সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
{{আত্মজীবনী}} ট্যাগ যোগ করা হয়েছে (টুইং)
নকীব বট (আলোচনা | অবদান)
সাধারণ পরিষ্করণ: দাঁড়ির অব্যবহিত পূর্বের ফাঁকাস্থান অপসারণ ও পরে একটি ফাঁকাস্থান যোগ
১৮ নং লাইন:
}}
 
'''সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত '''({{lang-en| Satishchandra Dasgupta}})( জন্ম :- ১৪ জুন , ১৮৮০ - মৃত্যু :- ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৯ ) এক রসায়নবিদ ও প্রখ্যাত গান্ধীবাদী নেতা। <ref name = "সংসদ"> সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৭৪৫, {{আইএসবিএন|978-81-7955-135-6}}</ref>
 
==জন্ম ও শিক্ষা জীবন==
 
সতীশচন্দ্র দাশগুপ্তর জন্ম অধুনা বাংলাদেশের রংপুরের কুঁড়িগ্রামে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ই জুন ।জুন। পিতা পূর্ণচন্দ্র দাশগুপ্ত ও মাতা বিজয়লক্ষ্মী দেবী। পিতা-মাতার আদর্শে ও প্রেরণায় তাঁর জীবন গঠন। কুঁড়িগ্রামে বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে কলকাতায় আসেন। প্রথমে রিপন কলেজ বর্তমানে[[ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ]] ও পরে [[প্রেসিডেন্সি কলেজ]]। স্নাতকোত্তর শ্রেণীর রসায়ন বিভাগের ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময়ই একাগ্রচিত্ত কর্মনিষ্ঠ ছাত্রটির প্রতি আচার্য [[প্রফুল্লচন্দ্র রায়| প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের]] দৃষ্টি আকর্ষিত হয় এবং ছাত্রটিও আচার্যের চিন্তা ও জীবনচর্চায় প্রভাবান্বিত হন।
 
==কর্মজীবন==
 
'''কর্মপথে বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কস'''-
আচার্য তাঁর প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কসের (বর্তমানে [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস ]]এর) দ্বার গবেষণার কাজে উন্মুক্ত করে দেন এই সত্য-সন্ধানী কৌতূহলী গবেষকের প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করার সাথে সাথেই। সেখানে তিনি সঙ্গী পেলেন আচার্যের অপর এক ছাত্র [[রাজশেখর বসু |রাজশেখর বসুকে]]( পরশুরামকে) । আচার্যের প্রেরণায় আর এই দুই ছাত্র-কর্মীর অনলস চেষ্টায় বাঙালির গৌরব বেঙ্গল কেমিক্যাল অল্পদিনেই ভারতবর্ষের অগ্রগণ্য রসায়নশিল্প প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ছিল। এখানে কাজ করার সময় সতীশচন্দ্রের ছোটো-বড়ো নানা আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের মধ্যে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ।উল্লেখযোগ্য। ফায়ার- কিং নামের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রটি বাজারে বহু সমাদৃত হয়েছিল এবং বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রথম ভারতে তৈরি যন্ত্রটি বিক্রি করে প্রভূত অর্থ লাভ করে।
 
'''গান্ধীদর্শন'''- বেঙ্গল কেমিক্যালে সতীশচন্দ্রের ব্যস্ততার মাঝে তখন একদিকে নতুন নতুন উদ্ভাবনা তথা সন্ধানের চিন্তা আর অন্যদিকে অন্তহীন জিজ্ঞাসা - দরিদ্র দেশবাসীর সমস্যার সমাধান কিভাবে? অশান্ত মনের এমন মানসিক অবস্থায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কোকনদ অধিবেশনের শিল্পপ্রদর্শনীতে যোগ দিতে গিয়ে প্রথম গান্ধী দর্শন হল তাঁর । তাঁর। বেঙ্গল কেমিক্যালে গবেষণা ছেড়ে গান্ধীজির নির্দেশিত স্বরাজের পথে সর্বক্ষণের কর্মী হওয়ার আন্তরিক বাসনা ব্যক্ত করেন। কিন্তু গান্ধীজির উপদেশ মত বেঙ্গল কেমিক্যালে থেকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের কাজ চালিয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও তার ফসল গরীব দেশবাসীর পর্ণকুটিরে পৌঁছেছেন দিতে লিপ্ত হলেন। সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করে কর্মীদের দিয়ে চরকায় সুতা কাটানো, তাঁত চালানো ও কাপড় বোনার কাজ শুরু করলেন। আচার্য আর দুই শিষ্য মিলে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালালেন খদ্দরের উপর রং প্রণালী নিয়ে ।নিয়ে। বিজ্ঞানের গবেষণাগার তখন চরকা ও কুটির শিল্পের গবেষণাগারে ও কর্মশালায় পরিণত হল।
 
