সমকামিতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নিলয় সরকার (আলোচনা | অবদান)
ভাষা
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩০ নং লাইন:
বাংলা সমকামিতা শব্দটির গঠন সংস্কৃত-সঞ্জাত। [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত]] শব্দ ‘সম’-এর অন্যতম অর্থ সমান অথবা অনুরূপ<ref>[http://www.sanskrit-lexicon.uni-koeln.de/monier/webtc5/serveimg.php?file=/scans/MWScan/MWScanjpg/mw1152-sam.jpg অভিধানে 'সম' শব্দার্থ]</ref> এবং ‘কাম’ শব্দের অন্যতম অর্থ যৌন চাহিদা, রতিক্রিয়া তথা যৌন তৃপ্তি<ref>[http://www.sanskrit-lexicon.uni-koeln.de/monier/webtc5/serveimg.php?file=/scans/MWScan/MWScanjpg/mw0271-kAntika.jpg অভিধানে 'কাম' শব্দার্থ]</ref>। অতঃপর এই দুই শব্দের সংযোগে উৎপন্ন সমকামিতা শব্দ দ্বারা অনুরূপ বা সমান বা একই লিঙ্গের মানুষের (বা প্রাণীর ক্ষেত্রে অন্য প্রাণীর) প্রতি যৌন আকর্ষণকে বোঝায়।
 
সমকামিতার ইংরেজি প্রতিশব্দ হোমোসেক্সুয়ালিটি তৈরি হয়েছে গ্রিক ‘হোমো’ এবং [[লাতিন ভাষা|ল্যাটিন]] ‘সেক্সাস’ শব্দের সমন্বয়ে। [[গ্রিক ভাষা|গ্রিক ভাষায়]] ‘হোমো’ বলতে বোঝায় সমধর্মী বা একই ধরণের।ধরনের। আর ‘সেক্সাস’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে যৌনতা।<ref>"The word homosexual combined a GreekThe Greek prefix, homo, meaning "same" with a Latin noun, sexus, meaning sex"</ref>[https://web.archive.org/web/20110710170108/http://www.economicexpert.com/a/Karl:Maria:Kertbeny:bs.html]।
 
১৮৬৯ সালে কার্ল মারিয়া কার্টবেরি [[সডোমি আইন]]কে তিরষ্কার করে ইংরেজিতে প্রথম ‘হোমোসেক্সুয়াল’ শব্দটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে জীববিজ্ঞানী গুস্তভ জেগার এবং রিচার্ড ফ্রেইহার ভন ক্রাফট ইবিং ১৮৮০’র দশকে তাঁদেরতাদের ''সাইকোপ্যাথিয়া সেক্সুয়ালিস'' গ্রন্থে হেটারোসক্সুয়াল ও হোমোসেক্সুয়াল শব্দ দুটো দ্বারা যৌন পরিচয়কে দুই ভাগে বিভক্ত করেন, যা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী যৌন পরিচয়ের শ্রেণীবিভাজন হিসেবে ব্যাপক পরিসরে গৃহীত হয়।<ref>[http://www.glbtq.com/social-sciences/krafft_ebing_r.html Krafft-Ebing, Richard von (1840–1902)] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120409220543/http://www.glbtq.com/social-sciences/krafft_ebing_r.html |তারিখ=৯ এপ্রিল ২০১২ }}. ''[[glbtq.com]]''.</ref><ref name=psexualis>{{citation |url=http://www.kino.com/psychopathia/history.html |title=Psychopathia Sexualis |accessdate=7 September 2007 |periodical=Kino.com}}</ref>
 
