পোলোনিয়াম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৫৭ নং লাইন:
মেন্ডেলেয়েভের এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো অনেকাংশেই নিখুঁত ছিল। এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো অবশ্য মৌলটি আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ কোন ভূমিকা পালন করে নি, কেবল একটি পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছিল। [[১৮৯৭]] সালের [[ডিসেম্বর ১৬]] তারিখ থেকে [[মেরি কুরি]] এবং [[পিয়েরে কুরি]] [[বেকেরেল রশ্মি]] তথা [[ইউরেনিয়াম]] রশ্মি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাদের গবেষণাকর্মের লগবই থেকে এটি জানা গেছে। গবেষণাটি অবশ্য মেরি কুরি নিজেই শুরু করেছিলেন, [[১৮৯৮]] সালের [[৫ ফেব্রুয়ারি]] পিয়েরে তার সাথে যোগ দেন। পিয়েরে মাপজোখের কাজ এবং ফলাফল গণনা করতেন। তারা দুজনে মিলে ইউরেনিয়াম খনিজ, লবণ এবং ধাতব ইউরেনিয়াম থেকে প্রাপ্ত তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নিয়ে গবেষণা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ইউরেনিয়াম যৌগের তেজস্ক্রিয়তা ধর্ম সবচেয়ে কম। যৌগের চেয়ে ধাতব ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা বেশি বলে প্রতীয়মান হয়। ধাতবগুলোর মধ্যে আবার [[পিচব্লেন্ড]] নামক ইউরেনিয়াম আকরিকের তেজস্ক্রিয়তা ছিল সবচেয়ে বেশি। এ থেকে তারা স্পষ্টতই বুঝতে পারেন, পিচব্লেন্ডে এমন একটি মৌল উপাদান আছে যার তেজস্ক্রিয়তা ইউরেনিয়ামের থেকে অনেক বেশি। এখান থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত। [[১৮৯৮]] সালের ১২ এপ্রিল কুরি দম্পতি তাদের গবেষণা প্রকল্পটির বিবরণ [[প্যারিস আকাদেমি অফ সাইন্স|প্যারিস আকাদেমি অফ সাইন্সে]] পেশ করেন। ১৪ এপ্রিল [[জি বেমন্ট|জি বেমন্টের]] সাহায্য নিয়ে তারা নতুন এই মৌলটির সন্ধানে কাজে নেমে পড়েন।
 
কুরি দম্পতি ও [[জি বেমন্ট]] [[১৮৯৮]] সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে পিচব্লেন্ড আকরিকের বিশ্লেষণ সম্পন্ন করেন এবং আকরিক থেকে পাওয়া প্রতিটি পদার্থের তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপ করতে থাকেন। [[বিসমাথ]] লবণে অবস্থিত একটি অংশটির উপর তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়। কারণ এই অংশের তীব্রতা ইউরেনিয়াম থেকে ৪০০ গুণ বেশি। অজ্ঞাত মৌলটি থাকলে সেখানেই থেকে থাকবে। ঐ বছরের ১৮ জুলাই তারা আকাদেমিতের বিজ্ঞান সভায় "''পিচব্লেন্ডে অবস্থিত একটি নতুন তেজস্ক্রিয় পদার্থ সম্বন্ধে''" শীর্ষক একটি বিবৃতি পেশ করেন। তারা বলেছিলেন, পিচব্লেন্ড থেকে অজ্ঞাত এই নতুন মৌলটির সালফার যৌগ নিষ্কাশনে তারা সক্ষম হয়েছেন। ধর্ম অনুযায়ী নতুন মৌলটি ছিল বিসমাথের প্রতিবেশি।প্রতিবেশী। উল্লেখ্য এই বিবৃতিতেই প্রথবারের মত [[তেজস্ক্রিয়তা]] নামটি ব্যবহৃত হয়। এই নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে মৌল আবিষ্কার সম্ভব বলে সবাই খানিকটা আম্বস্ত হন। তেজস্ক্রিয়ামিতি প্রকৌশলের সাহায্যে তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপ করে নতুন মৌলের বৈশিষ্ট্য বলে দেয়ার এই পদ্ধতিটি ছিল নতুন। এর আগে যে মৌলকে দেখা যায় না, অনুভব বা ওজন করা যায় না, প্রাকৃতিক বস্তুতে তার উপস্থিতি প্রমাণের জন্য বর্ণালি বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হত। এবার বর্ণালির স্থানে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ যুক্ত হল।
 
কুরিদের দলের এই ফলাফল নির্ভুল ছিল না। তারা বলেছিলেন বিসমাথের সাথে নতুন এই মৌলের রাসায়নিক সাদৃশ্য রয়েছে যা সঠিক নয়। অবশ্য বিশুদ্ধ ধাতুটি নিষ্কাশন করতে পারেন নি বিধায় তাদের এ ধরনের ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক। এমনকি তারা পোলোনিয়ামের পারমাণবিক ভর এবং বিসমাথের সাথে এর বর্ণালির পার্থক্যও নির্ণয় করতে পারেন নি। আসলে পোলোনিয়ামের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে টেলুরিয়ামের যা তারা ধরতে পারেননি। এ হিসেবে [[১৮৯৮]] সালের [[১৮ জুলাই]] তারিখটিকে পোলোনিয়ামের প্রাথমিক আবিষ্কারের দিন বলা যেতে পারে এর বেশি নয়, পূর্ণ আবিষ্কার সম্পন্ন করতে আরও অনেক সময় লেগেছিল। কারণ পোলোনিয়াম গবেষণার বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ অত্যধিক যাতে কেবল [[আলফা রশ্মি]] থাকে, [[বিটা রশ্মি|বিটা]] ও [[গামা রশ্মি|গামা]] থাকে না। সময়ের সাথে এর তেজস্ক্রিয়তা কমতে থাকাটা অবশ্য বেশ আশ্চর্যজনক। থোরিয়াম বা ইউরেনিয়ামের ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায় না। এসব কারণে পোলোনিয়াম আসলেই আছে কি-না তানিয়ে অনেক বিজ্ঞানীই সন্দেহ পোষণ করতেন। তারা বলতেন, এটি হল সামান্য পরিমাণ তেজস্ক্রিয় পদার্থ মিশ্রিত সাধারণ [[বিসমাথ]]।