আফগানিস্তান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎ইতিহাস: সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
১৮৮ নং লাইন:
 
== অর্থনীতি ==
সোভিয়েত অধিকৃতির আগেই আফগানিস্তানে জীবনেরজীবনযাত্রার মান ছিল বিশ্বের সর্বনিম্ন মানের একটি।সর্বনিম্ন। সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ ও তার পরে গৃহযুদ্ধ দেশটির অর্থনীতির চূড়ান্ত বিপর্যয় ঘটায়। সোভিয়েত আমলে শহরকেন্দ্রিক বাণিজ্য ও শিল্প সুযোগ সুবিধা গ্রামীণ অর্থনীতিকে শুরশুরু থেকে আলাদা করে ফেলে। ড্রাগ্‌সমাদক ও অস্ত্রের চোরাচালান চরমে পৌঁছে।
আফগানরা মূলত কৃষক ও পশুপালক। ২০শ শতকে খনি ও ভারী শিল্পের উন্নতি ঘটে, তবে স্থানীয় হস্তশিল্প গুরুত্ব হারায়নি।
 
১৯৫৬ সালে সরকার অনেকগুলি পাঁচ-সালাপাঁচসালা পরিকল্পনার প্রথমটি শুরু করে। ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগে নেয়া প্রকল্পগুলি সাফল্যের মুখ দেখে। অন্যান্য বড় দেশের সহায়তায় আফগানিস্তান রাস্তা, বাঁধ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বিমানবন্দর, কারখানা ও সেচ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েতরা আসার পর পশ্চিমী সাহায্য বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত শাসনের মুক্তির পর আবার সাহায্য আসা শুরু হয়। ২০০১ সালে তালেবানদের পতনের পর আফগানিস্তানে নতুন করে আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে যুদ্ধ-বিধ্স্তবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
 
=== শ্রমশক্তি ===
২০০ নং লাইন:
আফগানিস্তানের খুবই সামান্য এলাকায়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উপত্যকায় কৃষিকাজ সম্ভব এবং এই কৃষিভূমির সবগুলোতেই ব্যাপক সেচের প্রয়োজন হয়। ঝর্ণা ও নদী থেকে খাল (কারেজ বা গানাত) খুঁড়ে পানি আনা হয়।
 
[[গম]] আফগানিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শস্য। এরপর রয়েছে [[যব]], [[ভুট্টা]], ও ধান।[[ধান]]। তুলাও[[তুলা]]ও ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। আফগানিস্তান থেকে রপ্তানিকৃত দ্রব্যের মধ্যে ফল ও [[বাদাম]] গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানের [[আঙুর]][[তরমুজ]] খুব মিষ্টি হয়; এগুলি দক্ষিণ-পশ্চিমে, হিন্দুকুশের উত্তরে ও হেরাতের আশেপাশের অঞ্চলে জন্মে। আফগানিস্তান কিশমিশও[[কিশমিশ]]ও রপ্তানি করে। অন্যান্য ফলের মধ্যে রয়েছে এপ্রিকট, [[চেরি]], [[ডুমুর]], [[তুঁত]], ও ডালিম।[[ডালিম]]।
 
উত্তর আফগানিস্তানে বিপুল পরিমাণে [[কারাকুল ভেড়া]] পালন করা হয়। এই ভেড়ার শক্ত, কোঁকড়া লোম দিয়ে পারসিক ভেড়ার কোট তৈরি করা হয়। অন্যান্য জাতের ভেড়া ও ছাগলও পালন করা হয়।
 
আফগানিস্তানের আরেকটি পরিচয় অবৈধ [[আফিম]] উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে। ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এটি মায়ানমারকে হটিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ পরিমাণ আফিম উৎপাদক দেশে পরিণত হয়। আরওএছাড়াও তৈরি[[হাশিশ]]ও হততৈরি হাশিশ।হতো। ২০০০ সালের জুলাই মাসে [[তালেবান সরকার]] ইসলামে আফিমের ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে [[পপি]] গাছের চাষ বন্ধ করে দেয়। ২০০১ সালে তালেবানের পতনের গ্রামাঞ্চলের অনেক স্থানীয় দরিদ্র কৃষক আবার আফিম চাষ করা শুরু করে, যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আফিম পপি চাষ নিষিদ্ধ করেছিল।
 
=== হস্তশিল্প ===
[[চিত্র:Afghancarpet1.jpg|thumb|right|300px|ঐতিহ্যবাহী অষ্টভুজাকৃতি "বুখারা" ধাঁচের আফগান কার্পেট]]
[[তুর্কমেন]]উজবেকরা[[উজবেক]]রা কার্পেট বানিয়ে থাকে। বালুচীরা[[বালুচী]]রা [[জায়নামাজ]], পশমের কার্পেট, ইত্যাদি বানায়। উটের লোম ও তুলাও মাঝে মাঝে ব্যবহৃত হয়। বিয়ের কনের সাজপোষাকের সুন্দর সূচির কাজ দেখতে পাওয়া যায়।
 
