আধুনিকতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১২ নং লাইন:
 
=== শুরুঃ ঊনিশ শতক ===
এক সমালোচকের মতে, শিল্প বিপ্লব এবং বুর্জোয়া মূল্যবোধের প্রভাবের বিরুদ্ধে রোমান্টিকতাবাদের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে আধুনিকতাবাদের সূচনা হয়। "গ্রেফ বলেন, আধুনিকতাবাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর বুর্জোয়া সমাজকাঠামো এবং বিশ্বের প্রতি এর দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা [...] আধুনিকতাবাদী রোমান্টিকতাবাদের মশাল হাতে ছিল।" ঊনিশ শতকের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের একজন, চিত্রকলায় আলো, রঙ ও পরিপার্শ্বের ব্যবহারে নিরীক্ষকদের অগ্রদূত জেএমডব্লিউ টার্নার (1775-1851) রোমান্টিক আন্দোলনের সদস্য ছিলেন। তিনি "ফরাসী প্রতিচ্ছায়াবাদী ও তাই আধুনিকতাবাদী হিসাবে প্রত্যাশা করতেন প্রতিনিধিত্বের প্রচলিত নিয়মগুলো ভেঙে ফেলতে", যদিও তিনি বিশ্বাস করতেন তাঁরতার কাজের সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, পৌরাণিক, সাহিত্যিক ও অন্যান্য বর্ণনামূলক বিষয়বস্তু প্রকাশ করা উচিৎ।
 
ইংরেজ কবি এবং চিত্রশিল্পীরা তাদের "অনুপ্রেরণা ছাড়া কারিগরি দক্ষতা বিরোধী" মনোভাব থেকে প্রিটোফিলাইট ব্রাদারহুড গঠন করে ১৮৫০ সাল থেকে ভিক্টোরিয়ান ইংল্যান্ডে শিল্পের প্রভাবশালী হয়ে উঠার প্রবণতার বিরোধিতা করেন। তারা শিল্প সমালোচক জন রেসকিন (১৮১৯-১৯০০) দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন, যিনি ব্রিটেনের দ্রুত বর্ধমান শিল্পকেন্দ্রগুলিতে শহুরে শ্রমজীবী মানুষের জীবন উন্নত করার ক্ষেত্রে শিল্পের ভূমিকা সম্পর্কে দৃঢ় অনুভূতি ধারণ করতেন। শিল্প সমালোচক ক্লিমেন্ট গ্রিনবার্গ প্রিটোফিলাইট ব্রাদারহুডকে প্রাক-আধুনিকতাবাদী বলে বর্ননা করেনঃ "সেখানে লোকদের মধ্যে প্রিটোফিলাইট ব্রাদারহুড ছিল প্রাক-আধুনিকবাদী(তাদেরও আগে জার্মান নাজারিনরা ছিল প্রাক-প্রাক-আধুনিকবাদী)। র‍্যাফেলাইটরা মনেটের (১৮৩২-১৮৮৩) পূর্বাভাস দেয়, যার মাধ্যমে আধুনিকতাবাদী চিত্রকলা শুরু হয়। তারা সেই সময়ে প্রচলিত বাস্তববাদী চিত্রকলা যথেষ্ট সত্য নয় বলে মনে করে এর উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। দার্শনিক সেরেন কোয়ের্কেগার্ড (১৮১৩-১৮৫৫) এবং ফ্রেডরিখ নিৎশে (১৮৪৪-১৯০০) যুক্তিবাদের বিরোধিতা করেন। এদের দুজনেরই অস্তিত্ববাদের ধারণার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল।
১৮ নং লাইন:
যাইহোক, শিল্প বিপ্লব অব্যাহত থাকল। এর প্রভাবশালী উদ্ভাবনের মধ্যে রয়েছে বাষ্পচালিত শিল্পায়ন এবং বিশেষ করে ১৮৩০ এর দশক থেকে ব্রিটেনে রেলওয়ের উন্নয়ন, এবং পরবর্তীতে পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং স্থাপত্যের অগ্রগতি এর সাথে যুক্ত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর একটি প্রকৌশল কৃতিত্ব ছিল ১৮৫১ সালে দ্য গ্রেট এক্সিবিশনের জন্য নির্মিত বিশাল ঢালাই লোহা ও প্লেট গ্লাসের তৈরি প্রদর্শনী হল ক্রিস্টাল প্যালেস। প্যাডিংটন স্টেশন (১৮৫৪) এবং কিং অফ ক্রস স্টেশনসহ (১৮৫২) লন্ডনের প্রধান রেলওয়ে টার্মিনালগুলির নির্মাণে একটি অনুরূপ গ্লাস ও লোহার তৈরি স্মৃতিস্তম্ভ ব্যবহার করা হয়েছিল। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো পরবর্তীতে ব্রুকলিন সেতু (১৮৮৩) এবং আইফেল টাওয়ারের (১৮৮২) মত কাঠামো নির্মাণের পথ তৈরি করে। আইফেল টাওয়ার মানুষের তৈরি বস্তুগুলি কত উঁচু হতে পারে তার সব সীমাবদ্ধতাগুলি অতিক্রম করে। প্রকৌশলের এসব কীর্তি ঊনিশ শতকের শহুরে পরিবেশ এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনে মৌলিক পরিবর্তন আনে। ১৮৩৭ সাল থেকে ইলেকট্রিক টেলিগ্রাফের বিকাশ এবং ১৮৩৫ সাল থেকে ব্রিটিশ রেলওয়ে কোম্পানির এবং পরের অর্ধশতাব্দীতে বিশ্বের বাকি অংশে প্রমাণ সময় গ্রহণের ফলে সময় সম্পর্কে মানুষের অভিজ্ঞতারও পরিবর্তন ঘটেছিল।
 
