জমিদার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Jayantanth (আলোচনা | অবদান)
edit
Jayantanth (আলোচনা | অবদান)
edit
১ নং লাইন:
'''জমিদার'''([[দেবনাগরী লিপি|দেবনাগরী]]: ज़मींदार , [[উর্দু ভাষা|উর্দু ]]: '''زمیندار''' বা '''জমিদার প্রথা''' বা '''জমিদারি''' বা '''জমিদারি প্রথা''' ) [[ফারসি]] যামিন (জমি) ও দাস্তান (ধারণ বা মালিকানা)-এর বাংলা অপভ্রংশের সঙ্গে ‘দার’ সংযোগে ‘'''জমিদার'''’ শব্দের উৎপত্তি। মধ্যযুগীয় বাংলার অভিজাত শ্রেণীর ভূম্যধিকারীদের পরিচয়জ্ঞাপক নাম হিসেবে শব্দটি ঐতিহাসিক পরিভাষার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মুগল আমলে জমিদার বলতে প্রকৃত চাষির ঊর্ধ্বে সকল খাজনা গ্রাহককে বোঝানো হতো। প্রকৃত চাষি জমিদার নয়, কারণ সে কখনও তার জমি খাজনা বা ভাড়ায় অন্য কাউকে প্রদান করে না। জমিদাররা শুধু খাজনা আদায়ের স্বত্বাধিকারী, জমির স্বত্বাধিকারী নয়। পক্ষান্তরে, জমির মালিকদের বলা হতো [[রায়ত]] বা চাষি যাদের নামে জমাবন্দি বা রেন্ট-রোল তৈরি হতো। এই ধারণায় জমিদারগণ রাজস্বের চাষি ছিল মাত্র। এরা ছিল সরকার এবং [[হুজুরি]] (স্বতন্ত্র) [[তালুকদার]] ব্যতীত নিম্নস্তরের রাজস্ব চাষিদের মধ্যস্থ পক্ষ। হুজুরি তালুকদারগণ খালসায় ([[খাজাঞ্চি খানায়]]) সরাসরি রাজস্ব প্রদান করত।
 
জমিদার এই পদবি বা শব্দটি [[ভূঁইয়া]] বা ভূপতি নামে যে দেশীয় পারিভাষিক শব্দটি প্রচলিত আছে তার সরাসরি প্রতিশব্দ বলা যায়। এই [[ভূঁইয়া]] বা ভূপতিরা ছিল ভারতের [[মুগল সাম্রাজ্য|প্রাক্‌-মুগল আমলের]] বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারসূত্রে জমির মালিক। [[মুগল|মুগলগণ]] তৎকালে প্রচলিত ভূমি ব্যবস্থাকে তাদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থায় রূপান্তর করে। অবশ্য চিরাচরিত ক্ষমতা ও উৎপাদনের উপায়গুলি তেমন বিশেষ পরিবর্তিত হয় নি। মুগলদের আমলে গড়ে ওঠা জমিদারি বৈশিষ্ট্যগতভাবে সব এলাকায় একই রকম ছিল না, এমনকি, [[বাংলা]]-[[বিহার]] ও [[উড়িষ্যা|উড়িষ্যার]] সুবাগুলির ভিতরেও অঞ্চলভেদে পার্থক্য ছিল। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে রাজপক্ষ সরাসরি জমি নিয়ন্ত্রণ করত, কিন্তু বাংলায় সরকার কখনও তা করে নি। [[আকবরের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার]] (১৫৮২) লক্ষ্য ছিল ব্যক্তি-চাষিকে সরাসরি বন্দোবস্ত দান, যা নানা কারণে সুদূর বাংলা প্রদেশে সম্ভব ছিল না। এর অন্যতম কারণ বাংলাদেশের বিশেষ ভৌগোলিক ও জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য। প্রাক্‌-আধুনিক যুগে বাংলায় জমি কেবল উৎপাদনের অন্যতম প্রয়োজনীয় বিষয়ই ছিল না, জমি ছিল মর্যাদার প্রতীক এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির একটি উৎস। এ কারণে উচ্চাভিলাষী ব্যক্তিদের জন্য জমির ওপর নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি ছিল নানা ধরনের সম্ভাবনার ধারক ও বাহক।