কাজী আরেফ আহমেদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৪ নং লাইন:
| spouse = [[রওশন জাহান সাথী]]
}}
'''কাজী আরেফ আহমেদ''' (জন্ম: [[৮ এপ্রিল]] [[১৯৪২]] - মৃত্যু: [[১৬ ফেব্রুয়ারি]] [[১৯৯৯]]) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি [[১৯৬২]] সালে ছাত্রলীগের গোপন সংগঠন 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াসের সদস্য<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.bd-pratidin.com/editorial/2017/01/16/200354|শিরোনাম=জাতীয় বীর কাজী আরেফ আহমেদ|শেষাংশ=আহমেদ|প্রথমাংশ=শফি|তারিখ=১৬ জানুয়ারি ২০১৭|সংগ্রহের-তারিখ=২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮|মাধ্যম=newspaper}}</ref> ছিলেন। কাজী আরেফ আহমেদ [[বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা]]র রূপকারদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধকালে]] [[সিরাজুল আলম খান|স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ]]<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://mathbariarkantha.com/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%AA%E0%A6%B0/|শিরোনাম=স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা নিউক্লিয়াস গঠন —-নূর হোসাইন মোল্লা|শেষাংশ=নুর|প্রথমাংশ=হোসাইন মোল্লা|তারিখ=২০ মার্চ ২০১৭|কর্ম=উৎস হিসাবে ব্যবহার|সংগ্রহের-তারিখ=২৪ মার্চ ২০১৮|মাধ্যম=newspaper|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20180322111537/http://mathbariarkantha.com/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%AA%E0%A6%B0/|আর্কাইভের-তারিখ=২২ মার্চ ২০১৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> [[সিরাজুল আলম খান|বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স]]- বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কাজী আরেফ ছিলেন ছাত্রলীগের সমন্বয়ক ও বিএলএফ য়ের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান । স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে গঠিত [[জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল]] জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি জাসদের কৃষক ফ্রন্ট জাতীয় কৃষক লীগের সভাপতি ও [[জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল]] জাসদের কার্যকরী সভাপতি<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://samakal.com/todays-print-edition/tp-editorial-comments/article/140240171/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AB-%E0%A6%86%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A6-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A7%81-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A7%81-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE|শিরোনাম=কাজী আরেফ আহমেদ :কিছু স্মৃতি কিছু কথা|শেষাংশ=আম্বিয়া|প্রথমাংশ=শরীফ নুরুল|তারিখ=১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪|সংগ্রহের-তারিখ=}}</ref> ছিলেন।
 
==জন্ম ও শিক্ষা==
কাজী আরেফ আহমেদের পৈত্রিক নিবাস [[কুষ্টিয়া জেলা|কুষ্টিয়া]] জেলার মীরপুর উপজেলার খয়েরপুর গ্রামে। [[১৯৪৭]] সালে দেশ ভাগের পর বাবার সাথে ঢাকায় চলে আসেন। [[১৯৬০]] সালে পুরান [[ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল|ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল]] থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। পরে [[জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়|জগন্নাথ কলেজে]] উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে [[১৯৬৬]] সালে বি এস-সি ডিগ্রি অর্জন করেন । এরপর তিনি [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] [[ভূগোল]] বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন। পাকিস্তান সরকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে তিনি কালো তালিকাভুক্ত হন। ফলে তাকে স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
 
==ছাত্র রাজনীতি==
১৯৬০ সালে [[জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়|জগন্নাথ কলেজে]] ভর্তির পর কাজী আরেফ আহমেদ ছাত্ররাজনীতির হাতেখড়ি । [[১৯৬২ শিক্ষা আন্দোলন|১৯৬২]] সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরেুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এ বছরই তিনি [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্বপাকিস্তান]] ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন [[কে,এম ওবায়দুর রহমান]] ও সাধারণ সম্পাদক [[সিরাজুল আলম খান]]। [[১৯৬৩]] সালে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন কাজী আরেফ আহমেদ। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
 
[[নিউক্লিয়াস ও স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ]]:
 
