বাংলাদেশের ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
২৪ নং লাইন:
{{মূল নিবন্ধ|নন্দ সাম্রাজ্য}}
[[নন্দ সাম্রাজ্য]] ছিল বাংলার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় যুগ। এই যুগে বাংলার শক্তিমত্তা ও প্রাচুর্য শীর্ষে
[[মহাপদ্ম নন্দ]] ছিলেন নন্দ বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট। তিনি সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী ব্যাপক সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি কোশল ([[উত্তরপ্রদেশ|উত্তর প্রদেশ]]), কুরু ([[পাঞ্জাব, ভারত|পূর্ব পাঞ্জাব]]), মৎস্য ([[রাজস্থান|রাজপুতানা]]), চেদী (মধ্য প্রদেশ ও বিহারের মধ্যস্থিত জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চল),অবন্তী (মধ্য প্রদেশ) প্রভৃতি অঞ্চল জয় করেন। দিগ্বিজয়ার্থে মহাপদ্ম এক বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করেন। তৎকালীন ইতিহাস অনুসারে মহাপদ্মের অধীনে ২,০০,০০০ পদাতিক, ২০,০০০ অশ্বারোহী, ৪,০০০ যুদ্ধরথ ও ২,০০০ হস্তীবাহিনী ছিল। মতান্তরে তার নিকট ২,০০,০০০ পদাতিক, ৮০,০০০ অশ্বারোহী, ৮,০০০ যুদ্ধরথ ও ৬,০০০ হস্তীবাহিনী ছিল।
১১৮ নং লাইন:
রাজা [[রাজা গণেশ|গণেশ]] প্রাথমিক জীবনে [[দিনাজপুর|দিনাজপুরের]] ভাতুরিয়া অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। তিনি বাংলার এক আমীর বায়েজীদ শাহকে ইলিয়াস শাহী বংশের শেষ সুলতানকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করতে উৎসাহিত করেন। পরে বায়েজীদ শাহকে সরিয়ে তিনি নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। গণেশ বাংলাদেশে সত্যপীর নামক এক নতুন পূজার উদ্ভাবন করেন। সত্যপীর একইসঙ্গে মুসলিম পীর ও হিন্দু দেবতার প্রতিভূ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গণেশের পূর্বে বাংলার হিন্দুগণ মুসলমান শাসকদের প্রভাবে ব্যাপক মাত্রায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছিলেন। এই ধর্মান্তর রোধ করার জন্য তিনি এই নতুন সত্যপীর প্রথার প্রচলন করেন।
রাজা গণেশ নিজ পুত্র জিতেন্দ্রদেবের পরিবর্তে মহেন্দ্রদেবকে পরবর্তী রাজা হিসেবে নিয়োগ করেন। এতে জিতেন্দ্রদেব অত্যন্ত বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মুসলিম আমীরদের সহায়তায়, [[জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ|জালালউদ্দীন মুহাম্মাদ শাহ]] নাম নিয়ে সিংহাসনে
মুহাম্মাদ শাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র ও উত্তরাধিকারী [[শামসউদ্দিন আহমাদ শাহ|আহমাদ শাহ]] বাংলার সিংহাসনে বসেন। তার ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের মতামত বিভ্রান্তিকর। ফেরেশতার মতে, তিনি তার মহান পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিলেন এবং ন্যায়পরায়ণতার আদর্শ প্রাণপনে রক্ষা করেন। অপরপক্ষে [[গোলাম হোসেন সেলিম|গোলাম হোসেন]] বলেন, তিনি অত্যাচারী ও রক্তপিপাসু ছিলেন। তিনি বিনা কারণে রক্তপাত করতেন এবং অসহায় নারী-পুরুষদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাতেন। যাই হোক তিনি জাউনপুরের কাছে পরাজিত হন। এবং বিহার প্রদেশটি হারিয়ে ফেলেন। সাদী খান ও নাসির খান নামক দুইজন ক্রীতদাস, যারা তার অমাত্য পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন তাকে হত্যা করেন এবং বাংলার সিংহাসন দখল করেন।
১২৬ নং লাইন:
সাদী খান ও নাসির খান নামক ক্ষমতা দখলকারী আমীরদের সরিয়ে [[নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ|মাহমুদ শাহ]] নামক ইলিয়াস শাহী বংশের একজন বংশধর বাংলার ক্ষমতা দখল করেন। এর ফলে বাংলায় ইলিয়াস শাহী রাজবংশ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। সুলতান মাহমুদ শাহের সময় বাংলার ইমারত ও স্থাপত্য শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটে। তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের ইমারত নির্মাণ করে একে সুসজ্জিত করেন। এসব ইমারতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বাগেরহাটের [[ষাট গম্বুজ মসজিদ]], ঢাকার বিনত বিবির মসজিদ, গৌড়ের বাইশগজী প্রাচীর প্রভৃতি।<ref>{{বই উদ্ধৃতি | লেখক=Mahmudul Hasan |তারিখ=2003 | শিরোনাম=History of Bengal |প্রকাশক=Ononna prokashoni | পাতাসমূহ=214|আইএসবিএন=984-477-034-3}}</ref> এজন্য অনেক ঐতিহাসিক তার যুগকে অগাস্টান যুগ বলে অভিহিত করে থাকেন।
মাহমুদ শাহের মৃত্যুর পর তার সুযোগ্য পুত্র [[রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ|বরবক শাহ]] বাংলার সিংহাসনে
