উমাইয়া খিলাফত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Motaleb mt (আলোচনা | অবদান)
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৫২ নং লাইন:
'''উমাইয়া খিলাফত''' ({{lang-ar|الخلافة الأموية}}, [[Arabic transliteration|trans.]] ''Al-Ḫilāfa al-ʾumawiyya'') ইসলামের প্রধান চারটি খিলাফতের মধ্যে দ্বিতীয় [[খিলাফত]]। এটি উমাইয়া রাজবংশকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। ইসলামের তৃতীয় খলিফা [[উসমান ইবন আফ্‌ফান|উসমান ইবন আফ্‌ফানের]] খিলাফত লাভের মাধ্যমে উমাইয়া পরিবার প্রথম ক্ষমতায় আসে। তবে উমাইয়া বংশের শাসন [[প্রথম মুয়াবিয়া|মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান]] কর্তৃক সূচিত হয়। তিনি দীর্ঘদিন সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন। ফলে সিরিয়া উমাইয়াদের ক্ষমতার ভিত্তি হয়ে উঠে এবং দামেস্ক তাদের রাজধানী হয়। উমাইয়ারা মুসলিমদের বিজয় অভিযান অব্যাহত রাখে। [[ককেসাস]], [[ট্রান্সঅক্সানিয়া]], [[সিন্ধু প্রদেশ|সিন্ধু]], [[মাগরেব (অঞ্চল)|মাগরেব]] ও [[ইবেরিয়ান উপদ্বীপ]] ([[আন্দালুস]]) জয় করে মুসলিম বিশ্বের আওতাধীন করা হয়। সীমার সর্বোচ্চে পৌছালে উমাইয়া খিলাফত মোট ৫.৭৯ মিলিয়ন বর্গ মাইল (১,৫০,০০,০০০ বর্গ কিমি.) অঞ্চল অধিকার করে রাখে। তখন পর্যন্ত বিশ্বের দেখা সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ ছিল। অস্তিত্বের সময়কালের দিক থেকে এটি ছিল পঞ্চম।<ref name=Blankinship>{{citation|title=The End of the Jihad State, the Reign of Hisham Ibn 'Abd-al Malik and the collapse of the Umayyads|first=Khalid Yahya|last=Blankinship|publisher=[[State University of New York Press]]|year=1994|isbn=0-7914-1827-8|page=37}}</ref>
 
কিছু মুসলিমের কাছে উমাইয়াদের কর সংগ্রহ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনৈতিক ঠেকে। অমুসলিম জনগণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত এবং তাদের বিচারিক কার্যক্রম তাদের নিজস্ব আইন ও ধর্মীয় প্রধান বা নিজেদের নিযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা চালিত হত।<ref name="ReferenceA">A Chronology Of Islamic History 570-1000 CE, By H.U. Rahman 1999 Page 128</ref> তাদের কেন্দ্রীয় সরকারকে জিজিয়া কর দিতে হত।<ref name="ReferenceA"/> মুহাম্মদ (সা) এর জীবদ্দশায় বলেন যে প্রত্যের ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের ধর্মপালন করবে ও নিজেদের শাসন করতে পারবে। এ নীতি পরবর্তীতেও বহাল থাকে।<ref name="ReferenceA"/> উমর কর্তৃক চালু হওয়া মুসলিম ও অমুসলিমদের জন্য [[কল্যাণ রাষ্ট্র]] ব্যবস্থা চলতে থাকে।<ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/> মুয়াবিয়ার স্ত্রী মায়সুম (ইয়াজিদের মা) ছিলেন একজন খ্রিষ্টান। রাষ্ট্রে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল। উমাইয়ারা [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] সাথে ধারাবাহিক যুদ্ধে জড়িত ছিল।<ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/><ref name="ReferenceA"/> গুরুত্বপূর্ণ পদে খ্রিষ্টানদের বসানো হয় যাদের মধ্যে কারো কারো পরিবার বাইজেন্টাইন সরকারে কাজ করেছিল। খ্রিষ্টানদের নিয়োগ অধিকৃত অঞ্চলে বিশেষত সিরিয়ার বিশাল খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীর প্রতি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এ নীতি জনগণের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয় এবং সিরিয়াকে ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে স্থিতিশীল করে তোলে।<ref>Middle East, Western Asia, and Northern Africa By Ali Aldosari Page 185 [http://books.google.co.uk/books?id=j894miuOqc4C&pg=PA185&dq=Muawiyah+syria+powerbase&hl=en&sa=X&ei=IgitUdCUNa-X0AWswoGIDg&ved=0CDEQ6AEwAA#v=onepage&q=Muawiyah%20syria%20powerbase&f=false]</ref><ref>The Tragedy of the Templars: The Rise and Fall of the Crusader States By Michael Haag Chapter 3 Palestine under the Umayyads and the Arab Tribe [http://books.google.co.uk/books?id=hTPC09XoKs0C&pg=PT20&dq=Muawiyah+syria+powerbase&hl=en&sa=X&ei=IgitUdCUNa-X0AWswoGIDg&ved=0CDYQ6AEwAQ]</ref>
 
