কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৮ নং লাইন:
| height = ১৪ মিটার (৪৬ ফুট)
}}
'''কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার''' ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের [[ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনের]] স্মৃতিসৌধ। এটি বাংলাদেশের রাজধানী [[ঢাকা|ঢাকার]] কেন্দ্রস্থলে [[ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ|ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের]] বহিপ্রাঙ্গনে অবস্থিত। প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে এখানে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়ে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। এটি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অন্যতম পর্যটন বিন্দু।
 
== ইতিহাস ==
[[চিত্র:First Shaheed Minar 1952.jpg|thumb|150px|[[প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ|প্রথম শহীদ মিনার]] যেটি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল কিন্তু পাকিস্তান পুলিশ ও পাকস্তানী সেনাবাহিনী সেটা ভেঙে ফেলে।]] প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছিল অতিদ্রুত এবং নিতান্ত অপরিকল্পিতভাবে। [[ঢাকা মেডিকেল কলেজ|ঢাকা মেডিকেল কলেজের]] ছাত্ররা ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু করে রাত্রির মধ্যে তা’ সম্পন্ন করে। শহীদ মিনারের খবর কাগজে পাঠানো হয় ঐ দিনই। ''শহীদ বীরের স্মৃতিতে'' - এই শিরোনামে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ছাপা হয় শহীদ মিনারের খবর।<ref name="bpedia">''[http://www.bpedia.org/S_0264.php শহীদ মিনার]'',বাংলাপিডিয়া।</ref> <!-- <ref name="Rafiq">{{"Rafiq|1979|}}</ref> -->
 
মিনারটি তৈরি হয় মেডিকেলের ছাত্র হোস্টেলের (ব্যারাক) বার নম্বর শেডের পূর্ব প্রান্তে। কোণাকুণিভাবে হোস্টেলের মধ্যবর্তী রাস্তার গা-ঘেঁষে। উদ্দেশ্য বাইরের রাস্তা থেকে যেন সহজেই চোখে পড়ে এবং যে কোনো শেড থেক বেরিয়ে এসে ভেতরের লম্বা টানা রাস্তাতে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে। শহীদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উচ্চ ও ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকিতে ছিলেন জিএস শরফুদ্দিন (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন নামে পরিচিত), ডিজাইন করেছিলেন বদরুল আলম; সাথে ছিলেন সাঈদ হায়দার। তাদের সহযোগিতা করেন দুইজন রাজমিস্ত্রী। মেডিকেল কলেজের সম্প্রসারণের জন্য জমিয়ে রাখা ইট, বালি এবং পুরান ঢাকার [[পিয়ারু সর্দার|পিয়ারু সর্দারের]] গুদাম থেকে সিমেন্ট আনা হয়। ভোর হবার পর একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় মিনারটি।<!-- <ref name="Rafiq"/> --> ঐ দিনই অর্থাৎ [[ফেব্রুয়ারি ২৪|২৪ ফেব্রুয়ারি]] সকালে, [[ফেব্রুয়ারি ২২|২২ ফেব্রুয়ারির]] [[শফিউর রহমান|শহীদ শফিউরের]] পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন।<!-- <ref name="Islam"/> --> [[ফেব্রুয়ারি ২৬|২৬ ফেব্রুয়ারি]] সকালে দশটার দিকে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন [[দৈনিক আজাদ|আজাদ]] সম্পাদক [[আবুল কালাম শামসুদ্দিন]]।<!-- <ref name="Rafiq"/> --> উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি [[পুলিশ]] ও সেনাবাহিনী মেডিকেলের ছাত্র হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে।<!-- <ref name="Rafiq"/> --> এরপর [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজেও]] একটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়<!-- <ref name="Islam"/> -->, এটিও একসময় সরকারের নির্দেশে ভেঙ্গে ফেলা হয়।<ref name="bpedia"/>
 
