মুঘল সম্রাট: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Safi Mahfouz02 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৪১ নং লাইন:
১৬৫৮ সালে শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারাশিকো রাজ শাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতায় আরোহন করে। শাহজাহানের অপর পুত্র আওরঙ্গজেব কিছু ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর সহায়তায় দিল্লির সিংহাসন দখল করেন। ১৬৫৯ সালে আওরঙ্গজেব তার ভাইকে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।<ref name="Berndl"/> যদিও শাহজাহান তখন সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন, তথাপি আওরঙ্গজেব তাকে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে রাজকার্য পরিচালনা করার অযোগ্য ঘোষণা করে তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন।
 
আরঙ্গজেব এর আমলে মুঘল সাম্রাজ্য রাজনৈতিকভাবে সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী থাকলেও ধর্মীয় বিভেদ মুঘল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব কে অনিশ্চিত করে তোলে।<ref name="Berndl"/> আরঙ্গজেব দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব অঞ্চলেই মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু ১৭০৭ সালে তাঁরতার মৃত্যুর পর সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। <ref name="Berndl"/> আরঙ্গজেব তার পূর্বপুরুষের রাজ্য মধ্য এশিয়ার তুরান জয় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাতে সফল হননি। আওরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্য বিজয়ের অভিযানে জয়লাভ করলেও যুদ্ধে প্রচুর লোকবল ও সম্পদ ক্ষয় হয়।<ref name="D'souza pages 3-30">D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from ''Social Scientist'', Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 page 21.</ref> আরঙ্গজেব এর জন্য আরেকটি সমস্যা ছিল যে তার সেনাবাহিনীর ভিত্তি ছিল মূলত উত্তর ভারতের অভিজাত শ্রেণী তারাই অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ ও অশ্বারোহী বাহিনী সরবরাহ করত। অটোমান সাম্রাজ্যের মত কোন [[জেনিসারি বাহিনী]] মুঘলদের ছিল না।<ref>D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from ''Social Scientist'', Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 page 22.</ref> দীর্ঘ দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধ আরঙ্গজেব এর অন্যান্য সফলতা কে অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছিল। ১৭ শতকের শেষে অভিজাত শ্রেণী মুঘল সম্রাটদের অভিযানে সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহ করতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে। এর কারণ হলো অভিযানের সফলতার পর ভূসম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পত্তি প্রাপ্তির যে সম্ভাবনা তা ধীরে ধীরে কমে আসছিল।<ref>D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from ''Social Scientist'', Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 pages 22-23.</ref> আওরঙ্গজেবের পুত্র শাহ আলম তার পিতার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পরিহার করে প্রশাসনে একটি সংস্কার আনতে সচেষ্ট হন। ১৭১৯ সালে তাঁরতার মৃত্যুর পর সমগ্র মুঘল সাম্রাজ্য এক বিশৃংখল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। পরপর চারজন সম্রাট সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।<ref name="Berndl"/>
 
সম্রাট [[মোহাম্মদ শাহ]] এর শাসন আমলে মুঘল সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন শুরু হয়। মধ্য ভারতের একটি বিরাট অংশ মুঘলদের হাতছাড়া হয়ে মারাঠাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। একটি এলাকার সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য মুঘলরা সবসময় একটি কৌশল অবলম্বন করতো। তারা এলাকার একটি দুর্গ দখল করতো এবং সেটি কে কেন্দ্র রূপে ব্যবহার করে আশেপাশের শত্রু সেনাদের প্রতিহত করত। মুঘলরা খোলা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মোকাবেলা করে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে বেশি পারদর্শী ছিল। এই কৌশলটি ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল।<ref name="D'souza pages 3-30"/> অপরদিকে হিন্দু মারাঠা বীরেরা সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতো না। বরং তারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে এম্বুস এবং ছোটখাটো আক্রমণের মাধ্যমে মুঘল বাহিনীর রসদ সরবরাহ কে পর্যুদস্ত করতো।<ref name="D'souza pages 3-30"/> মারাঠাদের উপযুক্ত গোলন্দাজ বাহিনী এবং অশ্বারোহী সেনাবাহিনী না থাকায় তারা সরাসরি মুঘলদের দুর্গ আক্রমণ করত না। মুঘলদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ সরবরাহে বাধা প্রদান ও তা ধ্বংস করে দুর্গে অবস্থানরত মুঘল সেনাদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করতো। <ref name="D'souza pages 3-30"/> মুঘল সেনাপতিরা মারাঠাদের এই যুদ্ধ কৌশলের বিরুদ্ধে পাল্টা কোন কৌশল গ্রহণ না করায় ক্রমেই মধ্য ভারতের অনেক এলাকা তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। পারস্য সম্রাট [[নাদির শাহ|সম্রাট নাদির শাহের]] ভারত অভিযানের পর মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি এবং গৌরব অনেকটাই কমে আসে।<ref name="Berndl"/> অনেক সামন্ত শাসকরা স্বাধীনভাবে তাদের রাজ্য শাসন করতে থাকে। যদিও শুধু মুসলিম অভিযাত্রায় নয়, মারাঠা হিন্দু এবং শিখ নেতৃবৃন্দ মুঘল সম্রাটকে ভারতের আনুষ্ঠানিক সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে মেনে চলত। <ref name="MSA2">{{বই উদ্ধৃতি
৫৩ নং লাইন:
}}</ref>
 
পরবর্তী দশকে আফগান, শিখ এবং মারাঠারা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মুঘল সম্রাট [[দ্বিতীয় শাহ আলম]] সাম্রাজ্যের অখন্ডতাঅখণ্ডতা রক্ষা করতে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাইরের শক্তির দ্বারস্থ হতে হয়। ১৭৮৪ সালে মারাঠারা দিল্লীর সালতানাতের পরিরক্ষাকারি হিসাবে ঘোষিত হয়। দ্বিতীয় অ্যাংলো মারাঠা যুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বজায় থাকে। এরপরে [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] দিল্লির মুঘল বংশের পরিরক্ষাকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়।<ref name="MSA2"/> তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রাক্তন মুঘল সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো। ১৮৫৭-৫৮ সালের সিপাহী বিপ্লব ব্যর্থ হলে, ব্রিটিশ সরকার শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে সিংহাসনচ্যুত করে এবং রেঙ্গুনে নির্বাসিত করে। সেই সাথে বিলুপ্ত হয় মুঘল সাম্রাজ্যের।<ref name="Berndl"/>
 
==মুঘল সম্রাটদের তালিকা==