আহসান মঞ্জিল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Rashed1111 (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৩ নং লাইন:
}}
[[চিত্র:Ahsan Manjil.jpg|thumb|right|আহসান মঞ্জিল]]
'''আহসান মঞ্জিল''' [[পুরনো ঢাকা]]র ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায় [[বুড়িগঙ্গা নদী]]র তীরে অবস্থিত। এটি পূর্বে ছিল ঢাকার নবাবদের আবাসিক প্রাসাদ ও জমিদারীর সদর কাচারি। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর প্রতিষ্ঠাতা [[নওয়াব আবদুল গনি]]।তিনি তার পুত্র [[খাজা আহসানুল্লাহ]]-র নামানুসারে এর নামকরণ করেন।১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে আহসান মঞ্জিলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে সমাপ্ত হয়। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে এখানে এক অনুষ্ঠিত বৈঠকে [[মুসলিম লীগ]] প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। আহসান মঞ্জিল কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছে অতি সম্প্রতি। এখন এটি [[বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর]] কর্তৃক পরিচালিত একটি জাদুঘর।<ref name="ReferenceA">''মুসলিম বাংলার অপ্রকাশিত ইতিহাস: ঢাকার নওয়াব পরিবারের ইতিহাস'' - মোঃ আলমগীর, খোশরোজ কিতাবমহল, ১৫ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০। ফেব্রুয়ারি ২০১৪। {{আইএসবিএন|978-984-8845-02-8}}]</ref>
 
== ইতিহাস ==
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে জালালপুর পরগনার জমিদার [[শেখ ইনায়েতউল্লাহ]] আহসান মঞ্জিলের বর্তমান স্থান রংমহল নামে একটি প্রমোদভবন তৈরি করেন। পরবর্তীতে তাঁরতার পুত্র [[শেখ মতিউল্লাহ]] রংমহলটি ফরাসি বণিকদের কাছে বিক্রি করে দেন। বাণিজ্য কুঠি হিসাবে এটি দীর্ঘদিন পরিচিত ছিল। এরপরে ১৮৩০-এ বেগমবাজারে বসবাসকারী [[নওয়াব আবদুল গনি]]র পিতা [[খাজা আলীমুল্লাহ]] এটি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। এই বাসভবনকে কেন্দ্র করে [[নওয়াব আবদুল গনি|খাজা আবদুল গনি]] মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানী নামক একটি ইউরোপীয় নির্মাণ ও প্রকৌশল-প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরী করান, যার প্রধান ইমারত ছিল আহসান মঞ্জিল। ১৮৫৯ সালে [[নওয়াব আবদুল গনি]] প্রাসাদটি নির্মাণ শুরু করেন যা ১৮৭২ সালে সমাপ্ত হয়। তিনি তাঁরতার প্রিয় পুত্র [[খাজা আহসানুল্লাহ]]র নামানুসারে এর নামকরণ করেন ‘আহসান মঞ্জিল’। ওই যুগে নবনির্মিত প্রাসাদ ভবনটি রংমহল ও পুরাতন ভবনটি অন্দরমহল নামে পরিচিত ছিল। <ref name="ReferenceB">[[প্রথম আলো]], [[৯ মে]], [[২০১৮]]; পড়াশোনা, পাতা-১২, জানার আছে অনেক কিছু: আহসান মঞ্জিল।</ref>
 
[[১৮৮৮]] সালের [[৭ এপ্রিল]] প্রবল ভূমিকম্পে পুরো আহসান মঞ্জিলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ক্ষতিগ্রস্থ আহসান মঞ্জিল পুনর্নির্মাণের সময় বর্তমান উঁচু গম্বুজটি সংযোজন করা হয়। পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের জন্য রাণীগঞ্জ থেকে উন্নতমানের ইট আনা হয়। মেরামতকর্ম পরিচালনা করেন প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র রায়। <ref name="ReferenceB"/> সে আমলে ঢাকা শহরে আহসান মঞ্জিলের মতো এতো জাঁকালো ভবন আর ছিল না। এর প্রাসাদোপরি গম্বুজটি শহরের অন্যতম উঁচু চূড়া হওয়ায় তা বহুদূর থেকেও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করত।
৫৯ নং লাইন:
১৯০৪ সালে তোলা আলোকচিত্র অনুযায়ী মূলানুরূপ বিলিয়ার্ড টেবিল, লাইট ফিটিংস, সোফা ইত্যাদি তৈরি করে কক্ষটি সাজানো হয়েছে। দেয়ালে প্রদর্শিত নওয়াবদের আমলের বিভিন্ন জীব-জন্তুর শিংগুলো এডওয়ার্ড হাউজ থেকে সংগৃহীত। আউটডোর খেলাধুলার পাশাপাশি ঢাকার নওয়াবরা ইনডোর খেলারও যে বিশেষ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন, প্রাসাদ অভ্যন্তরের এই কক্ষটি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
===গ্যালারী ৯: সিন্দুক কক্ষ===
ঢাকার নওয়াবের কোষাগার হিসেবে ব্যবহৃত কক্ষটিকে তাঁদেরতাদের প্রাচুর্যের সাথে সঙ্গতি রেখে সাজানো হয়েছে। বৃহদাকার লোহার সিন্দুকসহ এখানে থাকা সিন্দুক ও কাঠের আলমারীগুলো নওয়াবদের আমলের নিদর্শন।
===গ্যালারী ১০: নওয়াব পরিচিতি===
ঢাকার নওয়াব পরিবারের স্বনামধন্য ব্যক্তিদের পরিচিতি এই গ্যালারীতে স্থান পেয়েছে। প্রতিকৃতি ও লাইফ সাইজ তৈলচিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি তাঁদেরতাদের সংক্ষিপ্ত জীবনী এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া এই গ্যালারীতে ঢাকার নওয়াবদের কাশ্মীরবাসী আদিপুরুষ থেকে সাম্প্রতিককাল পর্যন্ত বংশধরের বিভিন্ন শাখা প্রশাখা দেখিয়ে একটি বংশতালিকা প্রদর্শিত হয়েছে।
===গ্যালারী ১০(ক): কোনার সিঁড়িঘর===
এখানে নিচে এবং উপরে দু’টি কক্ষ ছিল। দর্শক চলাচলের সুবিধার্থে তা ভেঙ্গে কংক্রিটের সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। এখানে থাকা বড় বড় আলমারী ও প্রদর্শিত তৈজসপত্রগুলো নওয়াবদের আমলের নিদর্শন।
৯২ নং লাইন:
প্রাসাদের শীর্ষে দৃশ্যমান সুউচ্চ গম্বুজটি এই কক্ষের উপরেই নির্মিত। এ কক্ষটিকে কেন্দ্র করে পুরো রঙমহলকে দুটি সুষম অংশে বিভক্ত করা যায়। এখানে প্রদর্শিত অস্ত্রশস্ত্রগুলো আহসান মঞ্জিলে প্রাপ্ত। দোতলার এই কক্ষটির সম্মুখস্থ বারান্দা থেকেই প্রাসাদের দক্ষিণদিকের বৃহৎ খোলা সিঁড়িটি ধাপে ধাপে বুড়িগঙ্গার পাড়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য সংবলিত মনোরম ও বিস্তৃত অঙ্গনে গিয়ে মিশেছে।
===গ্যালারী ২৩: বলরুম (নাচঘর)===
১৯০৪ সালে তোলা আলোকচিত্র অনুযায়ী মূলানুরূপে এ গ্যালারীটি সাজানো হয়েছে। উনিশ শতকে ঢাকা শহরে এত বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ নাচঘরের দৃষ্টান্ত আর ছিল না। ঢাকার নওয়াবগণ ছিলেন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় প্রকার সংস্কৃতির সমঝদার। [[আবদুল গনি|নওয়াব আবদুল গনি]] নাচ, জ্ঞান ও কবিতা চর্চার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তাঁরতার পুত্র [[খাজা আহসানুল্লাহ|নওয়াব আহসানুল্লাহ]] নিজেই একজন উঁচুদরের সঙ্গীতজ্ঞ, বাদক ও কবি ছিলেন। নওয়াবদের মানসিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই কক্ষে একত্রে পাশাপাশি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় প্রকার নাচ-গানের একশটি কাল্পনিক দৃশ্য বৃহদাকার তৈলচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। এখানে প্রদর্শিত সিংহাসন ও ক্রিস্টাল চেয়ার- টেবিলগুলো নওয়াবদের আমলের মূল নিদর্শন। তবে অন্যান্য আসবাবপত্র ও আয়নাগুলো ছবিতে দৃশ্যমান আসবাবপত্রের অনুকরণে তৈরী।
 
==সংক্ষেপে আহসান মঞ্জিলের ইতিহাস==
৯৯ নং লাইন:
* [[১৭৫৭]]- [[পলাশী যুদ্ধ|পলাশী যুদ্ধের]] পর উক্ত ফরাসী কুঠিটি ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় এবং পরে তা ফেরত দেওয়া হয়।
* [[১৮৩০]]- [[খাজা আলিমুল্লাহ]] ফরাসীদের নিকট থেকে কুঠিবাড়িটি ক্রয়পূর্বক নিজের বাসভবনোপযোগী করে সংস্কার করেন।
* [[১৮৫৯]]- [[নওয়াব আবদুল গনি]] ফরাসী কুঠির পূর্ব পার্শ্বে নতুন প্রাসাদ নির্মাণ শুরু করেন, যা ১৮৬২ সালে শেষ হয় এবং তিনি তাঁরতার পুত্র [[খাজা আহসানুল্লাহ|খাজা আহসানুল্লাহর]] নামে নামকরণ করেন ‘আহসান মঞ্জিল’।
* [[৭ এপ্রিল]], [[১৮৮৮]]- প্রবল টর্নেডোর আঘাতে আহসান মঞ্জিলের বযাপক ক্ষতি হয়। [[খাজা আহসানুল্লাহ|নওয়াব আহসানুল্লাহ]] সংস্কার ও উন্নয়ন করেন। এ সময় রংমহলের উপরে সুদৃশ্য গম্বুজটি সযোজন করা হয়।
* [[১২ জুন]], [[১৮৯৭]]- ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহসান মঞ্জিলের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং [[খাজা আহসানুল্লাহ|নওয়াব আহসানুল্লাহ]] মেরামত করেন।