শেখ মুজিবুর রহমান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[পরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Abtahi Lama (আলোচনা | অবদান)
→‎রাজনৈতিক দর্শন: তথ্যসূত্র যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Abtahi Lama (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৪২০ নং লাইন:
=== রাজনৈতিক দর্শন ===
{{কাজ চলছে}}
ব্রিটিশ আমলে ঔপনিবেশিকতাবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে মুজিবের রাজনৈতিক দর্শন। এই সময় তিনি থেকেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। মুসলিম লীগে তিনি ছিলেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী এবং আবুল হাশিমের নেতৃত্বাধীন উপদলে, যারা প্রগতিশীল বলে পরিচিত ছিলেন।<ref name="রওনক"/> তবে মুসলিম লীগের প্রতি দলীয় আনুগত্য অপেক্ষা সোহ্‌রাওয়ার্দীর প্রতি তার ব্যক্তিগত আনুগত্য প্রবল ছিল। [[আবদুল গাফফার চৌধুরী|আবদুল গাফফার চৌধুরীর]] মতে, শেখ মুজিব শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক শিষ্য হিসেবে পরিচিত হলেও তার রাজনৈতিক চরিত্র গড়ে উঠেছিল শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, আবুল হাশেমহাশিম, সুভাষ বসু ও মাওলানা ভাসানীর রাজনীতির প্রভাব বলয়ে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://web.dailyjanakantha.com/details/article/406361/ভাষা-আন্দোলনের-হক-সাহেব-ও-শেখ-সাহেব-দুই/|শিরোনাম=ভাষা আন্দোলনের হক সাহেব ও শেখ সাহেব ॥ দুই॥ {{!}}{{!}} চতুরঙ্গ {{!}}|ওয়েবসাইট=জনকন্ঠ|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2019-06-04|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20190522092342/http://web.dailyjanakantha.com/details/article/406361/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B9%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%AC-%E0%A6%93-%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%96-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%AC-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%87/|আর্কাইভের-তারিখ=২০১৯-০৫-২২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের কর্মী ছিলেন; আবার তিনি যুক্তবঙ্গ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগেও সামিল হন।<ref group="টীকা">অন্নদাশঙ্কর রায় লেখেন: ‘‘শেখ সাহেবকে আমরা প্রশ্ন করি, ‘বাংলাদেশের আইডিয়াটি প্রথম কবে আপনার মাথায় এল?’ ‘শুনবেন?’ তিনি (বঙ্গবন্ধু) মুচকি হেসে বললেন, ‘সেই ১৯৪৭ সালে। আমি সুহরবর্দী (সোহ্‌রাওয়ার্দী) সাহেবের দলে। তিনি ও শরৎচন্দ্র বসু চান যুক্তবঙ্গ। আমিও চাই সব বাঙালীর এক দেশ।... দিল্লী থেকে খালি হাতে ফিরে এলেন সুহরাবর্দী ও শরৎ বোস। কংগ্রেস বা মুসলিমলীগ কেউ রাজী নয় তাঁদের প্রস্তাবে।... তখনকার মতো পাকিস্তান মেনে নিই। কিন্তু আমার স্বপ্ন সোনার বাংলা।... হঠাৎ একদিন রব উঠল, আমরা চাই বাংলাভাষা। আমিও ভিড়ে যাই ভাষা আন্দোলনে। ভাষাভিত্তিক আন্দোলনকেই একটু একটু করে রূপ দিই দেশভিত্তিক আন্দোলনে। পরে এমন এমন একদিন আসে যেদিন আমি আমার দলের লোকদের জিজ্ঞেস করি, আমাদের দেশের নাম কী হবে? কেউ বলে, পাক বাংলা। কেউ বলে, পূর্ব বাংলা। আমি বলি, না বাংলাদেশ। তারপর আমি শ্লোগান দিই, ‘জয়বাংলা’।... ‘জয় বাংলা’ বলতে আমি বোঝাতে চেয়েছিলুম বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির জয় বা সাম্প্রদায়িতকার উর্ধ্বে।’’ [বঙ্গবন্ধু কীভাবে আমাদের স্বাধীনতা এনেছিলেন, মাওলা ব্রাদার্স]</ref><ref name="রওনক" /> অনেক সমালোচকঐতিহাসিক শেখ মুজিবের তৎকালীন জাতীয়তাবাদী অবস্থানকে প্রকৃতপক্ষে ''বাঙালি মুসলমান জাতীয়তাবাদ'' হিসেবে দাবিবর্ণনা করেন।{{cn}} তার নিজের ভাষ্য অনুযায়ী তারা, অর্থাৎ শিক্ষিত বাঙালি মুসলমান সমাজ [[লাহোর প্রস্তাব]] অনুযায়ী বাংলা ও আসাম নিয়ে ভারতের বাইরে পৃথক রাষ্ট্রের ধারণার সমর্থক ছিলেন৷ কিন্তু তৎকালীন বাস্তবতায় মুসলিম লীগের নেতৃত্বে সৃষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে বাঙালি মুসলমানের ভবিষ্যৎ গড়তে বাধ্য হন।{{cn}}<ref name="রওনক"/><ref name= "গোলাম"/>
 