'''খাদি প্রতিষ্ঠান''' - কিন্তু তাতেও তাঁর মনের তৃপ্তি মিলছে না যখন, গান্ধীজির কাজে তিনি সপরিবারে রাতের অন্ধকারে বেঙ্গল কেমিক্যালের বাসভবন ছেড়ে চলে গেলেন সোদপুরে। 'ফায়ারকিং' আবিষ্কারক-বিজ্ঞানীর প্রাপ্য দু'লক্ষ টাকা দিয়ে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তুললেন 'খাদি প্রতিষ্ঠান'। ঘরে ঘরে চরকা পৌঁছে দিতে স্বল্প মূল্যের বাঁশের চরকা তৈরি করেন। বাংলার বিভিন্ন স্থানে কর্মকেন্দ্র স্থাপন করে বহুমুখী কর্মযজ্ঞের সূচনা করলেন। কুটির শিল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানে কটেজ ট্যানিং ইন্ডাস্ট্রি এক সময় বড়ো বড়ো ট্যানারির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে। নিরক্ষর ও অল্পশিক্ষিত মানুষকে লেখাপড়া শিখিয়ে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে দক্ষকর্মীরূপে গড়ে তোলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর ।তাঁর। প্রধান কর্মকেন্দ্র কলকাতার নিকটবর্তী সোদপুরের আশ্রমটি '''গান্ধী আশ্রম''' নামে পরিচিত হল। এর উদ্বোধনে [[মহাত্মা গান্ধী]],[[মতিলাল নেহেরু]] ছাড়া সেকালের জাতীয় স্তরের বিখ্যাত ব্যক্তি হাজির ছিলেন। গান্ধীজী এই আশ্রমকে তাঁর 'দ্বিতীয় বাড়ি' তথা 'বাংলার বাসগৃহ' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। সোদপুরের গান্ধী আশ্রম সেই সময় দেশের রাজনীতিকদের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ছিল। সতীশচন্দ্র গান্ধীজির অনুগামী হয়ে কারাবাসও করেছেন। আলিপুর জেলে অবস্থানকালে স্বেচ্ছায় সেখানে গোশালা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব পালন করেন ।করেন। তবে স্বাধীনতা উত্তরকালে আমৃত্যু রাজনীতি থেকে দূরে থেকে সংগঠনমূলক কাজ করে গেছেন ।
 
'''গবেষক লেখক সতীশচন্দ্র''' - নিজের অধীত বিদ্যায়, জ্ঞানে ও উদ্ভাবনে কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষাদানের জন্য উপযুক্ত বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন - তাঁর রচিত দু'টি খণ্ডে প্রকাশিত 'দি কাউ ইন ইন্ডিয়া'পরবর্তীকালে ভেটেরিনারি কলেজের পাঠ্যপুস্তক হিসাবে নির্বাচিত হয়। ব্যাধিজড়িত দরিদ্র দেশবাসীর জন্য লেখেন 'হোম অ্যান্ড ভিলেজ ডক্টর' গ্রন্থটি। তাঁর অন্যান্য সহায়ক গ্রন্থগুলি হল-
৬০ নং লাইন:
দীর্ঘকাল তিনি 'রাষ্ট্রবাণী' নামে ইংরাজী ও বাংলা ভাষায় দু'টি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশনা করেছেন।
 
'''অহল্যাভৃমি উদ্ধার প্রকল্প''' - কর্মযোগীদের সাধারণত সাধনার শেষ থাকে না। রসায়নবিদ্যায় গবেষণা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে, সুদীর্ঘ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এক বিস্ময়কর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন তিনি ।তিনি। ৮৬ বৎসর বয়সে [[বাঁকুড়া]],[[বীরভূম]], [[ পুরুলিয়া |পুরুলিয়ার]] প্রস্তরখণ্ডময় ঊষর ভূমিকে সুফলা করার লক্ষ্যে বাঁকুড়ার গোগড়া গ্রামে নতুন কর্মক্ষেত্র স্থাপন করলেন। প্রকৃতিকে কাজে লাগাবেন মানুষের কল্যাণে ।কল্যাণে। এখানকার বিস্তীর্ন অঞ্চলের চিরপতিত কাঁকূড়ে জমিতে নব-ভগীরথ ধরণীর সুপ্ত প্রস্রবনে সিক্ত করে উর্বর সুফলা করার এক অবিশ্বাস্য সাধনায় লিপ্ত হলেন, সফলও হলেন। বাঁকুড়ার গোগড়া গ্রামে তৈরি হল তাঁর কৃষি খামার ।
 
==সম্মাননা==
 
শতায়ু সতীশচন্দ্র ছিলেন নিরলস সাধনায় বিস্ময়কর প্রতীক - দেশবাসীর স্নেহলাভে বঞ্চিত হননি এবং সেটিই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি আর সম্মান ।সম্মান। অবশ্য আজীবন গঠনমূলক সেবাকার্য ও পল্লী উন্নয়নে বৈজ্ঞানিক প্রয়োগ-পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে যমুনালাল বাজাজ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয় ।হয়। ওই বৎসরেই তিনি [[ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]] কর্তৃক সম্মান সূচক ডি.এসসি উপাধিতে ভূষিত হন ।
 
==মৃত্যু==