আরাল সাগর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটলে আরাল সাগর নব্যনব্যগঠিত রাষ্ট্ররাষ্ট্রদ্বয় কাজাখস্তান এবং উজবেকিস্তানের অধীনে চলে আসে। কিন্তু সাগর বলতে আমরা যা বুঝি, তার কোনো অস্তিত্ব তখন নেই। মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চল জুড়ে পানিজল অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু আরাল সাগরের বিপর্যয়ের কারণে পুরো অঞ্চলের আবহাওয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই দুই দেশের নেতারা একত্রিত হন।

তারা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেন। লম্বা খাল খনন করে দক্ষিণে সাগর থেকে পানিজল আনার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে কোটি কোটি ডলার লোকসান হয়। শেষ পর্যন্ত পুরো প্রকল্প বাতিল করে দেয়া হয়।

এরপর ২০০৩ সালে কাজাখস্তান সরকার ঘোষণা দেয়, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পুনরায় নদীর পানিজল আরালের দিকে প্রবাহিত করা হবে। কিন্তু উজবেকিস্তানের সাথে প্রকল্পের বিভিন্ন ইস্যুতে একমত হতে না পারায় পুরো আরাল জুড়ে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প স্থগিত করা হয়।

তবে কাজাখ সরকার বসে না থেকে নিজস্ব অর্থায়নে কাজাখস্তান সীমানায় বাঁধ নির্মাণ শুরু করার নির্দেশ দেন। ২০০৫ সালের দিকে বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়। বাঁধের কারণে কাজাখ অঞ্চলে আরাল সাগরের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়। হ্রদে পানিরজলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং উত্তর আরাল সাগরে মাছ চাষ শুরু হয়।

কাজাখস্তানের সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে উজবেকিস্তানের বিজ্ঞানীরাও এগিয়ে আসেন। কিন্তু পানির অধিকার সংক্রান্ত আলোচনায় কেউই সমঝোতায়সহমতে আসতে না পারায় এই প্রকল্প বেশিদূর এগোয়নি।

পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংক এই কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। কাজাখ সরকারকে ৬৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করা ছাড়াও প্রায় ৮৬ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক। ২০০৮ সালে দ্বিতীয় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পুনরায় উত্তর আরাল সাগরে পানিজল প্রবাহ শুরু হয়।

কাজাখস্তান বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানিজল পুনরায় আনতে সক্ষম হলেও, গবেষকদের মতে, আর কখনোই আরাল সাগরের পানিজল সম্পূর্ণরূপে ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো সমঝোতায় না পৌঁছুলে আরাল সাগরের বাকি অঞ্চলগুলোয় কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না।