বাংলা ভাষা আন্দোলন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][পরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
পরিষ্কারকরণ
৬ নং লাইন:
১৯৪৭ সালে [[দ্বিজাতি তত্ত্ব|দ্বিজাতি তত্ত্বের]] ভিত্তিতে [[ব্রিটিশ ভারত]] [[ভারত বিভাজন|ভাগ]] হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও [[ভারত অধিরাজ্য]] নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দু’টি অংশ: [[পূর্ব বাংলা]] (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত [[পূর্ব পাকিস্তান]]) ও [[পশ্চিম পাকিস্তান]]। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে [[পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল|পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার]] ঘোষণা করে যে, [[উর্দু ভাষা|উর্দুই]] হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যতঃ পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ [[১৪৪ ধারা]] জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
 
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি [[ঢাকা মেডিকেল কলেজ|ঢাকা মেডিকেল কলেজের]] কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে [[রফিক]]<ref name="rafiq-death" />, [[আব্দুস সালাম|সালাম]], এম. এ. ক্লাসের ছাত্র [[আবুল বরকত|বরকত]] ও [[আবদুল জব্বার (ভাষা শহীদ)|আব্দুল জব্বার]]<nowiki/>সহ<ref name="ref-banglapedia"/><ref name="azad-news" /> আরও অনেকে। এছাড়া ১৭ জন ছাত্র-যুবক আহত হয়। শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২১ ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি [[ছাত্র]], শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ [[হরতাল]] পালন করে এবং সভা-শোভাযাত্রাসহকারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন [[শফিউর রহমান]] শফিক, রিক্সাচালক আউয়াল এবং এক কিশোর। ২৩ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও পুলিশ অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়। এ নির্লজ্জ, পাশবিক , পুলিশি হামলার প্রতিবাদে [[মুসলিম লীগ]] সংসদীয় দল থেকে সেদিনই পদত্যাগ করেন। ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গনে রাতারাতি ছাত্রদের দ্বারা গড়ে ওঠে [[শহীদ মিনার]], যা ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন শহীদ [[শফিউর রহমান|শফিউর রহমানের]] পিতা। ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন ''[[দৈনিক আজাদ]]'' পত্রিকার সম্পাদক জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দীন।
 
ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের [[১৯৫৬'র পাকিস্তানের সংবিধান|প্রথম সংবিধান]] প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লিখিত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রবর্তিত হয়। সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৭ সালে [[বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭|বাংলা ভাষা প্রচলন আইন]] জারি করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_pdf_part.php?id=705|শিরোনাম=বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|তারিখ=|ওয়েবসাইট=[[আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)|আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়]]|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20190520103121/http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_pdf_part.php?id=705|আর্কাইভের-তারিখ=২০১৯-০৫-২০|সংগ্রহের-তারিখ=2019-04-22|অকার্যকর-ইউআরএল=না}}</ref> ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর [[ইউনেস্কো]] বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে [[আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস]] হিসেবে ঘোষণা করে যা বৈশ্বিক পর্যায়ে সাংবার্ষিকভাবে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করা হয়।<ref>Glassie, Henry and Mahmud, Feroz.2008.Living Traditions. Cultural Survey of Bangladesh Series-II. এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ. Dhaka. p.578</ref>
৪২ নং লাইন:
[[চিত্র:Partition of India.PNG|thumb|[[ভারতীয় উপমহাদেশ|ভারতীয় উপমহাদেশে]] ব্রিটিশশাসিত অঞ্চলগুলো ১৯৪৭ এবং ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে চারটি সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয়: [[ভারত]], [[বার্মা]] (বর্তমান মায়ানমার), সিংহল (বর্তমান [[শ্রীলঙ্কা]]) এবং পাকিস্তান (যার মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা অধুনা বাংলাদেশ নামে পরিচিত)।]]
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের (পূর্ব বাংলা হিসেবেও পরিচিত) বাংলাভাষী ৪ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ ৬ কোটি ৯০ লাখ জনসংখ্যাবিশিষ্ট নবগঠিত পাকিস্তানের নাগরিকে পরিণত হয়।<ref name="ref-banglapedia" /> কিন্তু পাকিস্তান সরকার, প্রশাসন এবং [[সামরিক বাহিনী|সামরিক বাহিনীতে]] পশ্চিম পাকিস্তানীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল।<ref name=JSToldenburg>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি
| শেষাংশ = Oldenburg | প্রথমাংশ = Philip | তারিখ = August, 1985
| শিরোনাম = "A Place Insufficiently Imagined": Language, Belief, and the Pakistan Crisis of 1971
৬৯ নং লাইন:
 
