সূরা ফীল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
116.58.202.129-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে NahidSultanBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
২৮ নং লাইন:
 
== ঐতিহাসিক পটভূমি ==
হাবশা (বর্তমান [[ইথিওপিয়া|ইথিয়োইপিয়া]]) সম্রাটের কাছ থেকে যখন [[ইয়েমেন|ইয়ামনের]] একজন সরদার ইয়ামনের গভর্ণরগভর্নর হবার পরোয়ানা হাসিল করে তখন হাবশী [[মিলিটারি|সৈন্যরা]] তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। তারা আবরাহাকে তার জাগায় গভর্ণরগভর্নর পদে অধিষ্ঠিত করে। আবরাহা ছিল হাবশার আদুলিস বন্দরের একজন [[গ্রীস|গ্রীক]] ব্যবসায়ীর ক্রীতদাস। নিজের বুদ্ধিমত্তার জোরে সে [[ইয়ামন]] দখলকারী হাবশী সেনাদলে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। হাবশা সম্রাট তাকে দমন করার জন্য [[মিলিটারি|সেনাবাহিনী]] পাঠায়। কিন্তু এই সেনাদল হয় তার সাথে যোগ দেয় অথবা সে এই সেনাদলকে পরাজিত করে। অবশেষে হাবশা সম্রাটের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী তাকে ইয়ামনে নিজের গভর্ণরগভর্নর হিসাবে স্বীকার করে নেয়।{{cref|ক}}) পরে সে ধীরে ধীরে ইয়ামনের স্বাধীন বাদশাহ হয়ে বসে। ৫৪৩ খৃষ্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[সদ্দে মাআরিব]] এর সংস্কার কাজ শেষ করে সে একটি বিরট উৎসবের আয়োজন করে। এই উৎসবের বিভিন্ন [[দেশ]] থেকে লোক আসে। সদ্দে মাআ’রিবে আবরাহা স্থাপিত শিলালিপিতে এ সম্পর্কিত পূর্ণ আলোচনা সংরক্ষিত রয়েছে।<ref নাম="তাফহীমুল">তাফহীমুল কোরআন।</ref>
 
সে ইয়ামনের [[রাজধানী]] [[সানা|সান্‌আ'য়]] একটি বিশাল [[গির্জা]] নির্মাণ করে। আরব ঐতিহসিকগণ একে 'আল কালীস' বা 'আল কুলীস' অথবা 'আল কুল্লাইস' নামে উল্লেখ করেছেন। মুহাম্মদ ইবনে ইসহাকের বর্ণনা মতে, এ কাজটি সম্পন্ন করার পর সে হাবশার বাদশাহ্‌কে লিখে জানায়, আমি আরবদের [[হজ্জ|হজ্জকে]] মক্কার কা'বার পরিবর্তে সানআর গীর্জার দিকে ফিরিয়ে না দিয়ে ক্ষান্ত হবো না। সে মক্কা আক্রমণ এবং কুরাইশদেরকে ধ্বংস ও সমগ্র [[সৌদি আরব|আরববাসীকে]] ভীত-সন্ত্রস্ত করে দিতে সফলকাম হতে পারবে বলে মনে করছিল। আবরাহার কাছে যখন এ খবর পৌঁছুল যে কাবার ভক্ত-অনুরক্তরা তার গীর্জার অবমাননা করেছে তখন সে এ রকম কসম খায় যে, ‘কা'বাকে গুঁড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে না দেয়া পর্যন্ত আমি স্থির হয়ে বসবো না’।
 
অতঃপর [[৫৭০]] বা [[৫৭১]] খৃষ্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে সে ৬০ [[হাজার]] পদাতিক, ১৩টি [[হাতি]] (অন্য বর্ণনা মতে ৯টি হাতি) সহকারে মক্কার পথে রওয়ানা হয়। পথে প্রথমে যু-নফর মানক ইয়ামনের একজন সরদার আরবদের একটি সেনাদল সংগ্রহ করে তাকে বাধা দেয়। কিন্তু যুদ্ধে সে পরাজিত ও ধৃত হয়। তারপর খাশ'আম এলাকায় নুফাইল ইবনে খাশ'আমী তার [[জাতি|গোত্রের]] লোকদের নিয়ে তার পথ রোধ করে। সে-ও পরাজিত ও গ্রেফতার হয়ে যায়। সে নিজের প্রাণ বাঁচাবার জন্য আবরাহার সেনাদলের পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ সেনাদল তায়েফের নিকটবর্তী হলে বনু সকীফ অনুভব করে যে এত বড় শক্তির মোকাবিলা করার ক্ষমতা তাদের নেই এবং এই সংগে তারা এ আশঙ্কাও করতে থাকে যে হয়তো তাদের লাত দেবতার [[মন্দির|মন্দিরও]] তারা ভেঙে ফেলবে। ফলে তাদের সরদার মাসউদ একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আবরাহার সাথে দেখা করে। তারা তাকে বলে, আপনি যে উপাসনালয়টি ভাঙতে এসেছেন আমাদের এ মন্দিরটি সে উপাসনালয় নয়। সেটি মক্কায় অবস্থিত। কাজেই আপনি আমাদেরটায় হাত দেবেন না। আমরা মক্কার পথ দেখাবার জন্য আপনাকে পথ প্রদর্শক সংগ্রহ করে দিচ্ছি।
 