পাকিস্তান সৃষ্টির পর শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যকলাপ পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন, ভাষাকেন্দ্রিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে ঘিরে আবর্তিত হয়। মুসলিম লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আরো অনেকের সাথে শেখ মুজিব এই দল থেকে সরে দাঁড়ান।<ref name= "গোলাম">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন|শেষাংশ=দস্তগীর|প্রথমাংশ=কে.এম গোলাম|বছর=২০১২|প্রকাশক=আদর্শ|অবস্থান=ঢাকা|পাতাসমূহ=১০|আইএসবিএন=978-984-8875-31-5}}</ref> ২৪ বছরের পাকিস্তান আমলের অর্ধেকটা সময় কারাগারে এবং দু-এক বছর ছাড়া পুরোটা সময় জুড়ে বিরোধীদলে থেকেই তিনি কাটিয়ে দেন। ''একক পাকিস্তান'' ধারণার ভঙ্গুরতার বিষয়টি তার লেখা ডায়েরি ও অসংখ্য বক্তৃতায় উঠে এসেছে।{{cn}} পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করছেন এমন অভিযোগ তুলে তাকে প্রায়ই ''পাকিস্তানের দুশমন'', ''ভারতের দালাল'' ইত্যাদি আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
 
পাকিস্তান সৃষ্টির পর শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যকলাপ পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন, ভাষাকেন্দ্রিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে ঘিরে আবর্তিত হয়। মুসলিম লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আরো অনেকের সাথে শেখ মুজিব এই দল থেকে সরে দাঁড়ান।<ref name= "গোলাম">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন|শেষাংশ=দস্তগীর|প্রথমাংশ=কে.এম গোলাম|বছর=২০১২|প্রকাশক=আদর্শ|অবস্থান=ঢাকা|পাতাসমূহ=১০|আইএসবিএন=978-984-8875-31-5}}</ref> ২৪ বছরের পাকিস্তান আমলের অর্ধেকটা সময় কারাগারে এবং দু-এক বছর ছাড়া পুরোটা সময় জুড়ে বিরোধীদলে থেকেই তিনি কাটিয়ে দেন। ''একক পাকিস্তান'' ধারণার ভঙ্গুরতার বিষয়টি তার লেখা ডায়েরি ও অসংখ্য বক্তৃতায় উঠে এসেছে।{{cn}} পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করছেন এমন অভিযোগ তুলে তাকে প্রায়ই ''পাকিস্তানের দুশমন'', ''ভারতের দালাল'' ইত্যাদি আখ্যা দেওয়া হয়েছে।<ref name= "গোলাম"/>
রাজনৈতিক গুরু সোহ্‌রাওয়ার্দীর মতোই শেখ মুজিব ছিলেন পশ্চিমা মডেলের সংসদীয় গণতন্ত্রের নিঃশর্ত সমর্থক। পাকিস্তান আমলের পুরোটা সময় জুড়ে এর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রথম দিকে [[সংসদীয় গণতন্ত্র]] প্রতিষ্ঠা করেন।{{cn}} পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি ক্রমাগত সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন৷ বিশেষ করে পঞ্চাশের দশকে দুইবার [[গণচীন]] সফরে দারিদ্র্য বিমোচন ও বুনিয়াদি উন্নয়নে চীনের সাফল্য প্রদর্শন করে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির প্রতি শেখ মুজিবের আগ্রহ বাড়তে থাকে। তিনি আওয়ামী লীগকে ব্রিটিশ লেবার পার্টির মতো সামাজিক গণতন্ত্রী দল হিসেবে গড়ে তুলতে চাইতেন।{{cn}} তিনি অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সংবিধানের একটি মূলনীতি হিসেবে সমাজতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেন। তবে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে বিরোধীদের দমন-নিপীড়ন ও ''বাকশাল'' প্রবর্তন করে একদলীয় শাসন কায়ম করেন; সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য জেল-জুলুম সহ্য করে শেষে নিজেই তা থেকে সরে যাওয়ায় অনেকে একে আদর্শচ্যুতি হিসেবে অভিহিত করেন।<ref name="JSTOR3" />
 
রাজনৈতিক গুরু সোহ্‌রাওয়ার্দীর মতোই শেখ মুজিব ছিলেন পশ্চিমা মডেলের সংসদীয় গণতন্ত্রের নিঃশর্ত সমর্থক। পাকিস্তান আমলের পুরোটা সময় জুড়ে এর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রথম দিকে [[সংসদীয় গণতন্ত্র]] প্রতিষ্ঠা করেন।<ref name="মানবাধিকার">{{cnবই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=বঙ্গবন্ধুর মানবাধিকার-দর্শন|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=২০১৩|সম্পাদক-শেষাংশ=হোসেন|সম্পাদক-প্রথমাংশ=আবু মোঃ দেলোয়ার|সম্পাদক-শেষাংশ২=উল্লাহ|সম্পাদক-প্রথমাংশ২=মোঃ রহমত|প্রকাশক=জাতীয় মানবাধিকার কমিশন|অবস্থান=ঢাকা|পাতাসমূহ=১–১৯}}</ref> পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি ক্রমাগত সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন৷ বিশেষ করে পঞ্চাশের দশকে দুইবার [[গণচীন]] সফরে দারিদ্র্য বিমোচন ও বুনিয়াদি উন্নয়নে চীনের সাফল্য প্রদর্শন করে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির প্রতি শেখ মুজিবের আগ্রহ বাড়তে থাকে। তিনি আওয়ামী লীগকে ব্রিটিশ লেবার পার্টির মতো সামাজিক গণতন্ত্রী দল হিসেবে গড়ে তুলতে চাইতেন।{{cn}} তিনি অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সংবিধানের একটি মূলনীতি হিসেবে সমাজতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেন।<ref name="মানবাধিকার"/> তবে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে বিরোধীদের দমন-নিপীড়ন ও ''বাকশাল'' প্রবর্তন করে একদলীয় শাসন কায়ম করেন; সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য জেল-জুলুম সহ্য করে শেষে নিজেই তা থেকে সরে যাওয়ায় অনেকে একে আদর্শচ্যুতি হিসেবে অভিহিত করেন।<ref name="JSTOR3" />