রাজবাড়ী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাবুজ্জামান রাজবাড়ী শহর কে রাজবাড়ী শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১০৪ নং লাইন:
 
== নামকরণের ইতিহাস ==
রাজবাড়ী যে কোন রাজার বাড়ীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে কখন থেকে ও কোন রাজার নামানুসারে রাজবাড়ী নামটি এসেছে তার সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলার রেল ভ্রমণ পুস্তকের (এল.এন. মিশ্র প্রকাশিত ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্যালকাটা ১৯৩৫) একশ নয় পৃষ্ঠায় রাজবাড়ী সম্বন্ধে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে নবাব [[শায়েস্তা খাঁ|শায়েস্তা খান]] ঢাকায় সুবাদার নিযুক্ত হয়ে আসেন। এ সময় এ অঞ্চলে পর্তুগীজ জলদস্যুদের দমনের জন্যে তিনি সংগ্রাম শাহকে নাওয়ারা প্রধান করে পাঠান। তিনি বানিবহতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন এবং লালগোলা নামক স্থানে দুর্গ নির্মাণ করেন। এ লালগোলা দুর্গই রাজবাড়ী শহরের কয়েক কিলোমিটার উত্তরে বর্তমানে লালগোলা গ্রাম নামে পরিচিত। সংগ্রাম শাহ্ ও তাঁরতার পরিবার পরবর্তীকালে বানিবহের নাওয়ারা চৌধুরী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
 
এল.এন. মিশ্র উক্ত পুস্তকে উল্লেখ করেন যে, রাজা সংগ্রাম শাহের রাজদরবার বা রাজকাচারী ও প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অফিস বর্তমান রাজবাড়ী এলাকাকে কাগজে কলমে রাজবাড়ী লিখতেন (লোকমুখে প্রচলিত)। ঐ পুস্তকের শেষের পাতায় রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে রাজবাড়ী নামটি লিখিত পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশনটি ১৮৯০ সালে স্থাপিত হয়। ঐতিহাসিক আনন্দনাথ রায় ফরিদপুরের ইতিহাস পুস্তকে বানিবহের বর্ণনায় লিখেছেন - নাওয়ারা চৌধুরীগণ পাঁচথুপি থেকে প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে বানিবহে এসে বসবাস শুরু করেন। বানিবহ তখন ছিল জনাকীর্ণ স্থান। বিদ্যাবাগিশ পাড়া, আচার্য পাড়া, ভট্টাচার্য পাড়া, শেনহাটিপাড়া, বসুপাড়া, বেনেপাড়া, নুনেপাড়া নিয়ে ছিল বানিবহ এলাকা। নাওয়ারা চৌধুরীগণের বাড়ি স্বদেশীগণের নিকট রাজবাড়ী নামে অভিহিত ছিল। মতান্তরে রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে রাজবাড়ীর নামকরণ হয়। রাজা সূর্য কুমারের পিতামহ প্রভুরাম নবাব [[সিরাজউদ্দৌলা|সিরাজ-উদ-দৌলার]] রাজকর্মচারী থাকাকালীন কোন কারণে ইংরেজদের বিরাগভাজন হলে [[পলাশীর যুদ্ধ|পলাশীর যুদ্ধের]] পর লক্ষীকোলে এসে আত্মগোপন করেন। পরে তাঁরতার পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এ অঞ্চলে জমিদারী গড়ে তোলেন। তাঁরইতারই পুত্র রাজা সুর্য কুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ করা হয় ১৮৯০ সালে। বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায় যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে করার দাবি তোলা হলে বানিবহের জমিদারগণ প্রবল আপত্তি তোলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে যে স্থানটিতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন অবস্থিত উক্ত জমির মালিকানা ছিল বানিবহের জমিদারগণের। তাঁদেরতাদের প্রতিবাদের কারণেই স্টেশনের নাম রাজবাড়ীই থেকে যায়। এ সকল বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয় যে, রাজবাড়ী নামটি বহু পূর্ব থেকেই প্রচলিত ছিল। এলাকার নাওয়ারা প্রধান, জমিদার, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিগণ রাজা বলে অভিহিত হতেন। তবে রাজা সূর্য কুমার ও তাঁরতার পূর্ব পুরুষগণের লক্ষীকোলের বাড়ীটি লোকমুখে রাজার বাড়ি বলে সমধিক পরিচিত ছিল। এভাবেই আজকের রাজবাড়ী।
 
