জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৮ নং লাইন:
|sound_title = জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে (যন্ত্রসংগীত)
}}
'''জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে''' [[ভারত|ভারতের]] জাতীয় সংগীত। এই গানটি [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] কর্তৃক তৎসম [[বাংলা|বাংলা ভাষায়]] রচিত। গানটির রচনাকাল জানা যায় না। [[১৯১১]] খ্রিষ্টাব্দে [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|জাতীয় কংগ্রেসের]] একটি সভায় এটি প্রথম গীত হয়। [[১৯৫০]] খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সংগাতরূপে স্বীকৃতি লাভ করে এর প্রথম স্তবকটি। [[বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]] রচিত [[বন্দেমাতরম]] গানটিও সমমর্যাদায় জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি লাভ করে। বর্তমানে ''জনগণমন'' ভারতের ''জাতীয় সংগীত'' বা ''রাষ্ট্রগীত'' (''ন্যাশনাল অ্যানথেম'') ও ''বন্দেমাতরম'' ভারতের ''জাতীয় স্তোত্র'' বা ''রাষ্ট্রগান'' (''ন্যাশানাল সং'') বিবেচিত হয়।
 
''জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে'' ইমন রাগে কাহারবা তালে নিবদ্ধ। দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর এর স্বরলিপিকার। ''স্বরবিতান ১৬''-তে এর স্বরলিপি মুদ্রিত। [[ভারত সরকার]] অনুমোদিত স্বরলিপিটি বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ প্রকাশিত ''রাষ্ট্র সংগীত'' গ্রন্থে মুদ্রিত।
৭৩ নং লাইন:
== ইতিহাস ==
[[চিত্র:Rabindranath Tagore unknown location.jpg|thumb|right|300px]]
''জনগণমন'' সংগীতের কোনো পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। সেই কারণে এই গানটি কোথায় কবে রচিত হয়েছিল তা নিশ্চিত জানা যায়না। গানটি প্রথম গীত হয় [[২৭ ডিসেম্বর]], [[১৯১১]] তারিখের মধ্যে [[কলকাতা|কলকাতায়]] আয়োজিত [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের]] ২৬তম বার্ষিক অধিবেশনে। গানটি গাওয়া হয়েছিল সমবেতকণ্ঠে। দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে গানের রিহার্সাল হয়েছিল ডক্টর [[নীলরতন সরকার|নীলরতন সরকারের]] হ্যারিসন রোডস্থ (বর্তমানে [[মহাত্মা গান্ধী]] রোড) বাসভবনে। পরদিন দ্য বেঙ্গলি পত্রিকায় গানটির ইংরেজি অনুবাদসহ এই সংবাদের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। [[ব্রাহ্মসমাজ|আদি ব্রাহ্মসমাজের]] মুখপত্র [[তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা|তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার]] মাঘ ১৩১৮ সংখ্যা অর্থাৎ জানুয়ারি [[১৯১২]] সংখ্যায় ''ভারত-বিধাতা'' শিরোনামে প্রকাশিত এই গানটি ব্রহ্মসঙ্গীত আখ্যায় প্রচারিত হয়েছিল। সেই বছর [[মাঘোৎসব|মাঘোৎসবেও]] গানটি গীত হয়।<ref>''গানের পিছনে রবীন্দ্রনাথ'', সমীর সেনগুপ্ত, প্যাপিরাস, [[কলকাতা]], [[২০০৮]], পৃ. ১১৬</ref>
 
অধুনা [[অন্ধ্রপ্রদেশ]] রাজ্যের মদনপল্লী নামক স্থানে রবীন্দ্রনাথ ''জনগণমন''-এর ইংরেজি অনুবাদ করেন। [[১৯১১]] সালে প্রথম প্রকাশিত হলে এই গানটি রবীন্দ্রনাথ-সম্পাদিত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার পাতাতেই রয়ে যায়। [[১৯১৮]]-[[১৯১৯|১৯]] খ্রিষ্টাব্দে বেসান্ত থিওজফিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জেমস এইচ কাজিনস রবীন্দ্রনাথকে সেখানে কয়েকদিন অতিবাহিত করার আমন্ত্রণ জানান। কাজিনস ছিলেন [[আইরিশ ভাষা|আইরিশ]] ভাষার এক বিতর্কিত কবি ও রবীন্দ্রনাথের বিশিষ্ট বন্ধু। [[২৮শে ফেব্রুয়ারি|২৮ ফেব্রুয়ারি]] একটি ছাত্র সম্মেলনে তিনি কাজিনস-এর অনুরোধে বাংলায় গানটি গেয়ে শোনান। তার কয়েকদিন পরে, মদনপল্লীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ কবি গানটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন এবং পাশ্চাত্য সংগীত বিশেষজ্ঞা কাজিনস-পত্নী মার্গারেট গানটির স্বরলিপি রচনা করেন। এই স্বরলিপিটি আজো অনুসরণ করা হয়ে থাকে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.hindu.com/mag/2006/03/19/stories/2006031900120400.htm |শিরোনাম=India beats: A Song for the Nation |সংগ্রহের-তারিখ=2007-07-25 |লেখক=Vani Doraisamy |বিন্যাস=HTML |প্রকাশক=The Hindu |ভাষা=English }}</ref><ref>রবিজীবনী (সপ্তম খণ্ড), প্রশান্তকুমার পাল, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, [[কলকাতা]], [[১৯৯৭]] পৃ.৩৮১</ref>
 