[[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্বপাকিস্তান]] ছাত্রলীগের মধ্যে সুস্পষ্ট দু’টি ধারা বিদ্যমান ছিল। একটি ছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নিজস্ব রাজনীতির ধারা এবং অপর অংশের ঝোঁক ছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতি। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নিজস্ব রাজনীতির ধারার তিনজন ছাত্রনেতা [[১৯৬২]] সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে গোপন সংগঠন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ গঠন করেন। তিন সদস্যের এই ক্ষুদ্র সত্তা পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের ‘নিউক্লিয়াস’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। নিউক্লিয়াসের তিনজন সদস্য ছিলেন [[সিরাজুল আলম খান]], [[আব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ)|আব্দুর রাজ্জাক]] ও কাজী আরেফ আহমেদ। এরা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরের প্রগতিশীল অংশের মধ্যে থেকে প্রতিশ্রুতিশীল কর্মী সংগ্রহ করে সারাদেশে একটি সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলেন। নিউক্লিয়াসের কাজ ছিল, 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে যাবতীয় নীতি-কৌশল প্রনয়ণ করা এবং স্বাধীকার আন্দোলনকে সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সর্বময় কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ছিল এই তিন ছাত্রনেতার কাছে। দেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচি বিশেষত শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঘোষিত ছয় দফা, ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের এগারো দফার আন্দোলনসহ প্রতিটি আন্দোলনকে গণরূপদানের মাধ্যমে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলা। একইসাথে জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করা ছিল নিউক্লিয়াসের<ref name=":1">ষাট দশকের ছাত্ররাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি লেখক কে বি এম মফিজুর রহমান খান</ref> অন্যতম কাজ। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তৈরি, ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলন, ৩ মার্চ [[বাধীনতার ইশতেহার|স্বাধীনতার ইশতেহার]] পাঠ, জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন, জয়বাংলা বাহিনী গঠন এবং তার কুচকাওয়াজ ও বঙ্গবন্ধুকে সামরিক অভিবাদন জানানো, সবই ছিল স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ। বিপ্লবী পরিষদের সকল কর্মকাণ্ডের প্রতি বঙ্গবন্ধু [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবর রহমানে]]<nowiki/>র প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন ছিল।
 
নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্তে [[১৯৬৪]] সালে কাজী আরেফ আহমেদের পৈত্রিক নিবাস পুরনো ঢাকার [[১৪/৩ অভয় দাস লেনে]]<nowiki/>র বাড়িতে একটি সাইক্লোস্টাইল মেশিন স্থাপন করা হয়। এ মেশিনে মূদ্রিত ‘জয়বাংলা’ ও ‘বিপ্লবী বাংলা’<ref name=":1" /> নামে স্বাধীনতার ইশতেহার<ref name=":1" /> প্রচার করা হতো। নির্দেশ ছিল যে এ ইশতেহার পড়ার পর পুড়িয়ে বা ছিঁড়ে ফেলতে হবে। নিউক্লিয়াস সদস্যদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাকের অন্যতম দায়িত্ব ছিলো শেখ মুজিবুর রহমান ও [[বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ|আওয়ামী লীগে]]<nowiki/>র সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে নিউক্লিয়াসের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত রাখা। কাজী আরেফের দায়িত্ব ছিলো স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সংগঠন গড়ে তোলা। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে বাষট্টি সালে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছেষট্টির [[ছয় দফা আন্দোলন|ছয় দফার আন্দোলন,]] [[ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান]], [[পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০|সত্তরের সাধারণ নির্বাচন]] , [[সাতই মার্চের ভাষণ|৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষন]], শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে [[শেখ মুজিবুর রহমান|বঙ্গবন্ধু]] উপাধি প্রদান, নিউক্লিয়াস'র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তৈরি, আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ সর্বোপরি বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধসহ এ সকল কর্মকাণ্ডই ছিলো 'নিউক্লিয়াস'<ref name=":0" /> বা 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ। আর এ সকল কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রণীত হতো নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে। [[১৯৬২]] সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত নিউক্লিয়াসের সাংগঠনিক তত্ত্বাবধানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় সাত হাজার (৭০০০)সদস্য সংগৃহীত হয়।
 