আরব গোত্রগুলোর মধ্যকার বিরোধের কারণে সিরিয়ার বাইরের প্রদেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিশেষত [[দ্বিতীয় ফিতনা|দ্বিতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধ]] (৬৮০-৬৯২) ও [[বার্বার বিদ্রোহ|বার্বার বিদ্রোহের]] (৭৪০-৭৪৩) সময়। দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধের সময় উমাইয়া গোত্রের নেতৃত্ব সুফয়ানি শাখা থেকে মারওয়ানি শাখার হস্তান্তর হয়। ক্রমাগত যুদ্ধবিগ্রহের ফলে সম্পদ ও লোকবল কমে আসায় [[তৃতীয় ফিতনা|তৃতীয় মুসলিম গৃহযুদ্ধের]] সময় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চূড়ান্তভাবে [[আব্বাসীয় বিপ্লব|আব্বাসীয় বিপ্লবের]] ফলে ক্ষমতাচ্যুত হয়। পরিবারের একটি শাখা [[উত্তর আফ্রিকা]] হয়ে আল-আন্দালুস চলে যায় এবং সেখানে [[কর্ডোবা খিলাফত]] প্রতিষ্ঠা করে। এ খিলাফত ১০৩১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল এবং [[আন্দালুসের ফিতনা|আন্দালুসের ফিতনার]] পর এর পতন হয়।
 
==উৎপত্তি==
উমাইয়া পরিবার ([[বনু আবদ শামস]] নামেও পরিচিত) ও [[মুহাম্মদ]] (সা) উভয়েই [[আবদ মানাফ ইবনে কুসাই|আবদ মানাফ ইবনে কুসাইয়ের]] বংশধর এবং তারা মক্কার অধিবাসী ছিলেন। আবদ মানাফের পুত্র [[হাশিম ইবনে আবদ মানাফ|হাশিমের]] বংশে মুহাম্মদ (সা) জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে উমাইয়ারা আবদ মানাফের আরেক পুত্র [[আবদ শামস ইবনে আবদ মানাফ|আবদ শামশের]] বংশধর। উমাইয়া আবদ শামসের পুত্রের নাম। দুই পরিবার নিজেদের একই বংশ [[কুরাইশ বংশ|কুরাইশের]] দুটি ভিন্ন গোত্র হিসেবে বিবেচনা করত (যথাক্রমে হাশিম ও উমাইয়া)। শিয়াদের মতে উমাইয়া আবদ শামসের পালক পুত্র তাই তার সাথে আবদ শামসের কোনো রক্ত সম্পর্ক নেই। উমাইয়ারা পরবর্তীতে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সম্মান হারায়।<ref name="wiki">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.muslimcongress.org/contentmc/services/muharram.aspx|শিরোনাম=Muslim Congress|সংগ্রহের-তারিখ=2008-06-30|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080224014842/http://www.muslimcongress.org/contentmc/services/muharram.aspx|আর্কাইভের-তারিখ=২০০৮-০২-২৪|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>
 
উমাইয়া ও হাশিমিদের মধ্যে মুহাম্মদ (সা) এর আসার পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব চলছিল। [[বদরের যুদ্ধ|বদরের যুদ্ধের]] পর তা আরো বিরূপ অবস্থায় পড়ে। এ যুদ্ধে উমাইয়া গোত্রের তিনজন শীর্ষ নেতা [[উতবা ইবনে রাবিয়াহ]], [[ওয়ালিদ ইবনে উতবাহ]] ও শায়বা দ্বন্দ্বযুদ্ধের সময় হাশিমি গোত্রের [[আলী ইবন আবী তালিব]], [[হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব]] ও [[উবাইদাহ ইবনুল হারিস|উবাইদাহ ইবনুল হারিসের]] হাতে নিহত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Sunan Abu Dawud: Book 14, Number 2659 |ইউআরএল=http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/hadithsunnah/abudawud/014.sat.html#014.2659 |সংগ্রহের-তারিখ=২২ মে ২০১৪ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110210042129/http://www.usc.edu/schools/college/crcc/engagement/resources/texts/muslim/hadith/abudawud/014.sat.html#014.2659#014.2659 |আর্কাইভের-তারিখ=১০ ফেব্রুয়ারি ২০১১ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> এ ঘটনার ফলে উমাইয়ার নাতি [[আবু সুফিয়ান ইবনে হার্ব‌|আবু সুফিয়ান ইবনে হারবের]] মুহাম্মদ (সা) ও ইসলামের প্রতি বিরোধিতার মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। বদর যুদ্ধের একবছর পর আবু সুফিয়ান আরেকটি যুদ্ধ মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিয়ে মদিনার মুসলিমদের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন। পন্ডিতদের মতে এই যুদ্ধটি মুসলিমদের প্রথম পরাজয় যেহেতু এখানে মক্কার তুলনায় মুসলিমদের ভালো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধের পর আবু সুফিয়ানের স্ত্রী ও [[উতবা ইবনে রাবিয়া|উতবা ইবনে রাবিয়ার]] মেয়ে হিন্দ হামজার লাশ কেটে তার কলিজা বের করে খাওয়ার চেষ্টা করে।<ref>Ibn Ishaq (1955) 380—388, cited in Peters (1994) p. 218</ref> উহুদের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পাঁচ বছর পর মুহাম্মদ (সা) [[মক্কা বিজয়]] করেন<ref>Watt (1956), p. 66</ref> এবং সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মক্কা বিজয়ের পর আবু সুফিয়ান ও তার স্ত্রী হিন্দ ইসলাম গ্রহণ করেন। এসময় তাদের পুত্র ও পরবর্তী খলিফা [[প্রথম মুয়াবিয়া|মুয়াবিয়াও]] ইসলাম গ্রহণ করেন।
 
