== শিক্ষাজীবন ==
[[১৮৭৪]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র কলকাতায় back করে অ্যালবার্ট স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকেই [[১৮৭৮]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তিনি সকুল ফাইনার তথা [[প্রবেশিকা পরীক্ষায়]] প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি [[ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর]] কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত '''মেট্রোপলিটন কলেজে''' (বর্তমান [[বিদ্যাসাগর কলেজ]]) ভর্তি হন। [[১৮৮১]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে কলেজ ফাইনাল তথা ''এফ এ'' পরীক্ষায় (ইন্টারমিডিয়েট বা এইচএসসি) ''দ্বিতীয় বিভাগে'' পাশ করে তিনি [[প্রেসিডেন্সী কলেজ|প্রেসিডেন্সী কলেজে]] বি এ ক্লাসে ভর্তি হন। প্রেসিডেন্সী থেকে [[গিলক্রিস্ট বৃত্তি]] নিয়ে তিনি [[স্কটল্যান্ড|স্কটল্যান্ডের]] [[এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়|এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] পড়াশোনা করতে যান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বি এসসি পাশ করেন
[[File:Young P.C. Ray.jpg|thumb|যুবক প্রফুল্ল চন্দ্র রায়]]
পরবর্তীকালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েই ডি এসসি ডিগ্রী লাভের জন্য গবেষণা শুরু করেন। তার সেই গবেষণার বিষয় ছিল ''কপার ম্যাগনেসিয়াম শ্রেণীর সম্মিলিত সংযুক্তি পর্যবেক্ষণ'' (Conjugated Sulphates of Copper Magnesium Group: A Study of Isomorphous Mixtures and Molecular Combination)। দুই বছরের কঠোর সাধনায় তিনি এই গবেষণা সমাপ্ত করেন এবং পিএইচ ডি ও ডি এসসি ডিগ্রী লাভ করেন। এমনকি তার এই গবেষণাপত্রটি শ্রেষ্ঠ মনোনীত হওয়ায় তাকে [[হোপ প্রাইজ|হোপ প্রাইজে]] ভূষিত করা হয়। [[এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়|এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] অধ্যয়নকালেই [[১৮৮৫]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে ''সিপাহী বিদ্রোহের আগে ও পরে'' (India Before and After the Sepoy Mutiny) এবং ভারতবিষয়ক বিভিন্ন নিবন্ধ লিখে ভারতবর্ষ এবং ইংল্যান্ড ও এউ এস এ ফেরে দেন।
== কর্মজীবন ==
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে [[১৮৮৮]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সী কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় ২৪ বছর তিনি এই কলেজে অধ্যাপনা করেছিলেন। অধ্যাপনাকালে তার প্রিয় বিষয় [[রসায়ন]] নিয়ে তিনি নিত্য নতুন অনেক গবেষণাও চালিয়ে যান। তার উদ্যোগে তার নিজস্ব গবেষণাগার থেকেই [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানা]] সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীকালে [[১৯০১]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তা কলকাতার মানিকতলায় ৪৫ একর জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন এর নতুন নাম রাখা হয় [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড]]।
== অবদান ==
* নিজের বাসভবনে দেশীয় [[ভেষজ]] নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি তার গবেষণাকর্ম আরম্ভ করেন। তার এই গবেষণাস্থল থেকেই পরবর্তীকালে [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানার]] সৃষ্টি হয় যা ভারতবর্ষের শিল্পায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তাই বলা যায় বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ভারতীয় উপমহাদেশের শিল্পায়নে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
* [[১৮৯৫]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তিনি [[মার্কারি (I) নাইট্রেট|মারকিউরাস নাইট্রাইট]] (HgNO<sub>2</sub>) আবিষ্কার করেন যা বিশ্বব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করে। এটি তার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। তিনি তার সমগ্র জীবনে মোট ১২টি যৌগিক [[লবণ]] এবং ৫টি [[থায়োএস্টার]] আবিষ্কার করেন।
* সমবায়ের পুরোধা স্যার পিসি রায় ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে নিজ জন্মভূমিতে একটি কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী পিসি রায় পিতার নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
* বাগেরহাট জেলায় ১৯১৮ সালে তিনি পি, সি কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। যা আজ বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে বিশাল ভূমিকা রাখছে।
== সম্মাননা ==
* শিক্ষকতার জন্য তিনি সাধারণ্যে ‘‘আচার্য’’ হিসেবে আখ্যায়িত।
* '''সি আই ই:''' [[১৯১১]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তৃতীয়বারের মত তিনি [[ইংল্যান্ড]] যান এবং সেখান থেকেই সি আই ই লাভ করেন।
* '''সম্মানসূচক ডক্টরেট:''' [[১৯১১]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়]] তাকে এই ডিগ্রী দেয়। এছাড়া [[১৯৩৬]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] এবং পরবর্তীকালে [[মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়|মহীশুর]] ও [[বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকেও তিনি ডক্টরেট পান।
* '''নাইট:''' [[১৯১৯]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ব [[নাইট উপাধি]] লাভ করেন ।
== ব্যক্তি হিসেবে আচার্য ==
=== অসাম্প্রদায়িকতা ===
কিছু সূত্র মতে, তিনি অসাম্প্রদায়িকই শুধু ছিলেন না বরং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মূলোৎপাটনের জন্যও চেষ্টা করেছেন সবসময়। [[১৯২৫]] খ্রিস্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে ড. [[মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা|কুদরত-এ-খুদাকে]] প্রেসিডেন্সী কলেজে থেকে রসায়নে প্রথম বিভাগ দেয়া হয়। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রফুল্লচন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুদরত-এ-খুদাকে প্রথম বিভাগ দেন। এরকম ব্যাপার শোনা যায় [[আবুল কাশেম ফজলুল হক|শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুক হকের]] জীবনী থেকেও।
== গ্রন্থাবলী ==
|