বর্তমানে হোমোসেক্সুয়াল শব্দটি বিদ্বৎসমাজে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হলেও ‘গে’ এবং ‘লেসবিয়ান’ শব্দদুটি অধিক জনপ্রিয়। [[গে]] শব্দটির দ্বারা পুরুষ সমকামীদের বোঝানো হয় এবং নারী সমকামীদেরকে বোঝানো হয় [[লেসবিয়ান]] শব্দটির দ্বারা। পশ্চিমে ‘গে’ শব্দটি সমকামী অর্থে প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় সম্ভবত ১৯২০ সালে। তবে সে সময় এটির ব্যবহার একেবারেই সমকামীদের নিজস্ব গোত্রভুক্ত ছিলো। মুদ্রিত প্রকাশনায় শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে। লিসা বেন নামে এক হলিউড সেক্রেটারী ‘Vice Versa: America’s Gayest Magazine’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশের সময় সমকামিতার প্রতিশব্দ হিসেবে ‘গে’ শব্দটি ব্যবহার করেন। আর ‘লেসবিয়ান’ শব্দটি এসেছে গ্রিস দেশের ‘লেসবো’ নামক দ্বীপমালা থেকে। কথিত আছে, খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে [[স্যাফো]] নামে সেখানকার এক কবি/শিক্ষিকা মেয়েদের সমকামী যৌন জীবন নিয়ে কাব্য রচনা করে ‘কবিতা উৎসব’ পালন করতেন।<ref>{{harv|Campbell|1982|p=x-xi}}</ref><ref>Page, ''Sappho and Alcaeus'', p. 224-5.</ref> এইভাবে প্রথম দিকে লেসবিয়ান বলতে ‘লেসবো দ্বীপের অধিবাসী’ বোঝালেও, পরবর্তীতে নারীর সমকামিতার সাথে এটি যুক্ত হয়ে যায়।
৫৩ নং লাইন:
[[File:Catlin - Dance to the berdache.jpg|thumb|''বার্দাচের নাচ''<br />দ্বৈত সত্তাবিশিষ্ট জর্জ ক্যাটলিনের (১৭৯৬-১৮৭২) স্মৃতি উদ্‌যাপনার্থে [[সাউক ও শিয়াল জাতি]]র আনুষ্ঠানিক নাচ; স্মিথসোনিয়ান জাদুঘর, [[ওয়াশিংটন, ডি.সি.]]।]]
 
আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের আগে [[দ্বৈত সত্তা]]বিশিষ্ট মানুষদের কেন্দ্র করে সমকামিতার বিশেষ একটি প্রকারের স্বীকৃতি ছিল। সাধারণত এই ধরণেরধরনের মানুষদের ছোটবেলাতেই শনাক্ত করা হত, তার মা-বাবা তাকে উক্ত স্বীকৃত পথে জীবন কাটানোর প্রস্তাব দিতেন, আর সন্তান সম্মত হলে তাকে সঠিক পদ্ধতিতে পালন করে তার নির্বাচিত লিঙ্গের জন্য নির্দিষ্ট আচারের শিক্ষা দেওয়া হত। দ্বৈত সত্তার মানুষেরা সাধারণত [[শামানবাদ|শামানের]] স্থান লাভ করত এবং সাধারণ শামানদের চেয়ে অধিক ক্ষমতাশালী বলে গণ্য হত। তাদের যৌনসঙ্গী হত গোষ্ঠীর অন্যান্য সমলিঙ্গের সদস্যেরা।
 
