রুবিক’স কিউব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৩ নং লাইন:
[[চিত্র:Rubik's cube, variations 2×2×2 - 5×5×5.jpg|thumb|220px|বিভিন্ন ধরনের রুবিক্‌স কিউব [রুবিক্স রিভেঞ্জ (৪x৪x৪), প্রফেসরস কিউব (৫x৫x৫), পকেট কিউব (২x২x২), রুবিক্স কিউব (৩x৩x৩)]]]
 
'''রুবিক্‌স কিউব''' ({{lang-en|Rubik's Cube}}) একটি ঘনাকার যান্ত্রিক ধাঁধা। [[১৯৭৪]] সালে [[হাঙ্গেরী|হাঙ্গেরীয়]] ভাস্কর ও স্থাপত্যের অধ্যাপক [[এর্নো রুবিক]] এটি উদ্ভাবন করেন। রুবিক নিজে এর নাম দিয়েছিলেন ম্যাজিক কিউব (Magic Cube), কিন্তু পরবর্তীতে [[১৯৮০]] সালে Ideal Toys নামের এক খেলনা প্রস্তুতকারী কোম্পানী এর নাম দেয় রুবিক্‌স কিউব অর্থাৎ রুবিকের ঘনক।
 
রুবিক্‌স কিউব সাধারণত ৩x৩x৩ মাত্রাবিশিষ্ট ঘনকাকৃতির হয়ে থাকে। ঘনকের প্রতিটি তল আবার ৯টি করে বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত থাকে। এই ছোট বর্গক্ষেত্রগুলি ৬টি ভিন্ন রঙের যেকোন একটি রঙে রাঙানো থাকে। রুবিক্‌স কিউবের যান্ত্রিক কৌশল এমন হয় যে, ঘনকের যেকোন একটি তলের সবগুলো বর্গকে তাদের আপেক্ষিক অবস্থান পরিবর্তন না করেই একত্রে ঘোরানো সম্ভব। এভাবে ঘুরিয়ে রুবিকস্‌ কিউবকে বিভিন্ন রকম অবস্থা বা কনফিগারেশনে (configuration) নিয়ে যাওয়া সম্ভব। রুবিকস্‌ কিউবের বিভিন্ন রকম সংষ্করণ আছে, তার মধ্যে ২x২x২ মাত্রার পকেট কিউব, ৪x৪x৪ মাত্রার রুবিক্‌স রিভেঞ্জ (Rubik's Revenge) এবং ৫x৫x৫ মাত্রার প্রফেসর্‌স কিউব (Professor's cube) উল্লেখযোগ্য।
২২ নং লাইন:
১৯৭০ সালের মার্চ মাসে [[হ্যারী ডি. নিকোলাস]] ২x২x২ মাত্রার একটি ধাঁধা আবিস্কার করেন, যার ক্ষুদ্র খন্ডসমূহ একটি গ্রুপে ছিল এবং এগুলো ঘোরানো যেত। পরে তিনি [[কানাডা|কানাডীয়]] প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করেন। নিকোলাসের কিউবের প্রতিটি খন্ড চুম্বক দিয়ে একে অপরের সাথে আটাকানো ছিল। [[১১ই এপ্রিল]], ১৯৭২ সালে [[যুক্তরাষ্ট্র|যুক্তরাষ্ট্রের]] প্যাটেন্ট কর্তৃপক্ষ নিকোলাসকে প্যাটেন্ট প্রদান করে। এটি ছিল রুবিক এর উন্নত ঘনক আবিস্কারের দু'বছর পূর্বের ঘটনা।
 
[[৯ই এপ্রিল]], ১৯৭০ সালে ফ্রাঙ্ক ফক্স নামের আরেকজন একটি "৩x৩x৩ মাত্রার গোলক" ধাঁধাঁর জন্য প্যাটেন্ট এর আবেদন করেন এবং [[১৬ই জানুয়ারি]], [[১৯৭৪]] সালে [[যুক্তরাজ্য|ব্রিটিশ]] প্যাটেন্ট লাভ করেন।
 
