পূর্ব পাকিস্তান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৬৯ নং লাইন:
পশ্চিম পাকিস্তানের প্রভাব ও স্বৈর দৃষ্টিভঙ্গীর বিরূদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ ছিল [[মাওলানা ভাসানী|মাওলানা ভাসানীর]] নেতৃত্বে [[আওয়ামী মুসলিম লীগ|আওয়ামী মুসলিম লীগের]] প্রতিষ্ঠা। ১৯৪৯ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নিবার্চনে বিজয় এবং ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসক জেনারেল আইয়ুব খানকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে [[সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ)|সম্মিলিত বিরোধী দল]] বা 'কপ'-প্রতিষ্ঠা ছিল পাকিস্তানী সামরিক শাসনের বিরূদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানী রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বমূলক আন্দোলনের মাইলফলক। পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকারের প্রশ্ন ১৯৫০-এর মধ্যভাগ থেকে উচ্চারিত হতে থাকে। ১৯৬০ দশকের মাঝামাঝি থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ধারণাটি প্রকৃষ্ট হতে শুরু করে। ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে [[আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা]] দায়ের করা হয়। ১৯৬৯-এ [[আইয়ুব খান|আইয়ুব খানের]] পতন হয় তবে সামরিক শাসন অব্যাহত থাকে। ১৯৭০-এ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। [[আওয়ামী লীগ]] এ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে এবং পাকিস্তানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনৈতিকদের ষড়যন্ত্রের কারণে প্রেসিডেন্ট জেনারেল [[ইয়াহিয়া খান]] [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবের]] নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর থেকে বিরত থাকেন। লেখা
 
=== পশ্চিম পাকিস্তানীদের বৈষম্যমূলক আচরণ ===
== ইতিহাস ==
পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাস মূলত: পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের হাতে নিগ্রহ ও শোষণের ইতিহাস যার অন্য পিঠে ছিল ১৯৫৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসন।
 
=== পশ্চিম পাকিস্তানীদের বৈষম্যমূলক আচরণ ===
 
'''ক)''' '''সামাজিক বৈষম্য''' ''':'''
৭৮ ⟶ ৭৫ নং লাইন:
*ধর্মীয় ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য : পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ইসলামী সামাজিক ব্যবস্থা চালু থাকলেও ইসলাম সম্পর্কে দুই অংশের জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির বেশ পার্থক্য ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মীয় জীবন ছিল অনেকটা উদারনৈতিক ও মানবতাবাদী । কিন্তুুু পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল অনেকটা রক্ষণশীল ও গোড়া ।
 
*অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানী পুঁজিপতিদের প্রাধান্য : বাঙালি বুর্জোয়া ও পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্প উদ্যোক্তা পূর্ব পাকিস্তানে আইনগতভাবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমঅধিকারী হলেও সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ ছিল অসম। বাঙালি শিল্পোদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থাথার কারণ ছিল ঋণ পাওয়া ও শেয়ার বিক্রয় প্রশ্নে বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী সংস্থার উপর নির্ভরশীলতা । স্যার এসব প্রতিষ্ঠান ছিল ও বাঙালি পুঁজিপতিদের কর্তৃত্বাধীন ।
*অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানী পুঁজিপতিদের প্রাধান্য :
 
বাঙালি বুর্জোয়া ও পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্প উদ্যোক্তা পূর্ব পাকিস্তানে আইনগতভাবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমঅধিকারী হলেও সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ ছিল অসম। বাঙালি শিল্পোদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থাথার কারণ ছিল ঋণ পাওয়া ও শেয়ার বিক্রয় প্রশ্নে বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী সংস্থার উপর নির্ভরশীলতা । স্যার এসব প্রতিষ্ঠান ছিল ও বাঙালি পুঁজিপতিদের কর্তৃত্বাধীন ।
 
*সামাজিক অবকাঠামো গত বৈষম্য :
 
*সামাজিক অবকাঠামো গত বৈষম্য : পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানের সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের দিক থেকেও পিছিয়ে ছিল । গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে , কৃষি , চিকিৎসা , বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রের ১৬টির মধ্যে ১৩টিরই অবস্থান ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের।
 
'''খ)''' '''সাংস্কৃতিক বৈষম্য''' ''':'''
৯৭ ⟶ ৯০ নং লাইন:
 
'''গ) অর্থনৈতিক বৈষম্য''' ''':'''
 
*অর্থনৈতিক অবকাঠামোগত বৈষম্য : পশ্চিম পাকিস্তানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৪% জনসমষ্টি বাস করলেও সেখানে জাতীয় সম্পদের ৭৫% বরাদ্দ করার ফলে ওই অঞ্চলে একদিকে যেমন আয় বৃদ্ধি পায় , অন্যদিকে তেমন কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পায় ।
 