==ছয়দফা ও এগারো দফা==
[[১৯৬৬]] সালে [[শেখ মুজিবুর রহমান]] লাহোরে বাঙালীর মুক্তি সনদ “[[ছয় দফা আন্দোলন|ছয়দফা]]” ঘোষণা করলে বাঙালির স্বাধিকারের বিষয়টা সামনে চলে আসে। ছয়দফা ঘোষণার পর তৎকালিন আওয়ামী লীগে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগের একটি অংশ এ ছয়দফাকে সমর্থন জানাতে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পূর্ব আলোচনা ছাড়া কেন ছয়দফা ঘোষণা করা হলো, সে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন কেউ কেউ। পূর্বপাকিস্তান ছাত্রলীগ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের আগেই ছাত্রলীগ ঢাকা মাহনগর কমিটি সর্বসন্মতিক্রমে ছয়দফার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে এবং মহানগর কমিটির সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ বিবৃতি দিয়ে ছয়দফার প্রতি সকলকে সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি ছয়দফার সমর্থনে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের করেন। ছয়দফা ঘোষণার আগেই স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক কাঠামো সারাদেশে বিস্তার লাভ করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ছয়দফা গোটা জাতির মুক্তি সনদ হিসেবে বাঙালির প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়। ছয়দফার আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী [[আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা|আগরতলার ষড়যন্ত্র মামলা]] দায়ের করে।
 
মামলা চলাকালে [[১৯৬৯]]'র ১৫ ফেব্রুয়ারিতে আগরতলা মামলার অভিযুক্ত [[সার্জেন্ট জহুরুল হক]]কে ঢাকা সেনাছাউনীতে গুলী করে হত্যা করা হয়। সার্জেন্ট জহুরুলের লাশ এলিফেন্ট রোডের বাসায় আনা হয়। এ সময়ে কাজী আরেফ আহমেদ<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=কুষ্টিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য মুক্তিযুদ্ধ|শেষাংশ=ইতিহাস ঐতিহ্য মুক্তিযুদ্ধ|প্রথমাংশ=কুষ্টিয়ার|প্রকাশক=এ্যাড শামসুল হুদা|বছর=|আইএসবিএন=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=}}</ref> তার সহকর্মীরা মাইকিং করে জনগণেকে মিছিলে অংশগ্হরণের আহ্বান জানান। একইসাথে এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বড় কিছু ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পান গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রায় দুইহাজার লোকের মিছিল শুরু হয়। মিছিল সচরাচর বড় সড়ক দিয়ে যায় । এ হিসাবে সেদিনের মিছিল সংকীর্ণ এলিফেন্ট রোড থেকে বের হয়ে নিউ মার্কেটের দিকে যাওয়র কথা । কিন্তু তা না হয়ে মিছিলটি আরেকটি সংকীর্ণ পথ ধরে পরিবাগের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি যখন হাতিরপুলের উপরে ওঠে ( এখন যেখানে হাতিরপুল বাজার তখন সেখানে একটি ব্রিজ ছিল এবং নিচ দিয়ে ট্রেন চলতো) তখন দেখা গেলো একটি বাড়িতে আগুন জ্বলছে । বাড়িটা ছিল তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী খাজা সাহাবুদ্দিনের। এতে সবাই বুঝতে পারলো কেন মিছিলটি এপথে এসেছে। এরপর খাজা খয়েরুদ্দিন, খাজা হাসান আসকারীর ( ঢাকার নবাব বলে পরিচিত এবং কনভেন মুসলিম লীগের প্রাদেশিক প্রেসিডেন্ট) বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় । তখন মিছিলে প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। এরপর মিছিলটি ডান দিকে ঘুরে বাংলা একাডেমীর পাশে লাল বাংলোর দিকে যায় । সেখানে [[আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা]]<nowiki/>র বিচারপতি এম এ রহমান থাকতেন । মিছিল গিয়ে সেই লাল বাংলোও পুড়িয়ে দেয় । এম এ রহমান পিছনের দরজা দিয়ে লুঙ্গি আর গেঙ্গি পরে লাহোর পালিয়ে যায় । আর কখনও তিনি বাংলাদেশে আসেননি । এই সব কিছুই ছিল নিউক্লিয়াসের পরিকল্পনা । এ জন্য নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সরঞ্জাম দিয়ে আগেই কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। মিছিলটি ছিল উপলক্ষ মাত্র। সেই সন্ধ্যায় ঢাকার রামপুরা ও নিলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি এবং বায়তুল মোকাররমের দুইটি অস্ত্রের দোকান জনগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে লুট করে । লুট করা অস্ত্র কেউ বাড়ি নিয়ে যায় নি। জনগণ অস্ত্রগুলো ইকবাল হালে নিউক্লিয়াস সদস্যদের কাছে জমা দেয়। কারণ তখনই নিউক্লিয়াসের চিন্তা ছিল যে, একটি সশস্ত্র যুদ্ধ ছাড়া দেশকে পাকিস্তানী শোষণ আর ঔপনিবেশিক শাসন বাবস্থা থেকে মুক্ত করা যাবে না ।
 
