মেলান্দহ উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
২টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.7
Preetidipto.21 (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৪৯ নং লাইন:
এ অঞ্চলটি শুধু তিনদহের মিলনস্থল ছিল না, অনেক লোকের সাক্ষাৎ, মিলন ও সমাগমের স্থানে পরিণত হয়েছিল সেই প্রাচীন কালেই। তবে বর্তমান মেলান্দহ বাজারটি বসত কামাখ্যা তলায়। আদিপৈত গ্রামের জমিদার-কর্মচারী হরদেব ও রাজচন্দ্র দেব স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় মেলান্দহ বাজারের পত্তন করেন। তখনকার দিনে মেলান্দহ বাজারে দুধ, মাছ, তেল, লবনের মতো খুব সামান্য জিনিসের বেচা কেনা হতো। সে সময় টাকা পয়সার মুদ্রার প্রচলন তেমন হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ‘বিনিময় প্রথা’র মাধ্যমে জিনিসপত্রের আদান-প্রদান হতো। কলের কাপড়ের প্রচলন তখনও শুরু হয়নি। ঘরে ঘরে তুলা থেকে তুলা থেকে চরকায় সুতা তৈরি হতো। ব্যবসায়ীরা তুলা আমদানি করে গ্রামে গ্রামে কাটুনিদের দিয়ে যেত। তারা সুতা কেটে পারিশ্রমিক হিসেবে এক চতুর্থাংশ রেখে বাকি সুতা ব্যবসায়ীদের দিয়ে দিত। আধাসের বা দশ ছটাক সুতায় একটি [[শাড়ি]] বুনানো যেত। গায়ের চাদর বুনতে আরো কম সুতা লাগতো। মানুষের জীবন ছিল কষ্টসাধ্য ও অনাড়ম্বরপূর্ণ। মানুষের নীতি-নৈতিকতা ছিল উন্নত এবং সামাজিক বন্ধন ছিল মজবুত।
 
কথিত আছে, ২৫০ বছর পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদের একটি শাখা নদী ’লৌহজং’ বর্তমান মেলান্দহ বাজারের উপর দিয়ে প্রবাহমানপ্রবহমান ছিল। এই নদীর উভয় তীর ঘনবসতিপূর্ণ ছিল। ভূমিকম্প, নদীভাঙ্গন, বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক কারণে নদীটি ভরাট হয়ে যায়। পরে ম্যালেরিয়া, কলেরা, কালাজ্বর ইত্যাদি সংক্রামক ব্যাধিতে অনেক লোক মারা যায়। অনেকেই স্থানান্তরে চলে যায়। ফলে ক্রমশ স্থানটি লোকবিরল ও জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকদিন পর একদল লোক এসে মেলান্দহের আশেপাশে বসতি স্থাপন করে। আস্তে আস্তে আবার লোকালয় গড়ে ওঠে। জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ শুরু করে। তখন এ অঞ্চলে কয়েকজন বিশিষ্ট জমিদার স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এদের মধ্যে মহিরামকুলের মহিরাম লাহিড়ি ও মালঞ্চার চন্দ্রকান্ত রায়ের নাম উল্লেখযোগ্য। পাচুরপাড়ায় বাস করেত একজন প্রতাপশালী জমিদার। খুব কাছাকাছি ছিল এসব জমিদারি এলাকাগুলো। এসব জমিদারদের অনেক কর্মচারীর প্রয়োজন ছিল। বহুলোক চাকরি ও ব্যবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন শুরু করে। জমিদার মহিরামকুল লাহিড়ির মৃত্যুর পর তাঁর নামে এ অঞ্চলের নাম হয় মহিরামকুল। মহিরামকুলের পূর্বনাম ছিল চন্দ্রকোনা। মেলান্দহ বাজার উন্নয়নে মহিরামকুল জমিদারদের বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁরা মালঞ্চার গোবিন্দপুর বাজার এবং জামালপুর সদরের সকাল বাজারেরও পত্তন করেছিলেন। মহিরামকুলে জমিদারদের কাচারিবাড়ি ও পুকুর এখনও ভগ্নদশায় তাদের স্মৃতিবহন করছে।
 
নবাবি আমলে মেলান্দহ উপজেলা রাণী ভবানীর জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল। কথিত আছে যে, মেলান্দহ অঞ্চলের কোন এক নদীতে জাফর নামের একজন নমদাস দুইজন সঙ্গীকে নিয়ে নদীতে মাছ ধরছিল। এ সময় রাণী ভবানীর দেওয়ান নৌকা করে যাওয়ার সময় তাদের নিকট কর দাবি করলে তারা তিনজনেই এক টাকা করে কর দিতে রাজি হয়। ঐ সময় ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী ঝিনাই নদী তীরের এই অঞ্চলটি জাফরশাহি পরগণা নামে পরিচিতি লাভ করেছিল।