সুলতান [[শামসউদ্দিন ইউসুফ শাহ|ইউসুফ শাহ]] একজন দানশীল, ন্যায়পরায়ণ ও ধার্মিক শাসক ছিলেন। তিনি ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। তিনি দরবারে জ্ঞানী-গুণী, আলেম ও বিচারকদের আহ্বান করতেন। পরবর্তী সুলতান [[জালালউদ্দিন ফাতেহ শাহ|ফতেহ শাহও]] একজন দয়ালু, কর্মঠ ও ক্ষমতাশালী সম্রাট ছিলেন। তিনি সুবিচার ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে রাজ্য শাসন করতেন। তার সময়ে হাবশী ক্রীতদাসগণ অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তিনি এই হাবশী সেনাবাহিনী ভেঙ্গে দিতে উদ্যত হন। ফলে হাবশী সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করে এবং তাকে হত্যা করে বাংলার শাসনক্ষমতা দখল করে। এর ফলে বংলার ইলিয়াস শাহী রাজবংশের পতন ঘটে।
১৫৩ নং লাইন:
শেরশাহের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রের সেনাধ্যক্ষগণ জ্যেষ্ঠ্যপুত্র আদিল খানের পরিবর্তে [[ইসলাম শাহ সুরি|ইসলাম শাহকে]] উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন, কারণ ইসলাম শাহ রাজপুত্র অবস্থায় অধিকতর সামরিক প্রতিভা প্রদর্শন করেছিলেন। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আদিল খান ইসলাম শাহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। আদিল খান তার বাহিনী নিয়ে [[অাগ্রা|আগ্রার]] দিকে অগ্রসর হন, কিন্তু ইসলাম শাহের হাতে পরাজিত হন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Biography of Islam Shah the Successor of Sher Shah|ইউআরএল=http://www.preservearticles.com/2012031025991/biography-of-islam-shah-the-successor-of-sher-shah.html}}</ref> ইসলাম শাহের সময় মুঘল সম্রাট হুমায়ুন রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য তার নিকট প্রার্থনা জানান। কিন্তু তিনি এ আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। ইসলাম শাহের শাসনকাল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং এ সময় তেমন কোন যুদ্ধবিগ্রহের ঘটনা ঘটেনি।
ইসলাম শাহের মৃত্যুর পর সূরী সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলার উদ্ভব হয়। ইসলাম শাহের পর তার পুত্র ফিরোজ শাহ সিংহাসনে
===কররানী রাজবংশ===
৩০০ নং লাইন:
==== দ্বিতীয় সামরিক আইন এবং এরশাদ প্রশাসন ====
সাত্তারকে প্রধান বিচারপতি [[আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী|এ এফ এম আহসানউদ্দিন চৌধুরী]] পদচ্যুত করেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল [[হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ]] সামরিক আইন ঘোষণা করেন এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। তিনি মন্ত্রিপরিষদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ডেপুটি মার্শাল ল' অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসাবে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধানদের নিয়োগ করেন। এরশাদের মার্শাল ল' শাসনের অধীনে রাজনৈতিক নিপীড়ন ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। যাইহোক, সরকার প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি সুসংঘবদ্ধ কাঠামো প্রণয়ন করে। দেশের
এরশাদ [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত]] বিরোধী জোটের পক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি আরও জোরদার করেন। ১৯৮৩ সালে এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। তার প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে ছিল মূলত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অর্থনীতি (৭০% পর্যন্ত শিল্প রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছিল) এবং হালকা উৎপাদন, কাঁচামাল এবং সংবাদপত্র সহ ভারী শিল্পে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা। বিদেশী কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের শিল্পে বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং উৎপাদন রক্ষা করার জন্য কঠোর ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Van Schendel |প্রথমাংশ=Willem |তারিখ=2009 | শিরোনাম=A History of Bangladesh |প্রকাশক=Cambridge University Press | পাতা=337 | আইএসবিএন=9780521861748}}</ref> দুর্নীতি ও রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্য জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন জারি করা হয় এবং সমস্ত রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়।
|