আবরাহা তাদের এ প্রস্তাব গ্রহণ করে। ফলে বনু সাকীফ আবু রিগাল নামক এক ব্যক্তিকে তার সাথে দিয়ে দেয়। মক্কা পৌঁছতেই যখন আর মাত্র তিন [[ক্রোশ]] পথ বাকি তখন আলমাগান্মাস বা আল মুগান্মিস নামক স্থানে পৌঁছে আবু রিগাল মারা যায়।{{cref|খ}}) এরপর সে মক্কাবাসীদের কাছে নিজের একজন [[দূত|দূতকে]] পাঠায়। তার মাধ্যমে মক্কাবাসীদের কাছে এই মর্মে বাণী পাঠায়ঃ আমি তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসিনি। আমি এসেছি শুধুমাত্র এই ঘরটি (কাবা) ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে। যদি তোমরা যুদ্ধ না করো তাহলে তোমাদের প্রাণ ও ধন-সম্পত্তির কোনো ক্ষতি আমি করবোনা। তাছাড়া তার এক দূতকেও মক্কাবাসীদের কাছে পাঠায়। মক্কাবাসীরা যদি তার সাথে কথা বলতে চায় তাহলে তাদের সরদারকে তার কাছে নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়।
 
([[মুহাম্মাদ|রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)]]-এর [[দাদা]]) [[আবদুল মুত্তালিব]] তখন ছিলেন মক্কার সবচেয়ে বড় সরদার। দূত তাঁরতার সাথে সাক্ষাৎ করে আবরাহার পয়গাম তাঁরতার কাছে পৌঁছয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘আবরাহার সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই।’ এটা [[আল্লাহ|আল্লাহ্‌র]] ঘর; তিনি চাইলে তাঁরতার ঘর রক্ষা করবেন। দূত বলে, ‘আপনি আমার সাথে আবরাহার কাছে চলুন।’ তিনি সম্মত হন এবং দূতের সাথে আবরাহার কাছে যান।
 
তিনি এতই সুশ্রী, আকর্ষণীয় ও প্রতাপশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে আবরাহা তাকে দেখে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়ে পড়ে। সে সিংহাসন থেকে নেমে তার সাথে এসে বসে। সে তাঁকেতাকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কি চান?’ তিনি বলেন, ‘আমার যে [[উট|উটগুলি]] ধরে নেয়া হয়েছে সেগুলি আমাকে ফেরত দেয়া হোক।’ আবরাহা বলল, ‘আপনাকে দেখে তো আমি বড় প্রভাবিত হয়েছিলাম। কিন্তু আপনি নিজের উটের দাবী জানাচ্ছেন, অথচ এই যে ঘরটা আপনার ও আপনার পূর্ব [[পুরুষ|পুরুষদের]] [[ধর্ম|ধর্মের]] কেন্দ্র সে সম্পর্কে কিছুই বলছেন না, আপনার এ বক্তব্য আপনাকে আমার দৃষ্টিতে মর্যাদাহীন করে দিয়েছে।’
 
প্রত্যুত্তরে তিনি বলল, ‘আমি তো কেবল আমার উটের মালিক এবং সেগুলির জন্য আপনার কাছে আবেদন জানাচ্ছি। আর এই [[ঘর]]। এর একজন রব-মালিক ও [[ঈশ্বর|প্রভু]] আছেন। তিনি নিজেই এর হেফাজত করবেন।’ আবরাহা জবাব দেয়, ‘তিনি একে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন না।’
৪৪ নং লাইন:
আবদুল মুত্তালিব বলেন, ‘এব্যাপারে আপনি জানেন ও তিনি জানেন ‘ এ কথা বলে তিনি সেখান থেকে উঠে পড়েন। আবরাহা তাকে তার উটগুলো ফিরিয়ে দেয়।
 
আবরাহা সেনাদল কাছে থেকে ফিরে এসে আবদুল মুত্তালিব কুরাইশদেরকে বলেন, ‘নিজ-নিজ পরিবার-পরিজনদের নিয়ে পাহাড়ের ওপর চলে যাও, এভাবে তারা ব্যাপক গণহত্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে।’ অতপর তিনি ও কুরাইশদের কয়েকজন সরদার [[হারম শরীফে]] হাযির হয়ে যান। তারা কাবার [[দরজা|দরজার]] কড়া ধরে আল্লাহ্‌র কাছে এই বলে দোয়া করতে থাকেন যে, তিনি যেন তাঁরতার ঘর ও তাঁরতার খাদেমদের হেফাজত করেন। সে সময় কাবা ঘরে ৩৬০টি মূর্তি ছিল। কিন্তু এই সংকটকালে তারা সবাই এই মূর্তিগুলির কথা ভুলে যায়। তারা একমাত্র আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করার জন্য হাত ওঠায়। [[ইতিহাস|ইতিহাসের]] বইগুলিতে তাদের প্রার্থনার বাণীগুলি উদ্ধৃত হয়েছে, তার মধ্যে একটি হল নিম্নরূপঃ
 
{{cquote|