== পৌর প্রশাসন ==
১৩৪ নং লাইন:
[[চিত্র:ঘোষপট্টি, রাজবাড়ী .jpg|thumb|ঘোষপট্টি, রাজবাড়ী]]
 
রাজবাড়ী শহরের বাজার (বড়বাজার) শহরের উত্তর অংশে গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে একই ধরণেরধরনের দোকানগুলো গুচ্ছ গুচ্ছ আকারে গড়ে উঠেছে।
 
=== ১। ঝালাইপট্টি ===
১৫৬ নং লাইন:
__INDEX__
== মুক্তিযুদ্ধে রাজবাড়ী ==
১৮ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রাজবাড়ী মুক্ত দিবস। রাজবাড়ীতে পাকিস্তানিদের দোসর অবাঙালি বিহারিরা ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে অতিমাত্রায় তৎপর হয়ে ওঠে। তারা তখনও বুঝতে পারেনি পতন অনিবার্য। তারা সমস্ত শহর দখলে রাখে। ৯ ডিসেম্বর শহরের লক্ষীকোল এলাকায় [[বিহারি জাতি|বিহারিদের]] সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়। বিহারিদের গুলিতে রফিক, শফিক ও সাদিক শহীদ হন। বিহারিরা ১৩ ডিসেম্বর শহরের বিনোদপুর বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রহরীকে হত্যা করে। ১৬ ডিসেম্বর প্রায় সারা দেশে পাক বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনো অবাঙালি বিহারিদের আয়ত্তে থাকে। তারা ঘোষনাঘোষণা দেয় সারাদেশ বাংলাদেশ হলেও রাজবাড়ী পাকিস্তান হয়ে থাকবে। এ সময় জেলার সকল অঞ্চল থেকে মুক্তি বাহিনীর বিভিন্ন দল রাজবাড়ীতে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হতে থাকে। ইতোমধ্যে শহিদুন্নবী আলম, ইলিয়াস মিয়া, সিরাজ আহম্মেদ, আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, রফিকুল ইসলাম তাদের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিকে ঘিরে রাখে। এদের সাথে জেলার পাংশা থেকে জিল্লুল হাকিম, আব্দুল মতিন, নাসিরুল হক সাবু, আব্দুল মালেক, সাচ্চু, আব্দুর রব তাদের দল নিয়ে যুদ্ধে যোগদান করেন। বিহারিরা শহরের রেল লাইনের উত্তর পাশে অবস্থান নেয়। তারা রেলওয়ে লোকোসেড থেকে ড্রাই আইস ফ্যক্টরী পর্যন্ত রেলের মালগাড়ী দিয়ে ব্যূহ তৈরী করে। মুক্তিবাহিনী শহরের দক্ষিণ দিক থেকে গুলি চালাতে থাকে। তবে মালগাড়ী থাকার কারণে কোন ফল হয় না। সে সময় গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান আবি মাগুরার শ্রীপুর থেকে মর্টার আনে। ওই মর্টার দিয়ে গুলি ছুড়লে বিহারীরা পিছু হটে। পরাজয় অনিবার্য মনে করে বিহারীরা আত্মসমর্পণ করার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর অভিমুখে যেতে থাকে। তবে তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কয়েক হাজার বিহারী নিহত হয়। ওই যুদ্ধে দিয়ানত আলী শহীদ হন এবং ইলিয়াস হোসেন হন গুরুতর আহত। যে কারনে ১৮ই ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় রাজবাড়ী।