্রহের-তারিখ=}}</ref>
 
প্রতিষ্ঠালগ্নে [[কুমিল্লা জিলা স্কুল|কুমিল্লা জিলা স্কুলের]] কয়েকটি কামরায় অল্প কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কিন্তু পরের বছর ১৯৬৩ সালের জানুয়ারি মাসে [[ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয়|ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের]] (তৎকালীন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট হাই স্কুল) ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর ১ এপ্রিলে ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক ব্যবস্থা চালু করা হলেও অল্প কিছুদিন পর থেকে শুধুমাত্র ছাত্রদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা চালু থাকে।
৫৬ নং লাইন:
অন্যদিকে মার্চ মাসে [[কুমিল্লা সেনানিবাস|কুমিল্লা সেনানিবাসে]] কর্মরত বেঙ্গল রেজিমেন্টকে কৌশলে সেনানিবাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর ফলে ২৯ মার্চ বাঙালি সেনারা [[পশ্চিম পাকিস্তান|পশ্চিম পাকিস্তানি]] সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে ১৪ এসএসআর ইউনিটের সিও শাহপুর খানের নেতৃত্বে সেদিনই কুমিল্লা সেনানিবাসে শুরু হয় [[বাঙালি]] নিধনযজ্ঞ।
 
ফলে বেশিরভাগ বাঙালি সেনা কর্মকর্তা নিহত হলেও কেউ কেউ পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হন। এদিনই পাকিস্তানিরা ১৭ ও ১৮ নম্বর ব্যারাকে বসবাসরত বিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষক এবং তাদের আত্মীয় সহ সর্বমোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুধুমাত্র জনাব আব্রু মিয়া কৌশলে বেঁচে যান।<ref name="শৈলাচল-১৯" />
 
বন্দী শিক্ষক এবং সেনানিবাসের অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাদের মোট ২০০ জনকে মাত্র ৫০জন ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট স্কোয়াশরুম রেখে ব্রাশ ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। গুলিবিদ্ধ একজন অবাঙালি শিক্ষক জ্ঞান ফিরে আসার পর নিজের পরিচয় দিলে সিএমএইচে চিকিৎসা দিয়ে [[পাকিস্তান|পশ্চিম পাকিস্তানে]] প্রেরণ করা হয়।
বন্দী শিক্ষকদের প্রাণ রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের অবাঙালি অধ্যক্ষ লে. কর্নেল আমিলকে অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধের]] পুরো সময়টা জুড়ে প্রতিষ্ঠানটি পাকিস্তানি বাহিনীর বন্দিশিবির হিসেবে ব্যবহৃত হতো। [[কুমিল্লা সেনানিবাস|সেনানিবাসের]] বাঙালি সেনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের স্ত্রী-আত্মীয়সন্তান মিলিয়ে প্রায় ৮০০-৯০০ মহিলাকে বিদ্যালয় ভবনে বন্দি রাখা হয়। ১৯৭১ এর জুনে দখলদার বাহিনী পুনরায় বিদ্যালয় চালু করার চেষ্টা করলেও তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।<ref name="শৈলাচল-১৯" />
 
=== স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস ===
স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটি [[কুমিল্লা সেনানিবাস|কুমিল্লা সেনানিবাসে]] অবস্থানরত [[ভারতীয় সেনাবাহিনী|ভারতীয় সেনাবাহিনীর]] অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। স্বাধীনতার কয়েকদিন পর এই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক বিদ্যালয় ফিরে এসে এই প্রতিষ্ঠানে অবস্থানরত [[ভারতীয় সেনাবাহিনী|ভারতীয় সেনাবাহিনীর]] ৪ কোর-এর অধিনায়ক মেজর জেনারেল সিংয়ের সাথে দেখা করেন। তার অনুমতি পাওয়ার পর শিক্ষকগণ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কক্ষ এবং সেনানিবাসের বিভিন্ন অফিস ঘুরে দেখেন। যুদ্ধকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন লুট হওয়ার সম্পদের বেশিরভাগ সেনানিবাসের বিভিন্ন অফিস থেকে ফিরিয়ে আনেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা [[মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী|জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী]] সাথে যোগাযোগ করলে ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারির মধ্যেই তার নির্দেশে প্রতিষ্ঠান থেকে [[ভারতীয় সেনাবাহিনী|ভারতীয় সেনাবাহিনীকে]] সরিয়ে নেয়া হয়।<ref name="শৈলাচল-১৯" />
 
কিন্তু তৎকালীন ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এই শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের দখলে নিয়ে সেনানিবাসে অবস্থিত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত হওয়ার কথা জানিয়ে দেন। তিনি ১৩ তারিখ প্রতিষ্ঠান দায়িত্বভার নিজের হাতে প্রতিষ্ঠান চালু করার উদ্দেশ্যে ১৪ মিলাদ মাহফিল করে। এই মাহফিলে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাব করলেও মেজর আইনুদ্দিন সহ উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দের তীব্র বিরোধীতায় তা বাতিল হয়। কিন্তু পরদিন ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারিতে তিনি এই স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানটিকে [[ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয়|ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের]] (তৎকালীন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট হাই স্কুল) একটি শাখা হিসেবে পুনরায় চালু করেন।
 
প্রতিষ্ঠানের মৌলিক অস্তিত্বের প্রতি এই হুমকি প্রতিরোধ করতে মেজর আইনুদ্দিনের পরামর্শে প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষক [[মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী|জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর]] সাথে কথা বলতে [[ঢাকা|ঢাকায়]] যান। ঢাকায় [[আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ|আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের]] এক শিক্ষকের পরামর্শে তারা সেনানিবাসে অবস্থিত বিদ্যালয় সমূহের দায়িত্বে থাকা কর্নেল রেজার সাথে মৌলিক অস্তিত্ব ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষার ব্যাপারে পরামর্শ
করেন। তিনি সব কথা শুনে সবচেয়ে বয়োঃজ্যেষ্ঠ শিক্ষক জনাব আব্রু মিয়াকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার নির্দেশ দেন।<ref name="শৈলাচল-১৯" />
 
তারা ঢাকায় ফিরে [[কুমিল্লা সেনানিবাস|কুমিল্লা সেনানিবাসের]] তৎকালীন ব্রিগেড কমান্ডার [[জিয়াউর রহমান|কর্নেল জিয়াউর রহমানের]] (পরবর্তীতে [[বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি|রাষ্ট্রপতি]]) কাছে কর্নেল রেজার দেওয়া একটি পত্র তুলে দেন। পত্রপাঠ করা মাত্রই তিনি ঘোষণা করেন {{cquote|'''''Yes, I shall restart the school.'''''}}<ref name="শৈলাচল-১৯" />
এবং সাথে সাথেই টেলিফোনে তিনি ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার কে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল থেকে [[ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয়|ক্যান্টনমেন্ট হাই স্কুল]] সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
 
তিনি জনাব আব্রু মিয়া ও মেজর অলি আহমদকে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানের চালু এবং শিক্ষার্থী সংগ্রহের নির্দেশ দেন। সকলের ঐক্যমতে [[জিয়াউর রহমান|কর্নেল জিয়াউর রহমানকে]] প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি করা হয়। এমনকি [[জিয়াউর রহমান|কর্নেল জিয়া]] ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল কে একটি গাড়ি উপহার দেন।<ref name="শৈলাচল-১৯" />
 
=== স্বাধীনতা-উত্তর মৌলিক যাত্রা ===