গাজীউদ্দীন হায়দার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

ঢাকার নায়েব নাজিম (১৮৩৪—১৮৪৩)
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Great Hero32 (আলোচনা | অবদান)
নতুন পৃষ্ঠা: {{Infobox royalty | name = গাজীউদ্দীন হায়দার | title = নবাব<br>নওয়াব | image = | image_size = | alt =...
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
(কোনও পার্থক্য নেই)

২০:২৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

গাজীউদ্দীন হায়দার (১৮১৫-১৮৪৩) ছিলেন ঊনিশ শতকের ঢাকা বা জাহাঙ্গীরনগরের ত্রয়োদশ এবং শেষ নায়েব নাজিম। তিনি ছিলেন তার পূর্বসূরী নায়েব নাজিম কামরুদ্দৌলার পুত্র।[১]

গাজীউদ্দীন হায়দার
নবাব
নওয়াব
জাহাঙ্গীরনগরের ১৩তম নায়েব নাজিম
নিয়াবত১৮৩৪-১৮৪৩
পূর্বসূরিকামরুদ্দৌলা
উত্তরসূরিপদ বিলুপ্ত
জন্ম১৮১৫
মৃত্যু১৮৪৩
সমাধি
হোসেনি দালান প্রাঙ্গন
পিতাকামরুদ্দৌলা

জীবনী

গাজীউদ্দীন হায়দার ১৮১৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নায়েব নাজিম কামরুদ্দৌলা ১৮৩৪ সালে (মতান্তরে ১৮৩৬) মৃত্যুবরণ করলে তিনি ঢাকার নায়েব নাজিম পদ গ্রহণকালে ছিলেন নিতান্তই তরুণ। অল্প বয়স্ক হওয়ায় দৃঢ়তার অভাব ও অনভিজ্ঞতার ফলে তিনি তার পিতার অশ্বশালার তত্বাবধায়ক মীর জিওয়ানের দ্বারা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হন। গাজীউদ্দীন ছিলেন আমোদপ্রিয়। তিনি অবসর সময়ে ঘুড়ি উড়ানো, মহিষ ও মুরগির লড়াই ইত্যাদি পছন্দ করতেন। এছাড়াও বিনোদন হিসেবে তার পোষা পাখি, কুকুর ও বিড়ালের বিয়ের উৎসব ও সৎকার অনুষ্ঠান পালন করার কারণে জনগণ তাকে ‘পাগলা নওয়াব’ বললেও পক্ষান্তরে তিনি ছিলেন খুবই দয়ালু, চরম শত্রুর প্রতিও ক্ষমাশীল, দানশীল। তবে তার কিছু অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য ইংরেজ সরকার তার ৪৫০০ টাকার ভাতা বন্ধ করে দেয়ায় কঠিন অর্থনৈতিক সংকট ও বড় অংকের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় তিনি তার সম্পত্তির একাংশ হিন্দু ব্যবসায়ীদের কাছে বন্ধক দেন। তার সম্পত্তির অন্য একাংশ নিলামে বিক্রি করা হলে ঢাকার বসাক তাঁতিরা এ পরিবারের রূপা মোড়ানো জমকালো রাজকীয় ‘হাওদা’ ছাড়াও ঢাকার তৎকালীন ধনী লোকদের নিকট ওই পরিবারের অনেক অতুলনীয় দামী গহনাপত্র বিক্রয় করে দেন যেখান হতে খাজা আলীমুল্লাহ বিখ্যাত দরিয়া-ই-নূর নামে একটি অতি মূল্যবান হীরা ক্রয় করেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন চরম অমিতব্যয়ী যার কারণে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তার জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করে। অবশ্য কিছুকাল পর ব্রিটিশ সরকার গাজীউদ্দীনের ভাতা পুনর্বহাল করে।[১] ১৭৬৫ সাল থেকে নায়েব নাজিম পদটি গাজীউদ্দীন হায়দারের প্রপিতামহ জসরত খানের পরিবারের জন্য বংশানুক্রমিক পদে পরিণত হয়। জসরত খান ১৭৫৫-৬২ এবং ১৭৬৫–১৭৭৮ এ দুই মেয়াদে নায়েব নাজিম পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। জসরত খানের দ্বিতীয় মেয়াদের পরে তার তিন নাতি হাশমত জঙ্গ (১৭৭৮-১৭৮৫), হাশমতের ভ্রাতা নুসরত জঙ্গ (১৭৮৫-১৮২২) এবং কনিষ্ঠ ভ্রাতা শামসুদ্দৌলা (১৮২২-১৮৩১) পরপর নায়েব নাজিম পদে অভিষিক্ত হন। [২] শামসুদ্দৌলা স্থলাভিষিক্ত হন তার পুত্র কামরুদ্দৌলা (১৮৩১-১৮৩৪) দ্বারা এবং কামরুদ্দৌলার স্থলাভিষিক্ত হন  গাজীউদ্দীন হায়দার (১৮৩৪-১৮৪৩)।[৩] ১৭১৭ সালে পদ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে নায়েব নাজিমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জাহাঙ্গীরনগর নিয়াবত শাসন করলেও ১৭৫৭ সালে ভারতে ব্রিটিশ শাসন কায়েম এবং ১৭৬৫ সালে ব্রিটিশরা দেওয়ানি (রাজস্ব ক্ষমতা) লাভের ফলে নায়েব নাজিমরা ছিলেন ১৭৬৫ থেকে ১৮২২ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাহীন। ১৮২২ থেকে ১৮৪৩ সাল পর্যন্ত তাঁরা ছিলেন নিছক পদবি ও সামান্য ভাতার অধিকারী।[৪] গাজীউদ্দীনের আমলে তিনি নিজেও ব্রিটিশদের দ্বারা নিয়োগকৃত তেমনই একজন নামিক পদবীধারী ছিলেন। ১৮৪৩ সালে নিঃসন্তান অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হওয়ায় কোনো উত্তরাধিকারী না থাকায় নায়েব নাজিম পদবী বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং তার সম্পত্তি অপরাপর ধনী ব্যক্তিদের হস্তগত হয়।



মৃত্যু

গাজীউদ্দীন তার আমলের শেষদিকে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন ও তার স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে। ১৮৪৩ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়সে নিঃসন্তান অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হলে ‘নায়েব নাজিম’ পদবি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ইংরেজগণ তাঁকে সামরিক মর্যাদায় দাফন করে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। হোসেনী দালানের বহিরাঙ্গনে পিতার পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।[১][৪]

তথ্যসূত্র

  1. ইসলাম, সিরাজুল (২০১২)। "গাজীউদ্দীন হায়দার"ইসলাম, সিরাজুল; করিম, কেএম। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ 
  2. Allen, Basil Copleston (১৯১২)। Dacca : Eastern Bengal District Gazetteers (ইংরেজি ভাষায়)। Concept Publishing Company। আইএসবিএন 9788172681944 
  3. ইসলাম, সিরাজুল (২০১২)। "নওয়াব"ইসলাম, সিরাজুল; করিম, কেএম। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ 
  4. ইসলাম, সিরাজুল (২০১২)। "নায়েব নাজিম"ইসলাম, সিরাজুল; করিম, কেএম। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