[[লাতিন আমেরিকা|লাতিন আমেরিকার]] প্রাক্‌-[[আমেরিকায় স্পেনের উপনিবেশ|ঔপনিবেশিক]] বিভিন্ন সভ্যতা, যথা: [[আজটেক]], [[মায়া সভ্যতা|মায়া]], [[কেচুয়া জাতি|কেচুয়া]], [[মোচে (সংস্কৃতি)|মোচে]], [[জাপোটেক সভ্যতা|জাপোটেক]] এবং ব্রাজিলের [[টুপিনাম্বা]] জনজাতির মধ্যে প্রকাশ্য সমকামী ও রূপান্তরকামী ব্যক্তিবর্গের বসবাস ছিল।<ref name=glbtqlatinamerica>{{citation |first=Ben |last=Pablo |year=2004 |url=http://www.glbtq.com/social-sciences/latin_america_colonial.html |title=Latin America: Colonial |periodical=[[glbtq.com]] |accessdate=1 August 2007}}</ref><ref name=glbtqmex>{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Murray |প্রথমাংশ=Stephen |লেখক-সংযোগ=Stephen O. Murray |সম্পাদক=Claude J. Summers |বিশ্বকোষ=glbtq: An Encyclopedia of Gay, Lesbian, Bisexual, Transgender, and Queer Culture |শিরোনাম=Mexico |ইউআরএল=http://www.glbtq.com/social-sciences/mexico.html |সংগ্রহের-তারিখ=1 August 2007 |বছর=2004 |প্রকাশক=[[glbtq.com|glbtq, Inc.]]}}</ref>
৭৩ নং লাইন:
 
====জাপান====
সাম্প্রতিক কালে নবলব্ধ সামাজিক সহনশীলতা এবং [[টোকিও]], [[ওসাকা]] প্রভৃতি মহানগরে বিকল্প যৌনতার মানুষদের তথাকথিত "মুক্তাঞ্চল" জাপানে বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেও জাপানে সমকামীরা প্রায়ই তাঁদেরতাদের যৌন পরিচয় গোপন রাখতেন; অনেকে বিপরীত লিঙ্গের সাথে বিবাহবন্ধনে সম্মতি দিতেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://sodomylaws.org/world/japan/jpnews001.htm|শিরোনাম='Selectively Out:' Being a Gay Foreign National in Japan|প্রকাশক=The Daily Yomiuri (on [[Internet Archive]])|লেখক=Elizabeth Floyd Ogata|তারিখ=2001-03-24|সংগ্রহের-তারিখ=2006-08-30|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20060617175751/http://sodomylaws.org/world/japan/jpnews001.htm|আর্কাইভের-তারিখ=২০০৬-০৬-১৭|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> [[সমলৈঙ্গিক বিবাহ]] জাপানে আইনসম্মত নয়। ''জাপান টাইম্‌স'' এর প্রতিবেদন অনুযায়ী এই বিষয়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিতর্কও হয় না।[http://www.japantimes.co.jp/news/2015/02/12/national/same-sex-couples-to-get-recognition-under-plan-by-shibuya-ward/#.VTy-niFVhgo]
 
===দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া===
৯৬ নং লাইন:
| ডিওআই = 10.1300/J082v48n03_09
| আইডি =
| সংগ্রহের-তারিখ = 22 Nov 2010}}</ref> ১৯৮২ তে দেশে প্রথম সমকামী অধিকার সংগঠন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে এই লক্ষ্যে কাজকর্মের সূচনা হয়। ১৯৮০ এর দশকের শেষ ও ৯০ এর দশক জুড়ে "''ল্যামডা ইন্দোনেশিয়া''" এবং অন্যান্য অনুরূপ সংগঠন গড়ে ওঠে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি |ইউআরএল=http://www.insideindonesia.org/edit46/dede.htm |সংগ্রহের-তারিখ=২৫ জুন ২০১৫ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080905033433/http://www.insideindonesia.org/edit46/dede.htm |আর্কাইভের-তারিখ=৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> বর্তমানে দেশের বৃহত্তম [[এলজিবিটি]] সংগঠনগুলোর মধ্যে "''গেয়া নুসান্তারা''" এবং "''আরুস পেলাঙ্গি''" উল্লেখযোগ্য। এই ধরণেরধরনের সংগঠনের মোট সংখ্যা এখন ইন্দোনেশিয়ায় ত্রিশ ছাড়িয়েছে।<ref name="Ireland">[http://www.zcommunications.org/indonesia-gays-fight-sharia-laws-by-doug-ireland Indonesia: Gays Fight Sharia Laws] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130627003123/http://www.zcommunications.org/indonesia-gays-fight-sharia-laws-by-doug-ireland |তারিখ=২৭ জুন ২০১৩ }}, Doug Ireland]</ref> ইন্দোনেশিয়ায়, যেখানে ধর্ম সমাজ ব্যবস্থায় একটি প্রভাবশালী ভূমিকা রাখে, এবং যেখানে মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশসংখ্যা [[মুসলিম]], সেখানে সমকামিতা আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য না হলেও ইসলামের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের দ্বারাও সমকামিতার শাস্তির দাবি উত্থাপিত হয়েছে।<ref name="JP1">{{সংবাদ উদ্ধৃতি| শিরোনাম = In response to anti-LGBT fatwa, Jokowi urged to abolish laws targeting minorities | তারিখ = 18 March 2015 | সংবাদপত্র = The Jakarta Post | ইউআরএল = http://www.thejakartapost.com/news/2015/03/18/in-response-anti-lgbt-fatwa-jokowi-urged-abolish-laws-targeting-minorities.html | সংগ্রহের-তারিখ = 7 April 2015}}</ref><ref name="JG1">{{সংবাদ উদ্ধৃতি | শিরোনাম=Being Gay, Muslim and Indonesian | লেখক=Hera Diani | তারিখ=16 April 2010 | সংবাদপত্র=Jakarta Globe | ইউআরএল=http://thejakartaglobe.beritasatu.com/archive/being-gay-muslim-and-indonesian/ | সংগ্রহের-তারিখ=13 January 2015 | আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20150113073919/http://thejakartaglobe.beritasatu.com/archive/being-gay-muslim-and-indonesian/ | আর্কাইভের-তারিখ=১৩ জানুয়ারি ২০১৫ | অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> ২০০২ সালে, ইন্দোনেশিয়ার সরকার উত্তরপশ্চিমের [[আচেহ]] প্রদেশকে ইসলামিক [[শরিয়া]] আইন প্রবর্তনের অধিকার দেয় যা মুসলিম অধিবাসীদের মধ্যে সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে। ২০১৪ এর সেপ্টেম্বরে [[আচেহ]] প্রদেশের সরকার একটি শরিয়াভিত্তিক সমকামিতা-বিরোধী আইন পাশ করে যা হল, যদি কেউ সমকামী যৌনাচারকৃত হিসেবে ধরা পড়ে তবে তাকে শাস্তিস্বরূপ ১০০ চাবুকাঘাত ১০০ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হবে। ২০১৫ সালের শেষের দিকে আইনটি কার্যকর করা হয়।<ref name="Reuters1">{{সংবাদ উদ্ধৃতি| শিরোনাম=Strict sharia forces gays into hiding in Indonesia's Aceh | লেখক= Gayatri Suroyo and Charlotte Greenfield | তারিখ=27 December 2014 | সংবাদপত্র=reuters | ইউআরএল=http://www.reuters.com/article/2014/12/28/us-indonesia-religion-gay-idUSKBN0K600W20141228| সংগ্রহের-তারিখ=12 January 2015}}</ref>
 
===দক্ষিণ এশিয়া===
১৩৪ নং লাইন:
{{আরও দেখুন|প্রাচীন গ্রিসে সমকামিতা}}
====ধ্রুপদী যুগ====
পাশ্চাত্য সভ্যতায় সমকামিতার সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন পাওয়া যায় সাহিত্য, শিল্পকীর্তি ও [[গ্রিক পুরাণ|পুরাণের]] উপাদান থেকে। প্রাচীন গ্রিসের [[পেডেরাস্টি]] থেকে এই ধরণেরধরনের নিদর্শনের ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়।
 
