টেলিভিশন (চলচ্চিত্র): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Moheen (আলোচনা | অবদান)
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩৫ নং লাইন:
== কাহিনী সংক্ষেপ ==
 
সিনেমাটি শুরু হবে একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। 'বাংলাভিশন' এর এক মহিলা সাংবাদিক একজন গ্রামের চেয়ারম্যানকে তাঁরতার ধর্মীয় বিধিনিষেধ নিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে। চেয়ারম্যান যতটুকু পারেন, উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমেই চেয়ারম্যানের নানা কীর্তি প্রকাশিত হয়। তিনি নাকি তাঁরতার গ্রামের মানুষদের টিভি দেখতে দেন না, মোবাইল ব্যবহার করতে দেন না, জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে দেন না। এ সমস্তের পিছনে তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ 'কোরআন' এর যুক্তি দেখান। তাই তাঁরতার গ্রামে পত্রিকা পড়া হলেও সেখানে প্রকাশিত ছবিগুলো ঢেকে রাখা হয়। এতে তাঁরতার ঈমান অক্ষুণ্ন থাকে।
 
চেয়ারম্যানের ছেলে সোলাইমানের সাথে মালেশিয়া প্রবাসীর মেয়ে কোহিনূরের প্রেম। আবার সোলাইমানের তত্ত্বাবধানে চাকরি করা মজনু কোহিনূরকে পছন্দ করে; কিন্তু তাকে এখনো মনের কথাটা বলতে পারেনি। পরবর্তীতে সে বললেও কোহিনূর তাকে প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু সে হাল ছাড়ে না। সে নানাভাবে কোহিনূরের সামনে হাজির হয়, বারবার তার মনের কথা বলার চেষ্টা করে। আবার এই মজনুর বুদ্ধির জোরেই সোলাইমান হাতে একটা মোবাইল পায় এবং সারা গ্রামের যুবকরা মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি পায়। সিনেমাতে এই 'মজনু' চরিত্রটি একদিক থেকে মনিবের প্রতি অনুগত থাকলেও কোন কোন ক্ষেত্রে নিজের সুবিধার জন্য 'ভোল' পাল্টাতেও দ্বিধা করত না। একারণে তাকে খানিকটা 'রহস্যময়' বলেই মনে হয়।
৪৩ নং লাইন:
সোলাইমান বিচ্ছিন্ন হবার দুঃখে মদ ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। কাজেই সে সারাক্ষণ বিষণ্ন হয়ে থাকত। ঠিক এই সময়েই মজনু কৌশলের সাথে জানান দেয় যে সে কোহিনূরকেই ভালবাসে। কিন্তু সোলাইমান তা বুঝতে পারে না। মজনু তাকে পরামর্শ দেয় যাতে সে আরেকটা মেয়ে ধরে। কারণ জীবনে কত 'কোহিনূর' যাবে আসবে! কিন্তু সোলাইমান তা মানতে পারে না। তাই পরে মজনু নিজ উদ্যোগেই যায় কোহিনূরের কাছে যাতে সে সব ভুলে গিয়ে আবার ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু কোহিনূর এবার শর্ত দেয় যে তাকে বিয়ে করতে হলে সোলাইমানকে তার বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। গ্রামে টেলিভিশন আনতে হবে। তাদের বিয়েতে টেলিভিশন আনতে হবে। গ্রামের সবাই দেখবে। তবেই তার সুখ!
 
সোলাইমান প্রাথমিকভাবে তার প্রতিবাদ করলেও পরে ঠিকই বাবার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। গ্রামের কিছু ছেলেপিলে নিয়ে সে মাইকিং করে বেড়ায় এই বলে যে সে তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে কোহিনূরের সাথে এবং সেখানে একটি টেলিভিশন আনা হবে। তাতে যেন সব গ্রামবাসী যোগ দেয়। এখানে তার বাবা প্রতিবাদ করতে আসলে তাঁরতার এক সহকারীকে সোলাইমানের নির্দেশে ছেলেপিলেরা মারধর করে। এতে তার বাবা মনে বেশ কষ্ট পান এবং রাত্রিবেলা কান্নাকাটি করেন। সোলাইমান পরে নিজের ভুল বুঝতে পারে। তাই সে কোহিনূরের কথানুযায়ী চেয়ারম্যানের পা ধরে মাফ চায়। বাবা ছেলেকে ক্ষমা করে দেন।
 
