১,৮২,৩৮১টি
সম্পাদনা
বালুচরীর জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জের নিকটবর্তী অধুনালুপ্ত বালুচর নামক স্থানে। বালুচরের সঠিক অবস্থান নিয়ে নানান মত আছে। ভারত পথিক যদুনাথ সর্বাধিকারী তার ১৮৫৭ সালে রচিত ভ্রমণ বৃত্তান্তে জিয়াগঞ্জ শহরে বালুচর বলে একটি অঞ্চলের কথা উল্লেখ করেছেন যা চেলি ও গরদের আড়ত।<ref name=abp29102015>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=আবেদিন|প্রথমাংশ১=অনল|শিরোনাম=বালুচরি কার, জমাট বিতর্ক পত্রিকার শারদ সংখ্যায়|ইউআরএল=http://www.anandabazar.com/district/nodia-murshidabbad/%E0%A6%AC-%E0%A6%B2-%E0%A6%9A%E0%A6%B0-%E0%A6%95-%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%AE-%E0%A6%9F-%E0%A6%AC-%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%95-%E0%A6%AA%E0%A6%A4-%E0%A6%B0-%E0%A6%95-%E0%A6%B0-%E0%A6%B6-%E0%A6%B0%E0%A6%A6-%E0%A6%B8-%E0%A6%96-%E0%A6%AF-%E0%A7%9F-1.230425|সংগ্রহের-তারিখ=30 জানুয়ারি 2016|কর্ম=আনন্দবজার পত্রিকা|প্রকাশক=এবিপি গ্রুপ|তারিখ=29 অক্টোবর 2015}}</ref> মুর্শিদাবাদ জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও রেশমশিল্প গবেষক নিত্যগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মতে বহরমপুরের কয়েক মাইল উত্তরে ভাগীরথীর তীরে অবস্থিত ছিল বালুচর।<ref name=tt24052015>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=কার্লেকর|প্রথমাংশ১=মালবিকা|শিরোনাম=History of a weave - Of tapestries, hookahs and howdas|ইউআরএল=http://www.telegraphindia.com/1150524/jsp/opinion/story_21749.jsp|সংগ্রহের-তারিখ=30 জানুয়ারি 2016|কর্ম=দ্য টেলিগ্রাফ|প্রকাশক=এবিপি গ্রুপ|তারিখ=24 মে 2015}}</ref> ঐতিহাসিক বিনয় ঘোষের মতে জিয়াগঞ্জের বালুচর ছিল রেশমশিল্পজাত নানা প্রকার বস্ত্রাদির বড় আড়ত ও ব্যবসা কেন্দ্র। তাঁতশিল্পীদের বসতি ছিল জিয়াগঞ্জের নিকটবর্তী বাহাদুরপুর, বেলিয়াপুকুর, রামডহর, রমনাপাড়া, রণসাগর, আমডহর, বাগডহর, আমাইপাড়া প্রভৃতি গ্রামসমূহ।<ref name=ghosh2009>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=ঘোষ|প্রথমাংশ১=বিনয়|শিরোনাম=পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি, তৃতীয় খন্ড|তারিখ=ডিসেম্বর 2009|প্রকাশক=প্রকাশ ভবন|পাতা=৫৫|সংস্করণ=পঞ্চম মুদ্রণ, প্রথম|সংগ্রহের-তারিখ=30 জানুয়ারি 2016}}</ref> তারা তাদের রেশমের শাড়ি জিয়াগঞ্জের বালুচরে বিক্রি করতেন। বিক্রয় কেন্দ্রের নামেই শাড়ীর নাম হয় বালুচরী।<ref name=ghosh2009/> লোকসংস্কৃতি গবেষক ডঃ সোমনাথ ভট্টাচার্যের মতে বালুচরীর উদ্ভব বালুচর অঞ্চলের নিকটবর্তী মীরপুর-বাহাদুরপুর গ্রামে।<ref name=blk>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=ভট্টাচার্য|প্রথমাংশ১=ডঃ সোমনাথ|শেষাংশ২=বসু|প্রথমাংশ২=অর্পিতা|editor-last1=চক্রবর্তী|editor-first1=বরুণকুমার|শিরোনাম=বঙ্গীয় লোকসংস্কৃতি কোষ|তারিখ=ডিসেম্বর, 2007|প্রকাশক=অপর্ণা বুক ডিস্ট্রিবিউটার্স|অবস্থান=কলকাতা|আইএসবিএন=81-86036-13-X|পাতাসমূহ=৩৪০-৩৪১|সংস্করণ=দ্বিতীয় পরিবর্ধিত, পরিমার্জিত|সংগ্রহের-তারিখ=30 জানুয়ারি 2016}}</ref>
