চিকিৎসা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
→‎রোগ ব্যবস্থাপনা: সম্প্রসারণ
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১ নং লাইন:
'''চিকিৎসা''' বলতে শারীরিক (বা মানসিক) রোগ, বিকার বা বৈকল্যে আক্রান্ত কিংবা শারীরিক আঘাতপ্রাপ্ত রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতি করা, রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, কিংবা ভবিষ্যৎ রোগ প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে পদ্ধতিভিত্তিক সেবা, পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনাকে বোঝায়। ইংরেজিতে একে "মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট" (Medical treatment) বলা হয়।<ref name="UW">{{Citation |url=https://www.wisconsin.edu/workers-compensation/coordinators/osha-record/medical-treatment/ |title=Medical treatment beyond first aid |publisher=University of Wisconsin System |সংগ্রহের-তারিখ=8 June 2020}}</ref><ref name="Mosby">{{Citation |title=Mosby's Pocket Dictionary of Medicine, Nursing & Health Professions |publisher=Elsevier Health Sciences |year=2009 |page=1375}}</ref>
 
শুধুমাত্র চিকিৎসক বা পেশাদার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দ্বারা রোগ পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানকে চিকিৎসা বলা হয় না। রোগনির্ণয়কারী পরীক্ষা (যেমন রক্ত পরীক্ষা, রঞ্জনরশ্মিচিত্র গ্রহণ, কিংবা রোগ নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে কোনও ঔষধ প্রদান, ইত্যাদি) সম্পাদন করাকেও চিকিৎসার সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। [[প্রাথমিক চিকিৎসা]]-ও (ইংরেজিতে ফার্স্ট এইড) সংকীর্ণ অর্থে চিকিৎসার মধ্যে পড়ে না।<ref name="UW" />
 
==চিকিৎসার প্রকারভেদ==
উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অনুযায়ী চিকিৎসাকে মূলত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এগুলি হল আরোগ্যমূলক (বা নিরাময়মূলক বা প্রতিকারমূলক বা সক্রিয়) চিকিৎসা (Curative বা Therapeutic), প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা (Prophylactic) এবং উপশমমূলক চিকিৎসা (Palliative)।<ref name="Mosby" /> এছাড়া রোগ ব্যবস্থাপনা ও মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসাও প্রসঙ্গত উল্লেখ্য। অনেকসময় একই সাথে একাধিক শ্রেণীর চিকিৎসা রোগীর উপরে প্রয়োগ করা যায়। সেক্ষেত্রে একটিকে মূল চিকিৎসা (Primary treatement) এবং অন্যগুলিকে সহায়ক চিকিৎসা (Adjuvant treatment) বলা হয়।
 
আবার পন্থা বা পদ্ধতি অনুযায়ী চিকিৎসাকে কয়েকটি প্রকারে ভাগ করা যায়। যেমন - ঔষধভিত্তিক চিকিৎসা (Pharmaceutic), শল্যচিকিৎসা (Surgical) এবং সহায়ক চিকিৎসা (Supportive)।
 
অধিকন্তু, দর্শন বা প্রচলন অনুযায়ী চিকিৎসাকে দুইটি প্রধান ধারায় ভাগ করা যায়। এগুলি হল মূলধারার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা এবং বিকল্প ধারার চিকিৎসা। বর্তমান বিশ্বের প্রায় সর্বত্র প্রচলিত মূলধারার আদর্শ চিকিৎসাপদ্ধতি হল বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্যপ্রমাণভিত্তিক চিকিৎসা। একে অনেক সময় "অ্যালোপ্যাথি" নামেও ডাকা হয়। ২০শ শতক থেকে বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক চিকিৎসার বিকাশ ঘটে। এর সম্পূরক হিসেবে কিছু বিকল্প ধারার চিকিৎসাপদ্ধতিও বিদ্যমান, যেমন হোমিও চিকিৎসা, আয়ুর্বেদী চিকিৎসা, ইউনানি চিকিৎসা, ভেষজ চিকিৎসা, যোগব্যায়াম, ঐতিহ্যবাহী চৈনিক চিকিৎসা (আকুপাংচার, আকুপ্রেশার, ইত্যাদি), অস্থিসন্ধি সঞ্চালন চিকিৎসা (Osteopathy), মেরুদণ্ড সঞ্চালন চিকিৎসা (Chiropractic কাইরোপ্র্যাকটিক), অবগাহন চিকিৎসা (Balneotherapy), ইত্যাদি। তবে বিকল্প ধারার চিকিৎসাপদ্ধতিগুলির কার্যকারিতার নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তেমন নেই।
 