[[File:Map of expansion of Caliphate.svg|thumb|305px||উমাইয়াদের অধীনে খিলাফতের বিস্তার: {{legend|#a1584e|মুহাম্মদ (সা) এর অধীনে বিস্তৃতি, ৬২২-৬৩২}} {{legend|#ef9070|রাশিদুন খিলাফতের অধীনে বিস্তৃতি, ৬৩২-৬৬১}} {{legend|#fad07d|উমাইয়া খিলাফতের অধীনে বিস্তৃতি, ৬৬১-৭৫০}}]]
 
অনেক ইতিহাসবিদের মতে খলিফা মুয়াবিয়া (শাসনকাল ৬৬১-৬৮০) রাজবংশীয় কায়দার প্রথম শাসক হলেও তিনি উমাইয়া রাজবংশের দ্বিতীয় শাসক। উমাইয়া গোত্রের সদস্য [[উসমান ইবন আফ্‌ফান|উসমান ইবনে আফ্‌ফানের]] খিলাফতের সময় উমাইয়া গোত্র ক্ষমতায় আসে। উসমান তার গোত্রের কিছু বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন উসমানের শীর্ষ পর্যায়ের উপদেষ্টা [[মারওয়ান ইবনুল হাকাম]] যিনি সম্পর্কে উসমানের তুতো ভাই ছিলেন। তার কারণে হাশিমি সাহাবিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরী হয় কারণ মারওয়ান ও তার পিতা [[আল-হাকাম ইবনে আবুল আস|আল-হাকাম ইবনে আবুল আসকে]] মুহাম্মদ (সা) মদিনা থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছিলেন। উসমান কুফার গভর্নর হিসেবে তার সৎ ভাই [[ওয়ালিদ ইবনে উকবা|ওয়ালিদ ইবনে উকবাকে]] নিযুক্ত করেন। হাশিমিরা তার প্রতি অভিযোগ করে যে তিনি মদপান করে নামাজের ইমামতি করেছিলেন।<ref>[[Ibn Taymiya]], in his [[A Great Compilation of Fatwa]]</ref> উসমান মুয়াবিয়াকে বিশাল এলাকার কর্তৃত্ব দিয়ে সিরিয়ার গভর্নর হিসেবে তার অবস্থান সংহত করেন<ref>[[Ibn Kathir]]: Al-Bidayah wal-Nihayah, Volume 8 page 164</ref> এবং তার পালক ভাই [[আবদুল্লাহ ইবনে সাদ|আবদুল্লাহ ইবনে সাদকে]] মিশরের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করেন। উসমান নিজের কোনো উত্তরসুরি মনোনীত করে যাননি তাই তাকে রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ধরা হয় না।
 
৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে [[আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ]] [[প্লেগ|প্লেগে]] আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে [[প্রথম মুয়াবিয়া]] সিরিয়ার গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন। এসময় আরো ২৫,০০০ মানুষ প্লেগে মারা যায়।<ref>Wilferd Madelung, The Succession to Muhammad: A Study of the Early Caliphate, [http://books.google.co.uk/books?id=2QKBUwBUWWkC&printsec=frontcover&dq=death+of+muhammad+and+the+beginning+of+islam&hl=en&sa=X&ei=0JX-UMysC62Y0QWOsICIDQ&ved=0CDkQ6AEwAQ#v=onepage&q=death%20of%20muhammad%20and%20the%20beginning%20of%20islam&f=false p.61]</ref><ref>{{Harvtxt|Rahman|1999|p=40}}</ref> [[আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধ|আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধের]] সময় সমুদ্রের দিক থেকে বাইজেন্টাইন আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ৬৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়া [[মনোফিসিটবাদ|মনোফিসিট]] খ্রিষ্টান, [[কপ্ট]] ও [[জেকোবাইট সিরিয়ান খ্রিষ্টান চার্চ|জেকোবাইট সিরিয়ান খ্রিষ্টান]] নাবিক ও মুসলিম সৈনিকদের নিয়ে একট নৌবাহিনী গড়ে তোলেন। ৬৫৫ তে [[মাস্তুলের যুদ্ধ|মাস্তুলের যুদ্ধে]] বাইজেন্টাইন নৌবাহিনী পরাজিত হয় এবং ভূমধ্যসাগরের দিক উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।<ref>European Naval and Maritime History, 300-1500 By Archibald Ross Lewis, Timothy J. Runyan Page 24 [http://books.google.co.uk/books?id=OzIRDbARyWIC&pg=PA24&dq=Muawiyah+set+up+navy&hl=en&sa=X&ei=OjsJUdy1GcSS0QXV-YCwCw&ved=0CD4Q6AEwAQ#v=onepage&q=Muawiyah%20set%20up%20navy&f=false]</ref><ref>Leonard Michael Kroll, History of the Jihad, [http://books.google.co.uk/books?id=aAPc3mYwZpIC&pg=PA123&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CC4Q6AEwAA#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false p.123]</ref><ref>Jim Bradbury, The Medieval Siege, [http://books.google.co.uk/books?id=KIFJiOCSYc8C&pg=PA183&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CDQQ6AEwAQ#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false A History of Byzantium By Timothy E. Gregory page 183]</ref><ref>Prophets and Princes: Saudi Arabia from Muhammad to the Present By Mark Weston Page 61 [http://books.google.co.uk/books?id=EEEFsVYLko4C&pg=PA61&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CDoQ6AEwAg#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false]</ref><ref>[http://books.google.co.uk/books?id=fKFRvUiLEQYC&pg=PA11&dq=Muawiyah+Battle+of+the+Masts&hl=en&sa=X&ei=RTwJUbbaOOG60QWV0ICIBQ&ved=0CEoQ6AEwBQ#v=onepage&q=Muawiyah%20Battle%20of%20the%20Masts&f=false p.11]</ref>
৬৯ নং লাইন:
[[প্রথম মুয়াবিয়া]] একজন সফল গভর্নর ছিলেন। তিনি সাবেক রোমান সিরিয়ান সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি অনুগত ও নিয়মানুবর্তী বাহিনী গড়ে তোলেন। তিনি [[আমর ইবনুল আস|আমর ইবনুল আসের]] বন্ধু ছিলেন। আমর ইবনুল আস মিশর জয় করেন ও পরবর্তীকালে খলিফা তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন।
 
কুরআনে ও মুহাম্মদ (সা) এর হাদিসে জাতিগত সমতা ও ন্যায়বিচারের ব্যাপারে উল্লেখ করা আছে এবং [[বিদায় হজ্জের ভাষণ|বিদায় হজ্জের ভাষণেও]] তিনি একথা বলেন।<ref>The Spread of Islam: The Contributing Factors By Abu al-Fazl Izzati, A. Ezzati Page 301</ref><ref>Islam For Dummies By Malcolm Clark Page</ref><ref>Spiritual Clarity By Jackie Wellman Page 51</ref><ref>The Koran For Dummies By Sohaib Sultan Page</ref><ref>Quran: The Surah Al-Nisa, Ch4:v2</ref><ref>Quran: Surat Al-Hujurat [49:13]</ref><ref>Quran: Surat An-Nisa' [4:1]</ref> গোত্রীয় ও জাতিভিত্তিক পার্থক্যকে নিরুৎসাহিত করা হয়। কিন্তু মুহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর পুরনো গোত্রীয় ভেদাভেদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। [[রোমান-পারসিয়ান যুদ্ধ]] ও [[বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধ|বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধের]] পর পূর্বে [[সসনিয়ন সাম্রাজ্য|সাসানীয় সাম্রাজ্য]] কর্তৃক শাসিত ইরাক ও [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য]] কর্তৃক সিরিয়ার মধ্যকার বিরোধ তখনও বহাল ছিল। প্রত্যেকেই নতুন প্রতিষ্ঠিত ইসলামি রাষ্ট্রের রাজধানী নিজেদের অঞ্চলে পেতে আগ্রহী ছিল।<ref>Iraq a Complicated State: Iraq's Freedom War By Karim M. S. Al-Zubaidi Page 32</ref> পূর্ববর্তী খলিফা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর]] গভর্নরদের ব্যাপারে খুবই সতর্ক ছিলেন এবং তার গোয়েন্দারা তাদের উপর নজর রাখত। গভর্নর বা কমান্ডাররা সম্পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠছে এমন প্রতীয়মান হলে তিনি তাদেরকে তাদের অবস্থান থেকে সরিয়ে দিতেন।<ref>Arab Socialism. [al-Ishtirakiyah Al-?Arabiyah]: A Documentary Survey By Sami A. Hanna, George H. Gardner Page 271 [http://books.google.co.uk/books?id=zsoUAAAAIAAJ&pg=PA271&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CC4Q6AEwAA#v=onepage&q=Umar%20wealth%20and%20luxury&f=false]</ref>
 