ছাত্রআন্দোলনকে বেগবান করতে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে একটি মঞ্চে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিউক্লিয়াস। [[১৯৬৯ এর গণ-অভ্যূত্থান|১৯৬৯]] সালে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে তোলা হয় [[এগারো দফা কর্মসূচী|১১ দফাভিত্তিক]] ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে সারাদেশে প্রচণ্ড আন্দোলন গড়ে ওঠে। ২১শে জানুয়ারি ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে আসাদ নিহত হন। আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে সেদিনই আবারো মিছিল বের করা হয়। এ মিছিল পরিণত হয় গণজোয়ারে। উত্তাল আন্দোলনে ঢাকা কেঁপে ওঠে। জনতার আন্দোলনের চাপে আগরতলা মামলা সরকার প্রত্যাহার করে এবং ২২শে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সকল অভিযুক্তরা মুক্তি পায়। অবশেষে ২৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করে। তারপরের রাজনীতি পুরোটাই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে নিউক্লিয়াস। স্বাধীকার আদায়ের সংগ্রাম খুব দ্রুত রূপ নিতে থাকে স্বাধীনতা সংগ্রামে। কাজী আরেফ আহমেদ তার সহযোদ্ধাদের নিয়ে এ সংগ্রামকে সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। আইয়ূব খানের পতনের পর [[জেনারেল ইয়াহিয়া খান]] পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসেন। তিনি সাধারণ নির্বাচন দেয়ার ঘোষণা দেন। শেখ মুজিবর রহমান ছয়দফার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ সময়ে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সদস্যগণ নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বাচনের ফলাফল নিরঙ্কুশভাবে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। বাঙালি জাতি [[ছয় দফা আন্দোলন|ছয় দফা]]<nowiki/>র পক্ষে ব্যাপকভাবে সমর্থন জানায়।
৫০ নং লাইন:
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম রাজনৈতিক দল [[জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল|জাসদ।]] বিজয়ীর বেশে মুক্তিযুদ্ধ ফেরত এক ঝাঁক উদীয়মান ও তরুণ স্বাধীন বাংলাদেশে ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে গঠন করেন জাসদ। আত্মপ্রকাশকালে ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সদস্যগণ ছিলেন, যুগ্মআহ্বায়ক: মেজর (অব.) [[এম এ জলিল]] ও [[আ.স.ম. আবদুর রব|আ স ম আব্দুর রব]], সদস্য: [[শাহজাহান সিরাজ]], [[বিধান কৃষ্ণ সেন]], [[রহমত আলী]], [[সুলতান উদ্দিন আহমেদ]] ও [[নুরে আলম জিকু]]। এই প্রক্রিয়ার পেছনে ছিলেন নিউক্লিয়াস সদস্য [[সিরাজুল আলম খান]] ও কাজী আরেফ আহমেদ। নিউক্লিয়াসের অপর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জাসদ গঠনের সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত থাকলেও তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি যে, বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করা সম্ভব।
 
জাসদের মুল লক্ষ্য ছিল, শ্রেণীবৈষম্যহীন স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। যে স্বপ্ন বুকে ধারণ করে তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গঠন করা হয় জাসদ। কাজী আরেফ আহমেদ ছিলেন সেই স্বপ্নদ্রষ্টাদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯৭২ থেকে [[১৯৭৫]] সাল পর্যন্ত সাহসিকতার সাথে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণআন্দোলন সংগঠিত ও পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন কাজী আরেফ আহমেদ। দলের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়, ‘আমরা লড়ছি শ্রেণিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’। দলটির রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ গ্রহণ করা হয়।
 
