গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৭ নং লাইন:
|footnotes =
}}
'''গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য''' (১ আগস্ট ১৮৯৫ – ৮ এপ্রিল ১৯৮১) একজন বাঙালি পতঙ্গবিশারদ ও উদ্ভিদবিদ, যিনি সামাজিক কীটপতঙ্গের ওপর তার গবেষণাকর্মের জন্য বিখ্যাত। ''বাংলার কীটপতঙ্গ'' নামক গ্রন্থটি রচনার জন্য<ref>{{বই উদ্ধৃতি| শিরোনাম =বাংলার কীটপতঙ্গ| প্রকাশক = দে'জ পাবলিশিং| অবস্থান = কলকাতা| বছর = ২০০৪| সংস্করণ=৭ম| প্রকৃত-বছর = প্রথম প্রকাশ ১৯৭৫ }}</ref> ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তিনি [[রবীন্দ্র পুরস্কার]] জয় করেন। বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে তিনি ''করে দেখ'' নামক তিন খন্ডের একটি গ্রন্থও রচনা করেন।
 
== প্রথম জীবন ==
গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দেরখ্রিষ্টাব্দের পয়লা আগস্ট [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি|বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির]] অন্তর্গত লোনসিং নামক গ্রামে এক দরিদ্র কুলীন ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা অম্বিকাচরণ ভট্টাচার্য একজন গ্রাম্য পুরোহিত ও মাতা শশীমুখী দেবী একজন গৃহবধু ছিলেন। গোপালচন্দ্রের পাঁচ বছর বয়সে অম্বিকাচরণ মৃত্যুবরণ করলে দারিদ্র্যে মধ্যে তার শৈশব অতিবাহিত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করার পর গোপালচন্দ্র যখন ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে কলেজে আই.এ. পড়ার জন্য ভর্তি হলেও অর্থের অভাবে তার পাঠ্যক্রম শেষ করা হয়ে ওঠে নি। এরপর তিনি একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় তিনি সাহিত্যচর্চায় উৎসাহী হয়ে ওঠেন এবং পালা গান ও জরি গানে ইত্যাদি লোকগীতির জন্য গান রচনা করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন হাতে লেখা পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করতেন।
 
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[প্রবাসী]] পত্রিকায় একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে টেলিফোন অপারেটর হিসেবে কাজ করার সময় [[প্রবাসী (পত্রিকা)|প্রবাসী]] পত্রিকায় ''জৈবদ্যুতি'' নামক তার একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হলে তা [[জগদীশচন্দ্র বসু|জগদীশচন্দ্র বসুর]] নজরে আসে। [[জগদীশচন্দ্র বসু|জগদীশচন্দ্র]] তাকে সদ্য প্রতিষ্ঠিত [[বসু বিজ্ঞান মন্দির|বসু বিজ্ঞান মন্দিরে]] মেরামতির কাজে নিযুক্ত করেন। এই প্রতিষ্ঠানে থেকেই তিনি জীববিদ্যার ওপর গবেষণা শুরু করেন।
 
== গবেষণা কর্ম ==
[[File:GopalBhattacharya.jpg|thumb|প্রাপ্তবয়স্ক গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য]]
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে প্রথম উদ্ভিদের জীবনের ওপর তার গবেষণা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশিত হয়। এরপর জৈব-আলোকবিদ্যার ওপর তার বিভিন্ন গবেষণা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও ধীরে ধীরে কীট পতঙ্গের ওপর তার আগ্রহ জন্ম নেয়। এই সময় তিনি আলোকচিত্রগ্রাহক হিসেবে দক্ষ হয়ে ওঠেন এবং পিঁপড়ে, মাকড়শা, ব্যাঙাচি, বাদুড় প্রভৃতি প্রাণীর আলোকচিত্র তুলতে শুরু করেন।<ref name=vp/>
 