[[File:Baluchori saree DSC 0093.jpg|thumb|right|বালুচরী শাড়িতে বিবিধ পৌরাণিক নকশা কাজ]]
বালুচরীর জন্মকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ। বালুচরীর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে নানান মত আছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার আজিমগঞ্জ-জিয়াগঞ্জ অঞ্চলে গড়ে ওঠে বাণিজ্যকেন্দ্র। দূরদূরান্ত থেকে মারোয়ারী, গুজরাতী, পঞ্জাবী, আর্মানী, ইহুদী, ইংরাজ, ফরাসী ও ওলন্দাজ বণিকরা বাণিজ্যের জন্য আসতে থাকেন এই অঞ্চলে। একটি মত অনুসারে সেই সময় গুজরাতী তাঁতীদেরও আগমন হয়, এবং তার ফলেই ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে বালুচরে গড়ে ওঠে বয়নশিল্প।<ref name=tt24052015/> অন্য মতে মুর্শিদ কুলি খাঁ ১৭০৪ সালে সুবে বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মকসুদাবাদে স্থানান্তরিত করার পর তার বেগমদের জন্য নতুন শাড়ি তৈরীর হুকুম দেন বালুচরের তাঁতশিল্পীদের। তারা যে নতুন শাড়ি সৃষ্টি করেন তাই বালুচরী নামে খ্যাত হয়।<ref name=abp08082014>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=বন্দ্যোপাধ্যায়|প্রথমাংশ১=স্বপন|শিরোনাম=নকশা বদলে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই বালুচরীর|ইউআরএল=http://www.anandabazar.com/district/purolia-birvhum-bankura/%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A6%B6-%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A6%B2-%E0%A6%98-%E0%A6%B0-%E0%A6%A6-%E0%A7%9C-%E0%A6%A8-%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%9C-%E0%A6%87-%E0%A6%AC-%E0%A6%B2-%E0%A6%9A%E0%A6%B0-%E0%A6%B0-1.57516|সংগ্রহের-তারিখ=30 জানুয়ারি 2016|কর্ম=আনন্দবাজার পত্রিকা|প্রকাশক=এবিপি গ্রুপ|তারিখ=8
নবাব মুর্শিদকুলি খানের উদ্যোগে সেখানে এই শিল্পের রমরমা দেখা দেয়৷{{Citation needed}} সেখানে এই শিল্পের শেষ বিখ্যাত কারিগর দুবরাজ দাস মারা যান ১৯০৩ সালে, তিনি চিত্রশিল্পীদের মত শাড়িতে নিজের নাম সই করতেন৷<ref>[http://gaatha.com/baluchari-saree-bangal/ Photoloomic ~ Baluchari] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20151117212554/http://gaatha.com/baluchari-saree-bangal/ |তারিখ=১৭ নভেম্বর ২০১৫ }}, Gaatha</ref> গঙ্গার বন্যায় এই গ্রাম বিধ্বস্ত হলে শিল্পীরা আশ্রয় নেন বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে৷ সেখানে মল্ল রাজাদের পৃষ্ঠপোষণে এই শিল্পের সমৃদ্ধি ঘটে৷ মল্ল রাজাদের সময়ে নির্মিত টেরাকোটার মন্দির ও অন্যান্য শিল্পের প্রভাব পড়ে এই শাড়ির নকশায়৷ পরে ব্রিটিশ জমানায় অন্যান্য দেশীয় বয়নশিল্পের মত বালুচরীও দুর্দশাগ্রস্ত হয়৷ ১৯৫৬ সালে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী [[সুভো ঠাকুর]] বা সুভগেন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এই শাড়ির বাণিজ্যিক বিস্তার ঘটে৷ তিনি তখনকার বিখ্যাত কারিগর অক্ষয়কুমার দাসকে রিজিওনাল ডিজাইন সেন্টারে (সুভো ঠাকুর এর ডিরেক্টর ছিলেন) সাবেক জালা তাঁতের পরিবর্তে জ্যাকার্ড তাঁতের ব্যবহার শেখান৷ পরের বছর অক্ষয় দাস অজন্তা-ইলোরার মোটিফ লাগিয়ে নতুন বালুচরী বাজারে আনলে এই শিল্পের উত্থান ঘটে৷
|