১৯৭৩ সালে দেশের সাধারণ নির্বাচনে জাসদ অংশগ্রহণ করে। ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে জাসদ ৭টি আসন লাভ করে। জাসদ গঠনের আগে থেকেই এ দল গঠনের সাথে সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণে গণকণ্ঠ পত্রিকা প্রকাশিত হতো। পরবর্তীতে কাজী আরেফ আহমেদ গণকণ্ঠ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এটি জাসদের দলীয় মুখপত্র হিসেবে প্রকাশিত হতে থাকে। [[১৯৭৮]] সালে কাজী আরেফ আহমেদ জাসদের কৃষক সংগঠন জাতীয় কৃষক লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। [[১৯৭৯]] সালে তিনি জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। [[১৯৭৪]] সালে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। জাসদ এ শাসন ব্যবস্থার বিরোধিতা করে। সরকার সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ফলে জাসদকে গোপন সংগঠনের তৎপরতায় জড়িয়ে পড়তে হয়। [[১৯৭৫]] সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জাসদকে নতুনভাবে সমস্যায় পড়তে হয়। এসময়ে দলের মধ্যে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক দেখা দেয়। নানা সময়ে দলের ভেতরে রাজনৈতিক বিতর্কের ফলে [[১৯৮০]], [[১৯৮২]][[১৯৮৬]] সালে মোট তিনদফায় জাসদ ভেঙ্গে যায়। এমন চড়াই-উৎড়াইয়ের পথে কাজী আরেফ আহমেদ ১৯৮৬ সালে জাসদ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামের সদস্য নির্বাচিত হন। এসময়ে জাসদের কোন প্রেসিডেন্ট না থাকায় তিনি মুলত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।
 
জাসদ গঠন এবং জাসদের রাজনীতি সম্পর্কে কাজী আরেফ আহমেদ বলেন, আমরা স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুর সাথে থাকতে পারি নাই। ১৯৭২ সালের মে মাস থেকে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিরোধ শুরু হয়। এর পরিণতি হিসেবে আমরা [[৩১ অক্টোবর|৩১শে অক্টোবর]] জাসদ গঠন করি। আমরা আন্দোলন করার চেষ্টা করেছি। সেক্ষেত্রে আমাদের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|১৯৭১]] সালে যেজন্য যুদ্ধ করেছিলাম, যেজন্য জনগণ যুদ্ধে সম্পৃক্ত হয়েছিল, সেই যুদ্ধ একটি মানচিত্র বা একটি পতাকা পাওয়ার জন্য ছিল না। জনগণের মুক্তিই ছিল সবচেয়ে বড় কথা। এই মুক্তি অর্থনৈতিক মুক্তি, ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা থেকে রাষ্ট্রীয় মুক্তি। এই মুক্তির মধ্যে সবকিছুই জড়িত ছিল। এই মুক্তি শুধুমাত্র স্বাধীন দেশের সীমানা নির্ধারণের মুক্তি ছিল না। আমরা যদি শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে না পারি, আমরা যদি গণতান্ত্রিক ও অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে না পারি তাহলে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো ধরে রাখা যাবে না। আমরা তো পাকিস্তান ধর্মরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি আরেকটি ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। আমরা অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। সমাজ এবং রাষ্ট্রীয়জীবন সবক্ষেত্রেই তেমনটি চেয়েছি। সেইসব বিষয় যখন আমরা দেখতে পেলাম না, সেসব বাস্তবায়নের যখন কোন লক্ষণ দেখলাম না, তখন আমরা বিরোধিতা করেছি। আমরা বিরোধিতা করেছি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করিনি। আমরা কখনই চাইনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা বা বঙ্গবন্ধুকে কেউ মেরে ফেলুক। আমরা চাইনি বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যা অত্যন্ত দুঃখজনক, বেদনাদায়ক, জঘন্য ঘটনা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে যদি আমরা বিপ্লব মনে করি তবে [[১৯৭৫]] সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড হল প্রতিবিপ্লব। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে চাওয়া-পাওয়াগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে মিনিপাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করা হয়েছিল।’
 
