বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
→‎জল সংকট: নতুন অনুচ্ছেদ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৫৯৮ নং লাইন:
 
আরো বেশি জানতে হলে "ভাষা আন্দোলন ও বাংলা ভাষা" বইটি পড়ুন। [[ব্যবহারকারী:ড. সেখ রমজান আলি|ড. সেখ রমজান আলি]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:ড. সেখ রমজান আলি|আলাপ]]) ০৮:১৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (ইউটিসি)
 
== জল সংকট ==
 
জল সংকট মানব সভ্যতা ধ্বংসের অশনিসংকেত
 
জলের অপর নাম জীবন এ কথাটা আমরা জীবনের শুরু থেকেই শুনে আসছি। ক্যালেন্ডারে ছবি দেখেছি, সমুদ্রের ওপর ছোট্ট একখানি নৌকা। তার নিচে নীল লবণাক্ত জলের ছবির উপর লেখা আছে "ওয়াটার ওয়াটার এভরি হোয়ার ইজ ওয়াটার ,বাট নট এ ড্রিঙ্ক অফ ওয়াটার।" কিন্তু শুধু পানীয় জল নয় ,কৃষি জলেরও সংকটাভাস। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন এর জন্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং দায়ী। এক সময় নদীর ধারে বিস্তৃত অঞ্চ জুড়ে ৩০-৩৫ ফুট নিচে জলের স্তর পাওয়া যেতো। শীত শেষে ধান কাটা মাঠের 'কেলেস' জমিতে দুই-আড়াই ইঞ্চি বেধযুক্ত পাইপের টিউবওয়েল বসিয়ে, হাতে কল টিপেই পেঁয়াজ চাষ করা যেতো। হাতে টেপা টিউবওয়েল গুলোর জলের স্তর ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে। এখন অনেক জায়গায় কম করে ১০০-২৩০ ফুট বা তারও নিচে অল্প বিস্তর জলের স্তর নেমে গেছে। এখন 'সেলেন্ডার' (' ডিপ-টিউবয়েল) কল ছাড়া আর চলে না।
কৃষির ব্যাপারটাকে মাথায় রেখেই স্বাধীনতার পর প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দামোদরে চারটি বিশাল আকার জলাধার তৈরির কথা হয়েছিল। কমিশন সমীক্ষা চালিয়ে আরো চারটি বাঁধ প্রস্তুত করার কথা বলেছিল। বৃষ্টি ঠিকঠাক হলে জলের যোগান কম থাকার কথা নয়। ক'বছর আগেও ক্যানেল এরিয়াগুলোতে ভাদরের চটকায় ধান জমিতে চাপান দেওয়ার জন্য ক্যানেলে জলের প্রবাহ বন্ধ রাখতে বলা হত। অথবা প্রয়োজনমতো ক‍্যানেল থেকে বের হয়ে আসা পাইপগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হতো। গ্রীষ্মে ধান চাষের জন্য দেওয়া জলে মাঠ যেতো ভেসে। কিন্তু সেই একটা-দুটো জলাধার অভাব ঘটলে আর কত জল সাপ্লাই দিতে পারবে ? প্রস্তাবিত বাকিগুলিতে পলি-মাটি জমে জল ধারণ ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। জলাধারগুলি পরিষ্কার করা বা নতুন জলাধার নির্মাণের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার আর কোনো নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি।
বৃষ্টি না হওয়ায় এবং জল সংরক্ষণ করতে না পারায় অঞ্চলে সর্বত্র বছরে দুবার ধান চাষে, ক্যানেল কোম্পানি আর জল দিতে পারচ্ছে না। এই ক'বছর বোরোধান চাষীদের অবাক করে, বর্ষায় রেশনের মতো সপ্তাহে দুদিন করে ক‍্যানেলগুলিতে জল ছাড়া হয়েছে। গ্রীষ্মকালে ধান চাষে ব্যক্তিগতভাবে যেসব নলকূপ তৈরি করা হয়েছিল জলের স্তর কমে যাওয়ায় সেই নলকূপ চালানো দমকলগুলিকে বিগত কয়েক বছর ধরে, জমিতে গর্ত কেটে নিচে নামাতে হচ্ছে। আকস্মিক বৃষ্টিতে মাটি চাপা পড়ে বা ধ্বস নেমে সে বিপদও কম হয়নি। উত্তর রাঢ়ে মুর্শিদাবাদের অনেক গ্রামের পুকুরগুলোতে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই জল শুকিয়ে যায়। মানব জীবনকে সতর্ক করে সে যেন বলতে চায় -- জলই জীবন ,জল না হলে বাঁচবো কতক্ষণ ?