রুবিক তার "ম্যাজিক কিউব" আবিস্কার করেন [[১৯৭৪]] সালে এবং [[১৯৭৫]] সালে [[হাঙ্গেরীয়]] প্যাটেন্ট লাভ করেন কিন্তু তখন আন্তর্জাতিক প্যাটেন্টটি হয়নি। [[১৯৭৭]] সালের শেষদিকে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে রুবিক কিউব উৎপাদন করা হয় এবং [[বুদাপেস্ট]] এর খেলনার দোকানগুলোতে বিক্রয় করা হয়। ম্যাজিক কিউব তৈরি করা হত প্লাস্টিক দিয়ে এবং ছোট ছোট খন্ড গুলো একে অপরের সাথে আটকে থাকতো যান্ত্রিক উপায়ে যা নিকোলাসের চুম্বক ডিজাইন হতে তুলনামূলক কম দাম ছিল। ম্যাজিক কিউব পশ্চিমা বিশ্বে বাজারজাত করার জন্য [[আইডিয়াল টয়]] চুক্তি করে এবং [[১৯৮০]] সালের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত এক খেলনা প্রদর্শনীতে ধাঁধাঁটির অভিষেক ঘটে পশ্চিমা বিশ্বে।
 
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ম্যাজিক কিউবের পরিচয় ঘটার পর পশ্চিমের খেলনার দোকানসমূহে বিক্রয় সাময়িক স্থগিত করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল পশ্চিমের নিরাপত্তা ও মোড়ক সম্পর্কিত বিধি নিষেধ অনুযায়ী ম্যাজিক কিউবকে নতুন আঙ্গিক দেওয়া। এতদসঙ্গে এটির ওজন হাল্কা করা হয় এবং আইডিয়েল টয় সিদ্ধান্ত নেয় নাম পরিবর্তনের। প্রথমে "দ্যা গোল্ডেন নট" এবং "ইনকা গোল্ড" নাম দু'টি প্রস্তাব করা হয়, কিন্তু কোম্পানীর সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এর নাম হয় "Rubik's Cube" বা "রুবিক'স কিউব"। নতুন আঙ্গীকে নতুন নাম নিয়ে [[হাঙ্গেরী]] থেকে রুবিকের কিউবের প্রথম চালানটি রপ্তানী করা হয় [[১৯৮০]] সালের মে মাসে। এতদসময়ে বাজারে অপ্রতুলতার সুযোগে কিছু নিম্নমানের নকল কিউবের আবির্ভাব ঘটে।
 
নিকোলাস নিজের প্যাটেন্ট তার কর্মস্থল "মলিকিউলন রিসার্চ করপোরেশন" কে দিয়ে দেন। পরে তার কোম্পানী, আইডিয়েল টয়ের বিরুদ্ধে প্যাটেন্ট ভঙ্গের মামলা করে। [[১৯৮৪]] সালে আইডিয়েল টয় মামলায় হেরে যায় এবং আপীল করে। [[১৯৮৭]] আপীল কোর্ট নিশ্চিত করে রুবিক কিউবের ২x২x২ মাত্রার ধাঁধাঁটি নিকোলাসের প্যাটেন্ট ভঙ্গ করেছে, কিন্তু ৩x৩x৩ মাত্রার ধাঁধাঁর সংস্করণের আপীল রুবিক কিউবের অনুকূলে যায়।<ref>[http://digital-law-online.info/cases/229PQ805.htm Moleculon Research Corporation v. CBS, Inc.]</ref>
 
যখন রুবিকের প্যাটেন্ট আবেদন প্রক্রিয়াধীন ছিল, তখন [[টোকিও|টোকিওর]] নিকট একজন স্বশিক্ষিত প্রোকৌশলী এবং কামারশালার মালিক টেরুটোশি ইসিগি জাপানে প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করেন। তিনি [[১৯৭৬]] সালে জাপানী প্যাটেন্ট লাভ করেন। যদিও তার আবিস্কারটি প্রায় রুবিকের কৌশলের কাছাকাছি ছিল, তবুও তাকে রুবিক কিউবের একজন স্বাধীন পুনঃ-আবিস্কারক হিসাবে গন্য করা হয়।<ref>
{{বই উদ্ধৃতি
|লেখক = Hofstadter, Douglas R.
৩৮ নং লাইন:
}}Hofstadter gives the name as "Ishige".</ref><ref>http://cubeman.org/cchrono.txt</ref><ref>[http://inventors.about.com/library/weekly/aa040497.htm The History of Rubik's Cube - Erno Rubik<!-- Bot generated title -->]</ref>
 
রুবিক পুনরায় [[২৮ অক্টোবর]] [[১৯৮০]] সালে হাঙ্গেরীয়ান প্যাটেন্ট এবং অন্যান্য প্যাটেন্ট আবেদন করেন। [[১৯৮৩]] সালে [[২৯ মার্চ]] তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্যাটেন্ট লাভ করেন। রুবিক আরও বেশ কিছু নতুন ধাঁধাঁ আবিস্কার করেছিলেন এবং এগুলোর বেশকিছু প্যাটেন্টও তিনি পেয়েছিলেন; কিন্তু সেগুলো রুবিক কিউবের মত জনপ্রিয় হয়নি।
 
