ফ্রিডরিখ মিশার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
পরিষ্কারকরণ, রচনাশৈলী
১৮ নং লাইন:
}}
 
'''জোহান্স ফ্রেডরিখ মিশার''' (১৩ আগস্ট ১৮৪৪ - ২৬ আগস্ট ১৮৯৫) একজন সুইস চিকিত্সকচিকিৎসক এবং [[জীববিজ্ঞানী]] ছিলেন। তিনিই প্রথম গবেষক; যিনি [[নিউক্লিক অ্যাসিড]]কে সফলভাবে পৃথকীকরণ করেন।
 
==জীবনী==
মিশার অসংখ্য ফসফেট-সমৃদ্ধ রাসায়নিক উপাদানকে পৃথক করেন। তিনি এর নাম দেন ''নিউক্লিন'' (বর্তমানে [[nucleic acid|নিউক্লিক এসিড]] নামে পরিচিত)। তিনি ১৮৬৯ সালে [[জার্মানী|জার্মানীর]] [[University of Tübingen|টুবিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের]] [[Felix Hoppe-Seyler|ফেলিক্স হোপ-সেইলারের]] পরীক্ষাগারে [[white blood cell|শ্বেত রক্ত কণিকা]] থেকে নিউক্লিক এসিড পৃথক করেন।<ref name="HumGen_Dahm_2008"/> যার ফলে বংশগতির বাহক [[DNA|ডিএনএ]] শনাক্তকরণে নতুন পথের সূচনা হয়। [[Albrecht Kossel|আলব্রেচটআলব্রেখট কসেলও]] পরবর্তীতে নিউক্লিক এসিডকে পৃথক করতে সমর্থ হন।<ref name="Yale_Jones_1953"/> পরবর্তীতে ফ্রেডরিখ মিশার নিউক্লিক এসিড বংশগতির সাথে যুক্ত বলে ধারণা দেন।<ref>[[Bill Bryson]], ''[[A Short History of Nearly Everything]]'', Broadway Books, 2005, p. 500.</ref>
 
মিশারের জন্ম হয় বিজ্ঞানী পরিবারেই। তার পিতা জোহান এফ. মিশার ছিলেন একজন গবেষক এবং তার চাচা উলহেম হেজ ছিলেন বেসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও ফিজিওলজির অধ্যাপক। তিনিইউলহেম হেজ সর্বপ্রথম [[ডেনড্রাইট|ডেনড্রাইটের]] আবিষ্কার করেন<ref name="ডিএনএ"1>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |শেষাংশ1=চিন্ময় |প্রথমাংশ1=সেন |শিরোনাম=ডিএনএ চরিত |সাময়িকী=জিরো টু ইনফিনিটি |তারিখ=১ মার্চ ২০১৬ |পাতাসমূহ=৬৪-৭১ |সংগ্রহের-তারিখ=২৮ নভেম্বর ২০১৮ |প্রকাশক=আবদুল্লাহ আল মাহমুদ}}</ref>।

মিশার বাল্যকাল থেকেই বিজ্ঞানের আবহে বড় হয়ে উঠেন। ছোটবেলায় তিনি বুদ্ধিমান এবং কিছুটা লাজুক ছিলেন। তার সংগীতের প্রতি অনুরাগ ছিল। তিনি বেসেলে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উপর পড়াশুনা করেছেন। ১৮৬৫ সালের গ্রীষ্মে তিনি [[Universityগটিঙেন ofবিশ্ববিদ্যালয়|গটিঙেন Göttingen|গটিংগেনবিশ্ববিদ্যালয়ে]] বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নবিদ এডল্ফ স্টেকারের সাথে জৈব রসায়নের উপর কাজ করেছেন। কিন্তু সেই বছরই তার টাইফয়েড জ্বর হয় এবং জ্বরের কারণে তার পড়াশুনায় বিঘ্ন ঘটে ও শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। তথাপি তিনি ১৮৬৮ সালে চিকিৎসা বিদ্যারচিকিৎসাবিদ্যার উপর স্নাতকোত্তর (MD) সম্পন্ন করেন।<ref name="HumGen_Dahm_2008" />
 