=== প্রথম প্রতিক্রিয়া ===
গণপরিষদের ঘটনার প্রথম প্রতিক্রিয়া শুরু হয় ঢাকায়। [[ফেব্রুয়ারি ২৬|২৬ ফেব্রুয়ারি]] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, [[ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ]] ও [[জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]] (জবি) তৎকালীন [[জগন্নাথ কলেজ]] ছাত্রদের উদ্যোগে শহরের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে।<!-- কার উদ্যোগ? --> [[ফেব্রুয়ারি ২৯|২৯ ফেব্রুয়ারি]] তারিখেও ধর্মঘট ঘোষিত হয় এবং ঐদিন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিবাদ দিবস ও ধর্মঘট পালন করা হয়। সরকারের প্ররোচনায় পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করে এবং অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /> [[তমদ্দুন মজলিস]] ঐসময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। [[মার্চ ২|২ মার্চ]] [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] ফজলুল হক হলে ছাত্র-বুদ্ধিজীবিদের এক সমাবেশ ঘটে।<ref name="Rafiq"/> ঐ সভায় দ্বিতীয়বারের মত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় এবং শামসুল আলম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এ পরিষদে অন্যান্য সংগঠনের দুই জন করে প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করা হয়।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /> সেখান থেকে ছাত্ররা [[মার্চ ১১|১১ মার্চ]] ধর্মঘট আহ্বান করে এবং ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে তার সাহসী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানায়।
 
১১ মার্চের কর্মসূচী নির্ধারণের জন্য [[মার্চ ১০|১০ মার্চ]] ফজলুল হক হলে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১১ মার্চ ভোরে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ছাত্ররা বের হয়ে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণাঙ্গ ধর্মঘট পালিত হয়। সকালে ছাত্রদের একটি দল রমনা ডাকঘরে গেলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ছাত্রদের আরও একটি দল রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সচিবালয়ের সামনে নবাব আবদুল গণি রোডে পিকেটিংয়ে অংশ নেয়। তারা গণপরিষদ ভবন (ভেঙ্গে পড়া [[জগন্নাথ হল|জগন্নাথ হলের]] মিলনায়তন), প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বর্ধমান হাউস (বর্তমান [[বাংলা একাডেমী]]), হাইকোর্ট ও সচিবালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে অফিস বর্জনের জন্যে সবাইকে চাপ দিতে থাকে, ফলে বিভিন্ন স্থানে তাদেরকে পুলিশের লাঠিচার্জের সম্মুখীন হতে হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা খাদ্যমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ আফজল ও শিক্ষামন্ত্রী আবদুল হামিদকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। এ বিক্ষোভ দমনের জন্য সরকার সেনাবাহিনী তলব করে। পূর্ব পাকিস্তানের জেনারের অফিসার কম্যান্ডিং [[আইয়ুব খান|ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান]] (পরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি) মেজর পীরজাদার অধীনে একদল পদাতিক সৈন্য নিয়োগ করেন এবং স্বয়ং গণপরিষদে গিয়ে [[খাজা নাজিমুদ্দিন|খাজা নাজিমুদ্দিনকে]] বাবুর্চিখানার মধ্য দিয়ে বের করে আনেন।<ref>আইয়ুব খান ‘প্রভু নয় বন্ধু’; পৃষ্ঠা: ৩৮</ref> বিকেলে এর প্রতিবাদে সভা অনুষ্ঠিত হলে পুলিশ সভা পণ্ড করে দেয় এবং কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ছিলেন [[শামসুল হক (রাজনীতিবিদ)|শামসুল হক]], [[শেখ মুজিবুর রহমান]], [[অলি আহাদ]], [[শওকত আলী (রাজনীতিবিদ)|শওকত আলী]], [[কাজী গোলাম মাহবুব]], রওশন আলম, রফিকুল আলম, আব্দুল লতিফ তালুকদার, শাহ্ মোঃ নাসিরুদ্দীন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ। ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন নঈমুদ্দিন আহমদ।<ref name="Rafiq"/>
 
=== খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে চুক্তি ===
১১ তারিখের এ ঘটনার পর ১২ থেকে ১৫ মার্চ ধর্মঘট পালন করা হয়। আন্দোলনের তীব্রতার মুখে ১৫ মার্চ খাজা নাজিমুদ্দিন সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে [[আবুল কাশেম]], [[কামরুদ্দীন আহমদ]], [[মোহাম্মদ তোয়াহা]], [[সৈয়দ নজরুল ইসলাম]], আবদুর রহমান চৌধুরী প্রমূখ অংশগ্রহণ করেছিলেন। আলোচনাসাপেক্ষে দুই পক্ষের মধ্যে ৮টি বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে সরকারের এ নমনীয় আচরণের প্রধান কারণ ছিল ১৯ মার্চ জিন্নাহ্‌'র [[ঢাকা]] আগমন। তার আসার পূর্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত করার জন্য নাজিমুদ্দিন চুক্তিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার দাবিটি তখন পর্যন্ত মেনে নেয়া হয়নি। চুক্তিতে আন্দোলনের সময় গ্রেফতারকৃত বন্দিদের মুক্তি, পুলিশের অত্যাচারের নিরপেক্ষ তদন্ত, বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম ও রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়া, সংবাদপত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ইত্যাদি বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত ছিল।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 />
 
=== মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্‌র ঢাকা সফর ===
৮২ নং লাইন:
| সাময়িকী = International Affairs | খণ্ড = 48 | সংখ্যা নং = 2 | ডিওআই =10.2307/2613440 |পাতাসমূহ = 242–249 | তারিখ = April, 1972|issn=0020-5850| প্রকাশক = Royal Institute of International Affairs
| jstor = 2613440
| সূত্র = Harvnb }}</ref><ref name="umarHarvnb2">{{Harvnb|Umar|1979|p=279}}</ref><ref name=uddin /><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি
| সংবাদপত্র =দৈনিক আজাদ | তারিখ =24 February 1948
| শিরোনাম =
১১৫ নং লাইন:
| সূত্র = Harvnb | jstor=3023818}}</ref> তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “জনগণের মধ্যে যারা ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে, তারা ''পাকিস্তানের শত্রু'' এবং তাদের কখনোই ক্ষমা করা হবে না” । জিন্নাহ্‌'র এ বিরূপ মন্তব্যে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে উপস্থিত ছাত্র-জনতার একাংশ। ''উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা'' - এ ধরনের একপেশে উক্তিতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।<ref name="umarHarvnb2"/> [[মার্চ ২৪|২৪ মার্চ]] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের [[কার্জন হল|কার্জন হলে]] গিয়েও তিনি একই ধরনের বক্তব্য রাখেন।<ref name=JSToldenburg/> তিনি উল্লেখ করেন এ আন্দোলন সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর বহিঃপ্রকাশ এবং অভিযোগ করেন কিছু লোক এর মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে। যখন তিনি উর্দুর ব্যাপারে তার অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ করেন, উপস্থিত ছাত্ররা সমস্বরে ''না, না'' বলে চিৎকার করে ওঠে।
 