===মধ্যপ্রাচ্য===
৩৩৯ নং লাইন:
{{cquote|রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্ট্‌স মনে করে যে যৌন অভিমুখীতা হল একাধিক জৈবিক ও জন্ম-পরবর্তী পরিবেশগত কারণের মিলিত প্রভাবের ফল। এর চেয়ে বেশি বলার মত আর যৌন অভিমুখীতার কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে দায়ী করার মত কোনো তথ্য-প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.rcpsych.ac.uk/pdf/PS02_2014.pdf|শিরোনাম=Royal College of Psychiatrists' statement on sexual orientation|প্রকাশক=Royal College of Psychiatrists' statement on sexual orientation|সংগ্রহের-তারিখ=31 March 2015}}</ref>}}
 
মার্কিন মনোবিদ্যা সমিতির মতে "ব্যক্তিবিশেষের যৌন অভিমুখীতার অনেক সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে, যে কারণগুলো ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।" তাঁরাতারা এ'কথাও বলেন যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের যৌন অভিমুখীতা অল্প বয়সেই নির্ধারিত হয়ে যায়।<ref name=apahelp /> পুরুষদের মধ্যে জিনগত বা জন্ম-পূর্ববর্তী অন্যান্য প্রভাবকের দ্বারা কিভাবে যৌন অভিমুখীতা নির্ধারিত হয়, সেই সংক্রান্ত গবেষণা সমকামিতার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং [[চিকিৎসা-জিনতত্ত্ব]] ও [[প্রিন্যাটাল ডায়াগ্‌নসিস]] সম্বন্ধেও নতুন করে ভাবায়।<ref name=chicagotribune>{{citation |url=http://archives.chicagotribune.com/2007/aug/12/news/chi-gaygene_bd12aug12 |title=Study of gay brothers may find clues about sexuality |first=Robert |last=Mitchum |periodical=[[Chicago Tribune]] |date=12 August 2007 |accessdate=4 May 2007}}{{dead link|date=December 2010}}</ref>
 
প্রফেসর মাইকেল কিং-এর মতে: "যে সমস্ত বিজ্ঞানী যৌন অভিমুখীতার উৎপত্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে গবেষণা করেছেন তাঁদের সিদ্ধান্ত হল এই যে, যৌন অভিমুখীতা এমন একটি মানবীয় বৈশিষ্ট্য যা জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ধারিত হয় এবং যা অপরিবর্তনীয়। সমকামিতার উৎপত্তি সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদি ধর্মীয় ও সামাজিক বিতর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে সমকামিতা ব্যক্তির সচেতন পছন্দ মাত্র নয়।"<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://www.churchtimes.co.uk/content.asp?id=60752 |শিরোনাম=How much is known about the origins of homosexuality? |প্রকাশক=Church Times |তারিখ=16 November 2007 |সংগ্রহের-তারিখ=24 August 2010 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100406055257/http://www.churchtimes.co.uk/content.asp?id=60752 |আর্কাইভের-তারিখ=৬ এপ্রিল ২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
 
===বিবর্তনীয় প্রেক্ষাপট===
২০০৮ এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিবৃতি দেওয়া হয়: "মানুষের যৌন অভিমুখীতা নির্ধারণে যে জিনের প্রভাব আছে সেই সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই বোঝা যায় না [[প্রজনন|প্রজননগত]] সাফল্যের হার কমিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সমকামিতা কীভাবে জনসংখ্যার অপেক্ষাকৃত বেশি অংশে দেখা যায়।" তাঁরাতারা অনুমান করেন যে "সমকামিতার জিন সমকামীদের প্রজননগত সাফল্যের হার কমিয়ে দিলেও যে সমস্ত বিপরীতকামী ঐ জিনসমূহ বহন করেন তাঁদের নিশ্চয়ই কিছু সুবিধে করে দেয়।" এই গবেষণার ফলাফল থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে "সমকামিতার জন্য দায়ী জিনসমূহ সম্ভবত বিপরীতকামীদের কোনো প্রজননগত সুবিধে দেয়, যার ফলে জনসংখ্যায় সমকামীদের বিবর্তন ও ধারাবাহিকতা সম্ভব হয়েছে।"<ref>Zietsch et al. (2008)</ref> ২০০৯ এর একটা গবেষণায় এ-ও দেখা যায় যে মায়ের দিক থেকে (বাবার দিক থেকে নয়) সমকামী ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত মহিলাদের [[যৌন ফলপ্রসূতা]] বেশি হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শিরোনাম=New Evidence of Genetic Factors Influencing Sexual Orientation in Men: Female Fecundity Increase in the Maternal Line |লেখক=Iemmola, Francesca and Camperio Ciani, Andrea|সাময়িকী=Archives of Sexual Behavior|প্রকাশক=Springer Netherlands|বছর=2009|খণ্ড=38}}</ref>
 