অর্থনীতিতে জল অমূল্য সম্পদ। শুধু কৃষি নয়, শিল্প ও পরিবহন , অরণ্য , স্বচ্ছ অভিযান , করোনা ভাইরাস দের হাত থেকে মুক্তি পেতে, সামগ্রিকভাবে পরিবেশ রক্ষায় জলই জীবনের জিয়ন কাঠি।
একটি হিন্দি প্রবাদে আছে --- 'জল হ‍্যায় তো কাল হ‍্যায়।' আগামী দিনের কথা ভেবে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভেবে, জলের সুরক্ষার ব্যাপারটিকে নিয়ে সর্বস্তরেই আলোচনা বজায় রাখতে হবে।
শীতের শুরু থেকেই এই জল সংকট বাড়তে থাকে। পঞ্চায়েত, মিউনিসিপ্যালিটি বা করপারেশনগুলিতে বহু ব্যবহৃত ট‍্যাপকলগুলি জলের যোগান দিতে পারে না বলেই মূলত বস্তি এলাকাগুলিতে জলকে সংগ্রহ করাকে কেন্দ্র করে মারপিট , ঝগড়াঝাঁটি এমনকি খুনোখুনি হওয়ার উপক্রম ঘটে। এতো আগামী যুদ্ধের পূর্বাভাস। শহরবাসীর প্রয়োজন মেটাতে সরাসরি খাল বা নদ-নদী থেকে জল নিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। কিন্তু নদী বা খালের অতিরিক্ত জল কোথা ?
আবার ওদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে হিমালয়ের গ্লেসিয়ার আর সংহত থাকতে পারছে না। বরফ গলনে সমুদ্রের জলেরতল এভাবে বাড়লে শহর তো বটেই, ভারতের সুন্দরবন আর বাংলাদেশের সুন্দরবন , বিভিন্ন দ্বীপ, সমুদ্র ঘেঁষা ভূমি ও শহরগুলি অনেকটাই জলের তলায় চলে যাবে। যে এভারেষ্ট সমগ্র এশিয়ার দেশগুলির উপর বায়ুর উষ্ণতার ব্যালেন্স ঠিক রাখতো। তার পক্ষে সে কাজ করা আর সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু সামুদ্রিক জল সে তো আর পানীয় কাজে লাগবে না । এক গ্লাস জল এর জন্য একদিন হয়তো হাপিত্যেশ করে মরতে হবে আমাদের।
আগামী দিনে ভয়ংকর সমস্যাটা হবে পানীয় জলের। তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সমস্যাটা বাড়ছে বই কমেনি। যেটুকু রক্ষা করা যেত, সে ব্যাপারে এখনও কোন জল-সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।
এদিকে শহরের কোথাও কোথাও সিস্টেমের গোলযোগে পাইপ ফুটো হয়ে গিয়ে জল, দিনের পর দিন ড্রেনে মিশে যায়। রাস্তার ধারের 'চাপাকল' খোলাই থাকে। কলা খুলে দেদার জল নিয়ে, ধুলো চাপা দিতে রাস্তা ভেজানো হয়। প্রতিটি সকালে ঘর ধোয়া, ঘরের বাইরের দরজায় জল দিতেও কম পানীয় জল লাগে না। পানীয় জল খেয়ে বাড়িতে লাগানো শখের বাগানের শখের গাছের বেঁচে থাকে। অথচ বাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল ধরে, জল ভরো প্রকল্প বানিয়ে আমরা সেই গাছের চাহিদা অনেকটাই মেটাতে পারতাম । পারতাম বাথরুমে শৌচ কাজের জলের কিছুটা সাপ্লাই দিতে। হাফ লিটার জল শরীর থেকে ত্যাগ করে, জমে থাকা পাঁচ লিটার জলের ট্যাংকের ফ্লাশটা টিপে দি। হরহর করে জল গড়িয়ে বাথরুমের গন্ধ দূর করে। ময়লা ধুয়ে নিয়ে যায়।
অকারণে আমরা জল নষ্ট করে চলেছি দীর্ঘদিন ধরেই। এখন আবার গ্রামগুলিতে জলধারা প্রকল্পের নামে পাম্প চলছে তো চলছেই এবং কলের মুখ খোলা , কোথাও কলের মুখ খোলা রেখে পুকুরে জল ভরানো হচ্ছে,। মানসিকতায় বদ্ধমূল, সেটা সরকারি জল। অপচয়ে কষ্ট লাগে এই জন্যই, সেটা পানীয় জল। [[ব্যবহারকারী:ড. সেখ রমজান আলি|ড. সেখ রমজান আলি]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:ড. সেখ রমজান আলি|আলাপ]]) ০০:৪৮, ২৪ মার্চ ২০২০ (ইউটিসি)