মদনপল্লীর বেসান্ত থিওজফিক্যাল কলেজের লাইব্রেরিতে আজও সেই মূল ইংরেজি অনুবাদটি ফ্রেমবদ্ধ আকারে প্রদর্শিত হয়।<ref>Our National Songs, Publication Division, Ministry of Information and Broadcasting, Government of India, New Delhi, 1962, p.3</ref>
১১০ নং লাইন:
{{cquote|“...সে বৎসর ভারতসম্রাটের আগমনের আয়োজন চলছিল। রাজসরকারে প্রতিষ্ঠাবান আমার কোনও বন্ধু সম্রাটের জয়গান রচনার জন্যে আমাকে বিশেষ করে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শুনে বিস্মিত হয়েছিলুম, সেই বিস্ময়ের সঙ্গে মনে উত্তাপেরও সঞ্চার হয়েছিল। তারই প্রবল প্রতিক্রিয়ার ধাক্কায় আমি জনগণমন-অধিনায়ক গানে সেই ভারতভাগ্যবিধাতার জয় ঘোষণা করেছি, পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পন্থায় যুগ যুগ ধাবিত যাত্রীদের যিনি চিরসারথি, যিনি জনগণের অন্তর্যামী পথপরিচায়ক, সেই যুগযুগান্তরের মানবভাগ্যরথচালক যে পঞ্চম বা ষষ্ঠ কোনো জর্জই কোনক্রমেই হতে পারেন না সে কথা রাজভক্ত বন্ধুও অনুভব করেছিলেন।...<ref>গানের পিছনে রবীন্দ্রনাথ, সমীর সেনগুপ্ত, প্যাপিরাস, ২০০৮, পৃ. ১১৬ থেকে উদ্ধৃত</ref>}}
 
ভারতের জাতীয় সংগীতের ‘সিন্ধু’ শব্দটিকে পরিবর্তিত করে ‘[[কাশ্মীর]]’ শব্দটি যোজনা করার দাবি ওঠে [[২০০৫]] খ্রিষ্টাব্দে। যাঁরা দাবি তুলেছিলেন, তাদের যুক্তি ছিল, [[১৯৪৭]] খ্রিষ্টাব্দের ভারত বিভাগের পর [[সিন্ধু প্রদেশ]] সম্পূর্ণত [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই দাবির বিরোধীরা পাল্টা যুক্তি দেন, জাতীয় সংগীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটি কেবলমাত্র সিন্ধু প্রদেশ নয়, বরং [[সিন্ধু নদ]] ও ভারতীয় সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ [[সিন্ধি ভাষা]] ও সংস্কৃতিরও পরিচায়ক। [[ভারতের সুপ্রিম কোর্ট]] এই যুক্তি মেনে জাতীয় সংগীতের ভাষায় কোনোরূপ পরিবর্তনের বিপক্ষে মত দেন।
 
[[১৯৮৫]] খ্রিষ্টাব্দে [[কেরল]] রাজ্যের জিহোবাস উইটনেস-এর কয়েকজন ছাত্র বিদ্যালয়ে জাতীয় সংগীত গাইতে অস্বীকার করলে, তাদের স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয়। একজন অভিভাবক সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে, সুপ্রিম কোর্ট কেরল হাইকোর্টের রায় বদলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের পুনরায় ভরতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের সেই ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়েছিল, “আমাদের (ভারতীয়) ঐতিহ্য শেখায় সহিষ্ণুতা, আমাদের দর্শন শেখায় সহিষ্ণুতা, আমাদের সংবিধান শেখায় সহিষ্ণুতা, তাকে আমরা যেন নষ্ট করে না ফেলি।”<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি
|শিরোনাম = Bijoe Emmanuel & Ors V. State of Kerala & Ors [1986] INSC 167
|প্রকাশক = World Legal Information Institute
১৩০ নং লাইন:
 
=== জেমস এইচ কাজিনস ===
{{cquote|আমার প্রস্তাব হল, ডক্টর রবীন্দ্রনাথের গভীর দেশাত্মবোধক, আদর্শ প্রণোদিত এবং একই সঙ্গে বিশ্বাত্মবোধক ''মর্নিং সং অব ইন্ডিয়া'' (''জনগণমন''), যা বিগত কুড়ি বছর বেসরকারিভাবে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত, তাকেই সরকারিভাবে অনুমোদন করা হোক। <ref>রবিজীবনী (সপ্তম খণ্ড), প্রশান্তকুমার পাল, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, [[কলকাতা]], [[১৯৯৭]] পৃ.৩৮১ (উদ্ধৃত ও মূল ইংরেজি থেকে অনূদিত)</ref>}}
 
=== [[মহাত্মা গান্ধী]] ===
১৯২ নং লাইন:
* ''গীতবিতান'' (প্রথম খণ্ড), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, [[কলকাতা]], বৈশাখ ১৩৮১ সংস্করণ
* ''গীতবিতান আর্কাইভ'' (তথ্যভিত্তিক সংগীতসমৃদ্ধ সফটওয়্যার), সংকলন, সংগ্রহ ও বিন্যাস : ড. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার, ডিভিডি রম, সংখ্যা ডি ৪২০০১, সারেগামা ইন্ডিয়া লিমিটেড, ২০০৫
* ''রবিজীবনী'' (সপ্তম খণ্ড), প্রশান্তকুমার পাল, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, [[কলকাতা]], [[১৯৯৭]]
* ''গানের পিছনে রবীন্দ্রনাথ'', সমীর সেনগুপ্ত, প্যাপিরাস, কলকাতা, [[২০০৮]]
* ''Our National Songs'', প্রকাশনা বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, ভারত সরকার, নতুন দিল্লি, ১৯৬২
* ''গায়ক রবীন্দ্রনাথ'', পার্থ বসু, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, [[কলকাতা]]