প্রথমদিকের মুসলিম সেনারা শহর থেকে দূরে নিজস্ব ক্যাম্পে অবস্থান করত। উমরের ভয় ছিল যে তারা হয়ত সম্পদ ও বিলাসিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে এবং এর ফলে তারা আল্লাহর ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে এবং সম্পদ গড়ে তুলতে পারে ও রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করতে পারে।<ref>Arab Socialism. [al-Ishtirakiyah Al-Arabiyah]: A Documentary Survey By Sami A. Hanna, George H. Gardner Page 271 [http://books.google.co.uk/books?id=zsoUAAAAIAAJ&pg=PA271&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CC4Q6AEwAA#v=onepage&q=Umar%20wealth%20and%20luxury&f=false]</ref><ref>Men Around the Messenger By Khalid Muhammad Khalid, Muhammad Khali Khalid Page 117 [http://books.google.co.uk/books?id=T-uN7tDGSZMC&pg=PA117&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CDUQ6AEwAQ#v=onepage&q=Umar%20wealth%20and%20luxury&f=false]</ref><ref>The Cambridge History of Islam:, Volume 2 edited by P. M. Holt, Ann K. S. Lambton, Bernard Lewis Page 605 [http://books.google.co.uk/books?id=UfQWT_esc5cC&pg=PA605&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CFgQ6AEwBw#v=onepage&q=Umar%20wealth%20and%20luxury&f=false]</ref><ref>[http://books.google.co.uk/books?id=flg-UX6fOdkC&pg=PT101&dq=Umar+wealth+and+luxury&hl=en&sa=X&ei=OBQYUcXSOYWM0wWajIHQCg&ved=0CF0Q6AEwCA The Early Caliphate By Maulana Muhammad Ali]</ref> [[উসমান ইবন আফ্‌ফান]] যখন খুবই বৃদ্ধ হয়ে পড়েন [[প্রথম মুয়াবিয়া|প্রথম মুয়াবিয়ার]] আত্মীয় [[প্রথম মারওয়ান]] তার সচিব হিসেবে শূণ্যস্থান পূরণ করেন এবং এসব কঠোর নিয়মে শিথিলতা আনেন। মারওয়ানকে ইতিপূর্বে দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে [[মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর]] কিছু মিশরীয়কে খলিফা উসমানের বাসগৃহ দেখিয়ে দেন। পরে এই মিশরীয়রা খলিফা উসমানকে হত্যা করে।<ref>{{Harvtxt|Rahman|1999|p=53}}</ref>
 
উসমানের হত্যাকান্ডের পর [[আলী ইবন আবী তালিব|আলি]] খলিফা নির্বাচিত হন। তাকে এরপর বেশ কিছু সমস্যা সামাল দিতে হয়। আলি [[মদিনা]] থেকে কুফায় রাজধানী স্থানান্তর করেন। ৬৫৬ থেকে ৬৬১ পর্যন্ত চলমান সংঘাতকে [[প্রথম ফিতনা]] (“গৃহযুদ্ধ”) বলে ডাকা হয়। সিরিয়ার গভর্নর ও খলিফা উসমানের আত্মীয় মুয়াবিয়া চাইছিলেন যে হত্যাকারীদের যাতে গ্রেপ্তার করা হয়। [[প্রথম মারওয়ান|মারওয়ান]] সবাইকে প্ররোচিত করেন এবং সংঘাত সৃষ্টি করেন। মুহাম্মদ (সা) এর স্ত্রী [[আয়িশা]] এবং তার দুই সাহাবি [[তালহা]] ও [[যুবাইর ইবনুল আওয়াম]] দোষীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আলিকে বলতে [[বসরা]] যান। মারওয়ান ও অন্যান্য যারা সংঘাত চাইছিল তারা সবাইকে লড়াই করতে প্ররোচিত করে। [[উটের যুদ্ধ|উটের যুদ্ধে]] দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই হয়। এ যুদ্ধে আলি বিজয় অর্জন করেন।
 
