আখেরী চাহার শোম্বা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎মূল ঘটনা: তথ্য সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
→‎আলেমগণের মত: তথ্য উন্নয়ন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৯ নং লাইন:
তবে ধর্মীয় উৎসগ্রন্থে এগুলোর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।<ref name="ইন"/>
 
== আলেমগণের মত ==
== তাৎপর্য ==
{{Empty section}}
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সফর বা রবিউল আউয়াল মাসের কত তারিখ থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কত তারিখে ইন্তিকাল করেন সে বিষয়ে হাদীস শরীফে কোনোরূপ উল্লেখ বা ইঙ্গিত নেই। অগণিত হাদীসে তাঁর অসুস্থতা, অসুস্থতা- কালীন অবস্থা, কর্ম, উপদেশ, তাঁর ইন্তিকাল ইত্যাদির ঘটনা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনো ভাবে কোনো দিন-তারিখ বলা হয় নি।
 
২য় হিজরী শতক থেকে আলিমগণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জীবনের ঘটনাবলি ঐতিহাসিক দিন-তারিখ সহকারে সাজাতে চেষ্টা করেন। তাঁর অসুস্থতার শুরু সম্পর্কে অনেক মত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে দ্বিতীয় হিজরী শতকের প্রখ্যাত তাবিয়ী ঐতিহাসিক ইবনু ইসহাক (১৫১ হি/৭৬৮ খৃ) বলেন:
 
اُبْتُدِئَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِشَكْوَاهُ الَّذِيْ قَبَضَهُ اللهُ فِيْهِ ... فِيْ لَيَالٍ بَقِيْنَ مِنْ صَفَرٍ، أَوْ فِيْ أَوَّلِ شَهْرِ رَبِيْعِ الأَوَّلِ.
‘‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে অসুস্থতায় ইন্তিকাল করেন, সে অসুস্থতার শুরু হয়েছিল সফর মাসের শেষে কয়েক রাত থাকতে, অথবা রবিউল আউয়াল মাসের শুরু থেকে।’’
 
কি বার থেকে তাঁর অসুস্থতার শুরু হয়েছিল, সে বিষয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন শনিবার, কেউ বলেছেন বুধবার এবং কেউ বলেছেন সোমবার তার অসুস্থতার শুরু হয়। কয়দিনের অসুস্থতার পরে তিনি ইন্তিকাল করেন, সে বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, ১০ দিন, কেউ বলেছেন, ১২ দিন, কেউ বলেছেন ১৩ দিন, কেউ বলেছেন, ১৪ দিন অসুস্থ থাকার পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তিকাল করেন।
 
পরবর্তী আলোচনা থেকে আমরা দেখতে পাব যে, তিনি কোন তারিখে ইন্তিকাল করেছিলেন, সে বিষয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন ১লা রবিউল আউয়াল, কেউ বলেছেন, ২রা রবিউল আউয়াল এবং কেউ বলেছেন, ১২ই রবিউল আউয়াল তিনি ইন্তিকাল করেন।
 
সর্বাবস্থায়, কেউ কোনোভাবে বলছেন না যে, অসুস্থতা শুরু হওয়ার পরে মাঝে কোনো দিন তিনি সুস্থ হয়েছিলেন। অসুস্থ অবস্থাতেই, ইন্তিকালের কয়েকদিন আগে তিনি গোসল করেছিলেন বলে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বুখারী সংকলিত হাদীসে আয়েশা (রা) বলেন:
 
إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ لَمَّا دَخَلَ بَيْتِي وَاشْتَدَّ بِهِ وَجَعُهُ قَالَ هَرِيقُوا عَلَيَّ مِنْ سَبْعِ قِرَبٍ ... لَعَلِّي أَعْهَدُ إِلَى النَّاسِ (لَعَلِّى أَسْتَرِيحُ فَأَعْهَدُ إِلَى النَّاسِ) ... ثُمَّ خَرَجَ إِلَى النَّاسِ ، فَصَلَّى لَهُمْ وَخَطَبَهُمْ
‘‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন আমার ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাঁর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার উপরে ৭ মশক পানি ঢাল...; যেন আমি আরাম বোধ করে লোকদের নির্দেশনা দিতে পারি। তখন আমরা এভাবে তাঁর দেহে পানি ঢাললাম...। এরপর তিনি মানুষদের কাছে বেরিয়ে যেয়ে তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন এবং তাদেরকে খুতবা প্রদান করলেন বা ওয়ায করলেন।’'
 
এখানে সুস্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর অসুস্থতার মধ্যেই অসুস্থতা ও জ্বরের প্রকোপ কমানোর জন্য এভাবে গোসল করেন, যেন কিছুটা আরাম বোধ করেন এবং মসজিদে যেয়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় নসীহত করতে পারেন।
 
এ গোসল করার ঘটনাটি কত তারিখে বা কী বারে ঘটেছিল তা হাদীসের কোনো বর্ণনায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় নি। তবে আল্লামা ইবনু হাজার আসকালানী সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের অন্যান্য হাদীসের সাথে এ হাদীসের সমন্বয় করে উল্লেখ করেছেন যে, এ গোসলের ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্তিকালের আগের বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ইন্তেকালের ৫ দিন আগে। ১২ই রবিউল আউয়াল ইন্তিকাল হলে তা ঘটেছিল ৮ই রবিউল আউয়াল।
 
উপরের আলোচনা থেকে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, সফর মাসের শেষ বুধবারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সুস্থ হওয়া, গোসল করা এবং এজন্য সাহাবীগণের আনন্দিত হওয়া ও দান-সাদকা করার এ সকল কাহিনীর কোনোরূপ ভিত্তি নেই। আল্লাহই ভাল জানেন।
 
যেহেতু মূল ঘটনাটিই প্রমাণিত নয়, সেহেতু সে ঘটনা উদযাপন করা বা পালন করার প্রশ্ন ওঠে না। এরপরেও আমাদের বুঝতে হবে যে, কোনো আনন্দের বা দুঃখের ঘটনায় আনন্দিত বা দুঃখিত হওয়া এক কথা, আর প্রতি বছর সে দিনে আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশ করা বা ‘আনন্দ দিবস’ বা ‘শোক দিবস’ উদযাপন করা সম্পূর্ণ অন্য কথা। উভয়ের মধ্যে আসমান-যমীনের পার্থক্য।
 
রাসূলুল্লাহর (ﷺ) জীবনে অনেক আনন্দের দিন বা মুহূর্ত এসেছে, যখন তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন, শুকরিয়া জ্ঞাপনের জন্য আল্লাহর দরবারে সাজদা করেছেন। কোনো কোনো ঘটনায় তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণও আনন্দিত হয়েছেন ও বিভিন্নভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু পরের বছর বা পরবর্তী কোনো সময়ে সে দিন বা মুহূর্তকে তারা বাৎসরিক ‘আনন্দ দিবস’ হিসেবে উদযাপন করেন নি। এজন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নির্দেশ বা সাহাবীদের কর্ম ছাড়া এরূপ কোনো দিন বা মুহুর্ত পালন করা বা এগুলোতে বিশেষ ইবাদত বিশেষ সাওয়াবের কারণ বলে মনে করার সুযোগ নেই।
 
== পালন বিধি ==