একই দিনে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল জিন্নাহ্‌'র সাথে সাক্ষাৎ করে এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন [[শামসুল হক (রাজনীতিবিদ)|শামসুল হক]], কামরুদ্দিন আহমদ, আবুল কাশেম, [[তাজউদ্দিন আহমদ]], মোহাম্মদ তোয়াহা, আজিজ আহমদ, অলি আহাদ, নঈমুদ্দিন আহমদ, শামসুল আলম এবং নজরুল ইসলাম।<ref name="ref-banglapedia" /> কিন্তু জিন্নাহ্ খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তিকে ''একপেশে'' এবং ''চাপের মুখে সম্পাদিত'' বলে প্রত্যাখান করেন।<ref name=helal263>{{Harvnb|Al Helal|2003|pp=263–265}}</ref> অনেক তর্ক-বিতর্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য জিন্নাহ্'র নিকট স্মারকলিপি পেশ করে।<ref name="bashir377393"/> [[মার্চ ২৮|২৮ মার্চ]] জিন্নাহ্ ঢাকা ত্যাগ করেন এবং সেদিন সন্ধ্যায় [[রেডিও|রেডিওতে]] দেয়া ভাষণে তার পূর্বেকার অবস্থানের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন।<ref>{{Harvnb|Umar|1979|p=290}}</ref>
জিন্নাহ্'র ঢাকা ত্যাগের পর ছাত্রলীগ এবং তমুদ্দন মজলিসের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তমুদ্দন মজলিসের আহ্বায়ক শামসুল আলম তার দায়িত্ব মোহাম্মদ তোয়াহা'র কাছে হস্তান্তর করেন।<ref name="umarHarvnb2"/> পরবর্তীতে তমুদ্দন মজলিস আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবার জন্য কমিউনিস্টদের দায়ী করে একটি বিবৃতি প্রদান করে এবং পরে তারা আস্তে আস্তে আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসে।
 
=== লিয়াকত আলি খানের ঢাকা সফর ===
১৯৪৮ সালের [[নভেম্বর ১৮|১৮ নভেম্বর]] পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। [[নভেম্বর ২৭|২৭ নভেম্বর]] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে তিনি এক ছাত্রসভায় ভাষণ দেন। ঐ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের তরফ থেকে প্রদত্ত মানপত্রে বাংলা ভাষার দাবি পুনরায় উত্থাপন করা হয়, কিন্তু তিনি কোনোরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। [[নভেম্বর ১৭|১৭ নভেম্বর]] তারিখে [[আতাউর রহমান খান|আতাউর রহমান খানের]] সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের এক সভায় আজিজ আহমদ, আবুল কাশেম, [[শেখ মুজিবুর রহমান]], কামরুদ্দীন আহমদ, আবদুল মান্নান, [[তাজউদ্দিন আহমদ]] প্রমুখ একটি স্মারকলিপি প্রণয়ন করেন এবং সেটি প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের কাছে পাঠানো হয়। [[প্রধানমন্ত্রী]] এক্ষেত্রেও কোনো সাড়া দেননি।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /><ref name=Islam>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Islam |প্রথমাংশ=Rafiqul |শিরোনাম=Amar Ekushey O Shaheed Minar|বছর=2000 |প্রকাশক=Poroma |অবস্থান=Dhaka |ভাষা=Bengali |আইএসবিএন=984-8245-39-1 |পাতাসমূহ=62–85 }}</ref>
 