প্রাণীজগতে সমকামী যৌনাচরণ সম্পর্কিত বেইলি এবং [[মার্লিন জুক|জুকের]] একটি রিভিউয়ে সমকামিতার প্রজনন-হ্রাসের তত্ত্বটিকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। সমকামী যৌনাচার কেমনভাবে অভিযোজিত হতে পারে তার অনেক সম্ভাব্য কারণ এখানে উল্লেখ করা হয়। প্রজাতিভেদে এই কারণগুলো আলাদা আলাদা হতে পারে। বেইলি এবং জুক আরও বলেন যে ভবিষ্যতে গবেষকদের শুধুমাত্র সমকামিতার উৎস অনুসন্ধান না করে তার বিবর্তনীয় পরিণতি সম্বন্ধে আরও গবেষণা করা উচিত।<ref name="Bailey et al.">Bailey, N. W., & Zuk, M. (2009). Same-sex sexual behavior and evolution. Trends In Ecology & Evolution, 24(8), 439–446. doi:10.1016/j.tree.2009.03.014 [http://www.faculty.ucr.edu/~mzuk/Bailey%20and%20Zuk%202009%20Same%20sex%20behaviour.pdf]</ref>
৩৫১ নং লাইন:
লেসবিয়ান নারীদের যৌনতার অভিজ্ঞতা প্রায়ই গে পুরুষদের থেকে আলাদা হয়, আর [[কার্যকারণবিদ্যা|কার্যকারণগত]] দিক থেকেও শুধুমাত্র সমকামী পুরুষ সম্পর্কিত গবেষণা থেকে স্ত্রী সমকামিতার সঠিক ধারণা পাওয়া দুঃসাধ্য।
 
[[শেরে হিতে]]র তত্ত্বাবধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ১৯৭০ এর একটি চিঠি-ভিত্তিক সমীক্ষায় লেসবিয়ানরা তাঁদেরতাদের যৌনতার কারণের নিজস্ব ব্যাখ্যা দেন। ১৯৫৩ এ কিন্‌সির গবেষণার পর সেটাই ছিল নারী যৌনতার উপর প্রথম গবেষণা যেখানে নারীরা নিজেরা তাঁদেরতাদের সমকামিত্বকে কীভাবে দেখেন, তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। পুরুষের তুলনায় অন্য নারীদের সাথে যৌন সংসর্গ করতে বেশি পছন্দ করার বিভিন্ন তত্ত্ব এই গবেষণায় উঠে আসে, যেমন অন্যের অনুভূতির প্রতি নারীদের বেশি সংবেদনশীলতা।<ref name="Hite-Rpt">Shere Hite, ''The Hite Report: A Nationwide Study of Female Sexuality'' (N.Y.: Seven Stories Press, 2004 ed. pbk. <nowiki>[</nowiki>1st printing?<nowiki>]</nowiki> © 1976, 1981, 2004), pp. 325–328 & 330 ({{আইএসবিএন|1-58322-569-2}}).</ref>
 