কিন্তু প্রযুক্তির এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকলেও ১৮৭০ এর দশক থেকে , ইতিহাস ও সভ্যতা স্বভাবগতভাবে প্রগতিশীল এবং এই গতি সর্বদা কল্যাণকর এ ধারণা আক্রমণের শিকার হতে থাকে। যুক্তি উত্থাপিত হয় যে শিল্পী এবং সমাজের মূল্যবোধ কেবল ভিন্নই ছিল না, বরং তা সমাজের অগ্রগতিবিরোধী ছিল, এবং অগ্রসর হয়ে বর্তমান প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারেনি। দার্শনিক সোফেনহার (১৭৮৮-১৮৬০ খ্রি.) (ইচ্ছাশক্তি এবং প্রতিনিধিত্ব হিসাবে বিশ্ব, ১৮১৯) আশাবাদ সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করে, এবং নিৎশেসহ পরবর্তী চিন্তাবিদদের উপর তাঁরতার এ ধারণার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল। সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদদের মধ্যে দুজন ছিলেন প্রাকৃতিক নির্বাচনের আলোকে জীবের উদ্ভবের (১৮৫৯) লেখক জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) এবং দাস ক্যাপিটালের (১৮৬৭) লেখক রাজনৈতিক বিজ্ঞানী কার্ল মার্কস (১৮১৮-১৮৮৩)। ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনের তত্ত্ব ধর্মীয় নিশ্চিততা এবং মানুষের সাতন্ত্র্যের ধারণাকে সীমাবদ্ধ করে দেয়। বিশেষ করে, মানুষও অন্যান্য "নিম্ন প্রাণী"র মত প্রবৃত্তির তাড়নায় তাড়িত হয় এই ধারণা কোনো মাহাত্ম্যবাদী আধ্যাত্মিকতা ধারণা সঙ্গে মেলানো কঠিন। কার্ল মার্কস যুক্তি দেন যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যে মৌলিক পরস্পরবিরোধিতা রয়েছে এবং শ্রমিকরা কোনোভাবেই স্বাধীন নয়।
 
=== ফ্রান্সে আধুনিকতাবাদের শুরু ===
২৭ নং লাইন:
আধুনিকতাবাদের প্রাথমিক পর্যায়ে সিগমুন্ড ফ্রয়েডের (1856-1939) তত্ত্ব বেশ প্রভাবশালী ছিল। ফ্রয়েডের প্রধান কাজ হল জোসেফ ব্রুয়ারের সাথে মৃগীরোগ সংক্রান্ত গবেষণা (1895)। ফ্রয়েডের চিন্তাভাবনার মূল "মানসিক জীবনে অবচেতন সত্ত্বার প্রাধান্যের" ধারণা, যাতে সমস্ত ব্যক্তিক বাস্তবতা মৌলিক তাড়না এবং প্রবৃত্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, যার মাধ্যমে মানুষ বাইরের বিশ্বকে অনুভব করে। ফ্রয়েডের ব্যক্তিত্ত্বের বর্ণনাগুলির মধ্যে আবেগী এবং সামাজিক মূল্যবোধ থেকে প্রাপ্ত স্ব-আরোপিত বিধিনিষেধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি অবচেতন মন রয়েছে।
 
আধুনিকতাবাদের আরেকজন অগ্রদূত ছিলেন ফ্রেডরিখ নিৎশে (১৮৪৪-১৯০০)। তাঁরতার দর্শনে মনস্তাত্ত্বিক তাড়নাগুলো, বিশেষ করে "ক্ষমতার ইচ্ছা" কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল। "নিৎশে প্রায়ই জীবনকে ক্ষমতার ইচ্ছা বা প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের সাথে এক করে দেখেন।" অন্যদিকে, হেনরি বার্গসন (185২-1941) বৈজ্ঞানিক দৃষ্টির ঘড়ি ধরা সময় এবং ব্যক্তিবিশেষের অভিজ্ঞতার আলোকে আপেক্ষিক সময়ের মধ্যে পার্থক্যে জোর দিয়েছেন। সময় এবং চেতনা নিয়ে তাঁরতার কাজের "বিংশ শতাব্দীর ঔপন্যাসিকদের উপর একটি বড় প্রভাব ছিল," বিশেষত ডরোথি রিচার্ডসন, জেমস জয়েস এবং ভার্জিনিয়া ওলফ (188২-1941) এর মত আধুনিকবাদী চেতনা-প্রবাহ ভিত্তিক ঔপন্যাসিকদের মধ্যে। বার্গেনের দর্শনেরএসবের বাইরেও élan vital বা জীবনশক্তির গুরুত্ব ছিল, যা "সবকিছুর সৃজনশীল বিবর্তন নিয়ে আসে।" বুদ্ধিবৃত্তির গুরুত্ব অস্বীকার না করলেও তাঁরতার দর্শনও স্বতঃস্ফূর্ততাকে চড়া মূল্য দেয়।
 
"অপরাধ এবং শাস্তি" ও "খামাররুজ ভাইয়েরা" উপন্যাসের লেখক ফিওদর দস্তয়ভস্কি (১৮২১-৮১), "ঘাসের পাতা" কাব্যগ্রন্থের জন্য ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১২-২৯) এবং দামেস্ক ট্রিলজি (১৮৯৮-১৯০১), স্বপ্নের নাটক (১৯০২) ও ভৌতিক সোনাতা (১৯০৭) এর মত শেষদিকে লেখা নাটকের জন্য আগস্ট স্ট্রেন্ডবার্গকে আধুনিকতাবাদী সাহিত্যের অগ্রদূত বিবেচনা করা হয়। একটি নারীর পোট্রেট (১৮৮১) এর জন্য হেনরি জেমসকেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রদূত বলা হয়।