=== ভাষা সমস্যার প্রস্তাবিত সমাধান ===
১২৭ নং লাইন:
== ১৯৫২: ভাষা আন্দোলনের পুনর্জাগরণ ==
[[চিত্র:4th Feb 1952 NobabPureRoad.jpg|thumb|১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নওয়াবপুর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) ছাত্রদের মিছিল।]]
ভাষা আন্দোলনের মতো আবেগিক বিষয়ের পুনরায় জোরালো হবার পেছনে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিনের ভাষণ প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।<ref name=bashir377393/> তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন [[খাজা নাজিমুদ্দিন]] ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন এবং ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানের এক জনসভায় দীর্ঘ ভাষণ দেন। তিনি মূলত জিন্নাহ্'র কথারই পুনরুক্তি করে বলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।<ref name=helal263/> রেডিওতে সরাসরি সম্প্রচারিত তার ভাষণে তিনি আরো উল্লেখ করেন যে কোনো জাতি দু'টি রাষ্ট্রভাষা নিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারেনি।<ref name=helal263/> নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার প্রতিবাদে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২৯ জানুয়ারি প্রতিবাদ সভা এবং ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালন করে। সেদিন ছাত্রসহ নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমবেত হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /> পরে তারা তাদের মিছিল নিয়ে বর্ধমান হাউসের (বর্তমান [[বাংলা একাডেমী]]) দিকে অগ্রসর হয়।<ref name="Sri"/> পরদিন ১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত সভায় মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের [[সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদ]] গঠিত হয়।<ref name="ref-banglapedia"/><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি
| সংবাদপত্র =দৈনিক আজাদ | তারিখ =1 February 1952
| শিরোনাম =
১৩৫ নং লাইন:
পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে সমবেত হয়। সমাবেশ থেকে আরবি লিপিতে বাংলা লেখার প্রস্তাবের প্রতিবাদ এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণের দাবি জানানো হয়। ছাত্ররা তাদের সমাবেশ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে।<ref>[[দৈনিক আজাদ]], ফেব্রুয়ারি ৫, ১৯৫২</ref>
 
[[ফেব্রুয়ারি ২০|২০ ফেব্রুয়ারি]] সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে [[ফেব্রুয়ারি ২১|২১ ফেব্রুয়ারি]] থেকে ঢাকায় এক মাসের জন্য সভা, সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিভিন্ন হলে সভা করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ৯৪ নবাবপুর রোডস্থ আওয়ামী মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে [[আবুল হাশিম|আবুল হাশিমের]] সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের কিছু সদস্য নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার পক্ষে থাকলেও, সবশেষে ১১-৩ ভোটে<ref>পরিষদের সভায় মোট ১৫জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু [[মোহাম্মদ তোয়াহা]] ভোট দানে বিরত ছিলেন।</ref> ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /> ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে একই বিষয় নিয়ে পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সলিমুল্লাহ হলে [[ফকির শাহাবুদ্দীন|ফকির শাহাবুদ্দীনের]] সভাপতিত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ফজলুল হক মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত সভায় নেতৃত্ব দেন আবদুল মোমিন। [[শাহাবুদ্দিন আহমেদ|শাহাবুদ্দিন আহমদের]] প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদকে এই সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নেন আবদুল মোমিন এবং শামসুল আলম।<ref>গাজীউল হক, একুশের সংকলন, প্রকশিত: ১৯৮০, পৃষ্ঠা: ১৩৮</ref>
 
=== ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনা ===
১৬৫ নং লাইন:
| তারিখ =23 February 1952 }}</ref> উল্লেখ্য, জুবিলী প্রেস থেকে সকালের পত্রিকা বের হয়েছিল।
 
একই দিনে পুলিশ দ্বারা আক্রমণ ও হত্যার বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। নবাবপুর রোডের বিশাল জানাজার মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ করে। এই গুলিবর্ষণে শহীদ হন ঢাকা হাইকোর্টের কর্মচারী [[শফিউর রহমান]], ওয়াহিদুল্লাহ এবং আবদুল আউয়াল।<ref name=VAAncholicItihash-P5-P27 /> একই রাস্তায় অহিউল্লাহ নামে নয় বছরের এক বালকের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।<ref name="ref-banglapedia"/><ref>{{Harvnb|Al Helal|2003|p=483}}</ref> জনশ্রুতি আছে, পুলিশ কিছু লাশ কৌশলে সরিয়ে ফেলে।
 
