বাসন্তী দুলাল নাগচৌধুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎জন্ম ও পরিবার: এই নিবন্ধটি ইংরাজি উইকিপিডিয়ায় বিদ্যমান Basanti Dulal Nagchaudhuri নিবন্ধ থেকে অনুবাদ করা হয়েছে; অবদানকারী সম্পর্কে জানতে ইংরাজি উইকিপিডিয়ার ইতিহাস দেখুন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
 
→‎জন্ম ও পরিবার: সম্প্রসারণ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
২৯ নং লাইন:
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে [[ভারত বিভাজন|ভারত বিভাজনের]] পর ঢাকায় হিন্দুদের বিরুদ্ধে অত্যাচার শুরু হলে তিনি তাঁর পরিবার সহ ভারতে চলে আসেন। তাঁর বাবা ভারতে এসে [[কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়|বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে পদ গ্রহণ করেছিলেন।<ref name=":0" />
 
==প্রথম জীবন==
<references />
ডক্টর নাগচৌধুরী বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি এবং এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এলাহাবাদে তিনি প্রভাবশালী আইনজীবী পরমেশ্বর নারায়ণ হাকসরের পাশাপাশি খ্যাতিমান ভারতীয় পদার্থবিদ মেঘনাদ সাহার সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন এবং তাঁর গবেষণা দলে যোগ দেন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে মেঘনাদ সাহা যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ ক্যাম্পাসে চলে আসেন, নাগচৌধুরীও তাঁর সঙ্গে চলে যান।
 
বিজ্ঞানী সাহার মাধ্যমে তিনি আর্নেস্ট লরেন্সের সংস্পর্শে আসেন এবং পরবর্তীকালে তাঁর সহায়তায় তিনি নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেটের জন্য ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। তাঁর থিসিস উপদেষ্টা ছিলেন আর্নেস্ট লরেন্স। নাগচৌধুরী ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ডক্টরেট শেষ করে ভারতে ফিরে আসেন।
 
===বিবাহ===
নাগচৌধুরী আগ্রার সেন্ট জনস কলেজের এক অধ্যাপকের কন্যা দীপালি নাগের (জন্ম পদবি: ''তালুকদার'') সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দীপালি নাগ একজন প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় কণ্ঠশিল্পী ছিলেন।
 
==কর্মজীবন==
===শিক্ষাবিদ এবং গবেষণা===
১৯৪১ সালে ডক্টরেট শেষ করার পরে নাগচৌধুরী মেঘমাদ সাহার গবেষণা দলে যোগ দিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে ফিরে আসেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স কলেজে অধ্যাপনাকালে যখন সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স (এসআইএনপি) প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন নাগচৌধুরী সেখানে গবেষণার জন্য নিযুক্ত হন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে মেঘনাদ সাহার অবসর গ্রহণের পরে তাঁকে এসআইএনপির পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়।
 
নাগচৌধুরীর গবেষণায় মূল বিষয় ছিল পারমাণবিক আইসোমার, আবেশিত তেজস্ক্রিয়তা, চেরেংকভ রেডিয়েশন এবং নন-থারমাল প্লাজমা। বার্কলেতে ডক্টরেট থাকাকালীন তিনি সাইক্লোট্রন গবেষণার অগ্রগামীদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। ১৯৪১ সালে ভারতে ফিরে আসার পূর্বে মেঘনাদ সাহার সহায়তায় এবং টাটা গ্রুপের অর্থায়নে নাগচৌধুরী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাইক্লোট্রন চৌম্বকের জন্য কিছু অংশ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে, সাইক্লোট্রনের যন্ত্রাংশ বহনকারী দ্বিতীয় জাহাজটি জাপানিরা ডুবিয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে মেঘনাদ সাহা এবং পরে নাগচৌধুরীর নেতৃত্বে গবেষণাদলটি বাকি অংশগুলি নিজেরাই তৈরির কাজ গ্রহণ করেছিল। বাসন্তী দুলাল নাগচৌধুরীকে ভারতের প্রথম সাইক্লোট্রন তৈরির জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
 
মেঘনাদ সাহার পর ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের পালিত অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন; তিনি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ১৯৬১-৬২ খ্রিস্টাব্দে [[ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন]]-এ একজন পরিদর্শন অধ্যাপক ছিলেন এবং লিংকন প্রভাষক হিসাবে মনোনীত হন।
 
===প্রশাসনিক ক্ষেত্রে===
নাগচৌধুরীর বিধানচন্দ্র রায় ও পরমেশ্বর নারায়ণ হাকসারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তিনি ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রিসভা কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন এবং ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সেই দায়িত্বভার পালন করেন। এই সময়কালে, তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (এমওডি) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা পদের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। তিনি ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হন। ১৯৭০-১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ডিআরডিওর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
 
পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান, মন্ত্রিপরিষদ কমিটির সভাপতির ভূমিকা এবং ডিআরডিওর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসাবে তিনি ভারতের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা সম্পর্কে নীতিগত আলোচনায় নিবিড়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্মাইলিং বুদ্ধ পরীক্ষার জন্য অগ্রসর হলে নাগচৌধুরী পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরিচালনা কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। তাঁর নেতৃত্বে ডিআরডিওর বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারে পরীক্ষার জন্য বিস্ফোরক লেন্স বানানো হয়েছিল। পরীক্ষাটি সফলভাবে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়।
 
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য শ্রেণিবদ্ধ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেন। নাগচৌধুরির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে ''প্রজেক্ট ভ্যালিয়েন্ট''-এর সূচনা করা হয়েছিল। এছাড়া তাঁর উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত-পরিসরের ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুতে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর জন্য ''প্রজেক্ট ডেভিল'' প্রকল্পটি [[প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা]] (ডিআরডিএল) পরিচালনা করেছিল। উভয় প্রকল্পই ডিআরডিএল-এর মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং অগ্রগতির অভাবের কারণে ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে বন্ধ হয়ে গেলেও তারা ৮০-র দশকের গোড়ার দিকে সফলভাবে [[সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি]]র ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
 
১৯৭০-৭১ খ্রিস্টাব্দে নাগচৌধুরী একটি কমিটির সভাপতিত্ব করেছিলেন যা ভারতের সামুদ্রিক সুরক্ষা বিষয়াদি পরীক্ষা করে। এই কমিটি ভারতের সুবিশাল উপকূলরেখায় টহল দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা, অবৈধ কার্যকলাপ চিহ্নিতকরণের জন্য উপকূলীয় মাছ ধরার জাহাজের একটি রেজিস্ট্রি স্থাপন এবং অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত জাহাজগুলিকে বাধা দেওয়ার জন্য একটি সক্ষম এবং সুসজ্জিত বাহিনী প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করে। পরবর্তীকালে কমিটির সুপারিশের ফলে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে রুস্তমজী কমিটির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়, যার ফলে [[ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী]] প্রতিষ্ঠিত হয়।