=== খননশিল্প ===
১৯৬৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় উত্তর আফগানিস্তানে বড় আকারের প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস আহরণ শুরু হয়। ১৯৮০-র দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে বিপুল পরিমাণে গ্যাস রপ্তানি করা হত, তবে ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের পর তা থেমে যায়। একবিংশ শতকের প্রথম দশকে [[শেবেরগান]] শহরের কাছে অবস্থিত মূল গ্যাসক্ষেত্রগুলিতে আবার গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। আফগানিস্তান বিশ্বের উচ্চমানের নীলকান্তমণির অন্যতম সরবরাহকারী। এছাড়াও দেশটিতে অন্যান্য দামী পাথর যেমন পান্না, চুনি ইত্যাদি এবং খনিজ তামা ও লোহা পাওয়া যায়। একাধিক দশকব্যাপী যুদ্ধের কারণে আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদের আহরণ ও ব্যবহার অত্যন্ত সীমিত ছিল। বর্তমানে এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
 
২০০৬ সালে [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা]] (United States Geological Survey বা USGS) প্রাক্কলন করে যে উত্তর আফগানিস্তানে গড়ে ২৯০ শত কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত খনিজ তেল, ১৫.৭ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ৫৬ কোটি ব্যারেল প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রাপ্ত তরল আছে।<ref name="klett2006">{{cite techreport|last=Klett |first=T.R. |title=Assessment of Undiscovered Petroleum Resources of Northern Afghanistan, 2006 |url=http://pubs.usgs.gov/fs/2006/3031/pdf/FS-3031.pdf |publisher=USGS-Afghanistan Ministry of Mines & Industry Joint Oil & Gas Resource Assessment Team |accessdate=13 October 2011 |date=March 2006 |id=Fact Sheet 2006–3031|archiveurl=https://web.archive.org/web/20130727060903/http://pubs.usgs.gov/fs/2006/3031/pdf/FS-3031.pdf |archivedate=27 July 2013 }}</ref>
 
২০১১ সালে [[আফগানিস্তান সরকার]] গণচীনের জাতীয় পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের সাথে একটি খনিজ তেল অনুসন্ধান সংক্রান্ত ৭ শত কোটি ডলারের একটি চুক্তি সম্পাদন করে, যেখানে দেশটির উত্তরাংশে আমু দরিয়া নদীর পাড় ধরে তিনটি তেলক্ষেত্র স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://ph.news.yahoo.com/afghanistan-signs-7-bn-oil-deal-china-102107778.html |শিরোনাম=Afghanistan signs '$7 bn' oil deal with China |তারিখ=28 December 2011 |সংগ্রহের-তারিখ=29 December 2013|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20131230233953/http://ph.news.yahoo.com/afghanistan-signs-7-bn-oil-deal-china-102107778.html |আর্কাইভের-তারিখ=30 December 2013 }}</ref><!--deadurl=https://news.yahoo.com/afghanistan-signs-7-bn-oil-deal-china-102107384.html-->
 
আফগানিস্তানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে [[লিথিয়াম]] রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সংস্থা পেন্টাগনের একটি অভ্যন্তরীণ পত্রে বলা হয় যে আফগানিস্তান "লিথিয়ামের সৌদি আরবে" পরিণত হতে পারে।<ref name="risen2010">{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.nytimes.com/2010/06/14/world/asia/14minerals.html?hp |শিরোনাম=U.S. Identifies Vast Riches of Minerals in Afghanistan |সংবাদপত্র=The New York Times |প্রথমাংশ=James |শেষাংশ=Risen |তারিখ=17 June 2010 |সংগ্রহের-তারিখ=14 November 2010 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100617204149/http://www.nytimes.com/2010/06/14/world/asia/14minerals.html?hp |আর্কাইভের-তারিখ=17 June 2010 |অকার্যকর-ইউআরএল=no}}</ref>
২২১ নং লাইন:
এছাড়াও দেশটিতে তামা, সোনা, কয়লা, লোহার আকরিক এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ আছে। <ref name=peters2007 /><ref name="bgs">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.bgs.ac.uk/AfghanMinerals/docs/Gold_A4.pdf#search='gold%20and%20copper%20discovered%20in%20afghanistan' |বিন্যাস=PDF |শিরোনাম=Minerals in Afghanistan |প্রকাশক=[[British Geological Survey]] |সংগ্রহের-তারিখ=4 December 2010|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130726155518/http://www.bgs.ac.uk/AfghanMinerals/docs/Gold_A4.pdf |আর্কাইভের-তারিখ=26 July 2013 }}</ref><ref name="Afghanistan's Mineral Fortune">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.uvm.edu/ieds/node/568/ |শিরোনাম=Afghanistan's Mineral Fortune |প্রকাশক=Institute for Environmental Diplomacy and Security Report |বছর=2011 |সংগ্রহের-তারিখ=16 December 2013|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20131212153853/http://www.uvm.edu/ieds/node/568 |আর্কাইভের-তারিখ=12 December 2013 }}</ref> হেলমান্দ প্রদেশের খানাশিন এলাকার কার্বোনাটাইট শিলাতে ১ কোটি মেট্রিক টনের মত দুর্লভ ধাতু রয়েছে।<ref name="tucker2011">{{cite techreport|last=Tucker |first=Ronald D. |title=Rare Earth Element Mineralogy, Geochemistry, and Preliminary Resource Assessment of the Khanneshin Carbonatite Complex, Helmand Province, Afghanistan |url=http://pubs.usgs.gov/of/2011/1207/pdf/ofr2011-1207.pdf |publisher=USGS |accessdate=13 October 2011 |year=2011 |id=Open-File Report 2011–1207|archiveurl=https://web.archive.org/web/20130727062511/http://pubs.usgs.gov/of/2011/1207/pdf/ofr2011-1207.pdf |archivedate=27 July 2013 }}</ref>
 