===আরোগ্যমূলক চিকিৎসা===
১৬ নং লাইন:
====ঔষধ সেবন/====
{{মূল নিবন্ধ|ঔষধ}}
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আরোগ্যমূলক চিকিৎসাতে ঔষধকে সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে ব্যাকটেরিয়ারোধক ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান করা হয়। অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যালার্জি হলে সেই প্রতিক্রিয়াকে দূর করতে হিস্টামিনরোধক (অ্যান্টিহিস্টামিন) রোগীর দেহে প্রয়োগ করা হয়। এইসব ঔষধ মুখ দিয়ে গলধকরণ করা হয়, বা দৃশ্যমান দেহ এলাকার উপরে প্রলেপের মত প্রয়োগ করা হয় অথবা সূচিপ্রয়োগের মাধ্যমে রক্তে বা পেশীতে প্রবেশ করানো হয়।
 
====শল্যচিকিৎসা====
{{মূল নিবন্ধ|শল্যচিকিৎসা}}
শল্যচিকিৎসা রোগ থেকে সরাসরি আরোগ্য প্রদান করে না। সাধারণত শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে দেহের নির্দিষ্ট অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটিকে মেরামত করা হয় কিংবা সম্পূর্ণ প্রতিস্থাপন করা হয়। এরপর দেহ নিজে নিজেই আরোগ্যলাভ করে। একারণে শল্যচিকিৎসাকে এক ধরনের আরোগ্যমূলক চিকিৎসা বলা হয়। দেহের কোনও অবাঞ্ছিত কলা কেটে ফেলা (যেমন টিউমার বা অ্যাপেন্ডিক্স), কোলেস্টেরল জমে বন্ধ হয়ে যাওয়া হ্রৎপেশী-ধমনীতে ঢুকে সেটির আয়তন বৃদ্ধি করা, ভেঙে যাওয়া হাড় একই রেখায় নিয়ে আসা, ইত্যাদি কিছু মেরামতমূলক শল্যচিকিৎসার উদাহরণ।
 
====অঙ্গসঞ্চালন চিকিৎসা====
{{মূল নিবন্ধ|অঙ্গসঞ্চালন চিকিৎসা}}
দেহের পেশী বা অন্যান্য অংশ যদি পীড়নের শিকার হয় বা ক্ষতিগস্ত হয়, তাহলে সেগুলিকে শারীরিক অনুশীলন ও নড়াচড়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে আরোগ্য অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব। এক্ষেত্রে ধৈর্য ও সময়ের ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ।
 
===প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা===
{{মূল নিবন্ধ|প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা}}
প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার উদ্দেশ্য হল ভবিষ্যতে কোনও রোগ থেকে ব্যক্তিকে সুরক্ষা বা প্রতিরক্ষা প্রদান করা। একে ইংরেজিতে "প্রিভেন্টিভ ট্রিটমেন্ট" (Preventive treatment) বা "প্রোফাইল্যাক্টিক ট্রিটমেন্ট" (Prophylactic treatment) বলে। যেমন টিকা, বংশাণুভিত্তিক চিকিৎসা, দৈনন্দিন স্বাস্থবিধি পালন, নির্দিষ্ট পথ্য গ্রহণ, ইত্যাদি।
 
টিকার মাধ্যমে দেহে অনেকগুলি ঘাতক বা গুরুতর ক্ষতি সৃষ্টিকারী রোগব্যাধির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। টিকাতে সাধারণত মৃত বা দুর্বল জীবাণু দেহে প্রবেশ করানো হয়, যাতে দেহের অনাক্রম্যতন্ত্র সেগুলির সাথে পরিচিত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে ঐ একই জীবাণু দেহকে আক্রমণ করলে সেগুলির বিরুদ্ধে বিধ্বংসী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
 
আধুনিক যুগে ব্যক্তিমাফিক চিকিৎসাতে একজন ব্যক্তি তাঁর বংশগতীয় সঙ্কেত পর্যালোচনা করতে পারেন এবং বিশেষ কোনও বংশাণু বা জিনের কারএ তাঁর মধ্যে কোনও বংশবাহিত রোগ হবার জোরালো সম্ভাবনা থাকলে সে ব্যাপারে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। যেমন কিছু মহিলার দেহে স্তন ক্যান্সার হবার বংশাণু উপস্থিত থাকে এবং তারা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্তনের সভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ দেহকলা শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে কেটে ফেলে দিতে পারেন।
 
দৈনন্দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা (যেমন গোসল করা, দাঁত মাজা), পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ (যেমন অস্থি সুস্থ রাখার জন্য ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ), ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য পরিহার (যেমন বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য গবাদি পশুর মাংস না খাওয়া), নিয়মিত শরীরচর্চা করা, সঠিক সময়ে পরীক্ষার মাধ্যমে রোগনির্ণয়, ইত্যাদিও প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত হিসেবে গণ্য করা যায়।