রোবের্ট কখ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
Zaheen রবার্ট কখ পাতাটিকে রোবের্ট কখ শিরোনামে পুনির্নির্দেশনার মাধ্যমে স্থানান্তর করেছেন: জার্মান নামের সঠিক প্রতিবর্ণীকরণ
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
প্রচলিত আরেকটি বানানের উল্লেখ থাকলো
২০ নং লাইন:
| signature = Robert Koch signature.svg
}}
'''হাইনরিখ হের্মান রোবের্ট কখ'''<ref group="টীকা">এই জার্মান ব্যক্তি বা স্থাননামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে [[উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জার্মান শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ]] শীর্ষক রচনাশৈলী নিদের্শিকাতে ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।</ref>(বানানভেদে '''রবার্ট কখ''') ({{lang-de|Heinrich Hermann Robert Koch}}) (জন্ম ১১ই ডিসেম্বর, ১৮৪৩, ক্লাউস্টহাল, [[হানোফার]], [[জার্মানি]]; মৃত্যু ২৭শে মে, ১৯২০, [[বাডেন-বাডেন]], জার্মানি) একজন [[নোবেল পুরস্কার]] বিজয়ী জার্মান চিকিৎসক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি পরীক্ষাগারে অনেক শ্রম ও যত্ন সহকারে গবেষণাকর্ম সম্পাদন করে [[অণুজীব]]-সংক্রান্ত অধ্যয়ন ও গবেষণাকে আধুনিক [[ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞান|ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞানে]] উন্নীত করেন। তিনি প্রমাণ করে দেখান যে বিশেষ বিশেষ [[জীবাণু]]র কারণে বিশেষ বিশেষ রোগ ঘটে। তাকে ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞানের পিতা হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি [[অ্যানথ্রাক্স]], [[যক্ষ্মা]] ও [[কলেরা]]র মত রোগ সৃষ্টিকারী [[ব্যাকটেরিয়া]]গুলিকে শনাক্ত করেন এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রোগের [[বাহক প্রাণী]]দের আবিষ্কার করেন।
 
কখ ১৮৪৩ সালের ১১ই ডিসেম্বর তারিখে জার্মানির [[হার্ত্‌স পর্বতমালা]]তে অবস্থিত ক্লাউস্টহাল-সেলারফেল্ড নামের একটি খনি শিল্পশহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি [[খনিজ]] পদার্থ, [[উদ্ভিদ]], খুদে প্রাণী ইত্যাদি সংগ্রহ করতেন এবং বিরাট কোনও অভিঅভিযাত্রী হবার স্বপ্ন দেখতেন। ১৮৬২ সালে তিনি [[গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়|গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে]] উচ্চশিক্ষার্থে প্রবেশ করেন এবং সেখানে [[উদ্ভিদবিজ্ঞান]], [[পদার্থবিজ্ঞান]], [[গণিত]] ও [[চিকিৎসাবিজ্ঞান]] নিয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল অভিযান চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা। [[স্নাতক]] হবার পরে কখ চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রথমে তিনি হামবুর্গ সাধারণ হাসপাতালে নবিশী করেন ও পরে মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের একটি কেন্দ্রেও কাজ করেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা দিতে শুরু করেন। হামবুর্গ শহরে তিনি এমি ফ্রাৎসের সাথে পরিচিত হন ও তাকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পেশাগত কাজকর্মের পাশাপাশি তিনি জ্ঞানের আরও বহু বিভিন্ন শাখায় আগ্রহী ছিলেন, যাদের মধ্যে [[পুরাতত্ত্ব]], [[নৃবিজ্ঞান]], পেশাক্ষেত্রের রোগব্যাধি (যেমন [[সীসা]]র বিষক্রিয়া) এবং ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞান নামক নতুন একটি শাস্ত্র ছিল অন্যতম।