২০০৭ সালে চীনের ধাতুগলন গোষ্ঠী নামক সংস্থাকে ৩ শত কোটি টাকার বিনিময়ে ৩০ বছরের জন্য আইনাক তামার খনিটি ভাড়া দেওয়া হয়।<ref>"[http://www.dailyfinance.com/2010/06/14/china-us-afghanistan-mineral-mining/ China, Not U.S., Likely to Benefit from Afghanistan's Mineral Riches]". ''Daily Finance''. 14 June 2010 {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20131231001630/http://www.dailyfinance.com/2010/06/14/china-us-afghanistan-mineral-mining/ |তারিখ=৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ }}</ref> এটি আফগানিস্তানের ইতিহাসে বৃহত্তম বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগ ও বেসরকারী ব্যবসা প্রকল্প।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=https://www.nytimes.com/2009/12/30/world/asia/30mine.html?pagewanted=all |শিরোনাম=China Willing to Spend Big on Afghan Commerce |কর্ম=The New York Times |তারিখ=29 December 2009 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110731145815/http://www.nytimes.com/2009/12/30/world/asia/30mine.html?pagewanted=all |আর্কাইভের-তারিখ=31 July 2011}}</ref> ভারতের রাষ্ট্র-পরিচালিত ইস্পাত প্রশাসন কেন্দ্রীয় আফগানিস্তানের হাজিগাক গিরিপথে অবস্থিত বিশাল লৌহ আকরিকের খনিটি খননকাজের অধিকার অর্জন করে।<ref>"[http://www.businessweek.com/news/2011-12-06/indian-group-wins-rights-to-mine-in-afghanistan-s-hajigak.html Indian Group Wins Rights to Mine in Afghanistan's Hajigak] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20131010060446/http://www.businessweek.com/news/2011-12-06/indian-group-wins-rights-to-mine-in-afghanistan-s-hajigak.html |তারিখ=২০১৩-১০-১০ }}". ''Businessweek''. 6 December 2011</ref> আফগানিস্তানের সরকারী কর্মকর্তারা অনুমান করেন যে দেশটির ৩০% অব্যবহৃত খনিজ সম্পদের মূল্য কমপক্ষে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।<ref name=bbcminerals /> একজন কর্মকর্তার মতে খনিজ সম্পদ আফগান অর্থনীতির মেরুদণ্ডে পরিণত হবে।<ref name="risen2010" />
 
=== উৎপাদন শিল্প ===
২৩৪ নং লাইন:
 
=== মুদ্রা ও ব্যাংকিং ===
আফগানিস্তানের মুদ্রার নাম আফগানি। ১০০ পুলে ১ আফগানি। আফগানির বিনিময় হার বহুবার ওঠা নামা করেছে। ১৯৮১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত মূদ্রাস্ফীতি আফগানির ক্রয়ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত করে দেয়, এবং তালেবান শাসনামলেও এই ধারা বজায় ছিল। যুদ্ধজনিত মুদ্রাস্ফীতির কারণে আফগানির মূল্য এত কমে যায় যে সরকার নতুন অধিক মূল্যের আফগানি আবার ইস্যু করেন। ২০০২ সালের শেষে এসে আফগানির মূল্য স্থিতিশীল হয় এবং ২০০৭ সালে ১ মার্কিন ডলারে প্রায় ৫০ নতুন আফগানি পাওয়া যেত।
 
আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৯৩৮ সালে স্থাপিত হয়। এটিতএটি দেশটির বৃহত্তম ব্যাংক। ১৯৭৫ সালে আফগানিস্তানের সমস্ত বেসরকারী ব্যাংকের জাতীয়করণ করা হয়। আফগানিস্তানে কোন স্টক মার্কেট বা অন্যান্য আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেই। সাধারণত টাকার "বাজারে" টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন হয়। অনেকেই টাকা হাওলাধার নিয়ে থাকেন, যেগুলোর কোন হিসাব রাখা হয় না।
 
== জনপরিসংখ্যান ==