এ যুদ্ধের পর আলি ও মুয়াবিয়ার মধ্যে [[সিফফিনের যুদ্ধ]] হয়। কোনো এক পক্ষে বিজয়ী হওয়ার আগেই যুদ্ধ থেমে যায় এবং দুপক্ষে বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে একমত হয়। যুদ্ধের পর [[আমর ইবনুল আস]] মুয়াবিয়ার পক্ষ থেকে ও [[আবু মুসা আশয়ারি]] আলির পক্ষ থেকে আলোচক নিযুক্ত হন। সাত মাস পর ৬৫৮ এর ফেব্রুয়ারিতে আধরুহ নামক স্থানে সাক্ষাত করেন। [[আমর ইবনুল আস]] [[আবু মুসা আশয়ারি|আবু মুসা আশয়ারিকে]] এ মর্মে রাজি করান যে দুপক্ষই লড়াই বন্ধ করবে এবং একজন নতুন খলিফা নিযুক্ত করা হবে। আলি ও তার সমর্থকরা এ সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে যান। এ ঘটনা মুয়াবিয়ার কাছে খলিফার মর্যাদা কমানোর সমতুল্য ছিল। আলি এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানালেও মীমাংসা মেনে নেয়ার ব্যাপারে নিজেকে বাধ্য অবস্থায় দেখতে পান। এর ফলে আলির অবস্থান তার নিজের সমর্থকদের মধ্যেও দুর্বল হয়ে পড়ে। আলির সমর্থকদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে চাপ সৃষ্টিকারীরা ছিল সবচেয়ে কঠোর প্রতিবাদকারী। তারা আলির বাহিনী থেকে বের হয়ে যায় এবং “একমাত্র আল্লাহর প্রতি” স্লোগান দিতে থাকে। এ দল [[খারিজি]] নামে পরিচিত হয়ে উঠে। ৬৫৯ খ্রিষ্টাব্দে [[নাহরাওয়ানের যুদ্ধ|নাহরাওয়ানের যুদ্ধে]] আলি ও খারিজিরা মুখোমুখি হয়। আলি যুদ্ধে জয়ী হলেও ক্রমাগত সংঘর্ষ তার অবস্থানের উপর প্রভাব ফেলছিল এবং পরবর্তী বছরগুলোতে কিছু সিরিয়ান মুয়াবিয়াকে বিদ্রোহী খলিফা হিসেবে ঘোষণা করে।<ref>A Chronology of Islamic History 570-1000 CE By H U Rahman Page 59</ref>
১০০ নং লাইন:
মুয়াবিয়া সিরিয়ার খ্রিষ্টানদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে উৎসাহিত করেন<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=R h o d e s|প্রথমাংশ=Bryan|শিরোনাম=JOHN DAMASCENE IN CONTEXT An Examination of "The Heresy of the Ishmaelites" with special consideration given to the Religious, Political, and Social Contexts during the Seventh and Eighth Century Arab Conquests|পাতা=105|ইউআরএল=http://www.stfrancismagazine.info/ja/images/stories/7.%20Bryan%20Rhodes%20SFM%20April%202011.pdf|সংগ্রহের-তারিখ=২২ মে ২০১৪|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20111117104400/http://www.stfrancismagazine.info/ja/images/stories/7.%20Bryan%20Rhodes%20SFM%20April%202011.pdf|আর্কাইভের-তারিখ=১৭ নভেম্বর ২০১১|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> এবং তার একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন [[জন অব ডেমাস্কাসের]] পিতা সারজুন। একই সময় তিনি [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] বিরুদ্ধে ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যান। তার শাসনামলে [[রোডস]] ও [[ক্রিট]] অধিকৃত হয় এবং [[কনস্টান্টিনোপল|কনস্টান্টিনোপলের]] বিরুদ্ধে বেশ কিছু আক্রমণ পরিচালিত হয়। ব্যর্থ হওয়ার পর এবং বড় ধরনের খ্রিষ্টান উত্থানের ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার পর তিনি বাইজেন্টাইনদের সাথে শান্তি অবস্থায় আসেন। মুয়াবিয়া উত্তর আফ্রিকা ([[কাইরাওয়ান|কাইরাওয়ানের]] প্রতিষ্ঠা) ও মধ্য এশিয়া ([[কাবুল]], [[বুখারা]] ও [[সমরকন্দ]] জয়) সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন।
 
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র [[প্রথম ইয়াজিদ]] তার উত্তরাধিকারি হন। অনেক নামকরা মুসলিম ইয়াজিদের ক্ষমতালাভের বিরোধী ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মুহাম্মদ (সা) এর এক সাহাবির ছেলে [[আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের]] ও চতুর্থ খলিফার পুত্র [[হুসাইন ইবনে আলি]]। ফলশ্রুতিতে ঘটে যাওয়া সংঘাত দ্বিতীয় ফিতনা বলে পরিচিত।
 