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে বোস ইসস্টিটিউটের পত্রিকায় তিনি দেখান যে পিঁপড়ে ও মৌমাছির মতো সামাজিক কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রে কিভাবে রাণী [[লার্ভা|লার্ভার]] খাদ্যের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সঠিক ভাবে পরিবর্তন করে অন্য রাণী, কর্মী ও সৈনিক পতঙ্গ সৃষ্টি করেন। পিঁপড়ের জন্য স্বচ্ছ বাসা বানিয়ে চুপচাপ নিরীক্ষণ করে তিনি এই পর্য্যবেক্ষণ করেন।<ref name=vp>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শিরোনাম = Gopal Chandra Bhattacharya: One Who Observed Insects|লেখক = Amit Chakraborty|সাময়িকী = Dream 2047: Monthly newsletter of Vigyan Prasar|ইউআরএল = http://www.vigyanprasar.gov.in/dream/sept2002/english.pdf|তারিখ=September 2002|খণ্ড = 4:12|পাতাসমূহ = 19}}</ref> পতঙ্গদের প্রাকৃতিক বস্তুর ব্যবহারের ওপরও তার গবেষণা নিবদ্ধ হয়। তিনি লক্ষ্য করেন, কিভাবে শিকারী [[বোলতা]] তাদের বাসার মুখ বন্ধ করার জন্য ছোট ছোট পাথরের টুকরো ব্যবহার করে থাকে। প্রজননকালে ঘুরঘুরে পোকা কি ভাবে শিকারীদের আক্রমণ থেকে তার ডিমগুলিকে রক্ষা করার জন্য পেছনের পা দিয়ে কাদার তৈরী গোলক নির্মাণ করে, তা তিনি পর্য্যবেক্ষণ করেন।<ref name=vp/> এছাড়া ব্যাঙাচি থেকে পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙে পরিবর্তনের সময় কিছু ব্যাক্টেরিয়ার উপকারিতা সম্বন্ধেও তিনি গবেষণা করেন। ব্যাঙাচির ওপর [[পেনিসিলিন]] ওষুধ প্রয়োগ করে তিনি লক্ষ্য করেন যে, সেগুলি পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙে পরিবর্তিত হতে সক্ষম হয় না, বরং পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙাচিতে রূপান্তরিত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/others/science/gopal-chandra-bhattacharya-an-entomologist-and-naturalist-who-spent-his-life-researching-1.1028168|শিরোনাম=পোকামাকড়ের সঙ্গে জীবন|শেষাংশ=চট্টোপাধ্যায়|প্রথমাংশ=পৌলমী দাস|ওয়েবসাইট=anandabazar.com|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2019-08-11}}</ref>
 
তার প্রায় বাইশটি গবেষণাপত্র [[ন্যাচারাল হিস্ট্রি (পত্রিকা)|ন্যাচারাল হিস্ট্রি]] সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় সামজিক কীটপতঙ্গের ওপর তার গবেষণা সম্বন্ধে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য প্যারিসের ''ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য স্টাডি অব সোশ্যাল ইন্সেক্টস'' নামক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি ডাক পান। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকার জন্য তাকে বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যের শিকার হতে হয়।<ref name=vp/>
 
== বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ ==
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে গোপালচন্দ্র [[সত্যেন্দ্রনাথ বসু|সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে]] [[বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ]] প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেন। [[পুলিন বিহারী দাস|পুলিন বিহারী দাসের]] সঙ্গে তিনি অক্লান্ত ভাবে বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের কর্মকাণ্ডে শ্রম দেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তিনি ''জ্ঞান ও বিজ্ঞান'' নামক [[বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ|বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের]] পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি [[ভারতকোষ]] নামক বাংলা ভাষার একটি বিশ্বকোষ রচনাতেও সহযোগিতা করেন।
 
==প্রকাশিত গ্রন্থ==
৫৮ নং লাইন:
 
== সম্মাননা ==
গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[আনন্দ পুরস্কার]] এবং ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে ''বাংলার কীট পতঙ্গ'' নামক গ্রন্থ রচনার জন্য [[রবীন্দ্র পুরস্কার]] লাভ করেন। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর তিন মাস পূর্বে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] তাকে সাম্মানিক ডি.এসসি. ডিগ্রী প্রদান করে।<ref name="convocation">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Annual Convocation|ইউআরএল=http://www.caluniv.ac.in/convocation-2012/hony_degrees.htm|প্রকাশক=[[University of Calcutta]]|সংগ্রহের-তারিখ=১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120528004638/http://caluniv.ac.in/convocation-2012/hony_degrees.htm|আর্কাইভের-তারিখ=২৮ মে ২০১২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ২০০৫ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[পশ্চিমবঙ্গ সরকার]] বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণে অবদানের জন্য [[গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য স্মৃতি পুরস্কার]] প্রচলন করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Gopal Chandra Bhattacharya Award for science popularization|ইউআরএল=http://webcache.googleusercontent.com/search?q=cache:Fv2XDMs5waUJ:www.dstwb-council.gov.in/document/Gopal%2520Chandra%2520Bhattacharyya%2520Smriti%2520Puraskar.doc}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=জানুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref>
 
== তথ্যসূত্র ==