*আঞ্চলিক বিনিয়োগ বৈষম্য : ১৯৫০ এর দশকের পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মোট বিনিয়োগের ২১% থেকে ২৬% । ১৯৬০ এর দশকে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩২% থেকে ৩৬% । অন্যদিকে , রাজস্ব ও উন্নয়ন খাত মিলে পশ্চিম পাকিস্তানে বিনিয়োগ করা হয় প্রথম দশকে ৭৪%থেকে ৭৯% এবংং দ্বিতীয় দশকে ৬৪%থেকে ৬৮% ।
 
*মাথাপিছু গড় আয়ে বৈষম্য : দেশের দুই অংশের জনগণের মাথাপিছুুু গড় আয়়ে সুস্পষ্টট পার্থক্য বিদ্যমান ছিল । ১৯৬৪-৬৫ অর্থবছরের পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ২৮১ টাকা । অন্যদিকে , পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের মাথাপিছু গড়় আয় ছিল ৪১২ 💰।
 
*শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য : পূর্ব পাকিস্তানের ১৯৪৯-৫০ সালে শিল্পক্ষেত্রে উপাদানের হার ছিল মোট উপাদানের ৯.৪% এবং ১৯৬৯-৭০ সালে তা উন্নীত হয় ২০% এ । কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পায়িত খাত ১৯৪৯-৫০ সালে ১৪.৭% থাকলেও সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশে ।
 
*সম্পদ পাচার :পূর্ব পাকিস্তান থেকে নগদ ও পণ্য প্রচুর সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানের স্থানান্তরিত হয় । অর্থনীতির ভাষায়় একে সম্পদ পাচার বলে । এক হিসাবে দেখা যায় , প্রতিবছর প্রায় ৩,০০০ মিলিয়ন রুপি বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হয় ।
 
*আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শোষণ : পাকিস্তানের বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছিল । অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীভূত দপ্তর থেকে পরিচালিত হতো । ফলের বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা সর্বদা পশ্চিম পাকিস্তানের দখলে ছিল ।
 
পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্য ছিল। মোট জাতীয় বাজেটের সিংহভাগ বরাদ্দ থাকত পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য।<ref>পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত চতুর্থ মেয়াদী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার জন্য উপদেষ্টা প্যানেলের রিপোর্ট।</ref>
১৫৪ ⟶ ১৫৯ নং লাইন:
|১৭০ টাকা||১৩৫ টাকা
|}
 
*অর্থনৈতিক অবকাঠামোগত বৈষম্য : পশ্চিম পাকিস্তানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৪% জনসমষ্টি বাস করলেও সেখানে জাতীয় সম্পদের ৭৫% বরাদ্দ করার ফলে ওই অঞ্চলে একদিকে যেমন আয় বৃদ্ধি পায় , অন্যদিকে তেমন কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পায় ।
 
*আঞ্চলিক বিনিয়োগ বৈষম্য : ১৯৫০ এর দশকের পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মোট বিনিয়োগের ২১% থেকে ২৬% । ১৯৬০ এর দশকে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩২% থেকে ৩৬% । অন্যদিকে , রাজস্ব ও উন্নয়ন খাত মিলে পশ্চিম পাকিস্তানে বিনিয়োগ করা হয় প্রথম দশকে ৭৪%থেকে ৭৯% এবংং দ্বিতীয় দশকে ৬৪%থেকে ৬৮% ।
 
*মাথাপিছু গড় আয়ে বৈষম্য : দেশের দুই অংশের জনগণের মাথাপিছুুু গড় আয়়ে সুস্পষ্টট পার্থক্য বিদ্যমান ছিল । ১৯৬৪-৬৫ অর্থবছরের পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ২৮১ টাকা । অন্যদিকে , পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের মাথাপিছু গড়় আয় ছিল ৪১২ 💰।
 
*শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য : পূর্ব পাকিস্তানের ১৯৪৯-৫০ সালে শিল্পক্ষেত্রে উপাদানের হার ছিল মোট উপাদানের ৯.৪% এবং ১৯৬৯-৭০ সালে তা উন্নীত হয় ২০% এ । কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পায়িত খাত ১৯৪৯-৫০ সালে ১৪.৭% থাকলেও সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশে ।
 
*সম্পদ পাচার :পূর্ব পাকিস্তান থেকে নগদ ও পণ্য প্রচুর সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানের স্থানান্তরিত হয় । অর্থনীতির ভাষায়় একে সম্পদ পাচার বলে । এক হিসাবে দেখা যায় , প্রতিবছর প্রায় ৩,০০০ মিলিয়ন রুপি বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হয় ।
 
*আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শোষণ : পাকিস্তানের বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছিল । অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীভূত দপ্তর থেকে পরিচালিত হতো । ফলের বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা সর্বদা পশ্চিম পাকিস্তানের দখলে ছিল ।
 
'''ঘ) পাকিস্তানিদের রাজনৈতিক বৈষম্য ও অসমতা :'''