বাংলাদেশের ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
২৪১ নং লাইন:
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রের একমাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে [[উর্দু|উর্দুকে]] ঘোষণা করে, এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষী জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নতুন আইন প্রনয়ণের সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং গণ বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে, সরকার সকল ধরনের গণ সমাবেশ ও প্রতিবাদ আন্দোলন বেআইনি ঘোষণা করে। [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] ছাত্ররা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মীরা এই আইন অমান্য করে এবং ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে একটি বিরাট আন্দোলন সংগঠিত করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Van Schendel |প্রথমাংশ=Willem |তারিখ=2009 | শিরোনাম=A History of Bangladesh | ইউআরএল=https://www.bookdepository.com/History-Bangladesh-Willem-Van-Schendel/9780521861748 | প্রকাশক=Cambridge University Press | পাতা=289 | আইএসবিএন=9780521861748}}</ref> ঐদিনে বহু ছাত্র বিক্ষোভকারীদের পুলিশ হত্যা করে এবং এই আন্দোলন তার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে।
এই হত্যাকাণ্ডের পরে সারা দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল [[বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ|আওয়ামী মুসলিম লীগ]] যার পরবর্তীতে নামকরণ করা হয় [[আওয়ামী লীগ]]। কয়েক বৎসর ব্যাপী সংঘর্ষ চলার পর, কেন্দ্রীয় সরকার অবশেষে পরাজয় স্বীকার করে এবং ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, ইউনেস্কো, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আনুষ্ঠানিকভাবে [[আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস]] হিসেবে ঘোষণা করে।<ref>Glassie, Henry and Mahmud, Feroz.2008.Living Traditions. Cultural Survey of Bangladesh Series-II. Asiatic Society of Bangladesh. Dhaka. p.578</ref> বাংলাদেশে ২১
=== রাজনীতিঃ ১৯৫৪-১৯৭০ ===
৩০০ নং লাইন:
==== দ্বিতীয় সামরিক আইন এবং এরশাদ প্রশাসন ====
সাত্তারকে প্রধান বিচারপতি [[আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী|এ এফ এম আহসানউদ্দিন চৌধুরী]] পদচ্যুত করেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল [[হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ]] সামরিক আইন ঘোষণা করেন এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। তিনি মন্ত্রিপরিষদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ডেপুটি মার্শাল ল' অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসাবে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধানদের নিয়োগ করেন। এরশাদের মার্শাল ল' শাসনের অধীনে রাজনৈতিক নিপীড়ন ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। যাইহোক, সরকার প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি সুসংঘবদ্ধ কাঠামো প্রণয়ন করে। দেশের
এরশাদ [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত]] বিরোধী জোটের পক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি আরও জোরদার করেন। ১৯৮৩ সালে এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। তার প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে ছিল মূলত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অর্থনীতি (৭০% পর্যন্ত শিল্প রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছিল) এবং হালকা উৎপাদন, কাঁচামাল এবং সংবাদপত্র সহ ভারী শিল্পে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা। বিদেশী কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের শিল্পে বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং উৎপাদন রক্ষা করার জন্য কঠোর ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Van Schendel |প্রথমাংশ=Willem |তারিখ=2009 | শিরোনাম=A History of Bangladesh |প্রকাশক=Cambridge University Press | পাতা=337 | আইএসবিএন=9780521861748}}</ref> দুর্নীতি ও রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্য জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন জারি করা হয় এবং সমস্ত রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়।
৩১৯ নং লাইন:
অর্থমন্ত্রী [[সাইফুর রহমান]] একটি উদার অর্থনৈতিক সংস্কারের ধারাবাহিকতা শুরু করেন, যা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এবং [[ভারত]], [[পাকিস্তান]] ও [[শ্রীলঙ্কা|শ্রীলঙ্কায়]] একটি মডেল হিসেবে দেখা হয়। <ref name="dhakatribune">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.dhakatribune.com/opinion/op-ed/2016/09/06/remembering-budget-wizard/|প্রকাশক=dhakatribune.com|শিরোনাম=Remembering the budget wizard | Dhaka Tribune|সংগ্রহের-তারিখ=6 January 2017}}</ref> মার্চ ১৯৯৪ সালে একটি সংসদীয় উপনির্বাচনে বিতর্ক দেখা দেয়, যাতে বিরোধী দল দাবী করে যে সরকার অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় এসেছে। সমগ্র বিরোধী দল অনির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সংসদ বয়কট করে। বিরোধীদল এও দাবী করে যে খালেদা জিয়ার সরকার পদত্যাগ করুক এবং তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সাধারণ নির্বাচনের জন্য, বার বার সাধারণ হরতালের একটি কর্মসূচি প্রনয়ণ করে।
[[কমনওয়েলথ]] সচিবালয়ের সহায়তায় বিতর্কের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে আরেকটি সমঝোতা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে সংসদ থেকে বিরোধী দল পদত্যাগ করে। তারপর সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য তারা মিছিল, বিক্ষোভ ও হরতালের প্রচারণা চালায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১৫
==== দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার (১৯৯৬) ====
৩৩৩ নং লাইন:
আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৯৯৬ সালের জুন নির্বাচন মুক্ত এবং ন্যায্য ছিল এবং শেষ পর্যন্ত বিএনপি এই নতুন সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়। হাসিনা প্রশাসন পরিবেশগত ও আন্তঃজাতিগত চুক্তির ক্ষেত্রে মাইলফলক কৃতিত্ব অর্জন করে। এগুলো হল ভারতের সাথে গঙ্গার পানি ভাগ চুক্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগত বিদ্রোহীদের সাথে [[পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি|শান্তি চুক্তি]]। <ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Van Schendel |প্রথমাংশ=Willem |তারিখ=2009 | শিরোনাম=A History of Bangladesh| প্রকাশক=Cambridge University Press | পাতা=344 | আইএসবিএন=9780521861748}}</ref> ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় এক বিরল ও অভূতপূর্ব ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনের আয়োজন করেন, যাতে অংশগ্রহণ করেন- ১. পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী [[নওয়াজ শরীফ]], ২. ভারতের প্রধানমন্ত্রী [[আই. কে. গুজরাল]] এবং ৩.আমেরিকার রাষ্ট্রপতি [[বিল ক্লিনটন]]।
১৯৯৯ সালের জুন মাসে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো আবার সংসদে উপস্থিত হতে বিরত থাকে। ১৯৯৭ সালে "ছয় দিনের" [[হরতাল]] থেকে শুরু করে ১৯৯৯ সালে "২৭ দিনের" হরতাল পর্যন্ত; বিরোধীদলের পক্ষ থেকে ব্যাপক সংখ্যক হরতালের সৃষ্টি হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Van Schendel |প্রথমাংশ=Willem |তারিখ=2009 | শিরোনাম=A History of Bangladesh | প্রকাশক=Cambridge University Press | পাতা=346 | আইএসবিএন=9780521861748}}</ref> ১৯৯৯ সালের শুরুতে গঠিত চার-দলীয় বিরোধী জোট ঘোষণা করে যে, নির্বাচনী বৈষম্য দূর করার জন্য সরকারী নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং এর ফলে বিএনপি পরবর্তীতে
==== তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার (২০০১) ====
|