ভাষাবিজ্ঞান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নকীব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
Hossain Muhammad Ramzan (আলোচনা | অবদান)
সম্প্রসারণ
৪৭ নং লাইন:
 
পাশ্চাত্যের বাইরে ভারতীয় উপমহাদেশে ভাষাবিষয়ক গবেষণার একটি স্বতন্ত্র ধারা অতি প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান ছিল। সংস্কৃত ব্যাকরণবিদেরা উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের মধ্যে পার্থক্য করেন, এবং গ্রিক ব্যাকরণবিদদের মত বিশেষ্য ও ক্রিয়াপদ ছাড়াও অনুসর্গ ও অব্যয় নামের দুটি পদ আবিষ্কার করেন। ভারতীয় ব্যাকরণবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন [[পাণিনি]] (খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী)। তবে তার বেশ কয়েক শতাব্দী আগে থেকেই ভারতে ব্যাকরণচর্চা শুরু হয়েছিল। পাণিনি-পূর্ব ব্যাকরণবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন যাস্ক (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দী)। যাস্ক তার ব্যাকরণে বিশেষ্য, ক্রিয়া, উপসর্গ ও নিপাতের (অব্যয়) উল্লেখ করেছিলেন। তবে পাণিনির ব্যাকরণেই তার পূর্ববর্তী সমস্ত ভাষাতাত্ত্বিক চিন্তাধারা পূর্ণতা পায় এবং এটি ভবিষ্যতের সমস্ত ভারতীয় ব্যাকরণকে প্রভাবিত করে। তার ব্যাকরণের ওপর ভিত্তি করে কমপক্ষে ১২টি ভিন্ন ব্যাকরণ-তত্ত্বের ধারা ও হাজার খানেক ব্যাকরণ রচিত হয়। ভারতীয় ভাষা গবেষণার কাজ ধ্বনিতাত্ত্বিক ও শব্দের অন্তর্সংগঠন - উভয় দিক থেকেই পাশ্চাত্যের ব্যাকরণের চেয়ে উন্নত বলে গণ্য করা হয়। পাণিনীয় সংস্কৃত ব্যাকরণ সম্বন্ধে বলা হয়ে থাকে যে আজও পৃথিবীর ইতিহাসের আর কোন ভাষার ব্যাকরণে এরকম পুঙ্খানুপুঙ্খতা, অভ্যন্তরীণ সঙ্গতি ও ধারণার সাশ্রয় পরিলক্ষিত হয়নি। ব্লুমফিল্ডের মতে পাণিনির ''অষ্ট্যাধ্যায়ী'' "one of the greatest monuments of human intelligence" অর্থাৎ "মনুষ্য বুদ্ধিমত্তার সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শনের একটি"।<ref>Leonard Bloomfield. ''Language''. ১৯৩৩</ref> এই ব্যাকরণের মূল অংশে প্রায় চার হাজার সূত্র প্রদান করা হয়েছে। কেবল ১৮শ শতকের শেষার্ধে এসেই পাশ্চাত্যের ভাষাতাত্ত্বিকেরা ভারতীয় ব্যাকরণের এই ধারার সাথে প্রথম পরিচয় লাভ করেন।
 
বৈশ্বিক ভাষার উৎসমূলঃ [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এম.এ (১৯১২) ডিগ্রি এবং [[সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়]], [[প্যারিস]] থেকে পি.এইচডি [[ডিগ্রি]] (১৯২৮) অর্জন করে ১৮ ভাষায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠা ডক্টর মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খুঁজতেন বৈশ্বিক ভাষার উৎসমূল। যার ফলশ্রুতিতে ডক্টর শহীদুল্লাহ (বাংলাদেশ স্কুল টেক্সট বুক বোর্ড কর্তৃক ১৯৭৬-৭৭ শিক্ষাবর্ষে নির্ধারিত পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত) তাঁর লিখিত গবেষণাধর্মী নিবন্ধে বৈশ্বিক ভাষার উৎসমূল সম্পর্কে গভীর অনুসন্ধিৎসু এক মন্তব্য করেছিলেন যা বৈশ্বিক ভাষার একক, অভিন্ন উৎসমূলের সন্ধান লাভের জন্য ইঙ্গিতবহ বটে। মন্তব্যটি ছিলঃ "মনে হয় সুদূর অতীতে সাদা কালো একই তাঁবুর বাসিন্দা"।
 
