সীমাবদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Salim Khandoker (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা
২৭ নং লাইন:
শ্যামলের এই চরিত্রটি ‘[[প্রতিদ্বন্দ্বী]]’ ছবির সিদ্ধার্থের একেবারে বিপরীত। বিপরীত এই অর্থে যে সিদ্ধার্থ বেকার, চাকরির জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে সে পুরো ছবিতে। আর শ্যামল মধ্যবিত্ত হলেও ছাত্র ভাল হওয়ার কারণে চাকরি শুধু বাগিয়ে নেয়নি, সেই চাকরির শীর্ষ স্থানেও পৌঁছে যায় সে। সিদ্ধার্থ যেখানে বামঘেষা, শ্যামল সেখানে কোন রাজনীতির সঙ্গেই নেই। সিদ্ধার্থ নিজের পায়ের তলায় মাটি থাকলে অন্যের জন্য প্রতিবাদ করতে জানে, অপরদিকে শ্যামল নিজের পায়ের তলায় মাটি ফিরিয়ে আনতে অন্যের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করে না।
 
মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত হওয়ার আকাক্সক্ষাআকাঙ্খা শ্যামলেন্দুর ভেতর যেমন তীব্র তেমনি একই বাসনা ধারণ করে তার স্ত্রী দোলন চাঁপা। তাদের একমাত্র পুত্র রাজা তাদের সঙ্গে থাকে না, থাকে বোর্ডিংয়ে। এমনকি শ্যামলেন্দুর বয়স্ক মা-বাবারও ঠাঁই হয়নি আধুনিক বড় ফ্ল্যাটটিতে। হবে কিভাবে? সামাজিক মর্যাদা বজায় রাখতে যে ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝে অন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের দাওয়াত দিতে হয়, পানাহার করতে হয়! তেমনই এক পানাহারের সন্ধ্যায় আলাপ ওঠে কি হচ্ছে কলকাতা শহরে? এই শহরের ‘গণ্ডগোল’ কি করে দূর করা যায়? কলকাতা তো ডুবতে বসেছে! মানে [[যুবআন্দোলনকেই]] ইঙ্গিত করা হচ্ছে এখানে। তখন একজন বলল, ‘ওদের ধরে ধরে চাকরি দিয়ে দাও,’ প্রত্যুত্তরে আরেকজন বলল, চাকরি দিয়েই বা লাভ কি, সেখানেও একটা ইউনিয়ন করে বসবে। শ্যামলেন্দু বলছে, ওদের বক্তব্য হল পুরো ব্যবস্থাটাই পঁচে গেছে, ওরা চাকরি চায় না। শ্যামলেন্দুর মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে আরেকজন বলল, ওরা বিপ্লব চায়। তৃতীয় ব্যক্তি বলছে, এখন দরকার ডিক্টেটর। শ্যামলেন্দু তর্ক চালিয়ে যাচ্ছে, বলছে, তরুণদের মধ্যে এই যে একটা অনাস্থা, এটা তো একটা ইউনিভার্সেল ব্যাপার। তখন ওই তৃতীয় ব্যক্তি মানে সৌমেন একটু খেপে বলল, ইউনিভার্সেল মাই ফুট! বিদেশে একটা কিছু চলছে সেটারই অনুকরণে এখানে কিছু চলছে। ওরাও করছে, আমরাও করছি। তখন শ্যামল দেশভাগের আগের ছাত্রনেতা আর পরের ছাত্রনেতাদের মধ্যে পার্থক্য আছে বলে মন্তব্য করে। শ্যামল কি তবে যুববিদ্রোহের পক্ষে কথা বলছে? সৌমেনের এমন প্রশ্নের জবাবে শ্যামল আর কোন উত্তর দেয় না।
 
এই কথোপকথনের ভেতরেই টুটুল, শ্যামলেন্দুর শ্যালিকা, যে কলকাতায় বহুদিন পর বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে তার প্রতিক্রিয়া দেখান সত্যজিৎ। ঘটনাক্রমে দর্শক জানতে পারে টুটুল যে ছেলেটিকে ভালোবাসে সে বামপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত। তাই ওই আলাপে যুববিদ্রোহকে যখন খাটো করা হচ্ছিল বিষয়টি ভালো ভাবে নেয়নি টুটুল। ব্যাস অতোটুকুই। এছাড়া আর কোন জায়গায় কলকাতার তখনকার রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে সেভাবে কোন আলাপ নেই, কোন ঘটনাও দেখানো হয় না। শুধু আরেক জায়গায় বলা হয়, মাঝে মধ্যেই দুমদাম বোমাটোমা ফুটছে শহরে। কারা ফুটাচ্ছে সেটা দর্শক আন্দাজ করে নেন। অবশ্য ক্রিশ্চিয়ান থমসনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সত্যজিৎ নিজেই খোলাসা করেছেন বিষয়টিকে। তিনি বলেন, ‘ওই বোমা বিস্ফোরণগুলি হচ্ছে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের লড়াই। ... তারা সত্যিকার লক্ষ্য বস্তুগুলিকে আক্রমণ করত না, যেমন বৃহৎ শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে বোমা ছুড়ত না, কেন-না তাতে তাদের কিছু হারাবার ভয় ছিল, বরং তারা নিজেদের মধ্যেই লড়ত।’