==জোটবদ্ধ আন্দোলন==
[[১৯৭৫|১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট]] বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিকভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন কাজী আরেফ আহমেদ ও তার দল। তিনি ৭৫ এর পটপরিবর্তনের রাজনৈতিক মূল্যায়ন করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে মোকাবেলায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের রাজনৈতিক নীতি-কৌশল প্রণয়ন করেন। এ কৌশলেরভিত্তিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে মেরুকরণের উদ্যোগ নেন। তার এ নীতি-কৌশলের ভিত্তিতেই ১৯৭২ থেকে [[১৯৭৫]] পর্যন্ত বৈরী রাজনৈতিক অবস্থানে থাকা আওয়ামী লীগ ও জাসদ [[১৯৮০]] সালে ১০ দলীয় ঐক্য মোর্চায় শামিল হয়। তার এ নীতি-কৌশলের ভিত্তিতেই [[১৯৮০]] দশকে সামরিক শাসন বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য মোর্চা গড়ে ওঠে। স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আট বছরের লড়াইয়ে রাজপথে যে জোটটি পরিণত হয়ে উঠেছিল আন্দোলন-সংগ্রামের প্রধান চালিকা শক্তি; সেই "[[পাঁচ দল]]"র শীর্ষ নেতৃত্ব ছিলেন কাজী আরেফ আহমেদ। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে [[৩১ জুলাই|৩১শে জুলাই]] তারিখে কাজী আরেফ কারাবরণ করেন এবং ৩১শে মার্চ [[১৯৮৮]] তারিখে মুক্তি পান। এই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে সংঘটিত [[১৯৯০]] এর ঐতিহাসিক ছাত্রগণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান সাহসী রূপকার ছিলেন কাজী আরেফ আহমেদ।
 
==জাতীয় সমন্বয় কমিটি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা==
[[জিয়াউর রহমান|জেনারেল জিয়াউর রহমানে]]<nowiki/>র সময়ে পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম বাংলাদেশে আসে।[[১৯৯১]]আসে।১৯৯১ সালের [[২৯ ডিসেম্বর|২৯শে ডিসেম্বর]] [[গোলাম আযম]]<nowiki/>কে জামায়াতে ইসলামের আমির ঘোষণা করলে, ফুসে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংগঠন ও সুধীজন। গড়ে ওঠে বেশকয়েকটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তারমধ্যে [[একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি|‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ ও ‘একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’]] অন্যতম। এরা পৃথক ব্যানারে রাজাকার-আলবদর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ শুরু করে। কাজী আরেফ আহমেদ বিশ্বাস করতেন যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোর ঐক্য ব্যতীত ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ রক্ষা করা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো ধরে রাখা। তাই তিনি [[জাহানারা ইমাম|শহীদ জননী জাহানারা ইমাম]]<nowiki/>কে সাথে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘[[মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’।]] সে সময় ঘাতক-দালাল বিরোধী লড়াইয়ে ব্যাপক সাড়া জাগানো সংগঠন "[[মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ড"]] গঠনে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি গোলাম আজমসহ একাত্তরের ঘাতক-দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় [[২৬শে মার্চ ১৯৯২ তারিখে]] ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে [[গণআদালত’|‘গণআদালত’]] বসে। এ আদালত গোলাম আজমকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং প্রতিকী ফাঁসি দেয়। এই গণআদালত সংঘটন ও এ আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন আদায়ে কাজী আরেফ মুখ্যভূমিকা পালন করেন। ঘাতক-দালাল ও রাজাকার-আলবদরদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা সে আন্দোলন ও জনমতের কারণেই ২০০৯ সালে আওয়ামী ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সংঘটিত অপরাধের বিচারকার্য পরিচালনা করতে পেরেছে।
 
==কালীদাসপুরে হত্যাকান্ড==
[[১৯৯৯]] সালের [[১৬ই ফেব্রুয়ারি]] [[কুষ্টিয়া জেলা|কুষ্টিয়া]]<nowiki/>র [[কালিদাসপুরের]] স্কুলমাঠে সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় বক্তব্যরত অবস্থায় সন্ত্রসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফ আহমেদ। সেদিন আরো নিহত হন কুষ্টিয়া জেলা জাসদ সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী সহ আরো তিনজন।
 
==তথ্যসূত্র==