ডক্টর মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহর এই মন্তব্য ভাষার উৎসমূলে পৌঁছার জন্য এক ঐতিহাসিক সেতুবন্ধ মর্মে ভাষা বিজ্ঞানীদের সুচিন্তিত অভিমত। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকবছর পূর্বে ইংরেজী ভাষার উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে ভাষা বিজ্ঞানীদের দাবীঃ ইংরেজী ভাষার উৎসস্থল তুরস্কে। প্রশ্ন উঠতে পারে তুরস্কে কিভাবে ইংরেজী ভাষার উদ্ভব হলো? তুরস্ক কি সর্বপ্রাচীন দেশ? নাকি ইরাক-যেখানে অবস্থিত পৃথিবীর প্রাচীন মানব গোষ্ঠির "বাগদাদ নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর" । তাতে সেমিটিকদেরকে সর্ব প্রাচীন মানব গোষ্ঠি বলা হয়েছে। ডক্টর মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহর ইঙ্গিতমতে, বৈশ্বিক ভাষার উৎসমূল নিহিত রয়েছে এই সেমিটিক জাতিসত্বার মধ্যে। যার কারণে আরবী "Qaba" (কাবা শরীফ), ইংরেজী "Cube" (কিউব-চতুর্ভূজ), ইংরেজী "No" আর আরবী "নাহি" অভিন্ন অর্থবহ। অনুরুপভাবে বাংলা "পথ" (way), আরবী "হদ" আর ইংরেজী "Path" অভিন্ন অর্থজ্ঞাপক বটে। উল্লেখ্য, ভাষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ইংরেজী Alphabet শব্দটি আরবীঃ ﺍ ﺏ ﺖ (আলিফ+বা+তা) এর এককরূপ ( ﺍ=Alpha, ﺏ=be, ﺖ=t) মাত্র। তাছাড়া, রোমান I, II, III, IV, V, VI, VII, VIII, IX এর পরবর্তে বর্তমানে বহুল প্রচলিত ইংরেজী সংখ্যা 1 2 3 4 5 6 7 8 9-কে বলা হয় Arabic Numerals (দেখুনঃ"The term ''Arabic numerals'' may be intended to mean the numerals used in Arabic writing, such as the Eastern Arabic numerals. The ''Oxford English Dictionary'' uses lowercase ''Arabic numerals'' to refer to these digits, and capitalized ''Arabic Numerals'' to refer to the Eastern digits.(Source: Wikipedia)। ইংরেজী সংখ্যা 1 2 3 4 5 6 7 8 9 এই সংখ্যাগুলির Arabic Numerals বলার ঐতিহাসিক কারণ হলো এই সংখ্যাগুলির উদ্ভবস্থল দক্ষিণ আরবের বাগদাদের বায়তুল হিকমায় এবং এই সংখ্যার উদ্ভাবক মুহাম্মাদ মূসা আল খাওয়ারিজমী এই বায়তুল হিকমার অন্যতম প্রধান গবেষক হওয়ায় এই সংখ্যগুলির সাধারণ নামকরণ হয় Arabic Numerals-যা কম্পিউটারের ম্যাথমেটিক ইউনিটের বাইনারী কোডসহ আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ সূত্র উদ্ভাবনে সায়েন্টিফিক ফুয়েল (জ্বালানী) হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
 
উপরোক্ত বর্ণনার আলোকে এটা সুস্পষ্ট প্রতীয়মান যে, "সুদূর অতীতে সাদা কালো মানুষ একই তাঁবুর বাসিন্দা ছিল" ।
 
== ১৯শ শতক ও তুলনামূলক ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান ==