কৃষ্ণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অমর পথিক (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
অমর পথিক-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Nahian-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
১৯৭ নং লাইন:
যৌবনে মথুরায় প্রত্যাবর্তন করে কৃষ্ণ তার মামা কংসের অনুগামীদের দ্বারা সংঘটিত বহু হত্যার ষড়যন্ত্র থেকে আত্মরক্ষা করে কংসকে বধ করেন। তিনি কংসের পিতা উগ্রসেনকে পুনরায় যাদবকুলের রাজা হিসেবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন এবং নিজে সেখানে অন্যতম যুবরাজ হিসেবে অবস্থান করেন।<ref>{{Harvnb|Bryant|2007|p=290}}</ref> এই সময়ে তার সাথে অর্জুন সহ কুরু রাজ্যের অন্যান্য পাণ্ডব রাজপুত্রদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীকালে তিনি যাদবদের নিয়ে দ্বারকা নগরীতে (অধুনা [[গুজরাত]]) চলে আসেন এবং সেখানেই তার রাজত্ব স্থাপন করেন।<ref>{{Harvnb|Bryant|2007|pp=28–29}}</ref>
 
কৃষ্ণ [[বিদর্ভ]] রাজ্যের রাজকন্যা [[রুক্মিণী|রুক্মিণীকে]] তার অনুরোধে শিশুপালের সাথে অনুষ্ঠেয় বিবাহ মণ্ডপ থেকে হরণ করে নিয়ে এসে বিবাহ করেন। এরপরই কৃষ্ণ ১৬১০০ নারীকে নরকাসুর নামক অসুরের কারাগার থেকে উদ্ধার করে তাদের সম্মান রক্ষার্থে তাদের বিবাহ করেন।<ref>Charudeva Shastri, Suniti Kumar Chatterji(1974) [http://books.google.com/books?id=WiAhAAAAMAAJ&q=16108+wives&dq=16108+wives Charudeva Shastri Felicitation Volume, p. 449]</ref><ref>David L. Haberman, (2003) Motilal Banarsidass, [http://books.google.com/books?id=DsRb6gjUa1oC The Bhaktirasamrtasindhu of Rupa Gosvamin, p. 155], {{আইএসবিএন|81-208-1861-X}}</ref> কৃষ্ণের মহিষীদের মধ্যে আটজন ছিলেন প্রধান, যাদের অষ্টভার্যা নামেও অভিহিত করা হয়। এঁরা হলেন [[রুক্মিণী]], [[সত্যভামা]], [[জাম্ববতী]], কালিন্দি, মিত্রবৃন্দা, নগ্নাজিতি, ভদ্রা এবং লক্ষণা।<ref name="কাশীদাসী মহাভারত ২">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://bn.wikisource.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A6%B2_%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AC/%E0%A6%AF%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF_%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA_%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82_%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A6%B2_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%AC|শিরোনাম=যদুবালকদিগের প্রতি ব্রহ্মশাপ এবং শাম্বের মুষল প্রসব, মুষল পর্ব্ব, মহাভারত - কাশীরাম দাস}}</ref><ref>{{Harvnb|Bryant|2007|p=152}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.americanchronicle.com/articles/view/45238|শিরোনাম=The Ashta-Bharyas|শেষাংশ= Aparna Chatterjee|তারিখ=December 10, 2007|কর্ম=[[American Chronicle]]|সংগ্রহের-তারিখ=21 April 2010|আর্কাইভের-ইউআরএল=http://archive.is/2Nel|আর্কাইভের-তারিখ=6 December 2012}}</ref> কৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করে সমস্ত বন্দী নারীদের মুক্ত করেন। তৎকালীন সামাজিক রীতি অনুসারে বন্দী নারীদের সমাজে কোন সম্মান ছিল না এবং তাদের বিবাহের কোন উপায় ছিল না কারণ তারা ইতিপূর্বে নরকাসুরের অধীনে ছিল।<ref>{{Harvnb|Bryant|2007|pp=130–133}}</ref> বৈষ্ণব মতে কৃষ্ণের সমস্ত মহিষীগণই ছিলেন দেবী লক্ষ্মীর অবতার অথবা সেই সব নারী যারা বহু জন্মের তপস্যাবলে কৃষ্ণের স্ত্রী হওয়ার অধিকার লাভ করেছিলেন। এছাড়া তার এক স্ত্রী [[সত্যভামা]] ছিলেন [[রাধা|রাধার]] অংশ<ref>{{Harvnb|Rosen|2006|p=136}}</ref> শ্রীকৃষ্ণের ১৬০০০ অধিক পত্নী ও অষ্টভার্যা সম্পর্কে সঠিক ভিত্তি নেই ৷ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর রচিত ''কৃষ্ণচরিত্র'' প্রবন্ধে শ্রীকৃষ্ণের বহুবিবাহের ভিত্তিহীন তথ্য সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেওয়া আছে ৷ কৃষ্ণচরিত্রে দেখা যায় যে, কৃষ্ণের ১৬০০০ অধিক পত্নী শুধু পুরাণের একটি অংশে সীমাবদ্ধ ৷ শ্রীকৃষ্ণের জীবনের অন্য কোনো কার্যক্ষেত্রে এসবের উল্লেখ নেই ৷ তিনি এটাকে নেহাতই উপকথা বা গল্প বলে উল্লেখ করেন ৷ শ্রীকৃষ্ণের জীবনচরিতে রুক্মিনী ভিন্ন অন্য কোনো পত্নীর কার্যক্রম দেখা যায় না৷
 
যখন যুধিষ্ঠির সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন তিনি সমস্ত মহান রাজাদের সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। যখন তিনি তাদের প্রত্যেককে একে একে সম্মান জ্ঞাপন করতে আরম্ভ করলেন তখন তিনি সর্বপ্রথম কৃষ্ণকে সম্মান জ্ঞাপন করলেন কারণ তিনি কৃষ্ণকেই সমস্ত রাজাদের মধ্যে মহান হিসেবে গণ্য করেছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল রাজারাই তাতে সম্মত হলেও কৃষ্ণের আত্মীয় শিশুপাল তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কৃষ্ণের নিন্দা শুরু করেন। কৃষ্ণ শিশুপালের মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি শিশুপালের একশত অপরাধ ক্ষমা করবেন। তাই যখন শিশুপাল একশত অপরাধ অতিক্রম করলেন তখন তিনি তার বিরাট রূপ ধারণ করে সুদর্শন চক্রের দ্বারা শিশুপালকে বধ করলেন। সেইসময় অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রও দিব্যদৃষ্টি লাভ করে কৃষ্ণের সেই রূপ দর্শন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পুরাণ অনুসারে শিশুপাল এবং দন্তবক্র নামে অপর এক ব্যক্তি পূর্বজন্মে ছিলেন স্বর্গে দেবতা বিষ্ণুর দ্বাররক্ষক জয় ও বিজয়। তারা অভিশপ্ত হয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং আবার বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের দ্বারাই স্বর্গে প্রত্যাগমন করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.mantraonnet.com/shopping/comic-books/gods/krishna-shishupal.html |শিরোনাম=Krishna & Shishupal |প্রকাশক=Mantraonnet.com |তারিখ=2007-06-19 |সংগ্রহের-তারিখ=2011-10-23 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20111002090459/http://www.mantraonnet.com/shopping/comic-books/gods/krishna-shishupal.html |আর্কাইভের-তারিখ=২০১১-১০-০২ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
২০৭ নং লাইন:
যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন যখন উপলব্ধি করলেন যে যাঁরা তার প্রতিপক্ষ তারা তার আত্মীয়বর্গ এবং অত্যন্ত প্রিয়জন তখন তিনি যুদ্ধের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি সমস্ত আশা ত্যাগ করে তার ধনুক গাণ্ডীব নামিয়ে রাখলেন। তখন অর্জুনের মোহ দূর করার জন্য কৃষ্ণ অর্জুনকে সেই ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে উপদেশ দেন যা [[ভগবদ্গীতা]] নামে খ্যাত।<ref>Krishna in the Bhagavad Gita, by Robert N. Minor in {{Harvnb|Bryant|2007|pp=77–79}}</ref>
 
কৃষ্ণ ছিলেন প্রখর বুদ্ধিসম্পন্নকূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তার প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু দূর্যোধনের কূপ্রচেষ্টায় তার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন তিনি ক্রূর কূটনীতিকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। যুদ্ধকালে পিতৃ-পিতামহের বিরুদ্ধে সঠিক মনোবল নিয়ে যুদ্ধ না করার জন্য তিনি অর্জুনের উপর ক্রুদ্ধ হন। একবার তাকে আঘাত করার অপরাধে কৃষ্ণ একটি রথের চাকাকে চক্রে পরিণত করে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। তখন ভীষ্ম সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করে কৃষ্ণকে বলেন তাকে হত্যা করতে। কিন্তু এরপর অর্জুন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন। কৃষ্ণ যুধিষ্ঠির এবং অর্জুনকে নির্দেশ দেন যাতে তারা ভীষ্মের দেওয়া যুদ্ধজয়ের বর ফিরিয়ে দেয়, কারণ ভীষ্ম স্বয়ং সেই যুদ্ধে পাণ্ডবদের প্রতিপক্ষ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ভীষ্মকে এ কথা জানানো হলে তিনি এ কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পেরে কীভাবে তিনি অস্ত্র পরিত্যাগ করবেন সে উপায় পাণ্ডবদের বলে দেন। তিনি বলেন যে, যদি কোন নারী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে তবেই তিনি অস্ত্রত্যাগ করবেন। পরের দিন কৃষ্ণের নির্দেশে শিখণ্ডী, অর্থাৎ যিনি পূর্বজন্মে অম্বা ছিলেন তিনি অর্জুনের সাথে যুদ্ধে যোগদান করেন এবং ভীষ্ম তার অস্ত্রসকল নামিয়ে রাখেন।
 
এছাড়াও কৃষ্ণ ধৃতরাষ্ট্রের জামাতা জয়দ্রথকে বধ করতে অর্জুনকে সহায়তা করেন। জয়দ্রথের কারণেই অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু দ্রোণাচার্যের চক্রব্যূহে প্রবেশ করেও বেরিয়ে আসার উপায় অজ্ঞাত থাকায় কৌরবদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন। কৃষ্ণ কৌরবদের সেনাপতি দ্রোণাচার্যের পতনও সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি ভীমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অশ্বত্থামা নামক একটি হাতিকে বধ করতে এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে দ্রোণাচার্যের পুত্রের নামও অশ্বত্থামা। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে যুধিষ্ঠির দ্রোণাচার্যকে গিয়ে চতুরতার সাথে বলেন যে অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন এবং তারপর খুব মৃদুস্বরে বলেন যে সেটি একটি হাতি। কিন্তু যেহেতু যুধিষ্ঠির কখনও মিথ্যাচার করতেন না তাই দ্রোণাচার্য তার প্রথম কথাটি শুনেই মানসিক ভাবে অত্যন্ত আহত হন ও অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করেন।