== জনপ্রিয়তা এবং পপ সংস্কৃতি ==
[[১৯৮০]] থেকে [[১৯৮২]] সাল পর্যন্ত ১০০ মিলিয়নের বেশি রুবিক্স কিউব বিক্রি হয়।<ref name="rubiks">http://www.rubiks.com/lvl3/index_lvl3.cfm?lan=eng&lvl1=inform&lvl2=medrel&lvl3=cubfct</ref> ১৯৮০ এবং ১৯৮১ সালে দুই দফায় এটি ''বিএটিআর টয় অব দ্যা ইয়ার'' (British Association of Toy Retailers) পুরস্কার জয় করে নেয়। আইডিয়া টয় ১৯৮২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ''রুবিক্স কিউব নিউজলেটার'' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে।
 
[[১৯৮৩]] সালে শনিবার সকালে ''রুবিক, দ্যা আমেইজিং কিউব'' (Rubik, the Amazing Cube) নামে রুবিক্স কিউবের উপরে ভিত্তি করে একটি কার্টুন সিরিজ প্রচারিত হত। এ সিরিজটি এক মৌসুম প্রচারিত হয়েছিল।
 
রুবিক্স কিউবের কিছুদিনের মধ্যেই রুবিক এবং অন্যান্য জায়গা থেকে একই রকমের আরও কিছু ধাঁধা বের হয়। যেমন রুবিক্স রিভেঞ্জ (Rubik's Revenge), রুবিক্স কিউবের একটি ৪x৪x৪ সংস্করণ। আরও ছিল ২x২x২, ৫x৫x৫ কিউব (যাদের নাম যথাক্রমে পকেট কিউব এবং প্রফেসরস্‌ কিউব) এবং অন্য আকারের ধাঁধা যেমন পাইরামিংক্স (Pyraminx), একটি টেট্রাহেড্রোন।
 
[[২০০৫]] এর মে মাসে [[গ্রিস|গ্রিক]] আবিষ্কারক প্যানাগিওটিস ভার্দেস ৬x৬x৬ রুবিক্স কিউব তৈরি করেন; [[মে ২৩]] [[২০০৬]] সালে রুবিক্স কিউব সমাধানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রাঙ্ক মরিস এই সংস্করণটি পরীক্ষা করেন। তিনি পূর্বে ৩x৩x৩ সমাধান করেছেন ১৫ সেকেন্ডে, ৪x৪x৪ সমাধান করেছেন ১ মিনিট ১০সেকেন্ডে এবং ৫x৫x৫ সমাধান করেছেন ১ মিনিট ৪৬.১ সেকেন্ডে। ৬x৬x৬ সমাধান করতে তিনি সময় নেন ৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। মরিস নিজে আবিষ্কারককে ধন্যবাদ জানান এবং উৎসাহের সাথে জানান যে যত বেশি বড় (সংখ্যা) কিউব তত বেশি আনন্দ। জুলাই ২০০৬ সালে ভার্দের সফলভাবে ৭x৭x৭ তৈরি করেন এবং [[অক্টোবর ২৭]] ২০০৬ সালে মরিসের এ সংস্করণটি পরীক্ষা করার একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ হয়। তিনি এ কিউব সমাধান করেন ৬ মিনিট ২৯.৩১ সেকেন্ড। পরীক্ষার ভিডিওটি দেখতে পারবেন এখানে http://www.v-cubes.com।{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=এপ্রিল ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}
 
১৯৮১ সালে প্যাট্রিক বোজার্ট নামের [[ইংল্যান্ড|ইংল্যান্ডের]] বার বছরের এক স্কুল বালক ''ইউ ক্যান ডু দ্যা কিউব'' (You Can Do the Cube ({{আইএসবিএন|0-14-031 1483}}-0)) নামক এক বইতে কিউব সমাধানের জন্য তার নিজস্ব এক সমাধানের কথা প্রকাশ করে। ঐ বই সতের টি সংস্করণ বিশ্ব ব্যপী ১.৫ মিলিওনেরও বেশি কপি বিক্রি হয় এবং বইটি ''দ্যা টাইমস্‌'' (The Times) এ এক নম্বর বইয়ে পরিণত হয়।