দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৫১ নং লাইন:
কলকাতার শিয়ালদহের কাছে পুকুর খুঁড়ে প্রায় ৩০ ফুট নিচে সুন্দরী গাছের অনেক গুড়ি পাওয়া গিয়েছিল। মাতলার কাছে ১০-১২ ফুট মাটি খুঁড়ে একসময় দেখা গিয়েছে যে, একাধিক সুন্দরী গাছ কঙ্কালের মতো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ থেকে বোঝা যায়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে এ অঞ্চলের মাটি বসে গিয়েছে; সেজন্য ঘরবাড়ি, মন্দির, মূর্তি, রাজপ্রাসাদ ইত্যাদি কোন চিহ্ন এখানে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, তার অধিকাংশই মাটির তলায় সমাধিস্থ।<ref name=Ghosh>ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ১৫২</ref>
 
“মনসামঙ্গল” কাব্যে ২৪টি পরগনা জেলার অনেক জায়গার নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। [[চাঁদ সওদাগর]] চম্পকনগরী থেকে যাত্রা শুরু করে তাঁরতার তরী ভাসিয়েছিলেন [[ভাগীরথী]]র প্রবাহে।তিনি [[কুমারহট্ট]], [[ভাটপাড়া]], [[কাকিনাড়া]],মূলাজোড়, গারুলিয়া,[[ইছাপুর]], দিগঙ্গা-চনক ([[ব্যারাকপুর]]),[[খড়দহ]], [[চিৎপুর]], [[কলিকাতা]],[[কালীঘাট]] ইত্যাদি জায়গা পার হয়েছিলেন।তিনি চম্পকনগরী থেকে যাত্রা শুরু করে [[বারুইপুর|বারুইপুরে]] পৌছেছিলেন।
 
জানা যায়, গৌড় থেকে মাহিনগর (পাঠান সুলতানদের রাজকর্মচারী মহীপতি বসুর নামানুসারে এই গ্রামের নাম) পর্যন্ত ভাগীরথী গঙ্গার প্রবাহ ছিল এবং এখানে সুলতান হুসেন শাহের (১৪৯৩ - ১৫১৮) নৌবহরের একটি বড় ঘাঁটি ছিল।<ref name="Ghosh"/>
৬৬ নং লাইন:
১৬১০ সালে মুঘল সেনাপতি মান সিংহের হাতে প্রতাপাদিত্য পরাজিত হন়। ভবানন্দ মজুমদার নামে এক তালুকদারের বিশ্বাসঘাতকতায়, যিনি বর্ধমানে গিয়ে মান সিংহের সাথে দেখা করেন, এবং প্রতাপাদিত্যকে কীভাবে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন ।
 
মান সিংহ ছিলেন কামদেব ব্রহ্মচারীর শিষ্য । কামদেবের বংশধর হালিশহরের জায়গিরদার লক্ষীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় কে ১৬১০ সালে সম্রাট জাহাঙ্গির মাগুরা,পাইকান, আনোয়ারপুর, কলকাতা ইত্যাদি একুশটি অঞ্চলের জমিদারি স্বত্ত্ব দেন। প্রতাপাদিত্য যখন রাজা বসন্ত রায়কে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন তখন থেকে প্রতাপাদিত্যের সংস্রব ত্যাগ করেছিলেন লক্ষ্মীকান্ত । [[হালিশহর]] নামটি লক্ষ্মীকান্তর পূর্বপুরুষ পাঁচু শক্তি খানের হাভেলির কারণে কালক্রমে হালিশহর হয় । পাঁচু শক্তি খান ছিলেন হুমায়ুনের আফগান সেনাদের প্রধান। লক্ষ্মীকান্তর বংশধরদের বলা হয় '''সাবর্ণ চৌধুরী''', কেননা তাঁরাতারা আকবরের কাছ থেকে 'রায়' এবং জাহাঙ্গিরের কাছ থেকে 'চৌধুরী' খেতাব পান ।
 
লক্ষ্মীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের নাতি কেশবচন্দ্র মুর্শিদকুলি খাঁর আমলে দক্ষিণ ২৪টি পরগনা ও খুলনার জমিদার নিযুক্ত হন।
৮৮ নং লাইন:
[[জয়নগর|জয়নগরের]] তিন মাইল দক্ষিণে উত্তরপাড়ার জমিদারদের একটি পুরানো কাছারিবাড়ির কাছে পুকুর সংস্কারের সময় তিনটি সুন্দর বিষ্ণুমূর্তি ও একটি দশভূজা দুর্গামূর্তি পাওয়া যায়; মূর্তিগুলো জমিদাররা তাদের উত্তরপাড়া লাইব্রেরিতে নিয়ে যান৷ ছত্রভোগে একটি কুবেরের মূর্তি, বিষ্ণু ও দশভূজা দুর্গামূর্তি, ব্রোঞ্জের গণেশ ও নৃসিংহমূর্তি পাওয়া গেছে। আটঘরা থেকে তাম্রমুদ্রা, মৃৎপাত্রের টুকরো, পোড়ামাটির মেষমূর্তি, যক্ষ্মিণীমূর্তি, শীলমোহর,তৈজসপত্র, পাথরের বিষ্ণুমূর্তি ইত্যাদি মিলেছে।
 
১৮৬০-এর দশকে মথুরাপুর থানার মধ্যে, লট নং ১১৬, পুরানো আদিগঙ্গার খাত থেকে এখানকার গভীর জঙ্গল পরিস্কারেরপরিষ্কারের সময় 'জটার দেউল' নামে একটি মন্দির আবিষ্কৃত হয়। অনেকের মতে, এখানে জটাধারী নামে এক শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত ছিল; আবার কারোর মতে, জটাধারী বড় বড় বাঘ এখানে ঘুরে বেড়াত। অধিকাংশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, জটার দেউলের স্থাপত্যশৈলীর সাথে ভুবনেশ্বরের দেউল স্থাপত্যের মিল আছে এবং সেদিক থেকে ও অন্যান্য আবিষ্কৃত নিদর্শন বিচার করে এর নির্মাণকাল আনুমানিক দ্বাদশ শতাব্দী।
 
১৯১৮ সালে জঙ্গল সাফ করার সময় জটার দেউলের ছ'মাইল দূরে দেউলবাড়ি নামক স্থানে (লট নং ১২২) এই ধরনের আরও একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় (এখন বিলুপ্ত)। এই স্থানের আধমাইল পূর্বে কমবেশি একবিঘা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছিল। ১৯২১-২২ সালে জটার দেউলের বারো-তেরো মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে জগদ্দল গাঙের কাছে আরও একটি মন্দিরের অবশেষের হদিশ মিলেছিল। মাটি খোঁড়ার সময় এখানে (বনশ্যামনগর) ইটের ঘর, প্রচুর ইট মৃৎপাত্রের টুকরো এবং মানুষের অস্থি-কঙ্কাল ইত্যাদি পাওয়া যায়।