== পরবর্তী ঘটনা (১৯৫২) ==
১৮০ নং লাইন:
অবশেষে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেবার পরে ১৯৫৭ সালে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য]] অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির তত্ত্বাবধানে ১৯৬৩ সালে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।<ref name="Islam"/> এবং ১৯৬৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ বরকতের মা উক্ত মিনারটি উদ্বোধন করেন।<ref>"জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫"- ওলি আহাদ পৃ-১৫৩</ref>
 
[[ফেব্রুয়ারি ২৫]] তারিখে, কল-কারখানার শ্রমিকরা [[নারায়ণগঞ্জ]] শহরে ধর্মঘটের ডাক দেয়।<ref name="The Azad" /> [[ফেব্রুয়ারি ২৯|ফেব্রুয়ারির ২৯]] তারিখে প্রতিবাদে অংশগ্রহকারীরা ব্যাপক পুলিশী হামলার শিকার হন।<ref name="umarnarayan">{{Harvnb|Umar|1979|pp=417–418}}</ref>
 
=== একুশের গান ===
২১১ নং লাইন:
 
== রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ==
১৯৫৪ সালের ৭ মে মুসলিম লীগের সমর্থনে বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেয়া হয়।<ref name="Pakspace"/> ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের [[১৯৫৬'র পাকিস্তানের সংবিধান|প্রথম সংবিধান]] প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লিখিত হয়।<ref name="bashir608613" /> সংবিধানের ২১৪(১) অধ্যায়ে রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে লেখা হয়:
{{উক্তি|214.(1) The state language of Pakistan shall be Urdu and Bengali.<br />
[২১৪. (১) উর্দু এবং বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।]}}
যদিও আইয়ুব খানের প্রতিষ্ঠিত সামরিক সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল; ১৯৫৯ সালের ৬ জানুয়ারি সামরিক শাসকগোষ্ঠী এক সরকারি বিবৃতি জারি করে এবং ১৯৫৬ সালের সংবিধানে উল্লেখিত দুই রাষ্ট্র ভাষার উপর সরকারি অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।<ref name="lambert">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি
২৩৬ নং লাইন:
=== বাংলাদেশের স্বাধীনতা ===
{{মূল নিবন্ধ|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ}}
যদিও ১৯৫৬ সালের পর সরকারি ভাষার বিতর্ক সম্পন্ন হয়, কিন্তু আইয়ুব খানের সামরিক শাসন পাকিস্তানের [[পাঞ্জাবি জাতি|পাঞ্জাবি]] ও পশতুনদের দেনাগুলো বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়। জনসংখ্যার দিক থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সামরিক এবং বেসামরিক চাকুরীর ক্ষেত্রে বাঙালিদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব এবং সরকারি সাহায্যের দিক থেকেও বাঙালিদের প্রাপ্ত অংশ ছিল খুবই কম। জাতিগতভাবে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বাঙালিদের এ বৈষম্যের ফলে চাপা ক্ষোভের জন্ম নিতে থাকে। এরই প্রভাব হিসেবে আঞ্চলিক স্বার্থসংরক্ষণকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের সমর্থন নিরঙ্কুশভাবে বাড়তে থাকে।<ref name=uddin>{{Harvnb|Uddin|2006|pp=3–16, 120–124}}</ref> এর ফলেই পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আরো বড় অধিকার আদায় ও [[গণতন্ত্র|গণতন্ত্রের]] দাবিতে [[ছয় দফা আন্দোলন]] শুরু করে। এ আন্দোলনই পরবর্তীতে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের]] আকার ধারণ করে।<ref name="B2g" /><ref name="JSToldenburg" />
 
== পশ্চিম পাকিস্তানে প্রতিক্রিয়া ==