অবশেষে, বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেবার পরে [[১৯৫৭]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর নকশা করেছিলেন ভাস্কর হামিদুজ্জামন। কিন্তু ১৯৫৮তে ফিল্ড মার্শাল [[আইয়ুব খান]] পাকিস্তানে সামরিক আইন জারীর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে লেফটিন্যাণ্ট জেনারেল আযম খানের আমলে এর নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করা হয়। [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য]] অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি এর নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করে। মূল নকশা ছেঁটে-কেটে দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। মূল নকশার ফোয়ারা ও [[নভেরা আহমেদ]] এর ম্যুরাল ইত্যাদি বাদ পড়ে। নির্মাণ কাজ শেষ হয় [[১৯৬৩]] খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের শুরুতে। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ ব্যক্তিত্ব [[আবুল বরকত|আবুল বরকতের]] মাতা হাসিনা বেগম কর্তৃক নতুন শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়। [<ref name="bpedia"/><!-- <ref name="Islam"/> -->
 
=== ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ===
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[আবু হোসেন সরকার|আবু হোসেন সরকারের]] মুখ্যমন্ত্রীত্বের আমলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বর্তমান স্থান নির্বাচন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। তৎকালীন পূর্ত সচিব (মন্ত্রী) জনাব আবদুস সালাম খান মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে 'শহীদ মিনারের' ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য চূড়ান্তভাবে একটি স্থান নির্বাচন করেন।<ref name="bpedia"/><ref name=Ittefaq>"দৈনিক ইত্তেফাক", ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬, শেষের পাতা।</ref>
 
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি তারিখে জনৈক মন্ত্রীর হাতে 'শহীদ মিনারের' ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা থাকলেও তাতে উপস্থিত জনতা প্রবল আপত্তি জানায় এবং ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ রিক্সাচালক আওয়ালের ৬ বছরের মেয়ে বসিরণকে দিয়ে এই স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।<ref name=tt>"বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, রফিকুল ইসলাম, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৬, পাতা ৫১, {{আইএসবিএন|984-494-028-1}}।"</ref>
 
== স্থাপত্য নকশা ==
শেরেবাংলা [[এ.কে. ফজলুল হক]] এবং [[আওয়ামী লীগ|আওয়ামী লীগের]] উদ্যোগে [[যুক্তফ্রন্ট সরকার]] কর্তৃক ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র স্বতঃস্ফূর্তভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হয়।<ref>ইসলাম, সৈয়দ মঞ্জুরুল (১৯৯৪)। একুশে উপর প্রবন্ধ: ভাষা আন্দোলন ১৯৫২। ঢাকা, বাংলা একাডেমি। {{আইএসবিএন|984-07-2968-3}}।</ref> এর ফলেই শহীদ মিনারের নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা সহজতর হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী [[হামিদুর রহমান (চিত্রশিল্পী)|হামিদুর রহমান]] মহান [[ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনের]] স্মৃতিবিজড়িত শহীদ মিনারের স্থপতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Picture BD. Retrieved 12 November 2010. |ইউআরএল=http://www.picturebd.com/shaheed_minar.htm |সংগ্রহের-তারিখ=৩ ডিসেম্বর ২০১২ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130426114338/http://www.picturebd.com/shaheed_minar.htm |আর্কাইভের-তারিখ=২৬ এপ্রিল ২০১৩ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> তারই রূপকল্পনায় ছিল স্নেহময়ী আনত মস্তক মাতার প্রতীক হিসেবে মধ্যস্থলে সুউচ্চ কাঠামো, এবং দুই পাশে সন্তানের প্রতীক স্বরূপ হ্রস্বতর দুটি করে কাঠামো। সামনে বাঁধানো চত্বর। পেছনভাবে দেয়ালচিত্র। সম্মুখ চত্বরে ভাস্কর নভেরা আহমেদের দুটি ম্যুরাল স্থাপনের পরিকল্পনাও ছিল। এছাড়া ছিল বেদনাঘন শহীদ দিবসের প্রতীক হিসেবে একটি ফোয়ারা স্থাপনের পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা মফিক ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ কাজ শুরু হয়। এ নকশায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলের সম্মুখভাগের বিস্তৃত এলাকা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীকালে দ্রুত কাজ সমাপ্তির উদ্দেশ্যে মূল নকশার সরলীকরণ করা হয়। <ref name="bpedia"/>
 
=== কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা ও মর্যাদা ===