তাঁরতার গবেষণার পর শেরে হিতে স্বীকার করেন কোনো কোনো মহিলা রাজনৈতিকভাবে লেসবিয়ান পরিচিতি গ্রহণ করে থাকতে পারেন। ২০০৯ তেও যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক [[জুলি বিন্ডেল]] পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন যে "রাজনৈতিক লেসবিয়ানিজ্‌মের প্রাসঙ্গিকতা অব্যাহত আছে, কারণ এর মাধ্যমে বোঝা যায় যৌনতা একটা মুক্ত সিদ্ধান্তের বিষয় আর আমরা ক্রোমোজোমের জন্য কোনো নির্দিষ্ট নিয়তিতে আবদ্ধ নই।"<ref name="Jules">{{সংবাদ উদ্ধৃতি| ইউআরএল=http://www.guardian.co.uk/lifeandstyle/2009/jan/30/women-gayrights | কর্ম=The Guardian | অবস্থান=London | শিরোনাম=My sexual revolution | প্রথমাংশ=Julie | শেষাংশ=Bindel | তারিখ=30 January 2009 | সংগ্রহের-তারিখ=4 May 2010}}</ref>
 
===যৌন অভিমুখীতা পরিবর্তনের কর্মসূচী===
৪১৭ নং লাইন:
[[মানবজাতির ইতিহাস|মানবজাতির]] ইতিহাসের প্রায় সমগ্র সময়কাল জুড়ে সমকামী সম্পর্ক ও আচরণ নিন্দিত হয়ে এসেছে। তবে কখনো-কখনো সামাজিক ঔদার্য ও আনুকূল্যও পরিলক্ষিত হয়েছে। এই প্রশংসা ও নিন্দা নির্ভর করেছে স্থানভেদে সমকামিতার বহিঃপ্রকাশের রূপ, সমসাময়িক বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের প্রভাব ও সাংস্কৃতিক মানসিকতার উপর।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Murray |প্রথমাংশ=Stephen O. |শিরোনাম=Homosexualities |প্রকাশক=University of Chicago |বছর=2000}}</ref> তবে অধিকাংশ [[সমাজ|সমাজে]] এবং সরকার ব্যবস্থায় সমকামী আচরণকে দণ্ডণীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ [[বাংলাদেশ]] (দশ বছরের থেকে শুরু করে আমরণ সশ্রম কারাদণ্ড)<ref name="ILGA 2014">[http://old.ilga.org/Statehomophobia/ILGA_SSHR_2014_Eng.pdf State-sponsored Homophobia: A world survey of laws prohibiting same sex activity between consenting adults] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20161020202330/http://old.ilga.org/Statehomophobia/ILGA_SSHR_2014_Eng.pdf |তারিখ=২০ অক্টোবর ২০১৬ }} The International Lesbian, Gay, Bisexual, Trans and Intersex Association, authored by Lucas Paoli Itaborahy, May 2014</ref> সহ দখন এশিয়ার ৬ টি দেশের সংবিধানে ৩৭৭ ধারা এবং ১৯টি দেশে সমপর্যায়ের ধারা এবং সম্পূরক ধারা মোতাবেক সমকামিতা ও পশুকামিতা প্রকৃতিবিরোধী যৌনাচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য ও দন্ডনীয় ফৌজদারি অপরাধ।<ref name="ILGA 2014"/> ২০১৫ সালে জুলাইয়ের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট ৭২টি দেশে {{efn|Countries with laws criminalizing homosexuality are: Afghanistan, Algeria, Angola, Antigua and Barbuada, Bangladesh, Barbados, Belize, Bhutan, Botswana, Brunei, Burundi, Cameroon, Comoros, Dominica, Egypt, Eritrea, Ethiopia, Gambia, Ghana, Grenada, Guinea, Guyana, India, Iran, Jamaica, Kenya, Kiribati, Kuwait, Liberia, Libya, Malawi, Malaysia, Maldives, Mauritania, Morocco, Myanmar, Namibia, Nauru, Nigeria, Oman, Pakistan, Papua New Guinea, Qatar, Saint Kitts and Nevis, Saint Lucia, Saint Vincent and the Grenadines, Samoa, Saudi Arabia, Senegal, Seychelles, Sierra Leone, Singapore, Solomon Islands, Somalia, South Sudan, Sri Lanka, Sudan, Swaziland, Syria, Tanzania, Togo, Tonga, Trinidad and Tobago, Tunisia, Turkmenistan, Tuvalu, Uganda, United Arab Emirates, Uzbekistan, Yemen, Zambia and Zimbabwe.