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের মক্কার উদ্দেশ্যে মদিনা ত্যাগ করেন। ইয়াজিদের বিপক্ষে হুসাইনের অবস্থানের কথা শুনে কুফার জনগণ হুসাইনের কাছে তাদের সমর্থন নেয়ার জন্য আবেদন জানায়। হুসাইন তার চাচাত ভাই মুসলিম বিন আকিলকে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঠান। এ খবর ইয়াজিদের কাছে পৌছলে তিনি বসরার শাসক উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদকে কুফার জনগণকে হুসাইনের নেতৃত্বে সমবেত হওয়া থেকে নিবৃত্ত করার দায়িত্ব দেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলের পাশে থাকে জনতাকে প্রতিহত করতে সক্ষম এবং তাকে গ্রেপ্তার করেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদের উপর হুসাইনকে প্রতিহত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শুনে মুসলিম বিন আকিল তাকে অনুরোধ করেন যাতে হুসাইনকে কুফায় না আসার ব্যাপারে জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়। তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলকে হত্যা করেন। আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আমৃত্যু মক্কায় থেকে যান। হুসাইন সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার পরিবারসহ কুফায় যাবেন। সমর্থনের অভাবের বিষয়ে তার এসময় জানা ছিল না। হুসাইন ও তার পরিবারকে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী রুখে দেয়। এসময় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন আমরু বিন সাদ, শামার বিন জিয়ালজোশান ও হুসাইন বিন তামিম। তারা হুসাইন ও তার পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সাথে লড়াই করে হত্যা করে। হুসাইনের দলে ২০০ জন মানুষ ছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী। এদের মধ্যে হুসাইনের বোন, স্ত্রী, মেয়ে ও তাদের সন্তানরা ছিল। নারী ও শিশুদেরকে যুদ্ধবন্ধী হিসেবে দামেস্কে ইয়াজিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। হুসাইনের মৃত্যু ও তার পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণের সমর্থন তার দিক থেকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বন্দী করে রাখা হয়। এরপর তাদের মদিনা ফিরে যেতে দেয়া হয়। বেঁচে যাওয়া একমাত্র পুরুষ সদস্য ছিলেন [[আলি ইবনে হুসাইন জয়নুল আবেদিন]]। অসুস্থতার কারণে কাফেলা আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি লড়াই করতে পারেননি।<ref>''Kitab Al-Irshad'' by Historian Sheikh Mufid</ref>
 
মক্কায় অবস্থান করলেও হুসাইনের মৃত্যুর পর আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আরো দুটি প্রতিপক্ষ দলের সাথে যুক্ত হন। এর একটি মদিনা ও অন্যটি বসরা ও আরবের খারিজিরা সংঘটিত করে। মদিনা ছিল হুসাইনসহ মুহাম্মদ (সা) ও তার পরিবারের বাসস্থান, তার মৃত্যু ও পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিরাট আকারে প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হয়। ৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইয়াজিদ আন্দোলন দমন করতে সেনাবাহিনী পাঠান। [[হাররাহর যুদ্ধে]] সেনারা মদিনার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে। মদিনার মসজিদে নববী ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ইয়াজিদের সেনারা এগিয়ে গিয়ে মক্কা অবরোধ করে। অবরোধের এক পর্যায়ে আগুনে কাবার ক্ষতি হয়। কাবা ও মসজিদে নববীর ক্ষতিসাধনের ঘটনা পরবর্তী ইতিহাসবিদদের কাছে বেশ সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হয়।
 
অবরোধ চলার সময় ইয়াজিদ মৃত্যুবরণ করেন এবং উমাইয়া সেনারা দামেস্কে ফিরে আসে। আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের মক্কার নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন। ইয়াজিদের পুত্র [[দ্বিতীয় মুয়াবিয়া]] (শাসনকাল ৬৮৩-৮৪) তার উত্তরসুরি হন কিন্তু সিরিয়ার বাইরে খলিফা হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন না। সিরিয়ার ভেতর দুটি দল তৈরী হয়, একটি হল কায়সদের দল, এরা আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়েরকে সমর্থন করত, আরেকটি হল কুদাদের দল যারা [[প্রথম মারওয়ান|প্রথম মারওয়ানকে]] সমর্থন করত। মারওয়ানের সমর্থকরা [[মারজ রাহিতের যুদ্ধে]] বিজয়ী হয় এবং ৬৮৪ তে মারওয়ান খলিফার পদে আরোহণ করেন।
১৫৬ নং লাইন:
[[আব্বাসীয় খিলাফত|আব্বাসীয় পরিবার]] কর্তৃক পরিচালিত [[হাশিমিয়া]] আন্দোলন উমাইয়া খিলাফতকে উৎখাত করে। আব্বাসীয়রা হাশিমি গোত্রের সদস্য ছিল। তবে হাশিমিয়া শব্দটি আলির নাতি ও মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়ার পুত্র আবু হাশিম থেকে এসেছে বলে মনে হয়। কিছু সূত্রমতে আব্বাসীয় পরিবারের প্রধান আবু হাশিম ৭১৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি মুহাম্মদ ইবনে আলি তার উত্তরসুরি মনোনীত করে যান। [[আল-মুখতার|আল-মুখতারের]] ব্যর্থ বিদ্রোহের সমর্থকদের নিয়ে আব্বাসীয়রা এগিয়ে যায়। তারা নিজেদেরকে মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়ার সমর্থক হিসেবে তুলে ধরে।
 
৭১৯ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া হাশিমিয়া কর্মকাণ্ড খোরাসানে অনুগত লোক খুজতে থাকে। তারা মুহাম্মদ (সা) এর পরিবারের একজন সদস্যের জন্য সমর্থনের ডাক দেয়। তবে আব্বাসীয়দের কথা বলা হয়নি। এই কার্যক্রম আরব ও অনারব ([[মাওয়ালি]]) উভয়ের মধ্যেই সফল হয়। তবে দ্বিতীয় দলটি আন্দোলনের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
 
