আরব বিদ্রোহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩৮ নং লাইন:
 
== শক্তিসমূহ ==
প্রায় ৫০০০ জন সৈনিক আরব বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে বলে ধারণা করা হয়।<ref name="Murphy, David page 34">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 34.</ref> তবে এখানে শুধু [[সিনাই ও ফিলিস্তিন অভিযান]] ও [[এডমন্ড এলেনবি|এডমন্ড এলেনবির]] মিশরীয় বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্টদেরকেই হিসাব করা হয়। [[প্রথম ফয়সাল, ইরাক|ফয়সাল]] ও [[টমাস এডওয়ার্ড লরেন্স|লরেন্সের]] সাথে অংশগ্রহণকারী অনিয়মিত বাহিনীর সৈনিকদেরকে বিবেচনায় আনা হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সিরিয়ায় চূড়ান্ত অভিযানের সময় এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। অনেক আরব বিক্ষিপ্তভাবে বিদ্রোহে অংশ নিত। যখন অভিযানের অগ্রগতি দেখা যেত বা নিজেদের বাসভূমির এলাকায় প্রবেশ করতে তখন তারা এতে যোগ দেয়।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 20-21.</ref> আকাবা অভিযানের সময় প্রথমদিকে আরব বাহিনীতে মাত্র কয়েকশত সৈনিক ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় গোত্রগুলো থেকে এক হাজারের বেশি মানুষ আকাবায় চূড়ান্ত অভিযানের জন্য যোগ দেয়। হুসাইনের সৈন্যসংখ্যার বিভিন্ন বিবরণ পাওয়া যায়। কিন্তু ১৯১৮ সাল নাগাদ তাদের সংখ্যা ৩০,০০০ এর মত ছিল। হাশেমি সৈন্যবাহিনী দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত ছিলঃ গোত্রীয় অনিয়মিত সৈন্য যারা উসমানীয়দের বিরুদ্ধে গেরিলা আক্রমণ করত ও উসমানীয় আরব যুদ্ধবন্দীদের মধ্য থেকে সংগৃহিতদের নিয়ে গঠিত [[শরিফি বাহিনী]] যারা নিয়মিত পদ্ধতিতে যুদ্ধ করত।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 20–23.</ref> যুদ্ধের প্রাথমিক দিনে [[হুসাইন বিন আলী, মক্কার শেরিফ|হুসাইনের]] বাহিনী মূলত [[বেদুইন]] ও অন্যান্য মরুচারি যাযাবর গোত্রগুলোকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল। তারা তার সাথে দুর্বল মিত্রতায় আবদ্ধ ছিল এবং সমগ্র পরিস্থিতির চেয়ে গোত্রীয় আনুগত্য তাদের কাছে বেশীবেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।<ref name="Murphy, David page 21">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 21.</ref> স্বর্ণমুদ্রায় অগ্রিম বেতন না পাওয়া পর্যন্ত তারা লড়াইয়ে অংশ নিতে চাইত না।<ref>[[Michael Korda]], ''Hero: The Life and Legend of Lawrence of Arabia'' {{আইএসবিএন|978-0-06-171261-6}}, p. 19</ref> ১৯১৬ এর শেষ নাগাদ ফরাসির ১.২৫ মিলিওন গোল্ড ফ্রা এবং ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ ব্রিটিশরা প্রতি মাসে ২,২০,০০০ পাউন্ড বিদ্রোহে খরচ করে।<ref name="Murphy, David page 21"/> ফয়সালের ধারণা ছিল যে উসমানীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত আরবদেরকে বিদ্রোহ করতে ও নিজের পক্ষে আনতে পারবেন। কিন্তু উসমানীয় সরকার অধিকাংশ আরব সেনাদেরকে যুদ্ধের প্রথম সারিতে প্রেরণ করে। ফলে এসময় মুষ্টিমেয় কিছু পক্ষত্যাগী সৈনিক আরবদের সাথে যোগ দেয়।<ref name="Murphy, David page 24">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 24.</ref> হাশেমি বাহিনী এসময় দুর্বলভাবে সজ্জিত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের কাছ থেকে রাইফেল ও মেশিনগানের মত প্রয়োজনীয় অস্ত্রের সরবরাহ পায়।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 21-22.</ref>
 
১৯১৭ সালে হেজাজে প্রায় ২০,০০০ জন উসমানীয় সৈন্য ছিল।<ref name="Murphy, David page 24"/> ১৯১৬ সালের জুনে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার সময় চতুর্থ উসমানীয় আর্মির ৭ম কর্পস লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলি নসিব পাশার অধীন ৫৮তম পদাতিক ডিভিশন, জেনারেল মেহমেদ জামাল পাশার অধীন ১ম প্রাদেশিক বাহিনীর সাথে যোগ দেয়ার জন্য হেজাজে অবস্থান করছিল। এই বাহিনীর কাজ ছিল [[হেজাজ রেলওয়ে]] ও জেনারেল [[ফখরুদ্দিন পাশা|ফখরুদ্দিন পাশার]] অধীন হেজাজের বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা।<ref name="Murphy, David page 24"/> হেজাজ রেলওয়ের উপর অব্যাহত হামলার কারণে ১৯১৭ সালে ২য় আরেকটি বাহিনী গঠন করা হয়।<ref name="Murphy, David page 24"/> উসমানীয় বাহিনীতে খলিফার প্রতি অণুগত সৈনিক ছিল। তারা মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে।<ref name="Murphy, David page 24"/> আধুনিক জার্মান অস্ত্র সরবরাহ থাকায় প্রথমদিকে উসমানীয়রা হাশেমিদের বিরুদ্ধে সুবিধা লাভ করে।<ref name="Murphy, David page 24"/> অধিকন্তু উসমানীয়দের কাছে নিজেদের বিমানবাহিনী, জার্মান বিমান ও উসমানীয় সৈনিকদের সাহায্য ছিল।<ref name="Murphy, David page 23">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 23.</ref> সেই সাথে তারা [[জাবাল শামার আমিরাত|হাইল রাজতন্ত্রের]] রাজা [[আল রশিদ|ইবনে রশিদের]] সাহায্য লাভ করে। ইবনে রশিদের গোত্র বর্তমান সৌদি আরবের উত্তর অঞ্চল শাসন করত এবং হাশেমি ও সৌদি এই দুই দলের সাথে সংঘাতে লিপ্ত ছিল।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 15.</ref> সরবরাহ লাইনের শেষপ্রান্তে অবস্থান করাটা উসমানীয়দের দুর্বলতা ছিল। অবস্থানগত দুর্বলতার কারণে তাদেরকে কখনো কখনো প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ করতে হয়েছে।<ref name="Murphy, David page 24"/> হাশেমিদের বিরুদ্ধে উসমানীয়দের পদক্ষেপ অধিকাংশ সময়ই শত্রুর তৎপরতার চেয়ে সরবরাহের ঘাটতি কারণে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।<ref name="Murphy, David page 24"/>
৫৯ নং লাইন:
=== ১৯১৬ : টমাস এডওয়ার্ড লরেন্স ===
[[চিত্র:Ljidda.jpg|thumb|left|[[জেদ্দা|জেদ্দার]] উত্তরে রাবেঘে লরেন্স, ১৯১৭ সাল।]]
১৯১৬ সালের জুনে ব্রিটিশরা হেজাজের বিদ্রোহে সাহায্য করার জন্য বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে পাঠায়। কর্নেল সিরিল উইলসন, কর্নেল পিয়ার্স সি. জয়েস ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল [[স্টুয়ার্ট ফ্রান্সিস নিউকম্ব]] এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।<ref name="Murphy, David page 17">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 17.</ref> অন্যদিকে ফরাসিরা কর্নেল এডওয়ার্ড ব্রেমেনকে ফ্রান্সের সামরিক মিশনে প্রেরণ করে।<ref name="Murphy, David page 17"/> ফ্রান্স কয়েকজন মুসলিম অফিসারকে নিয়োগ করায় এক্ষেত্রে বেশীবেশি সুবিধা পায়। এই অফিসাররা হলে ক্যাপ্টেন আউল্ড আলি রাহো, ক্লড প্রস্ট ও লরেন্ট ডেপুই (শেষের দুইজন আরবে অবস্থানকালে ইসলাম গ্রহণ করেন)।<ref name="Murphy, David page 17"/> ফরাসি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন রোজারিও পিসানি মুসলিম না হলেও প্রকৌশলী ও গোলন্দাজ অফিসার হিসেবে বিদ্রোহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।<ref name="Murphy, David page 17"/>
 
১৯১৬ এর অক্টোবরে মিশরের ব্রিটিশ সরকার তরুণ অফিসার ক্যাপ্টেন [[টমাস এডওয়ার্ড লরেন্স|টমাস এডওয়ার্ড লরেন্সকে]] হেজাজের হাশেমি বাহিনীর সাথে কাজ করার জন্য পাঠায়।<ref name="p76"/> ইংরেজ ঐতিহাসিক [[ডেভিড মারফি]] লিখেছেন যে লরেন্স যদিও ব্রিটিশ ও ফরাসি অফিসারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কিন্তু ঐতিহাসিক লেখায় মনে হয় যে লরেন্স নিজেই আরবে মিত্রশক্তির প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।<ref name="Murphy, David page 17"/>
৭৯ নং লাইন:
 
=== ১৯১৮:মিত্রশক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি ও যুদ্ধের সমাপ্তি ===
আকাবা দখলের সময় অনেক অফিসার ফয়সালের অভিযানে যোগ দেয়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল [[স্টুয়ার্ট এফ. নিউকম্ব]] ও সিরিল ই. উইলসনের তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ অফিসার ও উপদেষ্টারা আরবদেরকে রাইফেল, বিস্ফোরক, মর্টার ও মেশিন গান সরবরাহ করে।<ref name="Murphy, David page 59">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 59.</ref> ঘাটতির কারণে অস্ত্র বিচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করা হত।<ref name="Murphy, David page 59"/> মিশরীয় ও ভারতীয় সৈনিকরা প্রথমদিকে মেশিনগানার ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিদ্রোহে অংশ নেয় এবং কয়েকটি রোলস রয়েস সাজোয়া যান যুদ্ধের জন্য বরাদ্দ করা হয়।<ref name="Murphy, David page 59"/><ref>Rolls S.C. (1937). ''Steel Chariots in the Desert''. Leonaur Books.</ref> ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীও আরবদের অপারেশনে সমর্থন দেয়। সেই সাথে রাজকীয় উষ্ট্র বাহিনীও আরবদের সাথে কিছু সময়ের জন্য কাজ করে।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 59-60.</ref> ব্রেমন্ডের অধীন ফরাসি ১১০০ অফিসার হুসাইন ও তার পুত্র, বিশেষ করে আমির [[আলী বিন হুসাইন|আলী]] ও [[প্রথম আবদুল্লাহ, জর্ডান|আবদুল্লাহর]] সাথে শখ্য গড়ে তোলে। তাই আরব দক্ষিণ বাহিনীতেই ফরাসিদের তৎপরতা বেশীবেশি ছিল। আমির আলীর অধীন এই বাহিনী [[মদীনা অবরোধ|মদীনা অবরোধে]] অংশ নেয়। অন্যদিকে আবদুল্লাহর অধীন পূর্বাঞ্চল বাহিনী ইবনে রশিদের কাছ থেকে আলীর পূর্ব ভাগ রক্ষার দায়িত্বে ছিল।<ref name="Murphy, David page 17"/> হাশেমি বাহিনী কখনোই মদীনা দখল করতে পারেনি। কেবল ১৯১৯ সালের ৯ জানুয়ারি তুর্কি সরকারের ঘোষণার পরই উসমানীয় কমান্ডার ফখরি পাশা আত্মসমর্পণ করেন।<ref name="Murphy, David page 81">Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 page 81.</ref> এসময় মদীনায় মোট ৪৬৫ জন অফিসার ও ৯৩৬৪ জন সৈনিক ছিল।<ref name="Murphy, David page 81"/>
 
লরেন্স, উইলসন ও অন্যান্য অফিসারদের নির্দেশনায় আরবরা [[হেজাজ রেলওয়|হেজাজ রেলওয়ের]] উপর সফল আক্রমণ পরিচালনা করে। এছাড়াও তারা সামরিক সরবরাহ আটক করে, ট্রেন ও ট্রাক ধ্বংস করে এবং হাজারের বেশি উসমানীয় সৈনিকদের বন্দী করে।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 39-46.</ref> যদিও এসব আক্রমণ সাফল্য সবসময় আসত না, তবুও তারা উসমানীয় সৈন্যদের বন্দী করা ও মদীনাকে বিচ্ছিন্ন করায় সফল ছিল। ১৯১৮ সালের জানুয়ারিতে আরব বিদ্রোহের অন্যতম বৃহৎ যুদ্ধে লরেন্স ও আরব সৈনিকরা [[তাফিলাহ|তাফিলাহতে]] উসমানীয়দের একটি বড় সৈন্যবহরকে পরাজিত করে।<ref>Murphy, David ''The Arab Revolt 1916-1918'', London: Osprey, 2008 pages 64-68.</ref>