}} এবং পাঁচটি দেশের উপ-জাতীয় আইনি বিধিমালায় {{efn| These five sub-national jurisdictions are: the provinces of Aceh and South Sumatra (Indonesia), the Cook Islands (New Zealand), Gaza (Palestine) and Marawi City (the Philippines).}} সমকামিতা সরকারীভাবে অবৈধ, যার অধিকাংশই [[এশিয়া]] ও [[আফ্রিকা]]তে অবস্থিত এবং এদের মধ্যে বেশ কিছু দেশে সমকামী আচরণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু আছে।
সমকামিতা আবহমানকাল ধরে অসামাজিক বিবেচিত হয়েছে যার প্রধান কারণ হলো, এটি এমন একটি যৌনাচরণ যার মাধ্যমে সন্তানের জন্মদান সম্ভব নয়, ফলে মানুষের বংশরক্ষা সম্ভব নয়। এছাড়া সকল প্রধান ধর্ম সমকামী যৌনাচরণ নিষিদ্ধ করেছে।<ref name=reli/> বর্তমান সমাজেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমকামী যৌনাচরণ একপ্রকার [[যৌনবিকৃতি]] হিসাবে সাধারণভাবে পরিগণিত। তবে ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে পাশ্চাত্য মনস্তাত্ত্বিকরা 'সমকাম প্রবণতাকে' মনোবিকলনের তালিকা থেকে বাদ দেন। ১৯৭৫-এ [[যুক্তরাষ্ট্র|যুক্তরাষ্ট্রের]] আন্তর্জাতিক মনস্তত্ত্ব ফেডারেশন 'সমকাম প্রবণতাকে' স্বাভাবিক বলে দাবি করে। তবে পাশ্চাত্য ও উন্নত কিছু দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে সমকামী যৌনাচারণের প্রতি সাধারণ মানুষের বৈরীভাব বহাল আছে। অধিকাংশ সমাজে সমকামী যৌনাচারণ একটি অস্বাভাবিক ও নেতিবাচক প্রবৃত্তি হিসেবে লজ্জার ব্যাপার এবং ধিক্কারযোগ্য। [[ধর্ম]]<ref name=reli>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ১=McDermott|প্রথমাংশ১=Ryon C.|শেষাংশ২=Schwartz|প্রথমাংশ২=Jonathan P.|শেষাংশ৩=Lindley|প্রথমাংশ৩=Lori D.|শেষাংশ৪=Proietti|প্রথমাংশ৪=Josiah S.|শিরোনাম=Exploring men's homophobia: Associations with religious fundamentalism and gender role conflict domains|সাময়িকী=Psychology of Men & Masculinity|খণ্ড=15|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=191–200|ডিওআই=10.1037/a0032788|বছর=2014}}</ref><ref name=AACC_coe>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Code of Ethics, American Association of Christian Counselors|ইউআরএল=http://aacc.net/files/AACC%20Code%20of%20Ethics%20-%20Master%20Document.pdf#page=15|ওয়েবসাইট=www.aacc.net|প্রকাশক=American Association of Christian Counselors|সংগ্রহের-তারিখ=May 2015|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20150213065814/http://aacc.net/files/AACC%20Code%20of%20Ethics%20-%20Master%20Document.pdf#page=15|আর্কাইভের-তারিখ=১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> এবং [[আইন|আইনের]] বিধান এবং সামাজিক অনুশাসনের কারণে কার্যকলাপ তথা সমকামী যৌনসঙ্গম বিশ্বের অধিকাংশ স্থানেই একটি অবৈধ ও গুপ্ত আচরণ হিসাবেই সংঘটিত হয়।
==== বিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপট ====