জাবির ইবনে হায়য়ান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নকীব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
৪৬ নং লাইন:
<!-- জানা যায় , উমাইয়া বংশীয় খলিফাগনের নিষ্ঠুর ও অমানবিক কার্যকালাপের দরুন হাইয়ান উমাইয়া বংশের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করতেন । সেহেতু তিনি পারস্যের কয়েকটি প্রভাবশালী বংশের সঙ্গে পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করবার জন্য আব্বাসীয়দের দূত হিসাবে কুফা ত্যাগ করে তুস নগরে গমন করেন । এ তুস নগরেই জাবিরের জন্ম হয় । হাইয়ানের ষড়যন্ত্রের কথা অতি শীঘ্রই তৎকালীন খলিফার দৃষ্টিগোচর হয় । খলিফা তাঁকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদন্ড দেন । হাইয়ানের পরিবার পরিজনদের পুনরায় দক্ষিণ আরবে প্রেরণ করেন ।
 
দক্ষিণ আরবেই জাবির ইবনে হাইয়ানের শিক্ষা লাভ শুরু । শিক্ষা লাভের প্রতি তার ছিল পরম আগ্রহ। যে কোন বিষয়ে বই পেলে তিনি তা পড়ে শেষ করে ফেলতেন এবং এর উপর গবেষণা চালাতেন । খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এখানে গণিতের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ পারদর্শী বলে খ্যাত হয়ে উঠেন । শিক্ষা সমাপ্তির পর জাবির ইবনে হাইয়ান পিতার কর্মস্থান কুফা নগরীতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন । সেখানে তিনি প্রথমে চিকিৎসা ব্যবসা আরম্ভ করেন এবং এ সূত্রেই তৎকালীন বিখ্যাত পন্ডিত ইমাম জাফর সাদিকের অনুপ্রেরণায় তিনি রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা শুরু করেন । কারো মতে জাবির ইবনে হাইয়ান খলিফা খালিদ বিন ইয়াজিদের নিকট রসায়ন বিদ্যা শিক্ষা লাভ করেছিলেন । কিন্তু এই কথার কোন সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি । কারনকারণ জাবির ইবনে হাইয়ানের কার্যাবলীর সময় কাল ছিল কলিফা হারুন অর রশীদের রাজত্বকালে । অথচ কলিফা খালিদ বিন ইয়াজিদ , হারুন ওর রশীদের বহু পূর্বেই ইন্তেকাল করেন । যতদূর জানা যায়, জাবির ছিলেন ইমাম জাফর সাদিকেরই শিষ্য । খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিসাবে তাঁর সুখ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে । এ সময় ছিলো আব্বাসীয় খলিফা হারুন অর রশীদের রাজত্বকাল । কিন্তু খলিফা হারুণ অর রশীদের সাথে তাঁর তেমন কোণ পরিচয় ও সাক্ষাৎ হয়নি । কিন্তু খলিফা বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে তাঁর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো । ইমাম জাফর সাকিকই জাবিরকে বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন ।
 
একবার ইয়াহিয়া বিন খালিদ নামক জনৈক বারমাক মন্ত্রীর এক সুন্দরী দাসী মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে । তৎকালীন দেশের সুপ্রসিদ্ধ চিকিৎসকগণ তাঁর চিকিৎসা করে ব্যর্থ হন । এ সময় মন্ত্রী প্রাসাদে চিকিৎসার জন্য ডাক পড়ে জাবির ইবনে হাইয়ানের । জাবির মাত্র কয়েকদিনের চিকিতসার মাধ্যমে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন । এতে ইয়াহিয়া বিন খালিদ খুব সন্তুষ্ট এবং জাবিরের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে । বারমাক বংশীয় কয়েকজন মন্ত্রীর মধ্যস্থতায় তিনি রাষ্ট্রীয় কিছু সুযোগ সুবিধা লাভ করেন । এর ফলে তিনি রসায়ন বিজ্ঞান সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা করার সুযোগ পান । মন্ত্রী ইয়াহিয়া এবং তাঁর পুত্র জাবিরের নিকট রসায়ন বিজ্ঞান শিক্ষা শুরু করেন । তিনি বিভিন্ন বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য ও বিভিন্ন পদার্থ আবিষ্কার করতে আরম্ভ করেন । খুব অল্প দিনের মধ্যেই তিনি শ্রেষ্ঠ রসায়ন বিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিত হন । জাবির ইবনে হাইয়ান প্রতিটি বিষয়ই যুক্তির সাহায্যে বুঝবার ও অনুধাবন করার চেষ্টা করেছেন । আধ্যাত্মিকতার দোহাই দিয়ে তিনি কোন কাজে অগ্রসর হননি । তিনি সর্বদা হাতে কলমে কাজে করতেন । প্রতিটি বিষয়ে পুঙ্খানমুঙ্খ রূপে পর্যবেক্ষণ করে তার ফলাফল লিখে রাখতেন । তিনি তাঁর 'কিতাবুত তাজে' পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন , " রাসায়নিকের সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কাজ হলো হাতে কলমে পরীক্ষা চালানো । যে হাতে কলমে কিংবা পরীক্ষামূলক কাজ করে না , তার পক্ষে সামান্যতম পারদর্শিতা লাভ করাও সম্ভবপর নয় । "