যাত্রী হবার স্বপ্ন দেখতেন। ১৮৬২ সালে তিনি [[গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়|গ্যোটিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে]] উচ্চশিক্ষার্থে প্রবেশ করেন এবং সেখানে [[উদ্ভিদবিজ্ঞান]], [[পদার্থবিজ্ঞান]], [[গণিত]] ও [[চিকিৎসাবিজ্ঞান]] নিয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল অভিযান চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা। [[স্নাতক]] হবার পরে কখ চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রথমে তিনি হামবুর্গ সাধারণ হাসপাতালে নবিশী করেন ও পরে মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের একটি কেন্দ্রেও কাজ করেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা দিতে শুরু করেন। হামবুর্গ শহরে তিনি এমি ফ্রাৎসের সাথে পরিচিত হন ও তাকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পেশাগত কাজকর্মের পাশাপাশি তিনি জ্ঞানের আরও বহু বিভিন্ন শাখায় আগ্রহী ছিলেন, যাদের মধ্যে [[পুরাতত্ত্ব]], [[নৃবিজ্ঞান]], পেশাক্ষেত্রের রোগব্যাধি (যেমন [[সীসা]]র বিষক্রিয়া) এবং ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞান নামক নতুন একটি শাস্ত্র ছিল অন্যতম।
 
চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি কখ [[আতশী কাচ]] দিয়ে ক্ষুদ্রাকার বস্তু ও পদার্থ অধ্যয়ন করা শুরু করেন। ২৮তম জন্মদিনে তিনি তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে একটি [[অণুবীক্ষণ যন্ত্র]] উপহার হিসেবে পান। এরপর ১৮৭০-এর দশকে তিনি অ্যানথ্রাক্স রোগের উপরে গবেষণা শুরু করেন। অ্যানথ্রাক্স ছিল উষ্ণ-রক্তের প্রাণীদের জন্য একটি প্রাণঘাতী রোগ। তিনি অ্যানথ্রাক্সের অনেকগুলি জীবাণু শনাক্ত ও আলাদা করেন এবং এগুলির বেশ কিছু ভিন্ন ভিন্ন ফলন তৈরি করেন। এরপর ঐ ফলানো জীবাণুগুলি দিয়ে তিনি সুস্থ প্রাণীর (ইঁদুরের) দেহে সংক্রমণ ঘটান এবং দেখানোর চেষ্টা করেন কোন্‌ জীবাণু কোন্‌ ধরনের সংক্রমণ ঘটায়। তিনি প্রমাণ করে দেখান যে [[অ্যানথ্রাক্স ব্যাসিলাস]] নামের ব্যাকটেরিয়ার জীবন্ত দণ্ড বা রেণুবিশিষ্ট পদার্থ যখন সুস্থ ইঁদুরের রক্তে [[সূচিপ্রয়োগ]] করে প্রবেশ করানো হয়, তখন সেই সুস্থ ইঁদুরের দেহেও অ্যানথ্রাক্স রোগ সৃষ্টি হয়। তিনি পোল্যান্ডের [[ব্রেসলাউ বিশ্ববিদ্যালয়|ব্রেসলাউ বিশ্ববিদ্যালয়ের]] বিজ্ঞানীদের কাছে তার গবেষণার ফলাফল পেশ করেন। এভাবে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মত সন্দেহাতীতভাবে ও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে একটি নির্দিষ্ট জীবাণু একটি নির্দিষ্ট রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। কখই সর্বপ্রথম ব্যাসিলাস পরিবারের অ্যানথ্রাক্স রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া পরীক্ষাগারে আলাদা করে এর জীবনচক্র অধ্যয়ন করে একটি প্রতিরোধী টিকা প্রস্তুত করতে সক্ষম হন। তিনিই প্রথম ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া ও রোগের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক প্রমাণ করেন। কখের গবেষণায় পরিষ্কার হয়ে যায় যে সংক্রামক রোগগুলি কোনও রহস্যময় পদার্থের কারণে নয়, বরং নির্দিষ্ট কিছু অণুজীবের কারণে সৃষ্ট হয়।