আবার চেয়ারম্যান ঠিক করেন যে এইবার তিনি হজ্বে যাবেন। আগে তিনি চাইলেও যেতে পারেননি কারণ তাঁরতার প্লেনে চড়তে বেশ ভয় করে। কিন্তু এবার তিনি বুঝতে পেরেছেন যে এইটা আসলে 'শয়তান' এর চাল। কাজেই তিনি এই ভয়কে জয় করে হজ্জে যাবেন। কিন্তু এর জন্য তাঁকেতাকে ছবি তুলতে হবে। তাতে তিনি কোনভাবেই রাজি না। কারণ তিনি সারাজীবন ছবি তুললেন নি, দেখেনও নি। এমনকি আয়নায়ে নিজের মুখও না। সেখানে তিনি কিনা ক্যামেরার সামনে এসে এভাবে ছবি তুলবেন! ইসলামিক যে ধ্যানধারণা এতদিন তিনি পুষে রেখেছিলেন, সেটাই কিনা তাঁকেতাকে শেষ পর্যন্ত ভাঙতে হল ইসলামেরই একটি মহান কাজে যোগ দেবার জন্য। কোহিনূরের সাথে সোলাইমানের বিয়ে ঠিক করে তিনি একলা রওয়ানা দেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে তিনি প্লেনে করে যাবেন।
 
ঢাকায় আসার পর চেয়ারম্যান দেখতে পান এখানকার মানুষ অনেক উন্নত কিংবা 'অশ্লীল'! যেসব ছবি তিনি এতদিন পত্রিকাতে ঢেকে রাখতেন, সেই ছবিগুলোই ঢাকা শহরে আনাচে কানাচে ছড়ানো। তিনি খানিকটা অবাক কিংবা হতভম্ব হয়ে এসব দেখতে থাকেন। এয়ারপোর্টে আসবার পর তিনি দেখেন যে তাকে ঠকানো হয়েছে। টাকা পয়সা নিয়ে এজেন্ট পালিয়ে গেছে। তাঁরতার মতই অনেক বৃদ্ধলোক এয়ারপোর্টে বসে কান্নাকাটি করতে থাকে। এখানে চেয়ারম্যানের কিছুই করার থাকে না। এখন তিনি যদি গ্রামে চলে যান, তবে তাঁরতার অবস্থা দেখে লোকে নানা কথা বলবে। সেজন্য তিনি অত্যন্ত খারাপ মনে ঢাকার এক হোটেলে এসে উঠেন। খাওয়াদাওয়া পুরোপুরি ছেড়ে দেন। ঘরের বাইরে যান না।
 
এভাবে কিছুদিন যাবার পর হঠাৎ দিনের বেলা তিনি শুনতে পান "লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক" ধ্বনি। সেই সুমধুর ধ্বনি যেটা সুদূর মক্কাশরিফে বলা হচ্ছে। তিনি অত্যন্ত আগ্রহ ভরে বাইরে বের হয়ে আসেন এবং দেখতে পান পাশের এক রুমে টিভি চালানো আছে এবং সেখানেই হজ্ব দেখানো হচ্ছে। তিনি কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। এরপর নিজের ঘরে ঢুকে হোটেল বয়কে দিয়ে টিভিটা চালু করান এবং "লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক" শুনতে শুনতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরতার ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটতে চলেছে। তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন। যে যন্ত্র এতদিন তিনি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন, সেটাই তাঁরতার মনে শান্তি এনে দিচ্ছে। কি অদ্ভুত জীবন! তিনি কাঁদছেন ... কেঁদেই চলেছেন।
 
== শ্রেষ্ঠাংশে ==