৭৪৬ এর দিকে [[আবু মুসলিম]] খোরাসানে হাশিমিয়াদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ৭৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কালো পতাকার অধীনে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ শুরু করেন। তিনি শীঘ্রই খোরাসানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, এর উমাইয়া গভর্নর [[নাসর ইবনে সায়ার|নাসর ইবনে সায়ারকে]] বহিষ্কার করেন এবং পশ্চিমদিকে একটি সেনাবাহিনী পাঠানো হয়। ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দে কুফা হাশিমিয়াদের হস্তগত হয়। এটি ইরাকে উমাইয়াদের শেষ শক্ত ঘাঁটি ছিল। [[ওয়াসিত|ওয়াসিতে]] [[ওয়াসিত অবরোধ|অবরোধ]] করা হয় এবং সে বছরের নভেম্বরে [[আবুল আবাস]] কুফার মসজিদে খলিফা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। এর ফলে মারওয়ান তার সেনাদেরকে হারান থেকে ইরাকের দিকে পরিচালিত করেন। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি দুই বাহিনী [[জাবের যুদ্ধ|জাবের যুদ্ধে]] মুখোমুখি হয় এবং উমাইয়ারা পরাজিত হয়। এপ্রিলে দামেস্ক আব্বাসীয়দের হাতে এসে পড়ে এবং আগস্টে মারওয়ানকে মিশরে হত্যা করা হয়।
১৯৭ নং লাইন:
 
====দিওয়ান আল কুদাত====
ইসলামের প্রাথমিক যুগে বিচারের কাজ মুহাম্মদ (সা) ও খলিফারা ব্যক্তিগতভাবে তদারক করতেন। সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ব্যাপক হওয়ার পর খলিফা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর]] পৃথক বিচারবিভাগ চালু করেন এবং ২৩ হিজরি/৬৪৩ খ্রিষ্টাব্দে মিশরে প্রথম কাজি নিযুক্ত করা হয়। ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দের পর উমাইয়া খলিফা হিশাম ও দ্বিতীয় ওয়ালিদের সময় মিশরের বেশ কিছু বিচারক একের পর একজন দায়িত্বপালন করেন।
 
====দিওয়ান আল জুন্দ====
২৩০ নং লাইন:
==উমাইয়াদের নিয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি==
===সুন্নি দৃষ্টিভঙ্গি===
সুন্নি পন্ডিতরা একমত যে মুয়াবিয়ার পরিবার ও তার পিতা [[আবু সুফিয়ান ইবনে হার্ব|আবু সুফিয়ান ইবনে হারব]] ও তার মা [[হিন্দ বিনতে উতবা]] ইসলামের বিরোধী ছিল। মুহাম্মদ (সা) এর [[মক্কা বিজয়|মক্কা বিজয়ের]] পর তারা মুসলিম হন। আরব অভিজাতদের ভেতর সেসময় উমাইয়ারা বেশ প্রভাব ফেলে এবং চূড়ান্তভাবে [[রাশিদুন খিলাফত]] বিলুপ্ত করা হয় এবং রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
 
সুন্নি পন্ডিতরা ইসলাম গ্রহণকারী অনারব মুসলিমদের উপর ''মাওয়ালি'' প্রথা চালু রাখার জন্য উমাইয়াদের দোষারোপ করেন। শাসক অভিজাত আরবদের কাছে নতুন ইসলাম গ্রহণকারীরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হত এবং তাদেরকে অমুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য কর দিতে হত। সেসাথে তারা সরকার ও সামরিক বাহিনীতে কাজের সুযোগ পেত না।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Student Resources, Chapter 12: The First Global Civilization: The Rise and Spread of Islam, The Arab Empire of the Umayyads - Converts and "People of the Book" |ইউআরএল=http://occawlonline.pearsoned.com/bookbind/pubbooks/stearns_awl/chapter12/objectives/deluxe-content.html |সংগ্রহের-তারিখ=২৬ মে ২০১৪ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20020521215309/http://occawlonline.pearsoned.com/bookbind/pubbooks/stearns_awl/chapter12/objectives/deluxe-content.html |আর্কাইভের-তারিখ=২১ মে ২০০২ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
২৪০ নং লাইন:
 
==উমাইয়া খলিফাদের তালিকা==
[[File:Umayads.svg|thumb|400px|right|[[উমাইয়া পরিবারের বংশলতিকা|উমাইয়া পরিবারের]] বংশলতিকা। নীল কালিতে : খলিফা [[উসমান ইবনে আফ্‌ফান|উসমান]], [[খুলাফায়ে রাশেদীন|খুলাফায়ে রাশেদীনের]] অন্যতম। সবুজ কালিতে, দামেস্কের উমাইয়া খলিফা। হলুদ কালিতে, কর্ডো‌বার উমাইয়া আমির। কমলা কালিতে, কর্ডো‌বার উমাইয়া খলিফা। তৃতীয় আবদুর রহমান ৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আমির ছিলেন, এরপর নিজেকে খিলিফা ঘোষণা করেন। মুহাম্মদ (সা) এর সাথে আত্মীয়তা দেখানোর জন্য তাকেও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।]]
 
{| class="wikitable"