মিশারের মনে হয়েছিল দুর্বল শ্রবণ ক্ষমতা তার চিকিৎসা পেশার অগ্রগতিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে পারে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন শারীরবৃত্তীয় রসায়ন নিয়েই পড়াশুনা করবেন। পরিবারের সম্মতি নিয়েই জার্মানীতে তখনকার বিখ্যাত বিজ্ঞানী [[Felix Hoppe-Seyler|ফেলিক্স হোপ-সেইলারের]] অধীনে বিজ্ঞান সাধনা করার জন্য চলে আসেন। মিশার [[Cell nucleus|কোষের রাসায়নিক]] গঠন জানার জন্য উৎসুক হয়ে উঠেন। মিশার [[lymphocyte|লিম্ফোসাইটের]] উপর গবেষণা করার নিমিত্তে লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থি থেকে কোষ আলাদা করে তার উপর প্রাথমিকভাবে গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু লসিকা গ্রন্থি থেকে লসিকা কোষ আলাদা করা এবং তার থেকে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ লসিকা কোষ পাওয়া একইসাথে কষ্টসাধ্য এবং প্রায় অসম্ভবপর ছিল। হোপ-সেইলার মিশারকে [[neutrophil|নিউট্রোফিল]] নিয়ে পড়াশুনায় উৎসাহিত করেন। কারণ নিউট্রোফিল হচ্ছে [[pus|পুঁজের]] প্রথম ও প্রধান উপাদান; যা সহজে নিকটস্থ হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত সার্জিক্যাল ব্যাণ্ডেজের পুঁজ থেকে পাওয়া সম্ভব। যাইহোক, ব্যাণ্ডেজের কোষের কোনোরুপ ক্ষতিসাধন না করে ধৌত করতে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়।<ref name="HumGen_Dahm_2008"/><ref name="ডিএনএ"1/>
 
গবেষণার শুরুতে মিশার কোষের বিভিন্ন প্রোটিনের উপর আলোকপাত করেন এবং প্রোটিনের শ্রেণিবিভাগ করার চেষ্টা করেন। প্রোটিন নিয়ে গবেষণাকালীন সময়ে লক্ষ্য করেন, যখন দ্রবণে এসিড যুক্ত করা হয় তখন কিছু বস্তু অধঃক্ষিপ্ত হয়। যখন ক্ষার যোগ করা হয় তখন পুনরায় দ্রবীভূত হয়। মিশারের এই লক্ষ্যণীয় বস্তুতিই হলো ডিএনএ। যার নামকরণ সেসময়ে ''নিউক্লিন'' করা হয়েছে।<ref>Miescher, Friedrich (1871) [https://books.google.com/books?id=YJRTAAAAcAAJ&pg=PA441#v=onepage&q&f=false "Ueber die chemische Zusammensetzung der Eiterzellen"] (On the chemical composition of pus cells), ''Medicinisch-chemische Untersuchungen'', '''4''' : 441–460. [https://books.google.com/books?id=YJRTAAAAcAAJ&pg=PA456#v=onepage&q&f=false From p. 456:] "''Ich habe mich daher später mit meinen Versuchen an die ganzen Kerne gehalten, die Trennung der Körper, die ich einstweilen ohne weiteres Präjudiz als lösliches und unlösliches Nuclein bezeichnen will, einem günstigeren Material überlassend.''{{-"}} ("Therefore, in my experiments I subsequently limited myself to the whole nucleus, leaving to a more favorable material the separation of the substances, that for the present, without further prejudice, I will designate as soluble and insoluble nuclear material ('Nuclein').")</ref> তিনি ১৮৬১ সালে তার এই রোমাঞ্চকর আবিষ্কারের কথা চাচা উলহেম হেজকে চিঠির মাধ্যমে জানান, '''<blockquote>লঘু এলকাইল দ্রবণ দ্বারা করা আমার পরীক্ষণে যে নতুন দ্রব পাওয়া গিয়েছে, তা পানিতে দ্রবীভূত হয় না, এসিটিক এসিডে দ্রবীভূত হয় না, উচ্চমাত্রার হাইড্রো ক্লোরিক এসিডের মিশ্রণে দ্রবীভূত হয় না, দ্রবীভূত হয় না লবণ এর দ্রবণে। এবং এটি পরিচিত প্রোটিনের সাথেও মিলে না।'''<ref name="ডিএনএ" 1="" /> </blockquote>নিউক্লিনের উপর বিস্তর গবেষণার পর তিনি নির্ণয় করেন, নিউক্লিনে [[প্রোটিন|প্রোটিনের]] ন্যায় [[সালফার]] নেই কিন্তু [[ফসফরাস]] রয়েছে। [[Felix Hoppe-Seyler|হপার সেইলারও]] উল্লেখ করেন তখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত কোনো বস্তুর সাথে মিশারের আবিষ্কার মিল নেই।<ref name="HumGen_Dahm_2008" />
 
মিশার নিউক্লিনের উৎস হিসেবে [[স্যামন মাছ|স্যামন মাছের]] শুক্রাণুকে নিয়ে পরীক্ষা চালান। তিনি স্যামন মাছের শুক্রাণু থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিউক্লিন পৃথক করতে সমর্থন হন এবং গবেষণার জন্য আরো জটিল প্রটোকল তৈরী করেন। তিনি পূর্বোক্ত গবেষণা পুনরায় করেন এবং নিশ্চিত হন যে, নিউক্লিন শুধুমাত্র [[কার্বন]], [[নাইট্রোজেন]] এবং [[হাইড্রোজেন]] দ্বারা গঠিত। এতে সালফারের কোনো উপস্থিতি নেই বরং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফসফরাস আছে। তিনি স্যামন মাছের শুক্রানুর নিউক্লিনে ফসফরাস অক্সাইডের ভর নির্ধারণ করেন ২২.৫ শতাংশ, যা বর্তমানে নির্ণীত পরিমাণ ২২.৯% এর খুব কাছাকাছি। তিনি এও উল্লেখ করেন ফসফরাস নিউক্লিনের ভিতর নিউক্লিক এসিড হিসেবে থাকে। আরো বলেন নিউক্লিন বহু ক্ষারবিশিষ্ট এক প্রকার জৈব যোগ যাতে কমপক্ষে এমনকি চারটি ক্ষারও থাকে। যা আজকের যুগে প্রমাণিত। তিনি তার ছাত্ররা নিউক্লিক এসিডের রসায়নের উপর বিস্তর গবেষণা করেন, কিন্তু এর কার্যক্রম তারা উৎঘাটন করতে পারেন নি। যাইহোক, তার আবিষ্কারের হাত ধরেই বংশগতির বাহক নিউক্লিক এসিডকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।<ref name="ডিএনএ"1/>
৩৩ ⟶ ৩৫ নং লাইন:
শ্বাস প্রশ্বাসের সময় রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনমাত্রা বর্ণনা করার জন্যও মিশার পরিচিত<ref name="HumGen_Dahm_2008" />
 
৫১ বছর বয়সে ১৮৯৫ সালে [[tuberculosis|যক্ষ্মায়]] আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। [[Tübingen|টুবিংগেনে]] অবস্থিত [[Maxম্যাক্স Planckপ্লাংক Societyসোসাইটি|ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটিরসোসাইটি]]<nowiki/>র একটি পরীক্ষাগার ও [[Basel|বাসেলে]] অবস্থিত গবেষণাগারের নাম; তার নামে নামকরণ করা হয়।<ref name="HumGen_Dahm_2008"/>
 
== আরো দেখুন ==
* [[ফ্রিডরিখ মিশার ইন্সটিটিউট ফর বায়োমেডিকাল রিসার্চ|ফ্রিডরিখ মিশার ইন্সটিটিউট ফর বায়োমেডিকাল রিসার্চ]]
* [[Friedrich Miescher Institute for Biomedical Research]]
==তথ্যসূত্র==
{{সূত্র তালিকা|2|refs=